ভারতীয় সেনাঘাঁটি ও বেসামরিক স্থাপনা লক্ষ্য করে পাকিস্তানের চালানো আক্রমণের যোগ্য জবাব দেওয়া হয়েছে বলে ভারত সরকারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে। আজ শনিবার সকালে পররাষ্ট্র ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে দাবি করা হয়, পাকিস্তানের হামলার জবাবে ভারত আক্রমণ চালিয়েছে রফিকি, মুরিদ, চাকওয়ালা, নূর খান, সুক্কুর, চুনিয়া, পসরুর ও শিয়ালকোটের বিমান ও সেনাঘাঁটিতে। এ হামলায় পাকিস্তানের প্রভূত ক্ষতি হয়েছে।

ভারতীয় কর্তৃপক্ষ দাবি করছে, এ আক্রমণ চালানোর সময় সাধারণ নাগরিকদের যাতে ক্ষতি না হয়, সেদিকে বিশেষ দৃষ্টি দেওয়া হয়েছিল।

আজ শনিবার বেলা ১১টা নাগাদ এ সংবাদ সম্মেলন করেন ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রি, উইং কমান্ডার ব্যোমিকা সিং ও কর্নেল সোফিয়া কুরেশি।

যৌথ সংবাদ সম্মেলনে সোফিয়া দাবি করেন, আজ শনিবার ভোরে প্রথম আক্রমণ চালায় পাকিস্তান। শুক্রবার রাত ১টা ৪০ মিনিটের দিকে তারা পশ্চিম সীমান্তের বিভিন্ন সামরিক ঘাঁটি লক্ষ্য করে ড্রোন, ক্ষেপণাস্ত্র ও যুদ্ধবিমান থেকে আক্রমণ চালায়। উধমপুর, ভাটিন্ডা, ভূজ, পাঠানকোটের বায়ুসেনাঘাঁটিগুলো ছিল সেই আক্রমণের লক্ষ্য। মোট ২৬টি এলাকায় আক্রমণ চালানো হলেও ভারতীয় সেনাবাহিনী অধিকাংশ হামলা নিষ্ক্রিয় করেছে।

তবে সোফিয়া বলেন, পাকিস্তানের হামলায় আদমপুর, ভাটিন্ডা ও উধমপুরে সামান্য কিছু ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

ব্রিফিংয়ে দাবি করা হয়, শ্রীনগর, অবন্তিপুরা, উধমপুরসহ কিছু এলাকায় পাকিস্তানি বাহিনী হাসপাতাল ও বেসামরিক মানুষের ঘরবাড়ি লক্ষ্য করে আক্রমণ চালিয়েছে।

পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রি বলেন, হামলায় রাজৌরির অতিরিক্ত জেলা কমিশনার রাজ কুমার থাপা এবং আরও দুজন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন।

ভারত সরকারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, নিয়ন্ত্রণরেখা ও আন্তর্জাতিক সীমান্ত বরাবর পাকিস্তান তার সেনাবাহিনীর বহর বাড়িয়েছে। পাকিস্তান ইচ্ছা করে ধর্মীয় স্থানের ওপরেও আক্রমণ চালাচ্ছে, যাতে ভারতে বিভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে সংঘাত সৃষ্টি হয়।

বিক্রম মিশ্রি ব্রিফিংয়ে দাবি করেন, পাকিস্তান সরকারের পক্ষ থেকে নানা ভুয়া প্রচার চালানো হচ্ছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোতেও চলছে সেই মিথ্যা প্রচার। যেমন তারা নাকি রাজস্থানের সুরতগড় ও হরিয়ানার সিরসায় বিমানবাহিনীর ঘাঁটি গুড়িয়ে দিয়েছে। উত্তর প্রদেশের আজমগড়ের সেনাঘাঁটিতে হামলা চালিয়েছে। আদমপুরে এস–৪০০–এর ঘাঁটি তছনছ করে দিয়েছে। এমনকি এ প্রচারও চালানো হয়েছে, ভারত ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে আফগানিস্তানেও।

বিক্রম মিশ্রি আরও দাবি করেন, পাকিস্তানের পক্ষ থেকে করা প্রতিটি দাবিই ভুয়া, অসত্য। পাকিস্তানের এই মিথ্যা প্রচারের প্রমাণে সংবাদ সম্মেলনে ওই সব সেনা ও বিমানবাহিনীর ঘাঁটি, তার রানওয়ের ছবিও প্রকাশ করা হয়। প্রতিটি ছবিই আজ শনিবার সকালে তোলা।

একই সঙ্গে পাকিস্তানি বিমান ও সেনাঘাঁটির ওপর ভারতীয় আক্রমণের ভিডিও দেখানো হয়।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: লক ষ য

এছাড়াও পড়ুন:

রায়কে ‘পক্ষপাতদুষ্ট ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ বললেন শেখ হাসিনা

বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রায়কে ‌‌পক্ষপাতদুষ্ট ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে নিন্দা জানিয়েছেন।

সোমবার (১৭ নভেম্বর) রায়ের পর প্রকাশিত পাঁচ পৃষ্ঠার এক বিবৃতিতে তিনি বলেছেন, “আওয়ামী লীগকে রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে নিস্ক্রিয় করে দিতে অন্তর্বর্তী সরকারের একটি পন্থা হচ্ছে তাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া।”

আরো পড়ুন:

হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায় ‘অতীতের প্রতিশোধ নয়’: প্রধান কৌঁসুলি

এই রায়ে কষ্ট পেয়েছি: শেখ হাসিনার আইনজীবী

ভারতে অবস্থানরত শেখ হাসিনা এর আগে এ বিচার প্রক্রিয়াকে ‘প্রহসন’ বলে অভিহিত করেছিলেন এবং তার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ অস্বীকার করেছিলেন।

তিনি বলেন, “এমন একটি ট্রাইব্যুনাল যেখানে ন্যায্যভাবে অভিযোগ যাচাই ও পরীক্ষা করা হয়, সেখানে অভিযোগকারীদের মুখোমুখি হতে আমি ভয় পাই না।”

তিনি আরো যোগ করেন, তিনি অন্তর্বর্তী সরকারকে চ্যালেঞ্জ করেছেন, এই অভিযোগগুলো হেগে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে নিয়ে যেতে।

শেখ হাসিনা উল্লেখ করেন, তিনি তার মানবাধিকার ও উন্নয়ন সংক্রান্ত রেকর্ড নিয়ে অত্যন্ত গর্বিত।

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে করা মামলার রায় দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। দুটি অভিযোগে তাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে রায় ঘোষণার কার্যক্রম শুরু হয়। ৪৫৩ পৃষ্ঠার এই রায়ে ছয়টি অংশ রয়েছে।

রায়ে ট্রাইব্যুনাল বলেছেন, শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির অপরাধ প্রমাণিত। দুটি অভিযোগে শেখ হাসিনাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

একটি অভিযোগে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। অ্যাপ্রুভার (রাজসাক্ষী) হওয়ায় পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল–মামুনকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

তথ্যসূত্র: বিবিসি অনলাইন

ঢাকা/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ