সরকারি নারী কর্মকর্তাদের ‘স্যার’ বলে সম্বোধনের নির্দেশনা বাতিলের সিদ্ধান্ত হলেও এ বিষয়ে এখনো কোনো লিখিত আদেশ জারি হয়নি। ফলে সিদ্ধান্তটির বাস্তব প্রয়োগ সরকারি দপ্তরগুলোয় শুরু হয়নি।

আবার শুধু সরকারি নারী কর্মকর্তাদের ক্ষেত্রে ‘স্যার’ সম্বোধন বন্ধের এই সিদ্ধান্ত নিয়ে আছে প্রশ্ন–আপত্তি। অনেকেই বলছেন, সম্বোধনের বিষয়টি নির্ধারিত হলে তা নারী-পুরুষ উভয়ের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য হওয়া উচিত। ‘স্যার’ বা ‘ম্যাডাম’ নয়, বরং সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পদবি বা নাম ধরে সম্বোধনের নিয়ম হতে পারে। কিংবা যে যাঁর মতো ডাকতে পারেন।

গত ১০ জুলাই সরকারি নারী কর্মকর্তাদের ‘স্যার’ সম্বোধনের নির্দেশনা বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয় অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইংয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। সেদিন প্রেস উইং বলে, শেখ হাসিনার প্রায় ১৬ বছরের কর্তৃত্ববাদী শাসনের সময় সরকারি কর্মকর্তাদের তাঁকে ‘স্যার’ সম্বোধন করতে বলে একটি নির্দেশনা জারি করা হয়। এই চর্চা উঁচু পদের অন্য নারী কর্মকর্তাদের ক্ষেত্রেও বিস্তৃত হয়। তাঁদের ‘স্যার’ বলা হয়, যা স্পষ্টত অস্বাভাবিক।

একই সঙ্গে প্রটোকল নির্দেশনা ও সম্বোধনসংক্রান্ত বিষয়গুলো পর্যালোচনা, সংশোধনের প্রস্তাব তৈরির লক্ষ্যে দুই উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান ও সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানকে দিয়ে একটি কমিটি গঠন করে উপদেষ্টা পরিষদ। যথাযথ সংশোধনের জন্য এক মাসের মধ্যে উপদেষ্টা পরিষদের কাছে সুপারিশ তুলে ধরবে এই কমিটি।

বাংলাদেশে ‘স্যার’ বা ‘ম্যাডাম’ সম্বোধনসংক্রান্ত কোনো সরকারি আইন, বিধিমালা বা নীতিমালা নেই। এটি মূলত একটি প্রথা বা সামাজিক রীতি, যা শিক্ষা, প্রশাসন ও করপোরেট জগতে বহুদিন ধরে চলে আসছে।

সাবেক একজন মন্ত্রিপরিষদ সচিব প্রথম আলোকে বলেন, বাংলা ভাষা প্রচলন আইন, ১৯৮৭-এর প্রেক্ষাপটে স্যার বা ম্যাডামের বাংলা কী হবে, তা নিয়ে ১৯৯০ সালে একটি নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল। এতে চিঠিপত্রে সম্বোধনের ক্ষেত্রে স্যার-ম্যাডামের বাংলা হিসেবে জনাব, মহোদয় বা মহোদয়া ব্যবহারের কথা বলা হয়েছিল। তবে মৌখিক ক্ষেত্রে স্যার-ম্যাডাম ডাকা যেতে পারে বলেও বলা হয়েছিল।

পরবর্তী সময়ে একপর্যায়ে নারী-পুরুষনির্বিশেষে সবাইকেই ‘স্যার’ ডাকার প্রচলন শুরু হয়। এটি শুধু সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকেনি। সাধারণ সেবা নিতে আসা মানুষদের ক্ষেত্রেও এর প্রচলন শুরু হয়, যা নিয়ে কখনো কখনো অস্বস্তিকর পরিস্থিতিও তৈরি হতে দেখা গেছে। যেমন ২০২৩ সালে ‘স্যার’ না বলায় রংপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) ক্ষুব্ধ আচরণ করেছেন—এমন অভিযোগ তুলেছিলেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ওমর ফারুক। এ ঘটনার প্রতিবাদে তিনি ডিসি কার্যালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেছিলেন। অবশ্য তৎকালীন ডিসি চিত্রলেখা নাজনীন দুঃখ প্রকাশ করে ঘটনার ইতি টানলেও ফেসবুকে সরকারি চাকরিজীবীদের ‘স্যার’ ডাকা না-ডাকা নিয়ে তুমুল আলোচনা চলে।

সম্প্রতি সরকারি দপ্তরে নারী কর্মকর্তাদের ‘স্যার’ বলে সম্বোধনের নির্দেশনা উপদেষ্টা পরিষদ বাতিলের পর বিষয়টি নতুন করে সামনে এসেছে, যা নিয়ে আলোচনা চলছে।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের নীতিনির্ধারকেরা আগেও বলেছেন, সরকারি কর্মকর্তারা জনগণের সেবক। তাঁদের ‘স্যার’ বা ‘ম্যাডাম’ বলে সম্বোধন বাধ্যতামূলক নয়। কেউ ‘আপা’ বা ‘ভাই’ বললেও আপত্তির কিছু নেই।

সবাইকে ‘স্যার’ বলা কবে চালু হয়েছিল, সে বিষয়ে এই প্রতিবেদক মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একাধিক কর্মকর্তার কাছে জানতে চাইলে কেউ সুনির্দিষ্ট করে বলতে পারেননি।

সাবেক একজন মন্ত্রিপরিষদ সচিব প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর যতটুকু মনে পড়ে, ১৯৯৬ সালে নতুন সরকার গঠনের পর থেকে বিষয়টি চালু হয়। কিন্তু কোনো লিখিত নির্দেশনা ছিল না।

সাবেক আরেকজন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ মোশাররাফ হোসাইন ভূইঞা প্রথম আলোকে বলেন, কর্মকর্তাদের স‍্যার বা ম‍্যাডাম ডাকার প্রচলন মূলত শুরু হয় ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক আমলে। এ বিষয়ে, বিশেষত সিভিল সার্ভিসে, কোনো লিখিত নির্দেশ ছিল বলে তাঁর জানা নেই। নারী-পুরুষনির্বিশেষে ‘স্যার’ বলার প্রচলন শুরু হয় বিগত সরকারের আমলে। তাঁর জানা মতে, এ বিষয়ে কোনো লিখিত আদেশ ছিল না। উপমহাদেশে শিক্ষকদের ‘স‍্যার’ বা ‘ম‍্যাডাম’ সম্বোধনের বিষয়টিও চালু হয় ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক আমলে। সম্বোধনের ধরন মূলত প্রথাগত।

সরকারি নারী কর্মকর্তাদের ‘স্যার’ বলে সম্বোধনের নির্দেশনা বাতিলের পর এ বিষয়ে কোনো লিখিত আদেশ জারি করা হয়েছে কি না, তা নিশ্চিত করে বলতে পারেননি দায়িত্বশীল কোনো কর্মকর্তা। এই কর্মকর্তাদের মধ্যে এমন ঊর্ধ্বতন ব্যক্তিরা আছেন, আদেশ জারি হলে যাঁরা নিশ্চিতভাবে জানতেন।

সম্প্রতি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, এ বিষয়ে আদেশ বা নির্দেশনা জারি হয়েছে কি না, তা তাঁর জানা নেই। তিনি বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত মন্তব্য করতে চাননি।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, এ বিষয়ে আদেশ জারি হয়েছে বলে তিনি জানেন না।

যেহেতু লিখিত আদেশ বা নির্দেশনা জারি হয়নি, তাই আগের প্রথা অনুযায়ী সরকারি নারী কর্মকর্তাদের ‘স্যার’ বলে সম্বোধন চলছে। যেমন সম্প্রতি সচিবালয়ে স্থানীয় সরকার বিভাগের একজন ঊর্ধ্বতন নারী কর্মকর্তার অফিস কক্ষে দেখা যায়, তাঁর অধীনস্থ এক কর্মকর্তা তাঁকে ‘স্যার’ সম্বোধন করছেন।

সম্বোধনের বিষয়টি যে একটি মনস্তাত্ত্বিক ব্যাপার, তা বোঝা যায় সচিবালয়ের একজন কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে। তিনি বলেন, একবার তিনি সচিবালয়ে দায়িত্বরত একজন পুলিশ কর্মকর্তার (নারী) কাছে এ বিষয়ে জানতে চেয়েছিলেন। তখন পুলিশ কর্মকর্তা তাঁকে বলেছিলেন, সম্বোধনের মধ্যে একটি দৃষ্টিভঙ্গি কাজ করে।

আরও পড়ুনসরকারি নারী কর্মকর্তাদের ‘স্যার’ সম্বোধনের নির্দেশনা বাতিল১০ জুলাই ২০২৫

লেখক ও উন্নয়নকর্মী নিশাত সুলতানা একসময় বাংলাদেশ সরকারের প্রশাসন ক্যাডারে কিছুদিন চাকরি করেছেন। গত ১৩ জুলাই প্রথম আলোয় ‘পুরুষ “স্যারদের” কি সব সময় স্যারই ডাকতে হবে’ শিরোনামে একটি কলাম লিখেছিলেন। এতে তিনি লেখেন, ‘মনে রাখা প্রয়োজন, “স্যার” শব্দটি সাধারণ আর দশটি পুরুষবাচক শব্দের মতো নয়। এই শব্দটির সঙ্গে ওতপ্রোত হয়ে আছে ক্ষমতার রাজনীতি। তাই সম্বোধনের ক্ষেত্রে নারী-পুরুষনির্বিশেষে এ সম্বোধনটি সম্পূর্ণভাবে বাতিল করার পক্ষে আমার অবস্থান।’

নিশাত সুলতানা প্রশ্ন তোলেন, ‘একই বৈঠকে পুরুষকে “স্যার” আর নারীকে “আপা” সম্বোধন ক্ষমতার অন্তর্দ্বন্দ্ব কেবলই বাড়িয়ে দেবে। আমার প্রশ্ন, নারীদের “আপা” ডাকা হলে পুরুষদের ‘ভাই’ ডাকা যাবে কি? স্যাররা কি দয়া করে এই প্রশ্নের উত্তর দেবেন?’
একাধিক সরকারি নারী কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, পদ-পদবি ও দায়িত্ব অনুযায়ী সমান মর্যাদা পেলেও ভাষাগত আচরণে এখনো বৈষম্যের শিকার হন তাঁরা। সরকারি কর্মচারী আচরণ বিধিমালায় এ ধরনের সম্বোধনের নির্দিষ্ট কোনো দিকনির্দেশনা না থাকলেও বাস্তব ক্ষেত্রে এটি বড় ধরনের প্রভাব ফেলে।

বিদেশে কী ডাকে

যুক্তরাষ্ট্রে কর্মকর্তাদের সাধারণত তাঁদের পদবি ও নাম ধরে সম্বোধন করা হয়। যেমন ‘মি.

‘প্রেসিডেন্ট’, ‘প্রফেসর’ ইত্যাদি।

প্রথম আলোর নয়াদিল্লি প্রতিনিধি জানিয়েছেন, ভারতে সরকারি কর্মকর্তাদের সম্বোধনে কোনো লিখিত নির্দেশিকা নেই। এ ক্ষেত্রে যেটা করা হয়, তা হলো লিঙ্গভেদে স্যার বা ম্যাডাম ডাকা হয়। তবে কিছু কিছু রাজ্যে প্রচলিত কিছু সম্বোধন রীতি আছে। যেমন উত্তর প্রদেশে নারী কর্মকর্তাদের ম্যাডাম-স্যার বলে ডাকার একটি রীতি আগেও ছিল, এখনো বয়স্ক মানুষদের মধ্যে তা রয়েছে। তবে নতুন প্রজন্মের কেউ এভাবে আর সম্বোধন তেমন করেন না। আবার রাজস্থানে নারী সরকারি কর্মকর্তাদের স্যার বলে ডাকার রীতি আছে। পশ্চিমবঙ্গে সর্বভারতীয় পুলিশ সার্ভিসের এক কর্মকর্তা ছিলেন ভারতী ঘোষ। তিনি নিজেকে স্যার সম্বোধন করতে বলতেন।

সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব আলী ইমাম মজুমদার এখন অন্তর্বর্তী সরকারের খাদ্য ও ভূমি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করছেন। ২০২৩ সালে তিনি একবার গণমাধ্যমকে বলেছিলেন, বিদেশে মন্ত্রী ও সরকারি কর্মকর্তাদের নাম ধরে ডাকেন নাগরিকেরা। এ দেশেও এই সংস্কৃতি শুরু করে সবাইকে নাম ধরে ডাকা উচিত। এটাই আন্তর্জাতিক চর্চা। এ বিষয়ে এখন আলী ইমাম মজুমদারের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি নতুন করে কিছু বলেননি।

আরও পড়ুনপুরুষ ‘স্যারদের’ কি সব সময় স্যারই ডাকতে হবে ১৩ জুলাই ২০২৫

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: কর মকর ত দ র স প রথম আল ক ক কর মকর ত কর মকর ত র র প রচলন উপদ ষ ট সরক র র র ব ষয়ট হয় ছ ল

এছাড়াও পড়ুন:

প্রলোভনের এই যুগে নিজেকে রক্ষার উপায়

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের একজন শিক্ষার্থী প্রশ্ন করেছেন, ‘আমি চেষ্টা করেও আর নিজের চাহিদা দমন করতে পারছি না। একাকিত্ব, চারপাশের প্রলোভন আর নিজের ভেতরের দ্বন্দ্ব আমাকে ধীরে ধীরে কষ্ট দিচ্ছে।’

শিক্ষার্থী বলেছেন, ‘আমি অন্যায় কিছু করিনি, করতেও চাই না। তবে তাঁর প্রবল আকাঙ্ক্ষা আমার ওপর ভর করেছে। আমি জানি, পাপ সম্পর্কে রাসুল (সা.) কতটা কঠোর সাবধানবাণী দিয়েছেন। আমি জান্নাত পেতে চাই। কিন্তু এই চাপ আর নিতে পারছি না।’

আর নিশ্চয়ই আমি মানুষকে কষ্টের মধ্যে সৃষ্টি করেছি।সুরা বালাদ, আয়াত: ৪

তাঁর বক্তব্যের প্রতিটি শব্দে একজন তরুণ মুসলিমের গভীর সংকট, আত্মসংযমের চেষ্টা ও একটি পরিচ্ছন্ন জীবনের আকাঙ্ক্ষা ধরা পড়ে। আমাদের সমাজে এই বাস্তবতা নতুন নয়, কিন্তু খুব কমই প্রকাশ্যে আলোচনা হয়।

ইসলাম মানব প্রকৃতিকে অস্বীকার করে না। বরং এর মধ্যেই পবিত্রতা ও সৌন্দর্য খুঁজে নেয়। কোরআনে আল্লাহ বলেন: ‘আর নিশ্চয়ই আমি মানুষকে কষ্টের মধ্যে সৃষ্টি করেছি।’ (সুরা বালাদ, আয়াত: ৪)

প্রাকৃতিক চাহিদা থাকা লজ্জার কিছু নয়। বরং সেই চাহিদাকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারাই একজন মুমিনের পরিণত চেতনার প্রতীক।

আরও পড়ুনহীনমন্যতা যেভাবে মুসলিম উম্মাহর ক্ষতি করছে১৭ জুলাই ২০২৫কীভাবে নিজেকে রক্ষা করবেন

১. চোখের হেফাজত: রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘চোখ হলো শয়তানের তির।’ (মুস্তাদরাকে হাকিম, হাদিস ৭৮৭২)

আজকের সময়ে সোশ্যাল মিডিয়া, ক্যাম্পাস লাইফ এবং অনলাইন পরিবেশে অহরহ যা চোখে পড়ে—তা থেকে বাঁচতে হলে নিজের দৃষ্টি সংযত রাখা জরুরি।

২. যিকির ও তিলাওয়াত: প্রতিদিন অন্তত ৫ থেকে ১০ মিনিট মনোযোগ দিয়ে কোরআন তিলাওয়াত করুন। সকালে ও রাতে কিছু সময় ধিকিরে (যেমন: সুবহানাল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ) কাটান।

প্রাকৃতিক চাহিদা থাকা লজ্জার কিছু নয়। বরং সেই চাহিদাকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারাই একজন মুমিনের পরিণত চেতনার প্রতীক।

৩. শরীরিক ব্যায়াম ও রুটিন: দিনে অন্তত ২০ মিনিট হাঁটা, দৌড় বা হালকা ব্যায়াম মস্তিষ্কের অতিরিক্ত চিন্তা দূর করে। রাতের ঘুম ঠিক রাখে ও মানসিক ভারসাম্য আনে।

৪. নিয়মিত রোজা রাখা: নবীজি (সা.) বলেন: ‘হে যুবক সম্প্রদায়! তোমাদের মধ্যে যে বিবাহ করার সামর্থ্য রাখে, সে যেন বিবাহ করে। আর যে সক্ষম নয়, সে যেন রোজা রাখে; কেননা, এটি তার জন্য আত্মসংযম।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৫,০৬৫; সহিহ মুসলিম, হাদিস: ১,৪০০)

রোজা শুধু খাবার না খাওয়ার নাম নয়। এটি আত্মশুদ্ধির চর্চা। সময় করে অন্তত সপ্তাহে এক দিন রোজা রাখার অভ্যাস গড়ে তুলুন।

আরও পড়ুনভোগবাদী যুগে ইসলামে সুখের খোঁজ৯ ঘণ্টা আগেবিবাহের চিন্তা ও বাস্তবতা

শুধু কামনার বশবর্তী হয়ে নয়, বরং দ্বীন রক্ষা, ভালোবাসা, দায়িত্বশীলতা ও পরিবার গঠনের ইচ্ছা থেকেই বিয়ে করা উচিত। পরিবার যদি এখন রাজি না হয়, তবে নিজেকে মানসিকভাবে প্রস্তুত করুন। অর্থনৈতিক ও আবেগীয় প্রস্তুতি না থাকলে বিবাহ হতে পারে আরও জটিলতা সৃষ্টি করার কারণ।

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলতেন, ‘আমি প্রতিদিন আল্লাহর নিকট ৭০ বার (অথবা ১০০ বার) ক্ষমা প্রার্থনা করি।’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ২,৭০২)

একটি পাপ বারবার হয়ে গেলে হতাশ হবেন না। বারবার ফিরে আসুন আল্লাহর কাছে। প্রতিদিন ২০০ থেকে ৫০০ বার ‘আস্তাগফিরুল্লাহ’ বলা শুরু করুন।

আমি প্রতিদিন আল্লাহর নিকট ৭০ বার (অথবা ১০০ বার) ক্ষমা প্রার্থনা করি।সহিহ মুসলিম, হাদিস: ২,৭০২

এ ছাড়া নিয়মিত নিচের কাজগুলোর চর্চা করুন:

চোখ, কান ও অন্তরের সংযম

শারীরিক ব্যায়াম ও নিত্যচর্চা

 রোজা রাখা ও তাহাজ্জুদের অভ্যাস

 ভালো বই পড়া ও আত্মউন্নয়ন

 নফল ইবাদতের মাধ্যমে নিজের হৃদয়কে ব্যস্ত রাখা

 পরিবার ও ঘনিষ্ঠজনদের সঙ্গে খোলামেলা আলোচনা

 তাড়াহুড়ো না করে, ধৈর্য ধরে ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুতি

নৈতিকতাহীন সমাজে আমাদের নানারকম সমস্যা থাকবেই। কিন্তু মনে রাখুন, আপনি একা নন। এই লড়াইয়ে আপনি নিজেই এক সাহসী যোদ্ধা। দোয়া করুন, দোয়া চেয়ে যান। নিজেকে দোষ না দিয়ে বরং ধৈর্য, ইবাদত ও চেষ্টা দিয়ে পথ খুঁজে বের করুন। আল্লাহ যেন আমাদের সবাইকে ফিতনার যুগে নিরাপদে রাখেন, এবং হালাল ভালোবাসার পথ সহজ করে দেন। আমিন।

 [email protected]

মারদিয়া মমতাজ: শিক্ষক, গবেষক, প্রকৌশলী

আরও পড়ুনযে ফুলের খুশবুতে সারা জাহান মাতোয়ারা২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • শিক্ষক নিয়োগে জামায়াতের সাবেক সংসদ সদস্যের সুপারিশ সহ–উপাচার্যের ফেসবুকে
  • ট্রাম্পের পারমাণবিক সাবমেরিন মোতায়েনের পরও নিশ্চুপ কেন রাশিয়া
  • ডাকাতির প্রস্তুতিকালে পুলিশ সদস্য, সাবেক সেনাসদস্যসহ গ্রেপ্তার ৯
  • পদ্মা সেতুর ঢালে বাসের ধাক্কায় দুজন নিহত
  • ডিজিটাল মেশিনে ওজন নিন
  • বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেত্রীর রাজনীতি না করার ঘোষণা
  • যেসব মালিক ব্যাংকঋণ নিয়ে পালিয়েছেন, সেসব কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে: শ্রম উপদেষ্টা
  • ভারতে উড়োজাহাজে সহযাত্রীর থাপ্পড়ের পর খোঁজও মিলছে না যাত্রীর: পরিবারের দাবি
  • প্রলোভনের এই যুগে নিজেকে রক্ষার উপায়