পাকিস্তানের সঙ্গে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে ভারত—দেশটির পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রি গত শনিবার এক সংক্ষিপ্ত ব্রিফিংয়ে এ খবর জানিয়েছিলেন। পরদিন থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভয়ংকর ট্রলের শিকার হচ্ছেন তিনি ও তাঁর পরিবার।

এই পরিস্থিতিতে পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রি ও তাঁর পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছে ভারতের প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের সংগঠন আইএএস। তাঁরা বিক্রম মিশ্রির প্রতি সংহতি প্রকাশ করে বলেছেন, তিনি ‘অন্যায়ভাবে ব্যক্তিগত আক্রমণের’ শিকার হচ্ছেন।

আইএএসের পক্ষ থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) এক পোস্টে বলা হয়, ‘সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করা প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের ওপর অন্যায়ভাবে ব্যক্তিগত আক্রমণ অত্যন্ত দুঃখজনক। রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পালনের মর্যাদা রক্ষায় আমরা আমাদের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করছি।’

ইন্ডিয়ান পুলিশ সার্ভিস (আইপিএস) থেকেও বিক্রম মিশ্রির ওপর ব্যক্তিগত আক্রমণের নিন্দা জানানো হয়েছে। এক্সে এক পোস্টে আইপিএস বলেছে, আইপিএস স্পষ্ট ভাষায় পররাষ্ট্রসচিব শ্রী বিক্রম মিশ্রি এবং তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে দুঃখজনক ব্যক্তিগত আক্রমণের নিন্দা জানায়। নিজেদের কর্তব্যের প্রতি নিষ্ঠাবান প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে এমন অন্যায় আক্রমণ সম্পূর্ণরূপে অগ্রহণযোগ্য।

দ্য হিন্দুর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পাকিস্তানের সঙ্গে ভারতের যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হওয়ার খবর জানানোর পর বিক্রম মিশ্রির ব্যক্তিগত এক্স অ্যাকাউন্টের মন্তব্যের ঘর অশ্লীল ও আক্রমণাত্মক মন্তব্যে ভরে ওঠে। বেশির ভাগ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারকারী পাকিস্তানের সঙ্গে একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে উপনীত হওয়ার জন্য তাঁকে দায়ী করে মন্তব্য করেছেন।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারকারীরা এমনকি বিক্রম মিশ্রির মেয়েকে নিয়েও অবমাননাকর মন্তব্য করেছেন। এর পর থেকে এই ভারতীয় কর্মকর্তা তাঁর পাবলিক অ্যাকাউন্ট ‘লক’ করে রেখেছেন।আরও পড়ুনভারতও নিশ্চিত করল, দুই দেশ যুদ্ধবিরতিতে সম্মত১০ মে ২০২৫

ব্যবহারকারীরা এমনকি বিক্রম মিশ্রির মেয়েকে নিয়েও অবমাননাকর মন্তব্য করেন। এর পর থেকে এই ভারতীয় কর্মকর্তা তাঁর পাবলিক অ্যাকাউন্ট ‘লক’ করে রেখেছেন।

নিখিল ভারত মজলিশ-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমিনের (এআইএমআইএম) প্রধান এবং ভারতের লোকসভার সদস্য আসাদউদ্দিন ওয়াইসি এ বিষয়ে এক্সে এক পোস্টে লিখেছেন, ‘এটি মনে রাখা জরুরি, আমাদের প্রশাসনিক কর্মকর্তারা কার্যনির্বাহী বিভাগের অধীনে কাজ করেন এবং কার্যনির্বাহী বা যেকোনো রাজনৈতিক নেতৃত্ব, যাঁরা ওতান-ই-আজিজ পরিচালনা করছেন, তাঁদের নেওয়া সিদ্ধান্তের জন্য প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের দায়ী করা উচিত নয়।’

কংগ্রেস নেতা শচীন পাইলটও পররাষ্ট্রসচিব এবং তাঁর পরিবারকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ট্রল করার ঘটনার সমালোচনা করেছেন।

‘এটি মনে রাখা জরুরি যে আমাদের প্রশাসনিক কর্মকর্তারা কার্যনির্বাহী বিভাগের অধীনে কাজ করেন এবং কার্যনির্বাহী বা যেকোনো রাজনৈতিক নেতৃত্ব, যাঁরা ওতান-ই-আজিজ পরিচালনা করছেন, তাঁদের নেওয়া সিদ্ধান্তের জন্য প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের দায়ী করা উচিত না।’আসাদউদ্দিন ওয়াইসি, এআইএমআইএম প্রধান এবং ভারতের লোকসভার সদস্য

এক্সে এক পোস্টে শচীন পাইলট লিখেছেন, ‘আমাদের পেশাদার কূটনীতিক এবং প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের লক্ষ্যবস্তু করা অগ্রহণযোগ্য। তাঁরা দেশসেবায় নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করেন।’

আরও কয়েকজন পার্লামেন্ট সদস্য ও শীর্ষস্থানীয় সরকারি কর্মকর্তা পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রির প্রতি সংহতি প্রকাশ করেছেন এবং তাঁকে ট্রল করা ব্যক্তিদের সমালোচনা করেছেন।

আরও পড়ুনযুদ্ধবিরতি বারবার লঙ্ঘন করছে পাকিস্তান: ভারত১০ মে ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: এক প স ট র পর ব র কর ছ ন আম দ র

এছাড়াও পড়ুন:

দলের দুই পক্ষের বিরোধ মেটাতে যাচ্ছিলেন সালিস বৈঠকে, পথে দুর্ঘটনায় মৃত্যু বিএনপি নেতার

দলের দুটি পক্ষের মধ্যে হাতিহাতি ও সংঘর্ষের ঘটনায় বিরোধ মীমাংসায় ডাকা হয়েছিল সালিস বৈঠক। সে বৈঠকে যোগ দিতে যাচ্ছিলেন ফেনীর পরশুরামের বিএনপি নেতা পারভেজ মজুমদার (৫৮)। পথে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান তিনি। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন তাঁর এক সহযোগী।

পারভেজ মজুমদার ফেনীর পরশুরাম উপজেলার মির্জানগর ইউনিয়নের নিজকালিকাপুর গ্রামের সাদেক মজুমদারের ছেলে। তিনি উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ছিলেন।

পুলিশ ও নিহত ব্যক্তির পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রোববার দুপুরে নিজকালিকাপুর গ্রামে নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনকে কেন্দ্র করে স্থানীয় বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি ও মারামারির ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় উভয় পক্ষের চারজন আহত হন। সংঘর্ষের ঘটনাকে কেন্দ্র করে পরশুরাম উপজেলা সদরে সন্ধ্যায় একটি সালিস বৈঠকে উদ্যোগ নেওয়া হয়। সালিসে যোগ দিতে স্থানীয় বিএনপি নেতা পারভেজ মজুমদার ও তাঁর সহযোগী মোহাম্মদ হারুন মোটরসাইকেলে নিজকালিকাপুর থেকে পরশুরাম যাচ্ছিলেন। তাঁদের বহন করা মোটরসাইকেলটি সুবার বাজার-পরশুরাম সড়কের কাউতলী রাস্তার মাথায় পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে মোটরসাইকেল আরোহী দুজন গুরুতর আহত হন।

স্থানীয় লোকজন তাদের উদ্ধার করে প্রথমে পরশুরাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স পরে ফেনীর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। পারভেজের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় চিকিৎসকের পরামর্শে পরিবারের সদস্যরা রাতে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দিলে পথে তাঁর মৃত্যু হয়।

পরশুরাম মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নুরুল হাকিম মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় বিএনপি নেতা পারভেজ মজুমদারের মৃত্যুর সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, নিহত ব্যক্তির পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ না থাকায় বিনা ময়নাতদন্তে মরদেহ বাড়ি নিয়ে যায় স্বজনরা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ