সরকারি চাকরি ফিরে পেতে যাচ্ছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমান। সব প্রক্রিয়া শেষে দু-এক দিনের মধ্যে আদেশ জারি হবে বলে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সূত্র নিশ্চিত করেছে। এর আগে ২০১৩ সালে দেশে ফিরে কর্মস্থলে যোগ না দেওয়ায় নিয়ম অনুযায়ী তাঁর চাকরির অবসান হয়।

এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের একজন যুগ্ম সচিব বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্ত্রী ডা.

জোবাইদা রহমান মঙ্গলবার দেশে ফিরেছেন। তিনি সরকারি চাকরি ফিরে পাচ্ছেন। এ-সংক্রান্ত প্রস্তাব প্রক্রিয়াধীন।

মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ডা. জোবাইদা রহমান ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে চিকিৎসাবিদ্যায় স্নাতক (এমবিবিএস) সম্পন্ন করে লন্ডনের ইম্পেরিয়াল কলেজ থেকে মেডিসিনে স্নাতকোত্তর (এমএসসি) ডিগ্রি নেন। চিকিৎসকদের সিভিল সার্ভিস (বিসিএস) পরীক্ষায় প্রথম স্থান অধিকার করে ১৯৯৫ সালে চিকিৎসক হিসেবে সরকারি চাকরিতে যোগ দেন।

তবে এক-এগারোর পর গ্রেপ্তার করা হয় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বড় ছেলে তারেক রহমানকে। পরে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। স্বামীকে সুস্থ করতে উন্নত চিকিৎসার জন্য ডা. জোবাইদা রহমান ছুটি নিয়ে যুক্তরাজ্যে যান ২০০৮ সালের ৮ সেপ্টেম্বর। এর আগে একই বছরের ৯ এপ্রিল শিক্ষা ছুটির আবেদন করলে সরকার তাঁকে ২০১০ সালের ১০ অক্টোবর পর্যন্ত ছুটি মঞ্জুর করে। এর পর আরও দুই দফায় এক বছর করে ছুটি বাড়ানোর আবেদন করলেও তৎকালীন সরকার তা নাকচ করে দেয়। অনুমোদন ছাড়া একনাগাড়ে ৫ বছর কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকায় তাঁর চাকরি অবসান হয়।

১৭ বছর পর গত মঙ্গলবার সকালে শাশুড়ি খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেশে ফেরেন তিনি। দেশে ফিরে ডা. জোবাইদা রহমান তাঁর বাবার ধানমন্ডির বাসায় ওঠেন। তাঁর বাবা সাবেক নৌবাহিনী প্রধান রিয়াল অ্যাডমিরাল মাহবুব আলী খান।

উল্লেখ্য, বিধিমালা অনুযায়ী অসাধারণ ছুটির মেয়াদ পাঁচ বছরের বেশি হতে পারবে না। বিধিমালা ৯ (৩) অনুযায়ী কর্তৃপক্ষ ইচ্ছা করলে যে কোনো ছুটি অনুমোদন করতে পারে। অন্যদিকে বিধিমালার অধ্যয়ন ছুটি-সংক্রান্ত এফ আর-৮৪ এর নিরীক্ষা নির্দেশনার (গ)তে বলা হয়েছে, এই প্রকার ছুটির মেয়াদ সাধারণভাবে ১২ মাস। তবে বিশেষ কারণে সর্বোচ্চ ২৪ মাস পর্যন্ত মঞ্জুর করা যাবে। কোর্সের প্রয়োজনে অতিরিক্ত সময় প্রয়োজন হলে আরও ৪ মাস অর্জিত ছুটি এবং ৩২ মাস অসাধারণ ছুটি দেওয়া যাবে। অর্থাৎ, অধ্যয়নের প্রয়োজনে ৫ বছর ছুটি দেওয়া যেতে পারে। এর অতিরিক্ত অনুপস্থিতির ক্ষেত্রে বিএসআর পার্ট-১ এর ৩৪ নম্বর বিধির আওতায় চাকরির অবসান হবে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব এনপ ত র ক রহম ন রহম ন সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

সাভারে বাবাকে ছুরি মেরে হত্যা করে ৯৯৯–এ ফোন দিলেন মেয়ে : পুলিশ

ঢাকার সাভারে মেয়ের বিরুদ্ধে বাবাকে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে অচেতন করে ছুরি মেরে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। আজ বৃহস্পতিবার ভোরে ভাড়া বাসা থেকে ওই তরুণীকে (২৩) আটক করে পুলিশ।

পুলিশ জানিয়েছে, মেয়েটি জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯–এ ফোন করে বাবাকে হত্যার কথা জানান। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তরুণী বলেছেন, তিনি বাবার বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা করেছিলেন। সেই মামলা তুলে নিতে চাপ ও বাগ্‌বিতণ্ডায় ক্ষুব্ধ হয়ে বাবাকে হত্যা করেছেন।

এ সম্পর্কে সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ জুয়েল মিঞা প্রথম আলোকে বলেন, ঘটনাস্থল থেকে নিহত ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার ও তরুণীকে আটক করা হয়েছে। এ ব্যাপারে পরবর্তী আইনগত বিষয় প্রক্রিয়াধীন।

আটক তরুণীর বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, নিহত ব্যক্তির বয়স ৫৭ বছর। তরুণীর মা তাঁর তৃতীয় স্ত্রী ছিলেন। পাঁচ বছর বয়সে তরুণীর মা মারা যান। ২০১৯ সাল থেকে বাবা তাঁকে বিভিন্ন সময় ধর্ষণ করেন। ২০২৩ সালে তরুণী বাবার বিরুদ্ধে নাটোরে আদালতে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা দায়ের করেন। এরপর বিভিন্ন সময়ে মেয়েকে মামলা তুলে নিতে চাপ দেন বাবা। একপর্যায়ে মেয়ের বিরুদ্ধে চুরির মামলাও করেন। পরে সাভারে ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে বসবাস শুরু করেন ওই বাবা। চলতি বছরের শুরুর দিকে ওই বাসায় আসেন মেয়েটি। এর পর থেকে মেয়েকে মামলা তুলে নিতে বিভিন্ন সময়ে চাপ দিতে থাকেন তিনি। এ নিয়ে দুজনের মধ্যে বাগ্‌বিতণ্ডা হয়। গতকাল বুধবার রাতে মেয়েটি খাবারের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে বাবাকে খাওয়ান। ভোররাত চারটার দিকে শরীরের বিভিন্ন স্থানে ছুরি মেরে বাবাকে হত্যা করেন তিনি।

পুলিশ জানায়, নিহত ব্যক্তির ফ্ল্যাটের তিনটি কক্ষের একটি সাবলেট দেওয়া। অন্য দুটি কক্ষে মেয়ে ও বাবা থাকেন। অনলাইনে কাপড় বিক্রি করতেন তিনি। হত্যার আগে সাবলেট দেওয়া কক্ষটির দরজার বাইরে থেকে তালা দিয়েছিলেন মেয়েটি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ