শাহীন চাকলাদার ও তাঁর স্ত্রীর দুটি বহুতল হোটেল, বাড়ি ও গাড়ি ক্রোকের আদেশ
Published: 7th, May 2025 GMT
যশোর-৬ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শাহীন চাকলাদার এবং তাঁর স্ত্রীর নামে থাকা দুটি বহুতল হোটেল, ৯তলা বাড়ি ও তিনটি গাড়ি ক্রোকের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
এ ছাড়া তাঁর নামে থাকা ১৬টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করার আদেশ দিয়েছেন আদালত।
এ ছাড়া শাহীন চাকলাদারের স্ত্রী ফারহানা জাহানের পরিচয়পত্র ‘ব্লক’ করার আদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাঁর বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত।
দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ জাকির হোসেন আজ বুধবার এ আদেশ দেন।
দুদকের তথ্য অনুযায়ী, শাহিন চাকলাদার ও তাঁর স্ত্রীর নামে দুটি হোটেল রয়েছে। যশোরের হোটেলটি ১৭ তলার, আর ঢাকার উত্তরায় ১১ তলা হোটেল রয়েছে। এ দুটি হোটেল ক্রোকের আদেশ দিয়েছেন আদালত। এ ছাড়া শাহীন চাকলাদারের নামে থাকা যশোরে জমি ক্রোকের আদেশ দিয়েছেন আদালত। এর বাইরে শাহীন চাকলাদারের নামে থাকা তিনটি গাড়ি ক্রোকের আদেশ দেওয়া হয়েছে। তা ছাড়া তাঁর স্ত্রীর নামে থাকা একটি গাড়িও ক্রোকের আদেশ দেওয়া হয়। শাহীন চাকলাদারের স্ত্রীর তিনটি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করার আদেশ দিয়েছেন আদালত।
দুদক আদালতকে লিখিত প্রতিবেদন দিয়ে জানিয়েছে, শাহীন চাকলাদারের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ রয়েছে। ২৯টি ব্যাংক হিসেবে ৩৪১ কোটি ৬১ লাখ টাকা লেনদেনের তথ্য জানতে পেরেছে দুদক। জ্ঞাত আয়ের বাইরে তিনি ৪২ কোটি ৪৬ লাখ টাকার সম্পদ অর্জন করেছেন।
এর আগে গত বছরের ১৬ অক্টোবর শাহীন চাকলাদার ও তাঁর স্ত্রী ফারহানা জাহান; মেয়ে সামিয়া জাহান ও মাঈসা জাহান এবং ছেলে জাবীর চাকলাদারের বিদেশযাত্রায়ও নিষেধাজ্ঞা দেন আদালত।
দুদকের পক্ষ থেকে আদালতে লিখিতভাবে বলা হয়েছে, যশোর-৬ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শাহীন চাকলাদারের বিরুদ্ধে টেন্ডারবাজি, সন্ত্রাসী কার্যকলাপ, ক্ষমতার অপব্যবহারসহ দুর্নীতির মাধ্যমে সরকারি অর্থ আত্মসাৎ, জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক। এখন তাঁরা বিদেশে পালিয়ে যেতে পারেন বলে দুদক জানতে পেরেছে।
সাবেক প্রতিমন্ত্রীর বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা
ময়মনসিংহ-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত। দুদক আদালতকে লিখিতভাবে জানিয়েছে, ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে ৩ কোটি ৮৩ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন। তাঁর ব্যাংক হিসাবে ৪২ কোটি ৬৮ লাখ টাকার লেনদেনের তথ্য পেয়েছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: শ হ ন চ কল দ র র
এছাড়াও পড়ুন:
মার্চ মাসে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যঘাটতি বেড়েছে ১৪ শতাংশ
বাণিজ্যযুদ্ধের আবহের মধ্যেই মার্চ মাসে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যঘাটতি বেড়েছে ১৪ শতাংশ। মূলত ট্রাম্প পাল্টা শুল্ক আরোপ করবেন—এ আশঙ্কায় যুক্তরাষ্ট্রের আমদানিকারকেরা মার্চ মাসে বিপুল পরিমাণে পণ্য আমদানি করেছেন। সে কারণে বাণিজ্যঘাটতি রেকর্ড উচ্চতায় উঠেছে।
সেই সঙ্গে বছরের প্রথম প্রান্তিকে অর্থাৎ জানুয়ারি-মার্চ সময়ে যে দেশটির জিডিপির সংকুচিত হয়েছে, তার পেছনেও এই বিপুল পরিমাণ আমদানির প্রভাব আছে বলে সংবাদে বলা হয়েছে। মেক্সিকো, ভিয়েতনামসহ ১০টি দেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্র রেকর্ড পরিমাণ পণ্য আমদানি করলেও চীন থেকে আমদানি গত পাঁচ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে এসেছে।
দেশটির বাণিজ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, মার্চ মাসে দেশটির সামগ্রিক বাণিজ্যঘাটতি ১৪ শতাংশ বেড়ে ১৪০ দশমিক ৫ বিলিয়ন বা ১৪ হাজার ৫০ কোটি ডলারে পৌঁছেছে। যদিও রয়টার্সের জরিপে জানা গিয়েছিল, বাণিজ্যঘাটতি ১৩৭ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্র মার্চ মাসে ৪১৯ বিলিয়ন বা ৪১ হাজার ৯০০ কোটি ডলারের পণ্য আমদানি করে; এটি সর্বকালীন রেকর্ড। গত মাসে তারা রপ্তানি করেছে ২৭৮ দশমিক ৫ বিলিয়ন বা ২৭ হাজার ৮৫০ কোটি ডলারের পণ্য। সামগ্রিকভাবে ২০২৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যঘাটতি ছিল ৯১৮ দশমিক ৪ বিলিয়ন বা ৯১ হাজার ৮৪০ কোটি ডলার। ২০২৩ সালের তুলনায় এই ঘাটতি বেড়েছে ১৭ শতাংশ।
ট্রাম্প মূলত বাণিজ্যঘাটতির হ্রাসের কথা বলে বিশ্বের প্রায় সব দেশের পণ্যে পাল্টা শুল্ক আরোপ করেছেন।
এদিকে আমদানি বৃদ্ধির সঙ্গে মার্চ মাসে যুক্তরাষ্ট্রের রপ্তানিও বেড়েছে। গত মাসে রপ্তানি শূন্য দশমিক ২ শতাংশ বেড়ে ২৭৮ দশমিক ৫ বিলিয়ন বা ২৭ হাজার ৮৫০ কোটি ডলারে উন্নীত হয়েছে। এর মধ্যে পণ্য রপ্তানি শূন্য দশমিক ৭ শতাংশ বেড়ে ১৮৩ দশমিক ২ বিলিয়ন বা ১৮ হাজার ৩২০ কোটি ডলারে উন্নীত হয়েছে, ২০২২ সালের জুলাই মাসের পর যা সর্বোচ্চ। রপ্তানি পণ্যের মধ্যে শিল্পপণ্য ও উপকরণের বিক্রি বেড়েছে। এ ছাড়া গাড়ি, ইঞ্জিন ও যন্ত্রাংশের রপ্তানিও বেড়েছে। তবে মূলধনি পণ্যের রপ্তানি কমেছে, বেসামরিক বিমান রপ্তানি কমেছে ১৮০ কোটি ডলার।
পণ্য বাণিজ্যের ঘাটতি ১১ দশমিক ২ শতাংশ বেড়ে রেকর্ড ১৬৩ দশমিক ৫ বিলিয়ন বা ১৬ হাজার ৩৫০ কোটি ডলারে উন্নীত হয়েছে।
গত মাসে দেশটি জানিয়েছে, বাণিজ্যঘাটতির কারণে প্রথম প্রান্তিকে দেশটির জিডিপির ৪ দশমিক ৮৩ শতাংশীয় পয়েন্ট হ্রাস পেয়েছে। সে কারণে বছরের প্রথম প্রান্তিকে জিডিপি সংকোচন হয়েছে শূন্য দশমিক ৩ শতাংশ।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, সামগ্রিকভাবে বিনিয়োগকারীরা মার্কিন অর্থনীতিতে আস্থা হারাচ্ছেন। সে কারণে তাঁরা মার্কিন ডলারে কেনা বন্ড ও শেয়ার ছেড়ে দিয়ে অন্য মুদ্রায় রূপান্তরিত করছেন। প্রমাণ হিসেবে তাঁরা বলছেন, মার্চ মাসে দেশটির অপরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানি কমে যাওয়া। আরেকটি নজির হলো, ২০২৪ সালের নভেম্বর মাসে মার্কিন নির্বাচনের পর বিনিয়োগকারীরা অফশোরে স্বর্ণ ও রুপার বুলিয়নে (বিশুদ্ধ ভৌত সোনা, যা সাধারণত বার (খণ্ড), ইনগট (ধাতুপিণ্ড) বা কয়েনের আকারে থাকে।) বিনিয়োগ বাড়িয়েছেন।
মূলত ট্রাম্পের বাণিজ্যনীতির কারণে এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।