ইরান আমাদের কাছে কোনো সাহায্য চায়নি: পুতিন
Published: 19th, June 2025 GMT
ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধ নিয়ে রাশিয়া কোনো পক্ষের ওপর সমাধান চাপিয়ে দিচ্ছে না বলে জানিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তিনি বলেন, বরং আলোচনার মাধ্যমে আমরা একটি সম্ভাব্য সমাধান বের করতে চাইছি।
স্থানীয় সময় বুধবার সেন্ট পিটার্সবার্গ আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক ফোরামে সাংবাদিকদের সঙ্গে এক গোলটেবিল বৈঠকে পুতিন এ সব কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘আমরা কাউকে কিছু চাপিয়ে দিচ্ছি না। শুধু বলছি, কীভাবে এই পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসা যেতে পারে। এই সিদ্ধান্ত মূলত সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর, বিশেষ করে ইরান ও ইসরায়েলের রাজনৈতিক নেতৃত্বের নেওয়ার বিষয়।’
ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপির এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে পুতিন স্পষ্ট করে বলেন, ‘আমাদের ইরানি বন্ধুরা এখন পর্যন্ত আমাদের কাছে কোনো সহায়তা চায়নি।’
আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পুতিন বলেছেন, রাশিয়ার কর্মীরা ইরানের বুশেহর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে কাজ করছেন। ইসরায়েল এখন পর্যন্ত এই স্থাপনায় হামলা চালায়নি। তারা রাশিয়ার কর্মীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
রাশিয়া ২০০৫ সালে বুশেহর প্রকল্পের নির্মাণ শুরু করে। ২০১১ সালে তা চালু হয়। ইতিমধ্যে ইরানের সঙ্গে একটি ২০ বছর মেয়াদি চুক্তির অধীনে আরও তিনটি পারমাণবিক স্থাপনা নির্মাণে সম্মত হয়েছে রাশিয়া।
পুতিন জানান, তিনি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ানের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ রাখছেন। তার মতে, ইরানি জনগণ এখন তাদের নেতৃত্বের পেছনে একতাবদ্ধ হচ্ছে এবং এই সংকট সমাধানে কূটনৈতিক সমাধান প্রয়োজন।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
মেয়ের জামাইকে হত্যার পর রক্তমাখা ছুরি ধুয়ে বাড়িতে রাখেন শ্বশুর
তিন বছরের অসুস্থ মেয়েকে দেখতে শ্বশুরবাড়িতে গিয়েছিলেন মো. হানিফ। সেখানে কলহে জড়ান শ্বশুর ও শ্যালকের সঙ্গে। আর তার জের ধরে শ্বশুর খোরশেদ মোল্লা, শ্যালক আরিফ মোল্লা ও শ্যালকের বন্ধু দেলোয়ার হোসেন ছুরিকাঘাতে খুন করেন তাঁকে। হত্যার পর হানিফের শ্বশুর আবার সেই ছুরি ধুয়ে রেখে দেন বাড়িতে।
গত সোমবার নিহত হানিফের শ্বশুর, শ্যালকসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। উদ্ধার করা হয় হত্যায় ব্যবহৃত ছুরি। এর মধ্যে মধ্যে শ্বশুর ও শ্যালক আদালতে জবানবন্দি দেন গত মঙ্গলবার। সেই জবানবন্দিতেই বেরিয়ে আসে এই হত্যাকাণ্ডের আদ্যোপান্ত।
গত রোববার সকালে চট্টগ্রাম নগরের বায়েজিদ বোস্তামী থানা এলাকার মাঝের ঘোনা গলাচিপা কাঁচা রাস্তার মোড়ে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। জরুরি সেবা ৯৯৯ থেকে কল পেয়ে পুলিশ সেদিনই হানিফের লাশ উদ্ধার করে। তাঁর শরীরে ১৭টি ছুরিকাঘাতের চিহ্ন ছিল। এই ঘটনায় হানিফের বাবা জামাল মিয়া বাদী হয়ে বায়েজিদ বোস্তামী থানায় মামলা করেন।
পুলিশ জানায়, শ্বশুরবাড়ির আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে বনিবনা ছিল না হানিফের। দুই বছর ধরে হানিফের স্ত্রী থাকছিলেন বাবার বাড়িতে। তবে মেয়ের অসুস্থতার খবর শুনে তিনি দেখতে গিয়েছিলেন তাকে। সেখানেই পারিবারিক কলহের জের ধরে খুন করা হয় তাঁকে।
এ ঘটনায় গ্রেপ্তার পাঁচজন হলেন হানিফের শ্বশুর খোরশেদ মোল্লা, শ্যালক আরিফ মোল্লা, তাঁর বন্ধু দেলোয়ার হোসেন, হানিফের স্ত্রী নুরজাহান আক্তার ও শাশুড়ি রহিমা বেগম। এর মধ্যে আদালতে জবানবন্দি দেন হানিফের শ্বশুর খোরশেদ মোল্লা ও শ্যালক আরিফ মোল্লা।
আদালতে দেওয়া জবানবন্দি থেকে জানা যায়, সাত বছর আগে হানিফের সঙ্গে খোরশেদের বড় মেয়ে নুরজাহানের সঙ্গে বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে পারিবারিক কলহের কারণে দুই বছর ধরে হানিফের স্ত্রী তার বাবার বাড়িতে থাকছেন। এরই মধ্যে পারিবারিক আদালতে হানিফের বিরুদ্ধে মামলাও করেন তাঁর স্ত্রী। তিন বছরের মেয়ে হাবিবা আক্তার অসুস্থ হয়ে পড়েছে শুনে শ্বশুরবাড়িতে যান হানিফ। এর আগেই শ্বশুর খোরশেদ তাঁর অপেক্ষায় ছুরি নিয়ে বাড়ির সামনে অপেক্ষা করছিলেন। বিষয়টি হানিফ নিজের মুঠোফোনে ধারণ করেন। এ সময় উত্তেজিত হয়ে হানিফকে ধাক্কা দেন তাঁর শ্বশুর খোরশেদ। এরপর শ্বশুর, শ্যালক ও শ্যালকের বন্ধু মিলে ছুরিকাঘাতে হত্যা করেন তাঁকে।
বায়েজিদ বোস্তামী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামরুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, বড় মেয়ের জামাই হানিফকে হত্যাকাণ্ডের পর শ্বশুর খোরশেদ ছুরিগুলো ঘরে নিয়ে ধুয়ে পরিষ্কার করে ঘরে রেখে দেন। তাকে গ্রেপ্তারের পর ঘরে অভিযান চালিয়ে একটি ছুরি ডাইনিং টেবিলের নিচ থেকে, আরেকটি ছুরি ড্রেসিং টেবিলের ড্রয়ার থেকে উদ্ধার করা হয়। গ্রেপ্তার পাঁচ আসামির মধ্যে শ্বশুর ও শ্যালক আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন।