কুমিল্লার লালমাই উপজেলায় একটি মেছো বিড়াল উদ্ধার করেছেন জেলার সামাজিক বন বিভাগের লোকজন। আজ সোমবার বিকেলে উপজেলার পেরুল উত্তর ইউনিয়নের জগৎপুর উত্তর পাড়া এলাকা থেকে প্রাণীটিকে উদ্ধার করে লালমাই উদ্ভিদ উদ্যানে নেওয়া হয়েছে। পরে সুবিধাজনক সময়ে এটিকে সেখানে অবমুক্ত করা হবে।

গতকাল রোববার বিকেলে উপজেলার জগৎপুর উত্তর পাড়া এলাকায় বিড়ালটিকে প্রথম দেখতে পান উত্তর পাড়া এলাকার ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার চালক নুরুন্নবী। তিনি গ্রামবাসীর সহায়তায় এটিকে আটক করে কবুতরের খাঁচায় বন্দী করে রাখেন। পরে পারিবারিকভাবে লালন-পালন করতে এটিকে বাড়িতে নিয়ে যান নুরুন্নবীর ভাই অলি উল্যাহ।

নুরুন্নবী বলেন, গতকাল বিকেলে তিনি বাড়ির পাশের ফসলি জমিতে ঘাস কাটছিলেন। হঠাৎ মেছো বিড়ালটিকে পাশ দিয়ে হেঁটে যেতে দেখেন। বাঘ ভেবে এটিকে ধাওয়া দিয়ে কয়েকজনের সহযোগিতায় আটক করেন তিনি। তবে তাঁরা বিড়ালটির কোনো ক্ষতি করেননি বলে দাবি করেছেন।

স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা জানান, বিড়ালটিকে একটি পাত্রে মুরগির মাংস খাওয়ার জন্য দেওয়া হয়। তবে এটি কোনো খাবারই খাচ্ছিল না। বাঘ ভেবে অনেকেই প্রাণীটিকে দেখতে ছুটে আসছিলেন।

প্রাণীটিকে পারিবারিকভাবে লালন-পালনের ইচ্ছা পোষণ করেছিলেন অলি উল্যাহ। তিনি বলেন, ‘সরকারি কোনো সংস্থা না নিলে অথবা আইনি বাধা না থাকলে আমি বিড়ালটিকে স্থায়ীভাবে পালন করব বলে ভেবেছিলাম। কিন্তু বিড়ালটিকে নিয়ে গেছেন বন বিভাগের লোকজন।’

লালমাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হিমাদ্রী খীসা জানান, বন বিভাগের কর্মকর্তাদের জানানোর পর তাঁরা দ্রুত বিড়ালটি উদ্ধার করতে যান। উদ্ধারের পর সুস্থতা সাপেক্ষে এটিকে বনে ছেড়ে হবে।

কুমিল্লা সামাজিক বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা জি এম মোহাম্মদ কবির বলেন, আজ বিকেলে মেছো বিড়ালটি উদ্ধারের পর এটিকে লালমাই উদ্ভিদ উদ্যানে নেওয়া হয়েছে। পরে সুবিধাজনক সময়ে এটিকে অবমুক্ত করা হবে।

মোছো বিড়াল পরিবেশের উপকারী প্রাণী। জাতে বিড়াল হলেও অনেকেই প্রাণীটিকে ‘মেছো বাঘ’ নামে চেনেন। এই বাঘ পরিচিতিই প্রাণীটিকে বিপদে ফেলেছে। মানুষ প্রাণীটিকে দেখলেই আতঙ্কিত হয়ে পড়ছেন। প্রাণীটির প্রধান খাবার মাছ হলেও গৃহপালিত হাঁস-মুরগি খোয়া গেলেই মানুষ প্রাণীটির ওপর ক্ষোভ ঝাড়েন। কেউ কেউ ধাওয়া দিয়ে মেরে ফেলেন। কেউ ফাঁদ পেতে খাঁচাবন্দী করছেন। বন্য প্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন ২০১২ অনুযায়ী, মেছো বিড়াল ফাঁদ পেতে ধরা, হত্যা, পাচার কিংবা ক্রয়-বিক্রয় আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: বন ব ভ গ র উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

শেখ হাসিনাকে কোনো অবস্থাতেই ফেরত পাঠাবে না ভারত: রাজনৈতিক বিশ্লেষ

২০২৪ সালের জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় ক্ষমতাচ্যুত পলাতক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণা করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। মামলার অপর আসামি সাবেক পুলিশ প্রধান চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে দেওয়া হয়েছে পাঁচ বছরের সাজা।

গণ-অভ্যুত্থানের মুখে ২০২৪ সালের আগস্টে ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা এবং এরপর থেকে তিনি ভারত সরকারের আশ্রয়েই রয়েছেন। ঢাকার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ শেখ হাসিনার অনুপস্থিতি তার বিচার পরিচালনা করে। আজ সোমবার রায় ঘোষণার সময় আসামিদের মধ্যে কেবল সাবেক পুলিশ প্রধান আবদুল্লাহ আল-মামুন আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায় নিয়ে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরাকে প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন ভারতের জিন্দাল গ্লোবাল বিশ্ববিদ্যালয়ের দক্ষিণ এশিয়ান স্টাডিজের বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক শ্রীরাধা দত্ত। তিনি বলেন, “হাসিনার বিরুদ্ধে বাংলাদেশের আদালতের এই রায় প্রত্যাশিত ছিল, কিন্তু সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠাবে না ভারত।” 

আলজাজিরাকে দেওয়া মন্তব্যে দত্ত আরো বলেন, “কোনো অবস্থাতেই ভারত তাকে প্রত্যর্পণ করবে না। গত দেড় বছরে আমরা দেখেছি যে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে সম্পর্ক সবচেয়ে ভালো অবস্থায় নেই এবং অনেক সময়ই ভঙ্গুর হয়ে পড়েছে।”

দত্ত বলেন, “হাসিনার মৃত্যুদণ্ড প্রত্যাশিত ছিল।”

তিনি বলেন, “সবাই বাংলাদেশের পরিস্থিতি দেখেছেন। সবাই আশা করেছিলেন যে হাসিনার বিচার হবে। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার পর্যবেক্ষকরা একমত যে, বাংলাদেশে ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রম দেশের আইনি ব্যবস্থা অনুসরণ করেছে।”

দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক এই রাজনৈতিক বিশ্লেষকের মতে, “নিরস্ত্র শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে সংঘটিত অপরাধ সম্পর্কে কারো সন্দেহ নেই। স্পষ্ট প্রমাণ রয়েছে যে, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী সরাসরি গুলি করার নির্দেশ দিয়েছিলেন।”

দত্তের ভাষ্যমতে, “আওয়ামী লীগ এখন একটি পাল্টা ব্যাখ্যা তৈরির তৈরি করার চেষ্টা করবে। কিন্তু বাংলাদেশিরা মূলত বিশ্বাস করেন যে- হাসিনা মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছেন।”

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ