ইউরোপের দেশ গ্রিসে এক সপ্তাহের ব্যবধানে ফের শক্তিশালী ভূমিকম্পের আঘাত হেনেছে। রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৬ দশমিক ১। বৃহস্পতিবার সকালে গ্রিসের ক্রিট উপকূলে তীব্র কম্পন অনুভূত হয়। খবর গ্রিক সিটি টাইমসের।

জার্মান রিসার্চ সেন্টার ফর জিওসায়েন্সেস (জিএফজেড) এর তথ্যানুসারে, ভূপৃষ্ঠের ৭৭ কিলোমিটার গভীরতায় এই ভূমিকম্পটি আঘাত হেনেছে।

ভূমিকম্পের জেরে গ্রিসের জলবায়ু সংকট ও নাগরিক সুরক্ষা মন্ত্রণালয় সুনামি সতর্কতা জারি করেছে। পর্যটক এবং উপকূলীয় বাসিন্দাদের “উপকূল থেকে দূরে সরে গিয়ে ‍উঁচু স্থানে আশ্রয় নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। 

আরো পড়ুন:

ইন্দোনেশিয়ায় ৫.

৯ মাত্রার ভূমিকম্প

গ্রিসে শক্তিশালী ভূমিকম্প, সুনামি সতর্কতা জারি

তবে বৃহস্পতিবারের কম্পনের মাত্রা নিয়ে দু’রকম তথ্য উঠে আসছে। গ্রিসের জিওডায়নামিক্স ইনস্টিটিউট-এর বিবৃতি অনুযায়ী, ভূমিকম্পটির মাত্রা ছিল ৬ দশমিক ১। অন্যদিকে, ইউরোপীয়-ভূমধ্যসাগরীয় ভূকম্পন কেন্দ্র (ইএসএমসি) জানিয়েছে যে ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৬ দশমিক ৩।

ভূমিকম্পের তীব্রতার কারণে, তুরস্ক, লেবানন, মিশর এবং ইসরায়েলের মতো প্রতিবেশী দেশগুলোতেও কম্পন অনুভূত হয়।

ভূমিকম্পে গ্রিসে বড় ধরনের কোনো ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি। তবে ইউরোপের সবচেয়ে ভূমিকম্পপ্রবণ অঞ্চলগুলোর মধ্যে একটি ক্রিট সম্ভাব্য আফটারশকের জন্য উচ্চ সতর্কতায় রয়েছে। ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে, হেরাক্লিয়নের কাছে ৬ দশমিক ৩ মাত্রার ভূমিকম্পে বহু গ্রাম ধ্বংস হয়ে যায়, শত শত বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং অনেক পরিবার বাস্তুচ্যুত হয়। অন্যদিকে ২০২১ সালের অক্টোবরে আরেকটি ভূমিকম্পে একজনের মৃত্যু হয় এবং এক ডজনেরও বেশি মানুষ আহত হয়।

গত সপ্তাহে গ্রিসের ক্রিট শহরের দক্ষিণ উপকূলে ৬ দশমিক ৩ মাত্রার একটি শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছিল। সেসময়ও দ্বীপটিতে সুনামির সতর্কতা জারি করা হয়েছিল। 

গত সপ্তাহের ভূমিকম্পে স্কুল ও পাবলিক ভবনগুলোতে দৃশ্যমান ফাটল দেখা দিয়েছিল, যার ফলে বাসিন্দারা আরো ভূমিকম্পের আশঙ্কায় বাইরে ঘুমাতে বাধ্য হয়েছিলেন। 

গ্রিস কর্তৃপক্ষ এখন পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে বলে জানিয়েছে।

ঢাকা/ফিরোজ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ভ ম কম প ভ ম কম প র ৬ দশম ক উপক ল

এছাড়াও পড়ুন:

চিম্বুকে ভালুকের আক্রমণে একজন আহত, ৫ বছরে ১০ জন হামলার শিকার

বান্দরবান-চিম্বুক-থানচি সড়কের পোড়াবাংলা পটোসিংপাড়ায় আজ শুক্রবার সকালে ভালুকের আক্রমণে একজন গুরুতর আহত হয়েছেন। তাঁকে উদ্ধার করে বান্দরবান সদর হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে বলে চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন।

বন বিভাগ ও স্থানীয়রা জানিয়েছেন, ২০২১ সাল থেকে ভালুকের আক্রমণ বেড়েছে। গত পাঁচ বছরে ১০ জন আক্রমণের শিকার হয়েছেন। আক্রমণের শিকার ব্যক্তিদের অধিকাংশ ম্রো জনগোষ্ঠীর। ভালুকের কারণে আহত হওয়ার ঘটনায় আবেদন না করায় এই পর্যন্ত কেউ ক্ষতিপূরণ পায়নি বলে বন বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

স্থানীয় লোকজন জানিয়েছেন, আজ সকাল সাড়ে ৯টার দিকে পোড়াবাংলা পটোসিংপাড়ার কাইনপ্রে ম্রো (৩৫) পাড়া থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার দূরে জুমখেতে কাজ করতে যান। সেখানে জুমের পাশে কলাবাগানে কাজ করার সময় হঠাৎ কালো রঙের একটি ভালুক তাঁর ওপর আক্রমণ করে। ভালুকটি তাঁর পেটে ও মুখে আঘাত করতে থাকে। তাঁর চিৎকারে আশপাশে জুমের লোকজন এগিয়ে আসেন।

আহত কাইনপ্রে ম্রোর ভাই তনরুই ম্রো জানিয়েছেন, আশপাশের লোকজনের এগিয়ে আসা দেখে ভালুকটি কাইনপ্রে ম্রোকে ছেড়ে দিয়ে বনে পালিয়ে যায়। তাঁরা দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে কাইনপ্রে ম্রোকে উদ্ধার করে দুপুরে বান্দরবান সদর হাসপাতালে নিয়ে আসেন। পোড়াবাংলা পটোসিংপাড়া জেলা শহর থেকে ৩১ কিলোমিটার দূরে। পাড়াটি রুমা উপজেলার গালেংগ্যা ইউনিয়নে পড়েছে।

বান্দরবান সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, আহত কাইনপ্রে ম্রোর পেটে ও মাথায় গভীর ক্ষত আছে। এ জন্য তাঁকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

জানা যায়, থানচি তিন্দু ইউনিয়নে মেনপই ম্রো নামের একজন ২০২০ সালের ২৮ এপ্রিল প্রথম ভালুকের আক্রমণের শিকার হন। ওই একজনসহ ২০২১ সাল থেকে এই পর্যন্ত ৫ বছরে ১০ জন ভালুকের আক্রমণে আহত হয়েছেন। আহত ব্যক্তিদের মধ্যে থানচিতে দুজন, রুমাতে তিনজন, আলীকদমে একজন ও বান্দরবান সদর উপজেলা চিম্বুক পাহাড়ে চারজন রয়েছেন। কারও মৃত্যু না হলেও তাঁদের মধ্যে কেউ চোখ হারিয়েছেন, কারও হাত–পা পঙ্গু হয়েছে। আহত ব্যক্তিরা একজন মারমা ও একজন খুমি ছাড়া অন্যরা সবাই ম্রো।

বন বিভাগের বান্দরবানের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মো. আবদুর রহমান জানিয়েছেন, প্রাকৃতিক বনাঞ্চল কেটে উদ্যান বাগান ও জুমচাষ করা এলাকাগুলোতে ভালুকের আক্রমণ বেড়েছে। এতে বোঝা যাচ্ছে, বাগানের কারণে ভালুক ও অন্যান্য বন্য প্রাণীরা আবাসস্থল ও বেঁচে থাকার জন্য খাদ্যসংস্থান হারাচ্ছে। জীবনের তাগিদে তারা মানুষের সঙ্গে মুখোমুখি হতে বাধ্য হচ্ছে। বন নির্ভর মানুষকে অন্যভাবে আয়ের সংস্থানের মাধ্যমে প্রাকৃতিক বনাঞ্চল সংরক্ষণ না হলে বন্য প্রাণীর সঙ্গে সহাবস্থান গড়ে উঠবে না। এভাবে প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষা করা না হলে বন্য প্রাণী ও মানুষ কারও জন্য মঙ্গলজনক হবে না।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ‘হুক্কা’ প্রতীকসহ নিবন্ধন ফিরে পেল জাগপা
  • চিম্বুকে ভালুকের আক্রমণে একজন আহত, ৫ বছরে ১০ জন হামলার শিকার