অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে খোলাচিঠি দিয়েছেন স্বাস্থ্য খাত–সংশ্লিষ্ট ছয় বিশিষ্টজন। চিঠিতে তাঁরা স্বাস্থ্য খাত সংস্কার কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়ন এবং তা জুলাই সনদে অন্তর্ভুক্তির দাবি জানিয়েছেন। গতকাল শনিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ খোলাচিঠি দেন বিশিষ্টজনেরা।
খোলাচিঠিতে ছয় বিশিষ্টজন বলেন, ‘ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ সন্ধিক্ষণে প্রধান উপদেষ্টা নেতৃত্বের যে গুরুদায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়েছেন, তা শুধু প্রশাসনিক নয়, গভীর নৈতিক দায়ও বহন করে।’ প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বে দেশের শাসনব্যবস্থা আরও স্বচ্ছ, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও মানবিক হবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তাঁরা।

‘স্বাস্থ্য খাত কোনো একক মন্ত্রণালয় বা সেবার সীমায় আবদ্ধ নয়’ বলে উল্লেখ করা হয় খোলাচিঠিতে। সেখানে বলা হয়, ‘এটি জাতীয় উন্নয়নের মূল স্তম্ভ, যা মানবসম্পদের বিকাশ, সামাজিক নিরাপত্তা, অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং সম–অধিকারের মূল ভিত্তি গঠন করে। একটি কার্যকর, ন্যায়ভিত্তিক ও টেকসই স্বাস্থ্যব্যবস্থা ছাড়া জাতির উন্নয়ন কল্পনা করা যায় না।’

বিশিষ্টজনেরা বলেন, ‘আমরা অকপটে স্বীকার করি, বিগত কয়েক দশকে বাংলাদেশ স্বাস্থ্য খাতে কিছু অগ্রগতি অর্জন করেছে। কিন্তু একই সঙ্গে এটাও সত্য, একগুচ্ছ গভীর কাঠামোগত দুর্বলতা, শাসনব্যবস্থায় বিচ্যুতি ও প্রাতিষ্ঠানিক স্বচ্ছতার অভাব আমাদের এ অগ্রযাত্রাকে বারবার থমকে দিয়েছে।’

স্বাস্থ্য খাত সংস্কার কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নের তাগিদ দিয়ে খোলাচিঠিতে বলা হয়, ‘সুপারিশগুলো এসেছে এক গুরুতর বাস্তবতা থেকে, যা কেবল সেবার সম্প্রসারণ বা গুণগত মান বৃদ্ধির পরামর্শ নয়, বরং একটি সুসংহত রূপরেখা। এর মাধ্যমে স্বাস্থ্য খাতের গভীর সমস্যাগুলোর সমাধান, প্রতিষ্ঠানগুলোর পুনর্গঠন এবং প্রশাসনিক জবাবদিহির একটি টেকসই কাঠামো গড়ে তোলা সম্ভব।’

স্বাস্থ্য খাত সংস্কার কমিশনের সুপারিশ জুলাই সনদে অন্তর্ভুক্তির আহ্বান জানিয়ে খোলাচিঠিতে ছয় বিশিষ্টজন বলেন, ‘যথাসময়ে পদক্ষেপ না নিলে গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশগুলো কাগজে বন্দী থেকে যায়। সুপারিশগুলো জুলাই সনদে অন্তর্ভুক্ত করা হবে যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত, যা অতীতের সম্মান এবং ভবিষ্যতের অঙ্গীকারকে একসূত্রে বেঁধে রাখবে।’

স্বাধীন, গণজবাবদিহিমূলক ও উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন স্বাস্থ্য কমিশন গঠন, শহর ও গ্রামে বিনা মূল্যে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার ব্যবস্থা চালু এবং উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যদের সমন্বয়ে উচ্চপর্যায়ের স্টিয়ারিং কমিটি গঠনের পরামর্শ দেন ছয় বিশিষ্টজন। তাঁরা খোলাচিঠিতে বলেন, এসব পরামর্শ ২০২৫ সালের মধ্যভাগে গ্রহণ করলে ডিসেম্বরের মধ্যে প্রয়োজনীয় সরকারি আদেশ ও অধ্যাদেশ জারি সম্ভব। আর ২০২৬ সালের প্রথম প্রান্তিকে জনগণের সামনে কাঠামোগত এই রূপান্তরের দৃশ্যমান অগ্রগতি উপস্থাপন করা যাবে।

খোলাচিঠিতে স্বাক্ষর করেছেন স্বাস্থ্য খাত সংস্কার কমিশনের সদস্য সৈয়দ মো.

আকরাম হোসেন, আবু মুহাম্মদ জাকির হোসেন, লিয়াকত আলী, নায়লা জামান খান, আজহারুল ইসলাম খান এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক সৈয়দ আব্দুল হামিদ।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: জ ল ই সনদ ব যবস থ উপদ ষ ট

এছাড়াও পড়ুন:

৪১১ রানের টি-টোয়েন্টি ম্যাচে ৯ রানে হারল জিম্বাবুয়ে

ঘরের মাঠে আফগানিস্তানের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে মাত্র ১২৭ রানে অলআউট হয়েছিল জিম্বাবুয়ে। দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচে আরও কম, ১২৫ রানে। কিন্তু রোববার (০২ নভেম্বর) তারা চোখে চোখ রেখে লড়াই করল আফগানিস্তানের বিপক্ষে।

আগে ব্যাট করে ৩ উইকেটে আফগানদের করা ২১০ রানের জবাবে জিম্বাবুয়ে ২০ ওভারে সবকটি উইকেট হারিয়ে ২০১ রান করে হার মানে মাত্র ৯ রানে। দুই ইনিংসে রান হয়েছে মোট ৪১১টি। যা আফগানিস্তান ও জিম্বাবুয়ের মধ্যে টি-টোয়েন্টিতে সর্বোচ্চ।

আরো পড়ুন:

কেন বিপিএল থেকে বাদ পড়ল চিটাগং কিংস

ফাইনালে দ. আফ্রিকাকে ২৯৯ রানের টার্গেট দিল ভারত

স্বাগতিকরা থেমে থেমে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারালেও ব্রিয়ান বেনেট, সিকান্দার রাজা, রায়ান বার্ল ও তাশিনগা মুসেকিওয়ার ব্যাটে লড়াই করে শেষ বল পর্যন্ত। বেনেট ৩ চার ও ২ ছক্কায় করেন ৪৭ রান। অধিনায়ক রাজা ৭টি চার ও ২ ছক্কায় করেন ৫১ রান। বার্ল ১৫ বলে ৫ ছক্কায় খেলেন ৩৭ রানের ঝড়ো ইনিংস। আর মুসেকিওয়া ২ চার ও ১ ছক্কায় করেন ২৮ রান।

বল হাতে আফগানিস্তানের আব্দুল্লাহ আহমদজাই ৪ ওভারে ৪২ রানে ৩টি উইকেট নেন। ফজল হক ফারুকি ৪ ওভারে ২৯ রানে ২টি ও ফরিদ আহমদ ৩ ওভারে ৩৮ রানে নেন ২টি উইকেট।

তার আগে উদ্বোধনী জুটিতে আফগানিস্তানের রহমানুল্লাহ গুরবাজ ও ইব্রাহিম জাদরান ১৫.৩ ওভারে ১৫৯ রানের জুটি গড়েন। এই রানে গুরবাজ আউট হন ৪৮ বলে ৮টি চার ও ৫ ছক্কায় ৯২ রানের ইনিংস খেলে। মাত্র ৮ রানের জন্য সেঞ্চুরি মিস করেন তিনি। ১৬৩ রানের মাথায় ইব্রাহিম আউট হন ৭টি চারে ৬০ রান করে। এরপর সেদিকুল্লাহ অটল ১৫ বলে ২টি চার ও ৩ ছক্কায় অপরাজিত ৩৫ রানের ইনিংস খেলে দলীয় সংগ্রহকে ২১০ পর্যন্ত নিয়ে যান।

বল হাতে জিম্বাবুয়ের ব্রাড ইভান্স ৪ ওভারে ৩৩ রানে ২টি উইকেট নেন। অপর উইকেটটি নেন রিচার্ড এনগ্রাভা।

৯২ রানের ইনিংস খেলে ম্যাচসেরা হন গুরবাজ। আর মোট ১৬৯ রান করে সিরিজ সেরা হন ইব্রাহিম জাদরান।

ঢাকা/আমিনুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ