ঠান্ডা মাথায় কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াইয়ের বার্তা মমতার
Published: 8th, May 2025 GMT
পাকিস্তান ও পাকিস্তান-নিয়ন্ত্রিত আজাদ কাশ্মীরে ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় যুদ্ধের ডামাডোলে ঐক্যের ডাক দিয়ে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াইয়ের জোরালো বার্তা দিলেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
তিনি বলেছেন, “সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধে আমাদের একত্রিত থাকতে হবে। এই সময় আমাদের মধ্যে যেন কোনো বিভেদ না আসে।”
বুধবার (৭ মে) রাজ্য সরকারের সচিবালয় নবান্নে সংবাদ সম্মেলনে এসে ঐক্যের বার্তা দিয়ে মমতা বলেন, “রাজ্যের নাগরিক হিসেবে, সংবাদমাধ্যমের কর্মী হিসেবে আপনাদের দায়বদ্ধতা আছে; এই সময়টা শান্ত এবং সংযত থেকে মানুষকে সঠিক সত্য পরিবেশন করার, যাতে কোনো অশান্তি তৈরি না হয়, কোনো প্ররোচণামূলক পরিস্থিতি তৈরি না হয়, কোনো সহিংসতা না ছড়ায় বা কোনো সন্ত্রাস না ছড়ায়। সেদিকে লক্ষ্য রেখে কাজ করার জন্য আবেদন করছি।”
আরো পড়ুন:
মোদিকে মমতা: দাঙ্গায় নয়, সীমান্ত সুরক্ষায় নজর দিন
পশ্চিমবঙ্গের সহিংসতার বিষয়ে বাংলাদেশের মন্তব্য নাকচ ভারতের
এদিন বিকালেই পাকিস্তান, নেপালের পাশাপাশি বাংলাদেশ, ভুটানের মতো প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে থাকা ভারতের সীমান্তবর্তী রাজ্যগুলোর মুখ্যমন্ত্রীদের নিয়ে বৈঠক করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।
দিল্লীতে ওই বৈঠকে পশ্চিমবঙ্গের পাশাপাশি জম্মু-কাশ্মীর, উত্তর প্রদেশ, বিহার, পাঞ্জাব, রাজস্থান, গুজরাট, উত্তরাখন্ড, সিকিমের মুখ্যমন্ত্রীরা উপস্থিত ছিলেন। সেখানে রাজ্যগুলোর মুখ্য সচিব এবং রাজ্য পুলিশের ডিজি, লাদাখের লেফটেনেন্ট গভর্নরও উপস্থিত ছিলেন। যদিও তাদের অনেকেই অন্য রাজ্য থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বৈঠকে যোগ দেন।
বৈঠকের বিষয়ে মমতা বলেন, “আজকে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সীমান্তবর্তী কয়েকটি রাজ্যের সঙ্গে বৈঠক করেছেন; বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আমাদের আলোচনা হয়েছে।”
তিনি বলেন, “সমস্ত রাজ্য সরকার এবং কেন্দ্রীয় সরকারের দপ্তরগুলোতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনকারী কর্মকর্তাদের ডেকে আমরা বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেছি। পহেলগামে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যারা লড়াই করছে, আমরা সকলেই তাদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই করব। এই সময় আমাদের মধ্যে যাতে কোনো বিভেদ না হয়। আমরা সবাই দেশের পক্ষে। এই মানসিকতা নিয়ে কাজ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।”
মমতা বলেন, “আমরা দেশটাকে ভালোবাসি। আমাদের বাংলা চিরকাল দেশের জন্য প্রাণ দিয়েছে, রক্ত দিয়েছে। কাজেই আমাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য কোনো রকম ভয় না পেয়ে একদম ঠান্ডা মাথায় সবটা আগলে রাখতে হবে।”
আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বলেন, “আমাদের সকলের সাথেই যোগাযোগ থাকবে, মনিটারিং চলবে। যদিও চিন্তার কিছু নেই, আতঙ্কিত হওয়ারও কোনো কারণ নেই। যদি সেরকম কিছু হয় তথ্য থাকলে আগাম জানিয়ে দেওয়া হবে।”
ফেসবুক, ইউটিউবসহ ডিজিটাল মিডিয়া, গণমাধ্যমে সঠিক তথ্য পরিবেশনের আহ্বান জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “অন্যথায় কেন্দ্রীয় সরকারের গাইডলাইন অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে। মনে রাখতে হবে এটা টিআরপি বাড়ানোর সময় নয়, এটা দেশ রক্ষার সময়।”
গুরুতর কোনো তথ্য থাকলে রাজ্য সরকারের প্রদেয় নির্দিষ্ট নম্বরে তথ্য জানানোর আহ্বান জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “কলকাতা আমাদের ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম দিনরাত ২৪ ঘণ্টা খোলা থাকে। আজকের বৈঠকে উত্তরবঙ্গেও চালু করার কথা বলা হয়েছে। পুলিশকে সতর্ক করা হয়েছে, সংশ্লিষ্ট জেলার শাসক, পুলিশ সুপারদের সতর্ক করা হয়েছে। থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের মোবিলিটি বাড়বে, ভিজিলেন্স থাকবে। এখন সমস্ত ছুটি বাতিল করা হয়েছে।”
এই পরিস্থিতিতে রাজ্যের বেসরকারি এবং ইংরেজি মাধ্যম স্কুল কর্তৃপক্ষকে ছুটি ঘোষণা দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আমাদের রাজ্যে সরকারি স্কুলগুলোতে গরমের ছুটি পড়ে গেছে। বেসরকারি এবং ইংরেজি মাধ্যম স্কুলগুলোকে আহ্বান জানাব, তারাও যাতে এই পরিস্থিতিতে ছুটি ঘোষণা করে। ৯ এপ্রিল শুক্রবার রবীন্দ্রজয়ন্তীর দিন থেকে ছুটি ঘোষণা দিলে ভালো হয়। বাচ্চারা যত বাড়িতে থাকে ততই ভালো।”
এরকম এক পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে ব্যবসায়ীরা যাতে কোনো জিনিসের দাম বাড়াতে না পারেন, সেদিকে লক্ষ্য রাখতে বৃহস্পতিবার একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে বসছেন মুখ্যমন্ত্রী।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আপনারা জানেন সেই ১৯৭১ সালে শেষ যুদ্ধ হয়েছিল। এরপর কার্গিলের যুদ্ধ কাশ্মীরের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল, পরবর্তীতে বালাকোট বা পুলওয়ামাতেও যে ঘটনা ঘটেছিল, তার রেশ এদিকে আসেনি। আজকের যে পরিস্থিতি.
ঢাকা/সুচরিতা/রাসেল
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ম খ যমন ত র পর স থ ত সরক র র আম দ র
এছাড়াও পড়ুন:
পৃথিবীর দীর্ঘতম রাতও ভোর হয়, আমাদেরও বোধোদয় হোক
বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনের সঙ্গে আমার সম্পর্কের শুরুর কথা বলতে গেলে পিছিয়ে যেতে হবে ১৯৭৫ সালের ডিসেম্বরে। সেই বছর আমি দ্বিতীয় জাতীয় দাবার বাছাইপর্বে প্রথম অংশগ্রহণ করি। তখন আমার বয়স ছিল ৯ বছর। আর এ বছর আমি ৫৯তম জন্মদিন পালন করলাম। অর্থাৎ পুরো অর্ধশতক। এই ৫০ বছরের অভিজ্ঞতার আলোকে বাংলাদেশের ক্রীড়াজগৎ নিয়ে আমাকে কিছু বলতে বলা হয়েছে।
স্বাধীনতার পরপর বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনে ফুটবল ছিল মূল খেলা। এ দেশের মানুষ বরাবরই ফুটবলপ্রিয়। ১৯৫৮ সাল থেকে ঢাকায় আগা খান গোল্ড কাপের মতো আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত হতো। স্বাধীনতার পরও খেলার তারকা বলতে আমরা ফুটবলারদেরই বুঝতাম। সালাহউদ্দিন ভাই, এনায়েত ভাই, চুন্নু ভাই, আসলাম ভাই—ওনারাই ছিলেন সত্তর–আশি দশকের তারকা। আমি নিজেও কিন্তু এই ফুটবল উন্মাদনার মধ্যে বড় হয়েছি। প্রতিদিন বিকেল হওয়ার আগেই আমি পাড়ার মাঠে ফুটবল খেলতে নেমে পড়তাম। ১৯৭৭ সালে আমি জাতীয় দাবা খেলোয়াড় হয়ে গেছি, কিন্তু ফুটবল খেলা মিস দিতাম না। দাবাগুরু কাজী মোতাহার হোসেন আমার সঙ্গে দাবা খেলতে আসতেন। বাইরে থেকে ফুটবল খেলার আওয়াজ আসত, আর আমার মন ছটফট করত। কিন্তু এমন একজন মনীষী সামনে বসা, আমার কিছু করার থাকত না।
আরও পড়ুনবিচারক ও পাঠকদের রায়ে বর্ষসেরা ক্রীড়াবিদ ঋতুপর্ণা৮ ঘণ্টা আগে১৯৭৬ থেকে ১৯৮০ সালের মধ্যে এমসিসি, ভারতের ডেকান ব্লুজ এবং শ্রীলঙ্কা জাতীয় ক্রিকেট দল বাংলাদেশ সফরে আসে। আমরা এই ম্যাচগুলো মাঠে গিয়ে দেখেছি। এই সময় ক্রিকেটের জনপ্রিয়তা একটু বাড়তে থাকে। রকিবুল হাসান, ইউসুফ রহমান বাবু, জাহাঙ্গীর শাহ বাদশা, শফিকুল হক হীরা প্রমুখ ঘরে ঘরে বেশ পরিচিত নাম হয়ে ওঠেন। হকি তারকা সাব্বির ইউসুফ, আবদুস সাদেক প্রমুখের নাম আমরা শুনেছিলাম, কিন্তু তাঁদের ফুটবলারদের মতো ব্যাপক জনপ্রিয়তা ছিল না। তবে দাবা ফেডারেশনের রুমটা হকি স্টেডিয়ামের উল্টো দিকে হওয়ায় আমরা বারান্দায় দাঁড়িয়ে প্রায়ই হকি খেলা দেখতাম।
সিটি গ্রুপ–প্রথম আলো ক্রীড়া পুরস্কার ২০২৪ অনুষ্ঠানে গান পরিবেশন করেন (বাঁ থেকে) শেখ মোহাম্মদ আসলাম, নিয়াজ মোরশেদ, সাবরিনা সুলতানা ও আসিফ হোসেন