কোনোভাবেই এই সুযোগ নষ্ট করা যাবে না: ইসলামী আন্দোলনের আমির
Published: 23rd, May 2025 GMT
ফ্যাসিবাদ উৎখাতে ভূমিকা রাখা সব পক্ষকে দায়িত্বশীল ও সতর্ক আচরণ করার আহ্বান জানিয়েছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম। তিনি বলেছেন, জুলাইয়ের রক্তাক্ত অভ্যুত্থানের ফলে জাতির সামনে রাষ্ট্রের নীতিগত, প্রাতিষ্ঠানিক ও প্রশাসনিক সংস্কারের যে সুযোগ তৈরি হয়েছে, কোনোভাবেই সে সুযোগ নষ্ট করা যাবে না।
আজ শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর পুরানা পল্টনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলের জ্যেষ্ঠ নেতাদের সঙ্গে চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে এক বৈঠকে দলের আমির এ কথাগুলো বলেন। দলের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
সৈয়দ রেজাউল করীম বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর চাওয়া-পাওয়ার বিষয় আছে। তবে অন্তর্বর্তী সরকারকে চাপে ফেলে দাবিদাওয়া আদায়ের রাজনীতি ও পরস্পরবিরোধী রাজনৈতিক সংস্কৃতি থেকে সরে আসতে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে উত্তরবঙ্গের নির্ধারিত কর্মসূচি বাদ দিয়ে ঢাকায় ফ্যাসিবাদবিরোধী পাঁচটি রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে জরুরি বৈঠকে অংশ নিয়ে অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি দৃঢ় সমর্থনের কথা জানিয়েছেন।
এরই ধারাবাহিকতায় আজ প্রধান উপদেষ্টার প্রতি আহ্বান জানিয়ে ইসলামী আন্দোলনের আমির বলেন, ‘অভ্যুত্থান–পরবর্তী দেশের মানুষের অভূতপূর্ব অকুণ্ঠ সমর্থনে আপনাকে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। আপনার দায় শহীদদের রক্ত ও আহত ব্যক্তিদের বেদনার প্রতি। তাঁদের রক্ত ও জীবন উৎসর্গকে সার্থক করতে সংস্কারের গুরুদায়িত্ব আপনাকে পালন করতেই হবে। কোনো দল বা ব্যক্তিবিশেষের চাপ, অসহযোগিতা, বাধাকে উপেক্ষা করুন। ১৮ কোটি জনতার দেওয়া দায়িত্ব আপনি অবিচল থেকে পালন করুন। দেশবাসী আপনার পাশে ছিল, আছে এবং থাকবে, ইনশা আল্লাহ।’
সৈয়দ রেজাউল করীম আরও বলেন, নির্বাহী বিভাগ, বিচার বিভাগ, সশস্ত্র বাহিনীসহ রাষ্ট্রের সব সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব-কর্তব্য ও কর্মপরিধি সুনির্দিষ্টভাবে বলা আছে। কোনোভাবেই এর ব্যত্যয় ঘটানো যাবে না। এতে রাষ্ট্রের শৃঙ্খলা ভেঙে পড়ে। তাই রাষ্ট্রের সব প্রতিষ্ঠানকে নিজ কর্মপরিধির মধ্যে সতর্ক ও দায়িত্বশীল আচরণ করতে হবে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র জন ত ক র আম র ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
মার্কিন-ইসরায়েলি ত্রাণকেন্দ্রে খাবার নিতে এসে প্রাণ গেছে ৭৪৩ ফিলিস্তিনির
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক এবং ইসরায়েল–সমর্থিত সংস্থা গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনের (জিএইচএফ) ত্রাণ বিতরণকেন্দ্রের আশপাশে ভিড় করা মানুষের ওপর নির্বিচার হামলার অভিযোগ বাড়ছে। সেখানে কয়েক সপ্তাহে ত্রাণ নিতে গিয়ে প্রায় সাড়ে ৭০০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
মে মাসের শেষ দিক থেকে গাজায় ত্রাণ বিতরণ শুরু করে জিএইচএফ। শনিবার গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়, জিএইচএফের কেন্দ্রগুলোতে হামলায় অন্তত ৭৪৩ ফিলিস্তিনি নিহত এবং ৪ হাজার ৮৯১ জন আহত হয়েছেন।
এদিকে মধ্যস্থতাকারী দেশ কাতার, যুক্তরাষ্ট্র ও মিসরের দেওয়া যুদ্ধবিরতি পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনার জন্য কাতারে প্রতিনিধিদল পাঠাচ্ছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। তবে আলোচনা চললেও গাজায় ইসরায়েলের হামলা থামেনি। রোববার ভোরেও গাজাজুড়ে ইসরায়েলের হামলায় ২৭ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
জিএইচএফ ইতিমধ্যে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছে। একাধিক প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, সংস্থাটির কর্মীদের পাশাপাশি ইসরায়েলি বাহিনীও ত্রাণ নিতে আসা মানুষের ওপর গুলি চালিয়েছে।
এই সপ্তাহের শুরুতে অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি) এক প্রতিবেদনে কয়েকজন মার্কিন ভাড়াটে কর্মীর বরাত দিয়ে বলা হয়, জিএইচএফের ত্রাণ বিতরণকেন্দ্রগুলোতে সহায়তা নিতে আসা ফিলিস্তিনি বেসামরিক নাগরিকদের ওপর গুলি ও স্ট্যান গ্রেনেড ছোড়া হয়েছে। তাঁরা আরও বলেন, সেখানে অস্ত্রে সজ্জিত কর্মীরা যেন যা খুশি তাই করছেন। তাঁদের আচরণে তেমনটাই মনে হয়েছে।আল–জাজিরার সাংবাদিক হানি মাহমুদ গাজা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ সংখ্যার বিষয়ে বলেন, মর্মান্তিক বিষয় হলো তাঁরা সবাই ত্রাণ নিতে ত্রাণ বিতরণকেন্দ্রে গিয়েছিলেন এবং খাবারের প্যাকেটের জন্য অপেক্ষায় করছিলেন।
হানি মাহমুদ গাজা নগরী থেকে সংবাদ সংগ্রহ করছেন। তিনি বলেন, ইসরায়েলের অবরোধে সৃষ্ট চরম সংকটের মধ্যে যখন ফিলিস্তিনিরা পরিবারের সদস্যদের জন্য একটু খাবার সংগ্রহ করতে মরিয়া, ঠিক তখনই ত্রাণ নিতে আসা মানুষের ওপর হামলা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘মানুষ অনাহারে দিন কাটাচ্ছে। হিসাব করে খাবার খাচ্ছে। অনেক পরিবারই খাবার খেতে পারছে না। অনেক মা নিজে না খেয়ে সন্তানদের মুখে খাবার তুলে দিচ্ছেন।’
এই সপ্তাহের শুরুতে অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি) এক প্রতিবেদনে কয়েকজন মার্কিন ভাড়াটে কর্মীর বরাত দিয়ে বলা হয়, জিএইচএফের ত্রাণ বিতরণকেন্দ্রগুলোতে সহায়তা নিতে আসা ফিলিস্তিনি বেসামরিক নাগরিকদের ওপর গুলি ও স্ট্যান গ্রেনেড ছোড়া হয়েছে। তাঁরা আরও বলেন, সেখানে অস্ত্রে সজ্জিত কর্মীরা যেন যা খুশি তাই করছেন। তাঁদের আচরণে তেমনটাই মনে হয়েছে।
আমার সন্তানেরা টানা তিন দিন না খেয়ে ছিল। তাই আমি বাধ্য হয়ে ওই (জিএইচএফ) ত্রাণ বিতরণকেন্দ্রে গিয়েছিলাম।’মজিদ আবু লাবান, জিএইচএফ ত্রাণকেন্দ্রে ত্রাণ নিতে গিয়ে আহত ফিলিস্তিনিজিএইচএফ এপির প্রতিবেদনকে ‘সম্পূর্ণ মিথ্যা’ বলে উড়িয়ে দিয়েছে এবং বলেছে, তাদের কাছে নিজেদের কার্যক্রম স্থলগুলোর নিরাপত্তা এবং সুরক্ষা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
জুনের শেষ দিকে ট্রাম্প প্রশাসন জিএইচএফের জন্য ৩ কোটি ডলার অনুদানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
জিএইচএফের একটি ত্রাণ বিতরণকেন্দ্রে ত্রাণ নিতে গিয়ে আহত হওয়া মজিদ আবু লাবান বলেন, ‘আমার সন্তানেরা টানা তিন দিন না খেয়ে ছিল। তাই আমি বাধ্য হয়ে ওই (জিএইচএফ) ত্রাণ বিতরণকেন্দ্রে গিয়েছিলাম।’
আরও পড়ুনআগামী সপ্তাহেই গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তি হতে পারে: ট্রাম্প০৫ জুলাই ২০২৫গাজায় নিহত ২৭গাজায় ২০ মাসের বেশি সময় ধরে যুদ্ধ চলছে। রোববার ভোরেও গাজাজুড়ে ইসরায়েলের হামলায় ২৭ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। গাজা নগরীর কাছের এলাকা তুফাতে হামলায় তিন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে আল-আহলি আরব হাসপাতাল। দক্ষিণের খান ইউনিসে একটি তাঁবুতে ইসরায়েলের ড্রোন হামলায় দুজন নিহত হন এবং আরও কয়েকজন আহত হয়েছেন। আগের দিন শনিবার ২৪ ঘণ্টায় অন্তত ৭৮ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করে ইসরায়েল।
উত্তরে গাজা সিটির কাছের এলাকা শেখ রাদওয়ানে একটি বাড়িতে ইসরায়েলের হামলায় অন্তত ১২ জন নিহত এবং বহু মানুষ আহত হয়েছেন। বাস্তুহারা অনেক ফিলিস্তিনি ওই বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছিলেন।
আরও পড়ুনগাজায় যুদ্ধবিরতি আলোচনা শুরু করতে প্রস্তুত হামাস০৫ জুলাই ২০২৫