আর্জেন্টিনা, ব্রাজিল, ফ্রান্স, ইংল্যান্ডের কোচেরা কে কত টাকা বেতন পান
Published: 15th, May 2025 GMT
কার্লো আনচেলত্তির ব্রাজিল জাতীয় দলের কোচ হওয়াটাই বড় খবর। ক্লাব ফুটবলে সম্ভাব্য প্রায় সব শিরোপা জেতা এই ইতালিয়ান দায়িত্ব নিচ্ছেন এমন এক দেশের, যারা সচরাচর বিদেশি কোচ নিয়োগ দেয় না। প্রচলিত ধারা ভেঙে সিবিএফ (কনফেডারেশন অব ব্রাজিল ফুটবল) আনচেলত্তিকে শুধু দায়িত্বই দিচ্ছে না, আর্থিকভাবে সুযোগ–সুবিধাও দিতে যাচ্ছে সাম্প্রতিক সময়ের অন্য কোচদের চেয়ে বেশি।
ব্রাজিলের মতো আন্তর্জাতিক ফুটবলে সাফল্যের জন্য কোচের পেছনে টাকা ঢালে আরও অনেক দেশের ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন। আর্জেন্টিনা, ফ্রান্স, স্পেন, ইংল্যান্ড, জার্মানির মতো দেশগুলো তাদের জাতীয় দলের কোচকে দেয় বিপুল সুযোগ–সুবিধা, সঙ্গে থাকে পারফরম্যান্স বোনাস। নির্দিষ্ট সাফল্য পেলে আরও টাকা।
ব্রাজিলের গ্লোবোস্পোর্ত বলছে, আনচেলত্তিকে বছরে ১ কোটি ১১ লাখ মার্কিন ডলারের মতো বেতন দেবে সিবিএফ। অর্থ্যাৎ, প্রতি মাসে সোয়া নয় লাখ ডলারের মতো, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় মাসে ১১ কোটি টাকার বেশি। বেতনের বাইরে রিও ডি জেনিরোতে বসবাসের জন্য অ্যাপার্টমেন্ট আর যাতায়াতের জন্য জেট বিমানও পাবেন।
আনচেলত্তির পেছনে ব্রাজিলের এত টাকা খরচের একটাই কারণ—দুই দশক ধরে না জেতা বিশ্বকাপ এনে দেওয়া। ২০২৬ সালে সেটা এনে দিলে পারফরম্যান্স বোনাসও দেওয়া হবে, পরিমাণ—৫৬ লাখ মার্কিন ডলার।
ব্রাজিলের চাকরিতে ব্যক্তিগতভাবে ৬৫ বছর বয়সী আনচেলত্তির ব্যস্ততা কমবে। ক্লাব ফুটবলে কোনো কোনো মাসে ৮–৯টি ম্যাচও খেলতে হয়। যেমন আনচেলত্তির বর্তমান দল রিয়াল মাদ্রিদ ২০২৪-২৫ মৌসুমে এরই মধ্যে প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচ খেলে ফেলেছে ৬৩টি।
আরও পড়ুনব্রাজিলিয়ানরা কেন বিদেশি কোচ চায়, কেন চায় না১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ম্যাচকেন্দ্রিক এই তুমুল ব্যস্ততা কমে এলেও আনচেলত্তিকে সামলাতে হবে একটা গোটা দেশের প্রত্যাশার চাপ, যে দেশে ফুটবলটাই ধ্যানজ্ঞান। আর পুরো দেশের প্রত্যাশার চাপ, দীর্ঘ মেয়াদে শিরোপা–খরা ও সংশ্লিষ্ট দেশের আর্থিক সক্ষমতা বিবেচনাতেই জাতীয় দলের কোচরা কাজ কম হলেও ভালো পারিশ্রমিক পেয়ে থাকেন।
ব্রাজিলের চেয়ে বেশি সময় ধরে আন্তর্জাতিক ফুটবলে ট্রফি নেই ইংল্যান্ডের। ইয়াহু স্পোর্টসের তথ্য বলছে, ইংল্যান্ড ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন (এফএ) টমাস টুখেলকে বছরে ৬৭ লাখ মার্কিন ডলার বেতন দিচ্ছে, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৮১ কোটি টাকা। ১৯৬৬ সালের পর বিশ্বকাপ না জেতা ইংল্যান্ড টুখেলের সঙ্গে চুক্তি করেছে ২০২৬ পর্যন্ত।
বিশ্বকাপ ট্রফি জেতার চাপের দিক থেকে ইংল্যান্ডের ধারেকাছেও নেই যুক্তরাষ্ট্র। তবে উত্তর আমেরিকার দেশটি তাদের কোচকে দিচ্ছে ইংল্যান্ডের কাছাকাছি বেতনই।
আরও পড়ুনবক্সার, রেফারি, আর্জেন্টাইন—৬০ বছর পর ব্রাজিলের ‘বিচিত্র’ বিদেশি কোচদের তালিকায় আনচেলত্তি১০ মে ২০২৫ইএসপিএনের খবর অনুসারে, যুক্তরাষ্ট্রের কোচ মরিসিও পচেত্তিনো ৬০ লাখ মার্কিন ডলারের ঘরে বেতন পেয়ে থাকেন। কখনো বিশ্বকাপ সেমিফাইনাল না খেললেও ২০২৬ বিশ্বকাপের আয়োজক হিসেবে পচেত্তিনোর কাছে বড় কিছুই চাওয়া যুক্তরাষ্ট্রের। আর বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ হিসেবে কোচের পেছনে বড় অঙ্ক খরচের সামর্থ্য তো তাদের আছেই।
অর্থনীতির আকার বিবেচনায় জার্মানির সামর্থ্যও ভালোই। দলটি ইউলিয়ান নাগলসমানকে বেতন দেয় বছরে প্রায় ৫৪ লাখ মার্কিন ডলার। এই অর্থ অবশ্য পূর্ববর্তী কোচ হান্সি ফ্লিকের চেয়ে কম। বর্তমান বার্সেলোনা কোচ জার্মানি জাতীয় দলে থাকতে প্রায় ৭৩ লাখ ডলার বেতন পেতেন।
আন্তর্জাতিক ফুটবল কোচদের বেতনের তালিকায় শীর্ষ পাঁচে আছে পর্তুগালও। ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর দেশ তাদের প্রধান কোচ রবার্তো মার্তিনেজকে দেয় ৪৫ লাখ মার্কিন ডলার। তুলনায় ফ্রান্সের দিদিয়ের দেশমের বেতনই কমই মনে হতে পারে কারও কারও। ২০১৮ বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন আর ২০২২ বিশ্বকাপে রানার্সআপ করানো এই ফরাসি কোচ ২০২৪ সালে ৪১ লাখ মার্কিন ডলার বেতন পেতেন বলে জানিয়েছিল বিইনস্পোর্টস।
জাতীয় দলে কোচদের বাৎসরিক বেতন।.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব শ বক প জ ত য় দল ফ টবল
এছাড়াও পড়ুন:
শারীরিক সক্ষমতা না থাকলে কাউকে হজে নেওয়া যাবে না: ধর্ম উপদেষ্টা
ধর্ম মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেছেন, কেবল শারীরিকভাবে সুস্থ ব্যক্তিদেরকেই হজের জন্য নিবন্ধন করাতে হবে। শারীরিক সক্ষমতা না থাকলে কাউকে হজে নেওয়া যাবে না।
বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে জাতীয় পর্যায়ে হজ ও ওমরাহ ফেয়ার ২০২৫-এর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
হজ গমনেচ্ছু ব্যক্তিদের সঙ্গে হজ এজেন্সির যোগসূত্র তৈরির লক্ষ্যে এ হজ ও ওমরাহ মেলার আয়োজন করেছে হজ এজেন্সিগুলোর সংগঠন হজ এজেন্সিস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব)।
আরো পড়ুন:
ছবি ও ভিডিও বিকৃতি নিয়ে সোচ্চার মেহজাবীন
অস্ট্রেলিয়ায় ‘ইন্ডিয়ান চলচ্চিত্র উৎসবে’ বাংলাদেশ
অসুস্থ ও শারীরিক সক্ষমতা নেই, এরকম ব্যক্তিদেরকে হজে নেওয়া হলে সরকারকে বিব্রত হতে হয়, জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, শারীরিকভাবে অক্ষম হাজিদের জন্য নানারূপ বিড়ম্বনার শিকার হতে হয়। এজন্য শারীরিকভাবে অক্ষম ও দুরারোগ্য রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদেরকে হজের জন্য ফিটনেস সার্টিফিকেট না দেওয়ার জন্য সিভিল সার্জনদেরকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
তিনি দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত ও শারীরিক সক্ষমতাবিহীন ব্যক্তিদেরকে হজে না নেওয়ার জন্য হজ এজেন্সিগুলোকে অনুরোধ করেছেন।
আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেছেন, “২০২৫ সালে আমরা একটি সুন্দর হজ উপহার দিতে পেরেছি। ইতোমধ্যে ২০২৬ সালের হজের কার্যক্রম শুরু হয়েছে।“ ২০২৬ সালের হজ আরো ভালো হবে বলে আশা ব্যক্ত করেছেন তিনি।
হজ ও ওমরাহ মেলার গুরুত্ব তুলে ধরে ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, হজ ও ওমরাহ ফেয়ার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এর মাধ্যমে হজ এজেন্সির সঙ্গে হজ গমনেচ্ছু ব্যক্তিদের পারস্পরিক মিথস্ক্রিয়া বৃদ্ধি পাবে। হজ ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে জনসচেতনতা তৈরি হবে। ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা তাদের সামর্থ্য অনুসারে হজ প্যাকেজ বাছাই করতে পারবেন।” তিনি হাবের এ মেলা আয়োজনের উদ্যোগকে সাধুবাদ জানান।
হাবের সঙ্গে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের বিরোধ নেই, জানিয়ে আ ফম খালিদ হোসেন বলেছেন, “আমরা পারস্পরিক সম্মান, মর্যাদা ও ভ্রাতৃত্বের সাথে কাজ করে যাচ্ছি। আগামীতেও আমরা হজযাত্রীদের স্বার্থে একসাথে কাজ করব।” তিনি মন্ত্রণালয়ের পক্ষ হতে হাবকে সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
হজ এজেন্সির উদ্দেশে ড. খালিদ বলেন, “অনেক এজেন্সি হজযাত্রীদের ব্যাগে মাদকদ্রব্যসহ সৌদি আরবে অননুমোদিত দ্রব্যাদি নিয়ে যায়। অনেকে দেশে ফেরার সময় হাজিদের মাধ্যমে অবৈধভাবে সোনা নিয়ে আসেন। এতে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়।” তিনি এ ধরনের কাজ থেকে বিরত থাকার জন্য হজ এজেন্সিগুলোকে অনুরোধ জানান।
উপদেষ্টা বলেন, “হজযাত্রী নিবন্ধন প্রক্রিয়ায় দালালদের দৌরাত্ম্য আছে। এদের কারণে হজের খরচ বেড়ে যায়, আবার হজযাত্রীদের প্রতারিত হওয়ার ঘটনাও ঘটে থাকে।”
হজ গমনেচ্ছুক ব্যক্তিদেরকে এজেন্সি মালিক কিংবা তার বৈধ প্রতিনিধির সঙ্গে যোগাযোগ করে হজে যাওয়ার অনুরোধ করেন উপদেষ্টা। এছাড়া, তিনি হজ এজেন্সির সঙ্গে হজযাত্রীদেরকে চুক্তি সম্পাদন এবং হজযাত্রীদের প্রশিক্ষণের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন।
এর আগে ধর্ম উপদেষ্টা হজ ও ওমরাহ ফেয়ার ২০২৫ উপলক্ষে প্রকাশিত হাবের মুখপত্র ‘হজ্জ বার্তা’র মোড়ক উন্মোচন করেন।
তিন দিনব্যাপী এ মেলায় মোট ১৫৪ টি স্টল আছে। ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়, হজ এজেন্সি এবং হজ কার্যক্রমের সঙ্গে সম্পৃক্ত বাংকগুলো এ মেলায় হজ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন কার্যক্রম ও তথ্য সেবা প্রদর্শন করছে। এছাড়া, হজের প্রাথমিক নিবন্ধনের সুযোগও আছে মেলার স্টলগুলোতে। ১৬ আগস্ট বিকেলে সমাপনী অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এ মেলা শেষ হবে।
হাবের সভাপতি সৈয়দ গোলাম সরওয়ারের সভাপতিত্বে উদ্বোধন অনুষ্ঠানে ধর্ম সচিব এ কে এম আফতাব হোসেন প্রামানিক, ঢাকাস্থ সৌদি দূতাবাসের উপ-মিশন প্রধান ইব্রাহিম আবদুল্লাহ আল-আহমারী ও হাবের মহাসচিব ফরিদ আহমদ মজুমদার বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন। উদ্বোধন অনুষ্ঠান শেষে উপদেষ্টা মেলার স্টলগুলো ঘুরে দেখেন।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/রফিক