প্রায় পাঁচ বছর পর ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বিএনপির ১৫১ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। এতে প্রকৌশলী খালেদ মাহবুব শ্যামলকে সভাপতি ও সিরাজুল ইসলামকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে। 

শুক্রবার (৯ মে) দুপুরে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের অফিসিয়াল ফেসবুক পেইজে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। 

খালেদ হোসেন কেন্দ্রীয় বিএনপির অর্থনৈতিক বিষয়ক সম্পাদক। তিনি জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য। সম্প্রতি তিনি বুয়েট গ্রাজুয়েট ক্লাবের সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ (সদর ও বিজয়নগর) আসন থেকে একাধিকবার ধানের শীষ প্রতীকে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন। 

আরো পড়ুন:

বিএনপির সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের দ্য কার্টার সেন্টারের প্রতিনিধিদলের বৈঠক

এক কোটির অধিক নতুন সদস্য সংগ্রহে কর্মসূচি ঘোষণা বিএনপির

১৫১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটিতে ৩২ জনকে উপদেষ্টা, ১৮ জনকে সহ-সভাপতি, ৮ জনকে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, ৪ জনকে সাংগঠনিক সম্পাদক ও ৬৮ জনকে সদস্য করা হয়েছে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও আহ্বায়ক কমিটির সদস্য জহিরুল হককে নতুন কমিটিতে জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি, সাবেক সভাপতি হাফিজুর রহমান মোল্লাকে নতুন কমিটিতে ১ নম্বর সদস্য এবং আহ্বায়ক কমিটির সদস্য কবির আহমদ ভুঁইয়াকে ২ নম্বর সদস্য করা হয়েছে। কবির আহমেদ লন্ডনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ব্যক্তিগত সহকারী আবদুর রহমান সানির বড় ভাই। বর্তমান আহ্বায়ক কমিটির আহ্বায়ক আবদুল মান্নানকে নবগঠিত কমিটির তিন নম্বর সদস্য করা হয়েছে। 

কমিটিতে মো.

শফিকুল ইসলাম, গোলাম সারোয়ার, মো. আনিসুল ইসলাম ঠাকুর, মো. আনিসুর রহমান, এবিএম মোমিনুল হক, সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি তরিকুল ইসলাম খান, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি কামরুজ্জামান মামুন, জসীম উদ্দিন, মো. নজির উদ্দিন আহমেদ, মো. মলাই মিয়া, জেলা কৃষক দলের আহ্বায়ক আবু শামীম মো. আরিফ, মেহেদী হাসান, মো. ইলিয়াস, আব্দুল আল-বাকী, শাহজাহান মিয়া, মো. জাকির হোসেন ও চিকিৎসক মো. মেজবাহউদ্দিন চৌধুরীকে সহ-সভাপতি করা হয়েছে। 

মো. আলী আজমকে সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, বেলাল উদ্দিন সরকার, নূরে আলম সিদ্দিকী, মো. আজিম, মো. মনির হোসেন, মাইনুল হোসেন, মো. জামাল হোসেন ও মো. নাজমুল হুদা খন্দকারকে যুগ্ম সম্পাদক করা হয়েছে। 

কোষাধ্যক্ষ পদে মো. মিজানুর রহমান, মো. আসাদুজ্জামান শাহীনকে সাংগঠনিক সম্পাদক, তানিম শাহেদ, মো. শামীম মোল্লা ও আবুল মনসুরকে সাংগঠনিক সম্পাদক, মো. সামসুজ্জামান কাননকে দপ্তর সম্পাদক, মো. মাহিনকে প্রচার সম্পাদক, মো. ফারুক মিয়াকে মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক, মো. আলমগীর হোসেনকে প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক নুরুজ্জামান লস্করকে আইন বিষয়ক সম্পাদক, মিসেস শামসুন্নাহারকে মহিলা বিষয়ক সম্পাদক, মো. নিয়ামুল হককে যুব বিষয়ক সম্পাদক, মো. রাশেদ কবির আখন্দকে ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক, মো. মোস্তফা মিয়াকে শ্রম বিষয়ক সম্পাদক, এইচ এম আবুল বাশারকে স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক, মো. নুরুল হুদা সরকারকে প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক, আরমান উদ্দিনকে তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক, অধ্যাপক মোতাহের হোসেনকে প্রবাসী কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক,  কাজী নাজমুল হোসেনকে অর্থনৈতিক বিষয়ক সম্পাদক করা হয়েছে। 

কমিটিতে মো. সাব্বির হোসেনকে ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক, মো. ইসহাক মিয়াকে মানবাধিকার বিষয়ক সম্পাদক, চিকিৎসক সুপ্রিয় রায়কে স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা বিষয়ক সম্পাদক, মজিবুর রহমানকে পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক, এ কে এম নুরুল হাসান আলমকে শিশু বিষয়ক সম্পাদক, মো. কাওছার কমিশনারকে ত্রাণ ও পুনর্বাসন বিষয়ক সম্পাদক, মো. মহসিন মিয়াকে ক্ষুদ্র ঋণ ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক, মাইনুল হোসেনকে ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক করা হয়েছে।

পাঁচবারের সাবেক সংসদ সদস্য হারুন-আল রশিদ, সাবেক সংসদ সদস্য মুশফিকুর রহমান, সংরক্ষিত আসনের সাবেক সংসদ সদস্য রুমিন ফারহানা, সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুল খালেকসহ ৩২ জনকে উপদেষ্টা করা হয়েছে।

ঢাকা/মনিরুজ্জামান/মাসুদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব এনপ ব র হ মণব ব এনপ র স ক কম ট র র সদস য ল ইসল ম র রহম ন কম ট ত

এছাড়াও পড়ুন:

এ ঘটনা অধ্যাপক ইউনূসের জন্য লজ্জার, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে ক্ষমা চাইতে হবে

যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্যসচিব আখতার হোসেনের ওপর আওয়ামী লীগের নেতা–কর্মীদের ডিম নিক্ষেপের প্রতিবাদে ঢাকায় বিক্ষোভ মিছিল করেছেন দলটির নেতা–কর্মীরা। তাঁরা বলেছেন, এ ঘটনা প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের জন্য লজ্জার। নিরাপত্তা নিশ্চিতে ব্যর্থ হওয়া পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে এ জন্য ক্ষমা চাইতে হবে।

আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে থেকে মিছিলটি শুরু হয়ে বাংলামোটরে এনসিপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এসে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।

নিউইয়র্কে এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেনসহ রাজনীতিবিদদের ওপর আওয়ামী সন্ত্রাসীদের হামলা ও নিরাপত্তা নিশ্চিতে অন্তর্বর্তী সরকারের চরম গাফিলতির প্রতিবাদ এবং দল হিসেবে আওয়ামী লীগের বিচারের দাবিতে এই বিক্ষোভ মিছিলের আয়োজন করে দলটির ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ শাখা।

মিছিলে এনসিপি নেতা–কর্মীদের ‘ওয়ান, টু, থ্রি, ফোর/ আওয়ামী লীগ নো মোর’; ‘আবু সাঈদ মুগ্ধ/ শেষ হয়নি যুদ্ধ’; ‘ইনকিলাব জিন্দাবাদ/ মুজিববাদ মুর্দাবাদ’; ‘দিল্লি না ঢাকা/ ঢাকা ঢাকা’; ‘আওয়ামী লীগের ঠিকানা/ এই বাংলায় হবে না’; ‘আখতারের ওপর হামলা করে/ ইন্টারিম কি করে?’ প্রভৃতি স্লোগান দিতে শোনা যায়।

সংক্ষিপ্ত সমাবেশে এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম, যুগ্ম আহ্বায়ক মনিরা শারমিন বক্তব্য দেন।

নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেন এবং যুগ্ম সদস্যসচিব তাসনিম জারাকে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে নিয়ে গিয়েছেন। কিন্তু সেখানে গিয়ে তাঁদেরকে আওয়ামী লীগের সামনে ছেড়ে দিয়েছেন। এটা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের জন্য লজ্জার। রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের জন্য লজ্জার। এ ঘটনায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে ব্যর্থতার দায় নিয়ে অতিসত্বর বাংলাদেশের মানুষের সামনে এসে ক্ষমা প্রার্থনা করতে হবে।’

এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক বলেন, ‘বাংলাদেশের দূতাবাসগুলোতে এখনো আওয়ামী লীগের সাঙ্গপাঙ্গরা রয়েছে। অতিদ্রুত সিভিল সার্ভিস থেকে, সেনাবাহিনী থেকে, রাষ্ট্রের বিভিন্ন অঙ্গপ্রতিষ্ঠান থেকে আওয়ামী লীগের গুন্ডা বাহিনীদের অপসারণ করতে হবে। যদি অপসারণ করতে না পারেন, তাহলে ইউনূস সরকার বর্তমান যে অবস্থায় রয়েছে, তারা কত দিন ক্ষমতায় টিকবে সেই নিশ্চয়তা আমরা দিতে পারি না।’

নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, ‘আজকে আমাদের বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল সাহেবের একটি বক্তব্য দৃষ্টিগোচর হয়েছে। সেখানে তিনি বলেছেন, আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগ এবং জাতীয় পার্টিকে নিয়ে আসতে চায়। এ বক্তব্য জাতি হিসেবে আমাদের জন্য লজ্জার।...আমরা এখনো বিশ্বাস করি, বাংলাদেশের শহীদ জিয়ার সৈনিকেরা মির্জা ফখরুলের এই বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করবেন।’

জামায়াতে ইসলামীর উদ্দেশে এনসিপির এই নেতা বলেন, ‘জামায়াতে ইসলামীকে যখন রাজাকার বলে, পাকিস্তানি ট্যাগ দিয়ে অলিগলিতে পেটানো হয়েছে, তখন আমরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তাদের পক্ষে দাঁড়িয়েছিলাম। কিন্তু আজকে যখন গণ–অভ্যুত্থানের নেতাদের ওপর হামলা হচ্ছে, বাংলাদেশের অলিগলিতে আওয়ামী লীগ ঘোরাফেরা করছে, তখন তারা মুখে কুলুপ বসিয়েছে।’

দলীয় প্রতীক হিসেবে শাপলা পাওয়া নিয়ে এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক বলেন, ‘আমরা যখন নিবন্ধন কর্মসূচির সব কাজ সম্পন্ন করেছি, নির্বাচন কমিশনের কাছে গিয়ে আমরা বলেছিলাম, শাপলা প্রতীক পেতে আইনি কোনো বাধা আছে? তারা আমাদের প্রশ্নের উত্তর দিয়েছে, আইনি কোনো বাধা নেই। কিন্তু কেন প্রতীক পাব না, সেই প্রশ্নে তারাও মুখে কুলুপ এঁটেছে। আমরা সব জায়গায় ষড়যন্ত্রের গন্ধ পাচ্ছি।’

আরও পড়ুননিউইয়র্কে এনসিপি নেতা আখতারকে হেনস্তা করলেন আওয়ামী লীগ নেতা–কর্মীরা, ডিম নিক্ষেপ১৩ ঘণ্টা আগে

তাসনিম জারাকে কটূক্তির প্রতিবাদ জানিয়ে এনসিপির মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম বলেন, ‘চব্বিশের গণ–অভ্যুত্থানের সবচেয়ে বড় শক্তি ছিল আমাদের বোনেরা। রাজপথে সামনে সারিতে দাঁড়িয়ে তাঁরা আওয়ামী লীগকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়েছিল। রক্ত দিয়ে স্বৈরাচারের পতন ঘটিয়েছিলেন। এখন সেই আওয়ামী লীগ দেশছাড়া হয়ে আমাদের বোনদের আক্রমণ করা শুরু করেছে। কারণ তারা জানে, আমাদের বোনেরা যদি তাদের বিরুদ্ধে দাঁড়ান, আমাদের বোনেরা যদি তাঁদের কণ্ঠস্বর সোচ্চার রাখেন, তাহলে এই বাংলাদেশে ওই খুনিদের আর জায়গা হবে না।’

বাংলাদেশে কোনো ‘রিফাইন্ড’ আওয়ামী লীগের জায়গা হবে না মন্তব্য করে সারজিস আলম বলেন, ‘আগামীর বাংলাদেশে যেকোনো ফরম্যাটে রিফাইন্ড আওয়ামী লীগকে আমরা আশ্রয় পেতে দেব না। আমরা আগামীর বাংলাদেশকে রিফাইন্ড বাংলাদেশের দিকে নিয়ে যাব, যেই বাংলাদেশে কোনো ফ্যাসিস্ট কিংবা ফ্যাসিস্টের দোসরের জায়গা হবে না।’

আরও পড়ুনআখতারকে ডিম নিক্ষেপ: নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থতার জন্য দায়ী কর্মকর্তাদের শাস্তি চায় এনসিপি৬ ঘণ্টা আগে

সম্পর্কিত নিবন্ধ