বাড়িতে পালনের জন্য খাঁচায় আটকে রাখা হয় মেছো বিড়াল, পরে উদ্ধার
Published: 12th, May 2025 GMT
কুমিল্লার লালমাই উপজেলায় একটি মেছো বিড়াল উদ্ধার করেছেন জেলার সামাজিক বন বিভাগের লোকজন। আজ সোমবার বিকেলে উপজেলার পেরুল উত্তর ইউনিয়নের জগৎপুর উত্তর পাড়া এলাকা থেকে প্রাণীটিকে উদ্ধার করে লালমাই উদ্ভিদ উদ্যানে নেওয়া হয়েছে। পরে সুবিধাজনক সময়ে এটিকে সেখানে অবমুক্ত করা হবে।
গতকাল রোববার বিকেলে উপজেলার জগৎপুর উত্তর পাড়া এলাকায় বিড়ালটিকে প্রথম দেখতে পান উত্তর পাড়া এলাকার ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার চালক নুরুন্নবী। তিনি গ্রামবাসীর সহায়তায় এটিকে আটক করে কবুতরের খাঁচায় বন্দী করে রাখেন। পরে পারিবারিকভাবে লালন-পালন করতে এটিকে বাড়িতে নিয়ে যান নুরুন্নবীর ভাই অলি উল্যাহ।
নুরুন্নবী বলেন, গতকাল বিকেলে তিনি বাড়ির পাশের ফসলি জমিতে ঘাস কাটছিলেন। হঠাৎ মেছো বিড়ালটিকে পাশ দিয়ে হেঁটে যেতে দেখেন। বাঘ ভেবে এটিকে ধাওয়া দিয়ে কয়েকজনের সহযোগিতায় আটক করেন তিনি। তবে তাঁরা বিড়ালটির কোনো ক্ষতি করেননি বলে দাবি করেছেন।
স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা জানান, বিড়ালটিকে একটি পাত্রে মুরগির মাংস খাওয়ার জন্য দেওয়া হয়। তবে এটি কোনো খাবারই খাচ্ছিল না। বাঘ ভেবে অনেকেই প্রাণীটিকে দেখতে ছুটে আসছিলেন।
প্রাণীটিকে পারিবারিকভাবে লালন-পালনের ইচ্ছা পোষণ করেছিলেন অলি উল্যাহ। তিনি বলেন, ‘সরকারি কোনো সংস্থা না নিলে অথবা আইনি বাধা না থাকলে আমি বিড়ালটিকে স্থায়ীভাবে পালন করব বলে ভেবেছিলাম। কিন্তু বিড়ালটিকে নিয়ে গেছেন বন বিভাগের লোকজন।’
লালমাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হিমাদ্রী খীসা জানান, বন বিভাগের কর্মকর্তাদের জানানোর পর তাঁরা দ্রুত বিড়ালটি উদ্ধার করতে যান। উদ্ধারের পর সুস্থতা সাপেক্ষে এটিকে বনে ছেড়ে হবে।
কুমিল্লা সামাজিক বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা জি এম মোহাম্মদ কবির বলেন, আজ বিকেলে মেছো বিড়ালটি উদ্ধারের পর এটিকে লালমাই উদ্ভিদ উদ্যানে নেওয়া হয়েছে। পরে সুবিধাজনক সময়ে এটিকে অবমুক্ত করা হবে।
মোছো বিড়াল পরিবেশের উপকারী প্রাণী। জাতে বিড়াল হলেও অনেকেই প্রাণীটিকে ‘মেছো বাঘ’ নামে চেনেন। এই বাঘ পরিচিতিই প্রাণীটিকে বিপদে ফেলেছে। মানুষ প্রাণীটিকে দেখলেই আতঙ্কিত হয়ে পড়ছেন। প্রাণীটির প্রধান খাবার মাছ হলেও গৃহপালিত হাঁস-মুরগি খোয়া গেলেই মানুষ প্রাণীটির ওপর ক্ষোভ ঝাড়েন। কেউ কেউ ধাওয়া দিয়ে মেরে ফেলেন। কেউ ফাঁদ পেতে খাঁচাবন্দী করছেন। বন্য প্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন ২০১২ অনুযায়ী, মেছো বিড়াল ফাঁদ পেতে ধরা, হত্যা, পাচার কিংবা ক্রয়-বিক্রয় আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: বন ব ভ গ র উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
চট্টগ্রামে ট্রাকের নিচে পড়ে প্রাণ গেল জামায়াত নেতার
চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলা থেকে নগরে ফেরার পথে সড়ক দুর্ঘটনায় জামায়াতে ইসলামীর ইউনিয়ন পর্যায়ের এক নেতার মৃত্যু হয়েছে। তাঁর নাম জি এম ইলিয়াস (৬০)। গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাত একটার দিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়।
জি এম ইলিয়াসের বাড়ি ফটিকছড়ি উপজেলার পাইন্দং ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বেড়াজালী গ্রামে। তবে তিনি সুয়াবিল ইউনিয়ন জামায়াতে ইসলামীর সভাপতি ছিলেন। মৃত্যুর বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন জি এম ইলিয়াসের ভাতিজা শহিদুল্লাহ তালুকদার। তিনি প্রথম আলোকে জানান, নগরের বাকলিয়ার রসুলবাগ আবাসিক এলাকার একটি ভাড়া বাসায় থাকতেন জি এম ইলিয়াস। তাঁর মেয়ে এবার উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছেন। ছেলে অষ্টম শ্রেণিতে পড়ছে। পেশায় তিনি ছিলেন মাদ্রাসা শিক্ষক ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী।
শহিদুল্লাহ বলেন, গতকাল সন্ধ্যায় ফটিকছড়ির গ্রামের বাড়ি থেকে মোটরসাইকেলে নগরে ফিরছিলেন জি এম ইলিয়াস। নগরের আমানবাজার এলাকায় এলে একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা হঠাৎ তাঁর সামনে পড়ে যায়। এটি অতিক্রম করতে গিয়ে পাশ দিয়ে আসা ট্রাকের চাপায় তিনি গুরুতর আহত হন। তাঁকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে রাত একটার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় জি এম ইলিয়াসের মৃত্যু হয়েছে।
জি এম ইলিয়াস জামায়াতে ইসলামীর ফটিকছড়ির সুয়াবিল ইউনিয়নের সভাপতি ছিলেন বলে নিশ্চিত করেছেন দলটির নগরের চকবাজার ওয়ার্ডের সভাপতি সাইফুদ্দিন খালেদ। আজ শনিবার ফটিকছড়ির গ্রামের বাড়িতে ইলিয়াসের লাশ দাফন করা হবে বলে জানান তিনি।