জমি দখল উচ্ছেদ অপমান সইতে না পেরে আত্মহত্যা
Published: 12th, May 2025 GMT
আড়াইহাজারে প্রতারণার মাধ্যমে জমি দখল, উচ্ছেদ ও অপমান করায় এক ব্যক্তি আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
গত শনিবার রাতে উপজেলার মাহমুদপুর ইউনিয়নের গহরদী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী বিল্লাল হোসেন (৪৫) ছিলেন এ এলাকার একজন পপকর্ন বিক্রেতা।
এ ব্যাপারে রোববার বিকেলে ছয়জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত আরও ৫-৬ জনকে অভিযুক্ত করে বিল্লালের স্ত্রী জামেলা আক্তার আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগ এনে থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। আড়াইহাজার থানার ওসি জানিয়েছেন, অভিযোগের ভিত্তিতে মামলার প্রস্তুতি চলছে।
জামেলা আক্তার জানান, তাঁর স্বামী পৈতৃক সূত্রে পাওয়া এক শতাংশ জমিতে ঘর তুলে বসবাস করতেন। সারাদিন ভ্যান নিয়ে ফেরি করে পপকর্ন বিক্রির আয় দিয়ে কোনো রকমে পাঁচজনের পরিবারের ব্যয় নির্বাহ করতেন তিনি। তাঁর এই জমিতে পাশের বাড়ির আমেরিকা প্রবাসী আলমগীর হোসেনের নজর পড়ে। তিনি এই এক শতাংশের পরিবর্তে বাড়ির কিছু দূরে দুই শতাংশ জমি দেওয়ার কথা বলে বিল্লালকে পৈতৃক বাড়ি থেকে সরে যেতে চাপ দেন। এতে কাজ না হওয়ায় স্থানীয় প্রভাবশালীদের নিয়ে আলমগীর আট বছর আগে বিল্লালকে তাঁর পৈতৃক ভিটা থেকে উচ্ছেদ করেন। তখন থেকে আলমগীরের দেওয়া দুই শতাংশ জমিতে টিনের ঘর করে বাস করতে থাকেন বিল্লাল। কিন্তু জমি রেজিস্ট্রি করতে অনীহা প্রকাশ করেন আলমগীর। বেশ কিছু দিন ধরে বিল্লালকে তাঁর এক শতাংশ জমিতে ফেরত যাওয়ার জন্য চাপ দেন আলমগীর ও তাঁর লোকজন। বিল্লাল তাদের জানান, কয়েক লাখ টাকা ধারদেনা নিয়ে বালু ভরাট করে টিনের একটি ঘর করেছেন। এখন সংসারই চলে না। তাই তাঁর এক শতাংশ জমিতে ঘর করে দেওয়ার প্রস্তাব দেন বিল্লাল। আলমগীরের লোকজন এ প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে বিল্লালকে বাড়ি ছাড়ার জন্য শারীরিক মানসিক নির্যাতন শুরু করে। গত বৃহস্পতিবার গহরদী গ্রামের আবুল খায়েরসহ আলমগীরের লোকজন বিল্লালের বাড়িতে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর-লুটপাট করে।
জামেলা জানান, তিনি ও তাঁর স্বামী বিষয়টি মীমাংসার জন্য স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের শরণাপন্ন হলে গত শনিবার হামলাকারীরা তাদের এলাকা থেকে চলে যাওয়ার জন্য বিল্লালকে অপমান অপদস্থসহ প্রাণনাশের হুমকি দেয়। এক পর্যায়ে তাদের বাড়ি থেকে বের করে দেয়। বিল্লাল এ অপমান সহ্য করতে না পেরে ওই দিন বিকেলের দিকে কীটনাশক পান করেন। পরিবারের লোকজন তাঁকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। বিল্লালের আশঙ্কাজনক অবস্থা দেখে সেখানকার চিকিৎসক তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে ওই রাতে তাঁর মৃত্যু হয়।
এদিকে বাড়িঘরে হামলা ও লুটপাটের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন আলমগীরের পক্ষের লোক আবুল খায়ের। তিনি জানান, জমিজমার বিষয়ে বিল্লালের সঙ্গে আগেই মীমাংসা হয়ে গেছে। স্ত্রীর সঙ্গে অভিমান করে বিল্লাল আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন বলে দাবি তাঁর।
আড়াইহাজার থানার ওসি খন্দকার নাসিরউদ্দিন জানান, ভুক্তভোগী বিল্লাল হোসেনের স্ত্রী থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। আরও তথ্য চেয়ে খবর দেওয়া হয়েছে। বিল্লালের স্ত্রী এলে মামলা নেওয়া হবে। পরে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: আলমগ র র ব ল ল লক র ল কজন র জন য অপম ন
এছাড়াও পড়ুন:
রাজবাড়ীতে মির্জা ফখরুলের নামে কুরুচিপূর্ণ স্লোগান, বিএনপি নেতাকে নোটিশ
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে নিয়ে কুরুচিপূর্ণ স্লোগান দেওয়ার অভিযোগে রাজবাড়ী পৌর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আকমল হোসেন চৌধুরীকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। গতকাল রোববার রাতে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক লিয়াকত আলীর স্বাক্ষরে এ নোটিশ পাঠানো হয়।
নোটিশে উল্লেখ করা হয়, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এ বিষয়ে লিখিত ব্যাখ্যা দিতে হবে। অন্যথায় তাঁর বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নোটিশে বলা হয়, গতকাল বিকেল সোয়া পাঁচটার দিকে রাজবাড়ী সদর উপজেলার গোয়ালন্দ মোড়-আহ্লাদিপুর রাজবাড়ী-ফরিদপুর সড়কে রাজবাড়ী-১ আসনের মনোনয়ন পরিবর্তনের দাবিতে পৌর বিএনপির কিছু নেতা-কর্মী মিছিল শুরু করেন। সেখানে আকমল হোসেন চৌধুরী বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে নিয়ে ‘অত্যন্ত কুরুচিপূর্ণ স্লোগান’ দেন। এই স্লোগানের ভিডিও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও ছড়িয়ে পড়ে এবং জেলা বিএনপির নজরে আসে।
নোটিশে আরও বলা হয়, পৌর বিএনপির দায়িত্বশীল নেতা হয়েও তিনি দলীয় ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করেছেন এবং গুরুতরভাবে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ করেছেন। তাই নোটিশ পাওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ব্যাখ্যা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ব্যাখ্যা না পেলে তাঁর বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে আজ সোমবার দুপুরে রাজবাড়ী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক লিয়াকত আলী বলেন, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে জবাব না পেলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।