আড়াইহাজারে প্রতারণার মাধ্যমে জমি দখল, উচ্ছেদ ও অপমান করায় এক ব্যক্তি আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। 
গত শনিবার রাতে উপজেলার মাহমুদপুর ইউনিয়নের গহরদী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী বিল্লাল হোসেন (৪৫) ছিলেন এ এলাকার একজন পপকর্ন বিক্রেতা।
এ ব্যাপারে রোববার বিকেলে ছয়জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত আরও ৫-৬ জনকে অভিযুক্ত করে বিল্লালের স্ত্রী জামেলা আক্তার আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগ এনে থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। আড়াইহাজার থানার ওসি জানিয়েছেন, অভিযোগের ভিত্তিতে মামলার প্রস্তুতি চলছে। 
জামেলা আক্তার জানান, তাঁর স্বামী পৈতৃক সূত্রে পাওয়া এক শতাংশ জমিতে ঘর তুলে বসবাস করতেন। সারাদিন ভ্যান নিয়ে ফেরি করে পপকর্ন বিক্রির আয় দিয়ে কোনো রকমে পাঁচজনের পরিবারের ব্যয় নির্বাহ করতেন তিনি। তাঁর এই জমিতে পাশের বাড়ির আমেরিকা প্রবাসী আলমগীর হোসেনের নজর পড়ে। তিনি এই এক শতাংশের পরিবর্তে বাড়ির কিছু দূরে দুই শতাংশ জমি দেওয়ার কথা বলে বিল্লালকে পৈতৃক বাড়ি থেকে সরে যেতে চাপ দেন। এতে কাজ না হওয়ায় স্থানীয় প্রভাবশালীদের নিয়ে আলমগীর আট বছর আগে বিল্লালকে তাঁর পৈতৃক ভিটা থেকে উচ্ছেদ করেন। তখন থেকে আলমগীরের দেওয়া দুই শতাংশ জমিতে টিনের ঘর করে বাস করতে থাকেন বিল্লাল। কিন্তু জমি রেজিস্ট্রি করতে অনীহা প্রকাশ করেন আলমগীর। বেশ কিছু দিন ধরে বিল্লালকে তাঁর এক শতাংশ জমিতে ফেরত যাওয়ার জন্য চাপ দেন আলমগীর ও তাঁর লোকজন। বিল্লাল তাদের জানান, কয়েক লাখ টাকা ধারদেনা নিয়ে বালু ভরাট করে টিনের একটি ঘর করেছেন। এখন সংসারই চলে না। তাই তাঁর এক শতাংশ জমিতে ঘর করে দেওয়ার প্রস্তাব দেন বিল্লাল। আলমগীরের লোকজন এ প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে বিল্লালকে বাড়ি ছাড়ার জন্য শারীরিক মানসিক নির্যাতন শুরু করে। গত বৃহস্পতিবার গহরদী গ্রামের আবুল খায়েরসহ আলমগীরের লোকজন বিল্লালের বাড়িতে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর-লুটপাট করে। 
জামেলা জানান, তিনি ও তাঁর স্বামী বিষয়টি মীমাংসার জন্য স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের শরণাপন্ন হলে গত শনিবার হামলাকারীরা তাদের এলাকা থেকে চলে যাওয়ার জন্য বিল্লালকে অপমান অপদস্থসহ প্রাণনাশের হুমকি দেয়। এক পর্যায়ে তাদের বাড়ি থেকে বের করে দেয়। বিল্লাল এ অপমান সহ্য করতে না পেরে ওই দিন বিকেলের দিকে কীটনাশক পান করেন। পরিবারের লোকজন তাঁকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। বিল্লালের আশঙ্কাজনক অবস্থা দেখে সেখানকার চিকিৎসক তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে ওই রাতে তাঁর মৃত্যু হয়।
এদিকে বাড়িঘরে হামলা ও লুটপাটের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন আলমগীরের পক্ষের লোক আবুল খায়ের। তিনি জানান, জমিজমার বিষয়ে বিল্লালের সঙ্গে আগেই মীমাংসা হয়ে গেছে। স্ত্রীর সঙ্গে অভিমান করে বিল্লাল আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন বলে দাবি তাঁর। 
আড়াইহাজার থানার ওসি খন্দকার নাসিরউদ্দিন জানান, ভুক্তভোগী বিল্লাল হোসেনের স্ত্রী থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। আরও তথ্য চেয়ে খবর দেওয়া হয়েছে। বিল্লালের স্ত্রী এলে মামলা নেওয়া হবে। পরে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আলমগ র র ব ল ল লক র ল কজন র জন য অপম ন

এছাড়াও পড়ুন:

স্বামী দ্বিতীয় বিয়ে করা নিয়ে বিতণ্ডা, কুপিয়ে হত্যার অভিযোগে প্রথম স্ত্রী আটক

ফেনীতে দ্বিতীয় বিয়ে নিয়ে কলহের জেরে স্বামীকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগে স্ত্রীকে আটক করেছে পুলিশ। আজ মঙ্গলবার দুপুরে ফেনীর দাগনভূঞার পৌর এলাকার জগতপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত ব্যক্তির নাম আলমগীর হোসেন (৪৫)। তিনি একই গ্রামের গফুর ভান্ডারি বাড়ির আবদুল গফুরের ছেলে। পেশায় তিনি ট্রাকচালক ছিলেন। আটক স্ত্রীর নাম খালেদা ইয়াসমিন (৩৮)।

পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সূত্র জানায়, ২০ বছর আগে পারিবারিকভাবে আলমগীরের সঙ্গে খালেদা ইয়াসমিনের বিয়ে হয়ছিল। তাঁদের এক ছেলে রয়েছে। তবে গত কয়েক মাস আগে নারায়ণগঞ্জ জেলায় আরেকটি বিয়ে করেন আলমগীর। এসব নিয়ে তাঁদের মধ্যে দ্বন্দ্ব ছিল। গতকাল দিবাগত রাত তিনটার দিকে নারায়ণগঞ্জ থেকে আলমগীর বাড়িতে আসেন। এরপর আজ দুপুরে তাঁর প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে দ্বিতীয় বিয়ে নিয়ে বিতণ্ডা হয়।

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, বাগ্‌বিতণ্ডার একপর্যায়ে ইয়াসমিন তাঁর স্বামীকে কুপিয়ে জখম করে। এতে ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়। পরে স্বজনেরা ঘরের শৌচাগারের ভেতর আলমগীরের মরদেহ দেখতে পান। এরপর পুলিশকে খবর দেওয়া হয়।

জানতে চাইলে নিহত ব্যক্তির ছেলে কামরুল ইসলাম (১৬) প্রথম আলোকে বলে, নতুন বিয়ে করার পর তাঁর বাবা তাঁদের ভরণপোষণ দিতেন না। এ ঘটনার সময় তিনি বাড়িতে ছিলেন না। দুপুরের দিকে খবর পেয়ে বাড়িতে আসেন।

জানতে চাইলে দাগনভূঞা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওয়াহেদ পারভেজ বলেন, নিহত ব্যক্তির শরীরে একাধিক জখমের চিহ্ন রয়েছে। তাঁকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। অভিযুক্ত স্ত্রীকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। পারিবারিক কলহের জের ধরে এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আঁখির অতিথি সৈয়দ আবদুল হাদী
  • দেবী দুর্গা শক্তি ও সাহসের মূর্ত প্রতীক: মির্জা ফখরুল 
  • কাশিপুরে বিএনপি নেতা আলমগীর ও সাইদুর গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনা সংঘর্ষের আশঙ্কা
  • হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে ৪১ জেলার ৪৩৮টি স্থানে
  • স্বামী দ্বিতীয় বিয়ে করা নিয়ে বিতণ্ডা, কুপিয়ে হত্যার অভিযোগে প্রথম স্ত্রী আটক