যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি ঋণমান (ক্রেডিট রেটিং) ১০৬ মধ্যে প্রথমবারের মতো এক ধাপ কমিয়েছে ঋণমান নিয়ে কাজ করা প্রতিষ্ঠান মুডিস। গতকাল শুক্রবার ঋণ মূল্যায়নসংক্রান্ত সংস্থাটি জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের ঋণ ও সুদের খরচ অব্যাহতভাবে বাড়ছে। মূলত এই কারণেই দেশটির ঋণ পরিশোধের সক্ষমতা বা ঋণমান কমানো হয়েছে।

মুডিসের এই সিদ্ধান্ত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কর কাটছাঁট প্রচেষ্টাকে জটিল করতে এবং বিশ্ববাজারে প্রভাব ফেলতে পারে। সংস্থাটির তথ্যমতে, যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান ঋণ ৩৬ ট্রিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গেছে।

মুডিসের বিভিন্ন ঋণমানের মধ্যে ‘এএএ’ সবচেয়ে ভালো। যুক্তরাষ্ট্রকে ১৯১৯ সালে সর্বপ্রথম এই রেটিং দিয়েছিল সংস্থাটি। প্রথমবারের মতো এবার তা এক ধাপ কমিয়ে ‘এএ১’-এ নামিয়ে আনা হয়েছে। সেই হিসেবে ১০৬ বছর পর যুক্তরাষ্ট্রের ঋণমান প্রথমবারের মতো কমাল মুডিস।

মুডিসের আগে আরও দুটি বিখ্যাত ঋণ মূল্যায়নসংক্রান্ত সংস্থা যুক্তরাষ্ট্রের ঋণমান কমিয়েছিল। ২০১১ সালে এসঅ্যান্ডপি এবং ২০২৩ সালে ফিচ যুক্তরাষ্ট্রের ঋণমান কমিয়েছিল।

২০২৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে নিজেরা যে পূর্বাভাস (আউটলুক) দিয়েছিল, তাতেও পরিবর্তন এনেছে মুডিস। তখন যুক্তরাষ্ট্র নিয়ে মুডিসের পূর্বাভাস ছিল ‘নেতিবাচক’ ক্যাটাগরিভুক্ত। এবার তারা দেশটির ঋণমান কমালেও পূর্বাভাস একধাপ বাড়িয়ে ‘স্থিতিশীল’ ক্যাটাগরিতে নিয়ে এসেছে।

মুডিস বলেছে, ‘যুক্তরাষ্ট্রে পরপর কয়েকটি প্রশাসন ও কংগ্রেস বড় ঘাটতি ও সুদের ব্যয় কমাতে ব্যর্থ হয়েছে।’ প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠরা মুডিসের ঋণমান কমানোর সিদ্ধান্তকে ‘অযৌক্তিক’ বলে মন্তব্য করেছেন।

# মুডিসের বিভিন্ন ঋণমানের মধ্যে ‘এএএ’ সবচেয়ে ভালো। যুক্তরাষ্ট্রকে ১৯১৯ সালে সর্বপ্রথম এই রেটিং দিয়েছিল সংস্থাটি। প্রথমবারের মতো এবার তা এক ধাপ কমিয়ে ‘এএ১’-এ নামিয়ে আনা হয়েছে। # ‘যুক্তরাষ্ট্রের পরপর কয়েকটি প্রশাসন ও কংগ্রেস বড় ঘাটতি ও সুদের ব্যয় কমাতে ব্যর্থ হয়েছে।’

ট্রাম্পের সাবেক জ্যেষ্ঠ অর্থনৈতিক উপদেষ্টা এবং হেরিটেজ ফাউন্ডেশনের অর্থনীতিবিদ স্টিফেন মুর মুডিসের যুক্তরাষ্ট্রের ঋণমান কমানোর সিদ্ধান্তকে ‘অপমানজনক’ বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি রয়টার্সকে বলেছেন, ‘যদি যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি বন্ড ট্রিপল-এ (এএএ) সম্পদ না হয়, তাহলে কারটি হবে?’

হোয়াইট হাউসের যোগাযোগ পরিচালক স্টিভেন চিউং মুডিসের ঋণমান কমানো নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন। ঋণমান কমানোর জন্য তিনি মুডিসের অর্থনীতিবিদ মার্ক জান্ডির সমালোচনা করেন এবং তাঁকে ট্রাম্পের রাজনৈতিক বিরোধী হিসেবে উল্লেখ করেন।

স্টিভেন চিউংয়ের মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় কিছু বলতে রাজি হননি মার্ক জান্ডি। তিনি মুডিস অ্যানালিটিকসের প্রধান অর্থনীতিবিদ, যার সঙ্গে মুডিস ঋণমানের সরাসরি কোনো সম্পর্ক নেই।

‘যদি যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি বন্ড ট্রিপল-এ (এএএ) সম্পদ না হয়, তাহলে কারটি হবে?’স্টিফেন মুর, ট্রাম্পের সাবেক জ্যেষ্ঠ অর্থনৈতিক উপদেষ্টা

গত ২০ জানুয়ারি হোয়াইট হাউসে ফিরে আসার পর থেকে ট্রাম্প বলেছেন, তিনি বাজেট সমন্বয় করবেন অর্থাৎ আয়ের এবং খরচের মধ্যে ভারসাম্য রাখবেন। আর তার ট্রেজারি সেক্রেটারি (অর্থ সচিব) স্কট বেসেন্ট বারবার বলেছেন, বর্তমান প্রশাসনের লক্ষ্য হলো যুক্তরাষ্ট্র সরকারের অর্থায়নের খরচ কমানো। অর্থাৎ তারা সরকারের ঋণ নেওয়ার খরচ বা অর্থ সংগ্রহের খরচ কমাতে কাজ করছে।

ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে বলে আসছেন, তিনি বাজেট সমন্বয় করবেন। অর্থাৎ আয় এবং খরচের মধ্যে ভারসাম্য রাখবেন। তবে তাঁর ট্রেজারি সেক্রেটারি স্কট বেসেন্ট বারবার বলেছেন, বর্তমান প্রশাসন সরকারের অর্থায়নের খরচ কমাতে কাজ করছে। এ অর্থ হলো, তাঁরা সরকারের ঋণ নেওয়ার খরচ বা অর্থ সংগ্রহের খরচ কমাতে কাজ করছে।

কেন্দ্রীয় সরকারের খরচ কমাতে ধনকুবের ইলন মাস্ককে প্রধান করে ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট এফিশিয়েন্সি (ডিওজিই) গঠন করেছেন ট্রাম্প। তবে সেই লক্ষ্য পূরণ হয়নি।

রাজস্ব আয় বৃদ্ধি করতে ট্রাম্প বিশ্বের প্রায় সব দেশের ওপর নতুন শুল্ক ঘোষণা করেছে। এতে বিশ্ববাজারে অস্থিরতা তৈরি হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে মুডিসের যুক্তরাষ্ট্রের ঋণমান কমানোর সিদ্ধান্ত পুঁজিবাজারে প্রভাব ফেলছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রোববার সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়ায় তা বোঝা যাবে না। তবে সোমবার বাজার খুললে পুঁজিবাজারে নেতিবাচক প্রভাব দেখা যেতে পারে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র খরচ কম ত র সরক র সরক র র র অর থ বল ছ ন ক জ কর

এছাড়াও পড়ুন:

বিশ্বের যেকোনো প্রান্ত থেকেই প্রবাসীরা ভোট দিতে পারবেন: সিইসি

বিশ্বের যেকোনো প্রান্ত থেকেই প্রবাসী বাংলাদেশিরা প্রথমবারের মতো ভোট দেওয়ার সুযোগ পাবেন বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন। 

মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) রাতে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) অফিসিয়াল ইউটিউব চ্যানেলে দেওয়া এক ভিডিও বার্তায় তিনি একথা বলেন।

সিইসি বলেন, “এই উদ্যোগ দেশের গণতান্ত্রিক অভিযাত্রায় এক ঐতিহাসিক মাইলফলক।”

সিইসি জানান, প্রবাসীদের ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়া সহজ করতে খুব শিগগিরই ‘Postal Vote BD’ নামের একটি মোবাইল অ্যাপ চালু করা হবে। এই অ্যাপের মাধ্যমে প্রবাসীরা "আউট অব কান্ট্রি ভোটিং" -এ রেজিস্ট্রেশন করতে পারবেন।

রেজিস্ট্রেশন করতে যা লাগবে: জাতীয় পরিচয়পত্র (NID),পাসপোর্টের বিবরণ, প্রবাসে বর্তমান ঠিকানা, ফেস আইডেন্টিফিকেশন ও লাইভনেস ডিটেকশন সম্পন্ন করতে হবে।
অ্যাপটিতে একটি নির্দেশনামূলক ভিডিও থাকবে, যেখানে প্রতিটি ধাপে করণীয় বিস্তারিতভাবে দেখানো হবে।

ভোট প্রদান প্রক্রিয়া: রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন হলে ইসি থেকে প্রবাসীর ঠিকানায় ব্যালট পেপার ও ফেরত পাঠানোর খাম পাঠানো হবে। ভোটার ব্যালটে ভোট দিয়ে সেটি নির্দিষ্ট ঠিকানায় ডাকযোগে পাঠাবেন।  নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ব্যালট ইসিতে পৌঁছালেই ভোট গণনায় অন্তর্ভুক্ত হবে।

এ উদ্যোগ সফল করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “এই উদ্যোগ প্রবাসীদের অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনে যুক্ত হওয়ার পথ খুলে দিচ্ছে। প্রথমবারের মতো এ ধরনের পদক্ষেপ আমাদের গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রায় এক ঐতিহাসিক সূচনা। আসুন, সকলে মিলে এই উদ্যোগ সফল করি।”

ঢাকা/ এএএম/ইভা 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • হলান্ডের জোড়া গোল তবু মোনাকোয় আটকে গেল সিটি, আর্সেনালের জয়
  • মাধ্যমিক পেরোনো কড়া সম্প্রদায়ের প্রথম নারী গীতা, উচ্চমাধ্যমিকে পাশে দাঁড়াল প্রশাসন
  • বিশ্বের যেকোনো প্রান্ত থেকেই প্রবাসীরা ভোট দিতে পারবেন: সিইসি