ব্যবসায়ী, সিকদার পরিবারে চারজনসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
Published: 15th, May 2025 GMT
করোনাকালীন প্রণোদনার ঋণের নামে রাষ্ট্রের ৪০৪ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ব্যবসায়ী, ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটেডের সাবেক ও বর্তমান কর্মকর্তা, পরিচালনা পর্ষদে থাকা সিকদার পরিবারের চার সদস্যসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। বৃহস্পতিবার দুদক রাজধানীর সমন্বিত জেলা কার্যালয়, ঢাকা-১–এ মামলাটি দায়ের করেন দুদকের উপপরিচালক রামপ্রসাদ মণ্ডল।
দুদকের প্রধান কার্যালয়ে সংস্থাটির মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) মো.
মামলায় আসামি করা হয়েছে ব্যবসায়ী মোহাম্মদ মোহসিন ও মঈন উদ্দিন আহম্মদ চৌধুরীকে। তাঁরা যথাক্রমে সাদ মুসা হোমটেক্স অ্যান্ড ক্লদিং লিমিটেড এবং রেডিয়াম কম্পোজিট টেক্সটাইল মিলস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক। তাঁদের সঙ্গে ন্যাশনাল ব্যাংকের সাবেক ও বর্তমান একাধিক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও পরিচালকদেরও আসামি করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন ন্যাশনাল ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক চৌধুরী মোশতাক আহমেদ, উপব্যবস্থাপনা পরিচালক এ এস এম বুলবুল, সাবেক পরিচালক মনোয়ারা সিকদার, পারভীন হক সিকদার, খলিলুর রহমান, রন হক সিকদার, রিক হক সিকদার, জাকারিয়া তাহের, মাবরুর হোসেন, মো. নায়মুজ্জামান ভূইয়া মুক্তা ও মোয়াজ্জেম হোসেন। এ ছাড়া ব্যাংকের সাবেক কর্মকর্তা মো. একরামুল হক, মো. হাবিবুর রহমান ও মোহাম্মদ আবু রাশেদ নওয়াবকেও আসামি করা হয়েছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, রেডিয়াম কম্পোজিটের নামে নেওয়া ঋণের অর্থের বড় অংশ সরিয়ে ফেলা হয় সাদ মুসা গ্রুপভুক্ত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে। ওই অর্থের মাধ্যমে রাজধানীর গুলশান, বনানী, মহাখালী, উত্তরা, ধানমন্ডি ও মতিঝিল এলাকায় বিভিন্ন বাণিজ্যিক স্থাপনা কেনা হয়। অর্থের উৎস, মালিকানা ও ব্যবহার গোপন রেখে করা হয় অর্থ পাচার।
দুদক বলেছে, এই ঋণ অনুমোদন ও বিতরণের সময় ব্যাংক কর্তৃপক্ষ যথাযথ যাচাই-বাছাই করেনি। এমনকি আবেদনপত্র দাখিলের মাত্র ১৫ দিনের মধ্যে এত বড় অঙ্কের ঋণ ছাড় করা হয়, যা অভাবনীয়। তদন্তে আরও উঠে এসেছে, এ ধরনের ঋণ প্রদানের পেছনে ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সরাসরি প্রভাব ছিল।
আরও পড়ুনরন হক শিকদার ও আরিফ হাসানের বিরুদ্ধে মামলা০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফই বলেছিলেন নির্বাচন করতে, দাবি ফারুকের
সরকারের ‘পছন্দে’র মানুষ হিসেবে ফারুক আহমেদ বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডে (বিসিবি) এসেছিলেন। এর মাত্র ৯ মাসের মধ্যে সেই সরকারের ‘অপছন্দে’র মানুষ হয়ে গিয়েই গত মে মাসে তাঁকে বিদায় নিতে হয় বিসিবি সভাপতির পদ থেকে।
সম্প্রতি ইউটিউবভিত্তিক টক শো অনুষ্ঠান ‘ঠিকানায় খালেদ মুহিউদ্দীন’–এ যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক ও সাবেক প্রধান নির্বাচক ফারুক আহমেদকে বোর্ড সভাপতির পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করেছেন। আগে দেওয়া ব্যাখ্যার সঙ্গে তাঁর নতুন সংযোজন—বিসিবির নির্বাচন করা আর ব্যবসার দিকেই নাকি ফারুকের আগ্রহ বেশি দেখা যাচ্ছিল।
সাক্ষাৎকারে ক্রীড়া উপদেষ্টা বলেছেন, ‘ক্রিকেটের চেয়ে ওনার আগ্রহটা আমি দেখছি যে পরবর্তীতে আবার কীভাবে সভাপতি হয়ে আসা যায়, সেটার জন্য ক্লাব কীভাবে নেওয়া যায়, সেসব দিকে। তারপর ব্যবসা থেকে শুরু করে বিভিন্ন দিকে ওনার আগ্রহটা বেশি দেখা গেছে…।’
গত বিপিএলে দুটি ফ্র্যাঞ্চাইজিকে নিয়ে সৃষ্ট বিতর্কের জন্যও উপদেষ্টা দায় দিয়েছেন ফারুককে। ফারুকের সঙ্গে ব্যক্তিগত সম্পর্ক ‘ভালো’ উল্লেখ করে তিনি বলেছেন, ক্রিকেটকে ব্যর্থতার হাত থেকে বাঁচাতে বিসিবির নেতৃত্বে পরিবর্তন আনা হয়েছে।
ক্রীড়া উপদেষ্টার বক্তব্যের ব্যাপারে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে সাবেক বিসিবি সভাপতি ফারুক পাল্টা বলেছেন, যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টার পরামর্শেই বিসিবির নির্বাচনে অংশ নেওয়ার তোড়জোড় শুরু করেছিলেন তিনি। গতকাল প্রথম আলোকে তিনি বলেন, ‘ওনার (ক্রীড়া উপদেষ্টা) অফিস থেকেই তখন আমাকে নির্বাচনের জন্য “গো এহেড” দেওয়া হয়েছিল। বলা হয়েছিল, আমি নির্বাচনে অংশ নিলে তাদের কোনো সমস্যা নেই, আমি যেন নির্বাচনের প্রস্তুতি নিই। পরে হয়তো তারা উপলব্ধি করেছে, আমি তাদের স্বার্থ দেখব না। তাই সরিয়ে দিয়েছে।’
আরও পড়ুন‘ফ্যাসিস্টের দোসরদের’ ষড়যন্ত্রেই বিসিবি থেকে অপসারণ, দাবি ফারুকের০৪ জুন ২০২৫এনএসসি মনোনীত দুই পরিচালক ছাড়া বিসিবির নির্বাচনে অংশ নিতে হলে কাউন্সিলর হওয়া বাধ্যতামূলক। ক্লাব, জেলা ও বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থা ছাড়াও আরও কিছু শ্রেণিতে বিসিবির কাউন্সিলর হওয়া যায়। বিসিবির ক্ষমতাসীন সভাপতি হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিলে অনেক সময় প্রভাব খাটিয়েও কাউন্সিলরশিপ নেওয়ার সুযোগ থাকে। কিন্তু ফারুকের দাবি, ‘আমি কোনো ক্লাব কিনিনি, কোথাও কাউন্সিলর হইনি, কাউন্সিলরশিপের জন্য কাউকে টাকা দিইনি। এমনকি এখন পর্যন্ত আমি বিসিবির কাউন্সিলর নই।’
নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ব্যাপারে ক্রীড়া উপদেষ্টার কার্যালয়ের ‘পরামর্শ’ পাওয়ার পর ফারুকও প্রাথমিক প্রস্তুতি নিতে শুরু করেন। এ ব্যাপারে তাঁর ব্যাখ্যা, ‘হুট করে তো নির্বাচন করা যায় না! আমাকে আগে কোথাও থেকে কাউন্সিলর হতে হবে। সে জন্য একটা প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হয়। কাজেই আমি যদি নির্বাচন নিয়ে কারও সঙ্গে সলাপরামর্শ করিও, সেটাকে অন্যায় বলা যাবে না। কারণ, কাউন্সিলর না হলে আমি নির্বাচন করতে পারব না।’
২০২৪ সালের অক্টোবরে ক্রীড়া উপদেষ্টা যখন মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়াম পরিদর্শনে যান