বাংলাদেশ–সিঙ্গাপুর ম্যাচের টিকিট বিক্রি ‘কিছুক্ষণের মধ্যে’ ফের শুরু, বললেন বাফুফে কর্মকর্তা
Published: 25th, May 2025 GMT
বাংলাদেশ-সিঙ্গাপুর এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বের ম্যাচ ঘিরে উত্তেজনার শেষ নেই। দেশের মাটিতে জাতীয় দলের খেলা, তাতে আবার হামজা চৌধুরী, শমিত সোমদের মাঠে দেখার সুযোগ—সব মিলিয়ে ১০ জুন জাতীয় স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ-সিঙ্গাপুর ম্যাচে টিকিটের চাহিদা আকাশচুম্বী।
শনিবার রাত ৮টায় অনলাইনে টিকিট বিক্রি শুরু হয় ওয়েবসাইট Tickify.
বিষয়টি নিয়ে আজ সকালে প্রথম আলোর কথা হয় বাফুফের কমপিটিশন কমিটির চেয়ারম্যান ও সাবেক জাতীয় ফুটবলার গোলাম গাউসের সঙ্গে। তিনি নিজেদের অসহায়ত্ব প্রকাশ করে বলেন, ‘গত সারা রাত আমরা এ নিয়ে কাজ করেছি। এখনো করছি। সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছে। তারা আজ সকাল ১১টার দিকে বলেছে—অনলাইনে আবার টিকিট কেনা যাবে দ্রুতই, আর কিছুক্ষণের মধ্যে তারা টিকিট বিক্রি শুরু করবে।’
কিন্তু সেই কিছুক্ষণ মানে কখন, কয় ঘণ্টা পর? এ নিয়ে প্রশ্ন করলে গোলাম গাউস পরিষ্কার কোনো ধারণা দিতে পারেননি। শুধু বলেছেন কিছুক্ষণের মধ্যেই দেবে।
শনিবার রাতে পরিস্থিতি এতটাই দুর্বিষহ হয়ে ওঠে যে, সঙ্গে সঙ্গে দুঃখপ্রকাশ করে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দেয় বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)। তাদের দাবি, সাইবার হামলার শিকার হয়েছে ওয়েবসাইটটি। তবে এই ‘সাইবার হামলা’ বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানায়নি তারা, শুধু বলেছে নতুন আপডেট খুব শিগগিরই দেওয়া হবে।
এদিকে ‘সাইবার ৭১’ এর ভাষ্য অনুযায়ী, কোনো অসাধু চক্র Tickify-এর সার্ভার নিয়ন্ত্রণে নিয়ে কালোবাজারে টিকিট বিক্রি করছে।’ তারা দাবি করেছে, Tickify প্ল্যাটফর্মে একসঙ্গে চার লাখ ব্যবহারকারী প্রবেশ করতে পারে। অথচ গতরাতে সর্বোচ্চ ৯,৭৮১ জন ব্যবহারকারী সার্ভারে ঢুকেছেন, কিন্তু ততক্ষণে বিক্রি হয়ে গেছে ১৭ হাজারের বেশি টিকিট।
সাইবার ৭১-র ভাষ্য, মোট টিকিট ছিল ২১,৭০০টি। এর মধ্যে বিক্রি হয়ে গেছে প্রায় ১৭,০০০। অথচ লগ ইন করেছে মাত্র ৯,৭৮১ জন। তাহলে অতিরিক্ত ৮,০০০ টিকিট কারা নিল? এটি পরিষ্কার ইঙ্গিত করে সার্ভারের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে কালোবাজারিদের মাধ্যমে টিকিট ছিনতাই হয়েছে। তারা বিষয়টি তদন্তের অনুরোধ জানিয়েছে বাফুফের প্রতি।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
উজানে বাঁধ ও জলবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে মারাত্মক সংকটে তিস্তা নদী
আন্তর্জাতিক নিয়ম না মেনে উজানে বাঁধ ও জলবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের ফলে তিস্তা নদী মারাত্মক সংকটে পড়েছে। আর প্রস্তাবিত তিস্তা প্রকল্প নিয়েও কেউ খোলামেলা কথা বলতে চাইছেন না।
রোববার রাজধানীর প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশে (পিআইবি) ‘সংকটে তিস্তা নদী: সমাধানের পথ কী?’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় বক্তারা এ কথা বলেন। বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) ও বাংলাদেশ পরিবেশ নেটওয়ার্ক (বেন) যৌথভাবে এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করে।
মতবিনিময় সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাপার সহসভাপতি অধ্যাপক মো. খালেকুজ্জমান। প্রবন্ধে তিনি উল্লেখ করেন, ভারতের সঙ্গে কোনো পানিবণ্টন চুক্তি না থাকায় এবং আন্তর্জাতিক নিয়ম না মেনে উজানে বাঁধ ও জলবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের ফলে তিস্তা নদী মারাত্মক সংকটে পড়েছে। শুষ্ক মৌসুমে পানির অভাবে আর বর্ষাকালে নিয়ন্ত্রণহীন পানিনির্গমনের ফলে বাংলাদেশ অংশে বন্যা ও ভাঙনের ঝুঁকি বাড়ছে।
মতবিনিময় সভায় বিশেষজ্ঞরা তিস্তা সমস্যার সমাধানে ভারতের সঙ্গে গঠনমূলক সম্পৃক্ততা, আন্তর্জাতিক আইনের প্রয়োগ এবং প্রকল্পে স্থানীয় জনগণের মতামত গ্রহণের ওপর জোর দেন। তাঁরা তিস্তা মহাপরিকল্পনা সম্পর্কে স্বচ্ছতা ও পুনর্মূল্যায়নের দাবি জানান।
অর্থনীতিবিদ আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘সরকারের কাছে তিস্তা মহাপরিকল্পনার কোনো তথ্য নেই। বিগত বছরগুলোতে উন্নয়নের নামে দেশের নদীগুলোকে সংকুচিত করা হয়েছে। আমরা আর সংকুচিত করার উন্নয়ন চাই না। নদীকে নদীর মতোই রাখতে হবে।’
আনু মুহাম্মদ আরও বলেন, দেশের উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণের ক্ষেত্রে ব্যক্তিস্বার্থকে উপেক্ষা করে দেশের স্বার্থকে বড় করে দেখতে হবে। যেসব প্রকল্প দীর্ঘমেয়াদি, সেসব প্রকল্প গ্রহণের আগে অবশ্যই জনগণের মতামত নিতে হবে।
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাবেক সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন বলেন, ‘আমাদের নিজস্ব সামর্থ্য অনুযায়ী প্রকল্প নেওয়া উচিত। নদীকে রক্ষা করতে হবে কিন্তু তাকে খালে পরিণত করে নয়। এই প্রকল্প পুনর্মূল্যায়ন করা প্রয়োজন।
বাপার প্রতিষ্ঠাতা নজরুল ইসলাম বলেন, ‘বাপা কখনো উন্নয়নবিরোধী নয়। আমরাও চাই দেশের উন্নয়ন হোক। কিন্তু সেই উন্নয়ন হতে হবে দেশের প্রাণপ্রকৃতি, পরিবেশ ও নদীকে ঠিক রেখে। তিস্তা প্রকল্প নিয়ে কেউ খোলামেলা কথা বলতে চাইছেন না। সরকার ও বিরোধী দল উভয়ই চীন-বাংলাদেশ সম্পর্ক নিয়ে সংবেদনশীল হওয়ায় এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি উপেক্ষিত থেকে যাচ্ছে।’
বাপার সভাপতি অধ্যাপক নুর মোহাম্মদ তালুকদারের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক আলমগীর কবিরের সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, পরিবেশবিদ, গবেষক ও তিস্তাপাড়ের বাসিন্দারা অংশ নেন।