ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে তীব্র উত্তেজনা ও সীমান্ত অঞ্চলে হামলার আশঙ্কায় দিল্লির বিমানবন্দরে আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীন মিলে ১৩৮টি ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে। শুক্রবার ভোর ৫ টা থেকে দুপুর ২ টার মধ্যে ফ্লাইটগুলো বাতিল হয়।
বাতিল হওয়া ফ্লাইটগুলোর মধ্যে ৬৬টি বহির্গামী অভ্যন্তরীন ফ্লাইট এবং ৬৩টি আগত অভ্যন্তরীন ফ্লাইট, ৫টি বহির্গামী আন্তর্জাতিক ফ্লাইট এবং ৪টি আগত আন্তর্জাতিক ফ্লাইট। খবর দ্য হিন্দুর
কাশ্মীরে গত ২২ এপ্রিলের জঙ্গি হামলার প্রতিশোধ হিসেবে ‘অপারেশন সিন্দুর’ অভিযানে বুধবার পাকিস্তান ও পাকিস্তান-শাসিত কাশ্মীরে সন্ত্রাসী ঘাঁটিতে হামলা চালায় ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনী।
এই প্রত্যাঘাতের পর উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার ভারতের ২৭টি বিমানবন্দর বন্ধের কথা ঘোষণা করা হয়। এর মধ্যে আছে চণ্ডীগড়, শ্রীনগর, অমৃতসরসহ বিভিন্ন স্থানের বিমানবন্দর।
শনিবার বিকাল পর্যন্ত এই বিমানবন্দরগুলো বন্ধ থাকবে। সেকারণে অনেক ফ্লাইটিই বাতিল হয়ে গেছে। সাম্প্রতিক উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতির কথা বিবেচনা করে দিল্লি বিমানবন্দরে নিরাপত্তা কয়েক গুণ বাড়ানো হয়েছে। চলছে বাড়তি তল্লাশি।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
এন্নিও মোররিকোনে, শোনাতেন ছুটন্ত ঘোড়ার খুরের সুর
বাংলা সিনেমার এক টিপিক্যাল দৃশ্য দিয়ে শুরু করা যাক। ধরলাম, সিনেমার নায়ক জসিম। পাহাড়ের পাদতলে ঘোড়া ছুটিয়ে তিনি ছুটে যাচ্ছেন ভিলেন জাম্বুকে পাকড়াও করতে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক বাজছে। এক ভুতুড়ে-রহস্যময় সুর। ড্রামের মৃদু তালে তালে ঠোঁটের শিস। ট্রাম্পেটের ঢেউ। কখনো সেই সুর মিলিয়ে যাচ্ছে হ্রেষায়, কখনো খুরের টগবগে (সুরকে যদি ভাষায় প্রকাশ করা যেত!)। ক্ষণে ক্ষণে গা শিউরে উঠছে দৃশ্য ও সুরের পরম্পরায়, ঘটনার উত্তেজনায়। কিন্তু তখন কি জানতাম, বাংলা সিনেমায় এমন জাদুকরি সুর নেওয়া হয়েছে ‘দ্য গুড, দ্য ব্যাড অ্যান্ড দ্য আগলি’ থেকে!
কিংবদন্তি ইতালিয়ান কম্পোজার প্রয়াত এন্নিও মোররিকোনের এই ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোর বিশ্ব সিনেমার জগতে অনন্য হয়ে থাকবে সব সময়। তেমনি ‘স্পেগেত্তি ওয়েস্টার্নের’ স্রষ্টা সার্জিও লিওনের ‘ডলার্স ট্রিলজি’। ‘দ্য গুড, দ্য ব্যাড অ্যান্ড দ্য আগলি’র শেষ দৃশ্যে কবরস্থানে যখন ত্রিমুখী হয়ে বন্দুক হাতে ‘ম্যান উইথ নো নেম’ (ক্লিন্ট ইস্টউড), ‘টুকো’ (এলি ওয়ালাচ) ও ‘অ্যাঞ্জেল আইস’ (লি ফন ক্লিফ) দাঁড়ায়, তখন ব্যাকগ্রাউন্ডে বাজতে থাকে সেই বিখ্যাত সাসপেন্স-থ্রিলারমাখা সুর। সেই সুরের কথাই বলেছি মূলত শুরুতে। মোররিকোনের মিউজিক কেবল ঢালিউডে নয়; বলিউডের বহু চলচ্চিত্রেও হুবহু ব্যবহার করা হয়েছে। ‘ডলার্স’ সিরিজসহ লিওনের আরও দুই মাস্টারপিস ছবি ‘ওয়ানস আপন আ টাইম ইন ওয়েস্ট’ ও ‘ওয়ানস আপন আ টাইম ইন আমেরিকা’র মিউজিকও কম্পোজ করেন মোররিকোনে।
চলচ্চিত্রের শুরুর দিককার সময় কোনো সুর ছিল না। নির্বাক যুগ পেরিয়ে সিনেমা এখন এত দূর বিস্তৃত, যা এক শতকের মধ্যেই শিল্পের সবচেয়ে প্রভাবশালী মাধ্যম হয়ে উঠেছে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক ছাড়া তো এখন সিনেমার কথা চিন্তাই করা যায় না!চলচ্চিত্রের শুরুর দিককার সময় কোনো সুর ছিল না। নির্বাক যুগ পেরিয়ে সিনেমা এখন এত দূর বিস্তৃত, যা এক শতকের মধ্যেই শিল্পের সবচেয়ে প্রভাবশালী মাধ্যম হয়ে উঠেছে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক ছাড়া তো এখন সিনেমার কথা চিন্তাই করা যায় না! এখন দর্শক কেবল পর্দার দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করে বসে থাকেন না; কানকেও কাজে লাগান সিনেমাবোধের জন্য। কাহিনিকে যদি আমার শরীর ধরি, তবে অভিনয় হচ্ছে সিনেমার প্রাণ। আর সংগীত যেন এই দুইয়ের সংযোগস্থল। কাহিনি ও অভিনয়কে আরও বেগবান করে তোলে সংগীত।
এন্নিও মোররিকোনে (১০ নভেম্বর ১৯২৮—৬ জুলাই ২০২০)