ধারের টাকায় মেগা প্রকল্প হাতে নেওয়া হবে না
Published: 13th, May 2025 GMT
আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে ঘাটতির পরিমাণ কমিয়ে আনার ইঙ্গিত দিয়ে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, ধার করে টাকা এনে তা দিয়ে মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নের নীতি নেওয়া হবে না। গতকাল মঙ্গলবার সচিবালয়ে সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।
ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের সময় পাস হওয়া চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বাজেটে ব্যয়ের আকার ছিল ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকা। সম্ভাব্য ঘাটতি ধরা হয়েছিল ২ লাখ ৫১ হাজার কোটি টাকা। আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট বর্তমান বাজেটের চেয়ে আকারে ছোট হবে কিনা, সেই প্রশ্নের সরাসরি উত্তর দেননি অর্থ উপদেষ্টা। তিনি বলেন, ‘বাজেট কেমন হবে সময় হলেই জানতে পারবেন। মোটামুটি বড় ধরনের বাজেট ঘাটতি আমরা রাখব না। বাস্তবসম্মত এডিপি বাস্তবায়ন করব। ধার করে বড় বড় মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করব না। বাজেটে কিছুটা ঘাটতি তো থাকবেই। কিন্তু ব্যাংক থেকে বেশি ঋণ নিয়ে এবং টাকা ছাপিয়ে আমরা বাজেট বাস্তবায়ন করতে যাব না।’
বৈঠকে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের ১২টি ক্রয় প্রস্তাব উত্থাপন হওয়ার পর ১০টি অনুমোদন করা হয়। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে গানভর সিঙ্গাপুরের কাছ থেকে এক কার্গো এলএনজি ক্রয়। প্রতি ইউনিট ১২.
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ম গ প রকল প
এছাড়াও পড়ুন:
বাংলাদেশি পণ্যে ট্রাম্প প্রশাসনের বাড়তি শুল্ক কমার আশা
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আরোপিত বাড়তি ৩৭ শতাংশ শুল্ক নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক শুল্ক চু্ক্তি করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। চুক্তিটি চূড়ান্ত করতে ওয়াশিংটনে বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধিদের (ইউএসটিআর) সঙ্গে বৈঠকে বসবেন প্রধান উপদেষ্টার জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান। ইতোমধ্যেই এ সংক্রান্ত চূক্তির খসড়া নিয়ে কয়েক দফা বৈঠক হয়েছে। চুক্তি হলে ট্রাম্প প্রশাসনের বাংলাদেশি পণ্যের ওপর আরোপ করা বাড়তি ৩৭ শতাংশ শুল্ক আরোপের হার কিছুটা কমবে।সোমবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
সূত্র জানায়, ইতোমধ্যে এ সংক্রান্ত পাল্টা শুল্ক চুক্তির একটি খসড়া বাংলাদেশে পাঠিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। জবাবে খসড়ার ওপর মতামত ওয়াশিংটনে পাঠায় ঢাকা। এ নিয়ে গত বৃহস্পতিবার ওয়াশিংটনে প্রধান উপদেষ্টার জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমানের সঙ্গে মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধিরা (ইউএসটিআর) বৈঠক করেন। বৈঠকে উভয় পক্ষের দরকষাকষির পর খসড়ায় আবারও কিছুটা পরিবর্তন আনছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, যা আজ মঙ্গলবার চূড়ান্ত করে নিরাপত্তা উপদেষ্টার কাছে পাঠানো হবে। এ সংশোধিত খসড়া নিয়েই বৃহস্পতিবার ওই বৈঠকে বসবে উভয় পক্ষ।
একদিনের বৈঠকে ঐক্যমত্যে পৌঁছানো সম্ভব হলে পরদিনও বৈঠক হতে পারে। এসব বৈঠকে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীনের উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে। তবে সেটি সম্ভব না হলে ভার্চুয়ালি তিনি যুক্ত হবেন।
এ বিষয়ে সোমবার বাণিজ্য বাণিজ্যসচিব মাহবুবুর রহমান সমকালকে বলেন, পাল্টা শুল্ক চুক্তির খসড়ায় সংযোজন-বিয়োজন করে ইতোমধ্যেই দুবার মতামত যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানো হয়েছে। এসব মতামতের বিষয়ে দরকষাকষি করতে বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান। আজ মঙ্গলবার তার কাছে তৃতীয় মতামতটি পাঠানো হবে। এ মতামতের ভিত্তিতে চুক্তি চূড়ান্ত করতে আগামী বৃহস্পতিবার। সেখানে ঐক্যমত্যে পৌঁছানো সম্ভব না হলে পরবর্তীতে আরও বৈঠকের প্রয়োজন হতে পারে।
দরকষাকষি শেষে চুক্তি করতে কতদিন সময় লাগতে পারে– এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, চুক্তি করার ক্ষেত্রে অন্যান্য যে কোনো দেশের সঙ্গে এগিয়ে রয়েছি। গত ২ এপ্রিল পাল্টা শুল্ক আরোপের পর যুক্তরাষ্ট্রে সঙ্গে এ পর্যন্ত ২৮ দফা বিভিন্নভাবে যোগাযোগ করা হয়েছে। আগামী বৃহস্পতিবার চুক্তির বিষয়টি চূড়ান্ত হয়ে গেলে সেটি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার অনুমোদন নিতে হবে। এরপর ভেটিং হয়ে উপদেষ্টা পরিষদের অনুমোদন। তারপরই চুক্তি করার বিষয়টি চূড়ান্ত হবে।
মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, খসড়ায় যুক্তরাষ্ট্রে পক্ষ থেকে বেশকিছু কঠিন প্রস্তাব দেওয়া হয়। তবে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক আইন–কানুনের মধ্য থেকে বাংলদেশ বাণিজ্য ঘাটতি কমিয়ে আনার ওপরই বেশি জোর দিয়ে মতামত দিয়েছে। কারণ, বাণিজ্য ঘাটতির ওপর ভিত্তি করেই যুক্তরাষ্ট্র পাল্টা শুল্ক আরোপ করেছে। এক্ষেত্রে খসড়ার মতামতে জানানো হয়, বাংলাদেশ বিশ্ববাজার থেকে আমদানি করে এমন অন্তত ৪১ পণ্য যুক্তরাষ্ট্র থেকে বেশি আনার সুযোগ রয়েছে। এর মধ্যে পেট্রোলিয়াম পণ্য, তুলা, প্রোপেন বা তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাস (এলপিজি), সয়াবিন তেল, গম, এলএনজি উল্লেখযোগ্য।
সেইসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র থেকে সরকারি কেনাকাটা বাড়ানোর উদ্যোগের বিষয়টিও মতামতে জানানো হয়। এরই অংশ হিসেবে দেশটি থেকে দীর্ঘমেয়াদে এলএনজি আমদানির চুক্তির আওতায় বাড়তি আরও ১ বিলিয়ন ডলার বা স্থানীয় মুদ্রায় প্রায় ১১ হাজার কোটি টাকার এলএনজি আমদানি করা হবে। খাদ্য-শস্য আমদানি বাড়ানো হচ্ছে। সম্প্রতি ইউক্রেন থেকে ৩ লাখ টন গম আমদানি উদ্যোগ নেওয়া হলেও পরে যুক্তরাষ্ট্র থেকে এসব গম আমদানি সিদ্ধান্ত হয়। এছাড়া বাংলাদেশের সামরিক কেনাকাটার মূল উৎস হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটি থেকে এ অস্ত্র কেনা বাড়ানোর প্রতিশ্রুতিও দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ বিমানের বোয়িং–এর প্রায় সবগুলোই যুক্তরাষ্ট্রের। দেশটি থেকে আরও কিছু উড়োজাহাজ কেনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।