ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকে মান–অভিমান ও সহমত–দ্বিমত
Published: 21st, June 2025 GMT
‘লন্ডন বৈঠকের’ পর মনে হচ্ছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের আলোচনায় গতি এসেছে। নির্বাচনের দিনক্ষণ নিয়ে যে কালো মেঘ ঘনীভূত হয়েছিল, তা অনেকটা কেটে গেছে বলে মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা।
সার্বিকভাবে নির্বাচনী রাজনীতিতে কতটা সুবাতাস এসেছে, সেই প্রশ্নের জবাব দেওয়ার সময় এখনো আসেনি। রাজনৈতিক দলগুলো প্রকাশ্যে কিছু না বললেও তলেতলে প্রস্তুতি নিচ্ছে।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় দফার প্রথম তিন দিনের বৈঠকে বেশ কিছু নাটকীয় ঘটনা ঘটেছে। দেশবাসী কোনো কোনো দলের মান–অভিমানও প্রত্যক্ষ করল। লন্ডনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারপ্রধান মুহাম্মদ ইউনূসের বৈঠকে যে ‘সমঝোতা’ হলো, জামায়াত ও এনসিপি তা ভালোভাবে নেয়নি। তারা বলেছে, এর মাধ্যমে সরকার একটি দলের প্রতি ঝুঁকে গেছে। প্রতিবাদস্বরূপ জামায়াত অভিমান করে প্রথম দিনের বৈঠকে যোগ দেয়নি।
প্রধান উপদেষ্টার কাছ থেকে অনুরোধ পাওয়ার পর দ্বিতীয় দিনের বৈঠকে তারা অংশ নেয় এবং নজিরবিহীনভাবে তিন নেতা বক্তব্য দেন। জামায়াত নেতাদের বেশি সময় দেওয়া ও গণফোরাম নেতার বক্তৃতায় বাধাদানের প্রতিবাদে সম্মেলনকক্ষ থেকে বেরিয়ে যান সিপিবি, ১২–দলীয় জোট ও গণফোরামের নেতারা। কিছুক্ষণ পর অবশ্য তাঁরা ফিরে যান।
এসব মান–অভিমান সত্ত্বেও ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকে বেশ কিছু অগ্রগতি হয়েছে, যা রাজনৈতিক সমঝোতার পূর্বাভাস বলে ধারণা করি। সংবিধানে জগদ্দল পাথরের মতো যে ৭০ অনুচ্ছেদ চেপে বসেছিল, সেটা সরানো গেছে। সব দল একমত হয়েছে যে অর্থবিল, সরকারের প্রতি অনাস্থা প্রস্তাব ও যুদ্ধাবস্থা ছাড়া সব বিষয়ে সংসদ সদস্যরা স্বাধীনভাবে কথা বলতে ও ভোট দিতে পারবেন।
৭০ অনুচ্ছেদ দিয়ে সংসদ সদস্যদের হাত–পা ও মুখ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। এখন তাঁরা যেকোনো আইনকে জনস্বার্থবিরোধী মনে করলে বিপক্ষে ভোট দিতে পারবেন। এই স্বাধীনতাটুকু অর্জন করতে আমাদের ৫৩ বছর লেগেছে।
তাত্ত্বিকভাবে এই সিদ্ধান্ত ভালো হলেও দলীয় মনোনয়নের বর্তমান ধারা অক্ষুণ্ন থাকলে এর সুফল তেমন পাওয়া যাবে না। এ টি এম শামসুল হুদা কমিশন দলীয় মনোনয়নের ক্ষেত্রে স্থানীয় কমিটি থেকে আসা তালিকাকে বাধ্যতামূলক করেছিল। পরবর্তী সময়ে আওয়ামী লীগ সরকার সেটা তুলে নেয়। তবে স্থানীয় কমিটিও যে সব সময় সঠিক সিদ্ধান্ত নেয়, তা–ও নয়। একটি উদাহরণ দিই। বিগত নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে স্থানীয় আওয়ামী লীগ সেলিনা হায়াৎ আইভীর নাম পাঠায়নি। ওই কমিটি ছিল শামীম ওসমানের নিয়ন্ত্রণে।
প্রধানমন্ত্রীর দুই মেয়াদ নিয়ে আপত্তি তুলেছে বিএনপি। এটা যদি ভূতাপেক্ষ না হয়, তাদের এই আপত্তির পক্ষে যুক্তি আছে বলে মনে করি না। একজন দুই মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর ক্ষমতা ধরে না রেখে সব দলেরই উচিত নতুন নেতৃত্ব তৈরিতে মনোযোগ দেওয়া। সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী পদে বিকল্প নেতৃত্ব তৈরি করা উচিত ক্ষমতাপ্রত্যাশী সব দলেরই। নেতৃত্ব চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত নয়।এসব সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও শামসুল হুদা কমিশনের বিধান ফিরিয়ে আনা গেলে মনোনয়ন–বাণিজ্য কমবে আশা করা যায়। দল না করেও কেউ টাকার জোরে মনোনয়ন বাগিয়ে নিতে পারবেন না। এ ছাড়া স্থানীয় কমিটির সিদ্ধান্তে মনোনয়ন পেলে সংসদ সদস্যরা নিজ এলাকার জনগণের প্রতি দায়বদ্ধ থাকবেন। ওপর থেকে মনোনয়নপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা ওপরের দিকেই তাকিয়ে থাকতেন। এলাকার মানুষের কথা ভাবতেন না।
প্রার্থী মনোনয়নের ক্ষেত্রে আরেকটি বিষয় হলো, তিনি ওই এলাকার বাসিন্দা কি না। আমাদের জনপ্রতিনিধিদের বেশির ভাগই ‘অনাবাসী’। মনোনয়ন পাওয়ার পর অনেকে এলাকায় যান। তার আগে বা পরে এলাকাসীর সঙ্গে বেশির ভাগ জনপ্রতিনিধির যোগাযোগ ক্ষীণ।
ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকে সংরক্ষিত নারী আসনের সংখ্যা ৫০ থেকে ১০০ বাড়ানোর বিষয়ে দু–একটি ধর্মভিত্তিক দল ছাড়া সবাই একমত হয়েছে; কিন্তু নির্বাচনের পদ্ধতি নিয়ে তাঁদের মধ্যে দ্বিমত আছে। বিএনপি ও সমমনা দলগুলো বর্তমান পদ্ধতিতেই নির্বাচন করার পক্ষপাতী। অন্যদিকে জামায়াত, এনসিপি, নাগরিক ঐক্য, গণসংহতি, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি সরাসরি ভোটের পক্ষে। উচ্চকক্ষের বিষয়েও অধিকাংশ রাজনৈতিক দল সহমত প্রকাশ করেছে কিন্তু নির্বাচনটি কোন পদ্ধতিতে হবে, তা নিয়ে দ্বিমত আছে।
বিএনপি ও এর সমমনারা চাইছে নিম্নকক্ষের আসনের অনুপাতে উচ্চকক্ষের প্রতিনিধিরা নির্বাচিত হবেন। এনসিপি, জামায়াত ও বাম দলগুলো মনে করে, ভোটের আনুপাতিক হারে এটা হওয়া উচিত। একসময় বিজয়ী দলই সংরক্ষিত সব নারী আসন পেত। বিএনপি সেই আইন বদলে নারী আসনে আনুপাতিক হারে প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করেছে। সেখান থেকে এখন পিছু হটার যুক্তি কী?
বিতর্ক আছে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের পদ্ধতি নিয়েও। সংবিধান সংস্কার কমিশন যে ইলেকটোরাল কলেজের প্রস্তাব করেছে, সেটা কাদের নিয়ে হবে?
বিএনপি বলেছে, নিম্নকক্ষ ও উচ্চকক্ষের সদস্যদের ভোটে। বিরোধীরা বলেছে, যদি উচ্চকক্ষের নির্বাচন আনুপাতিক ভোটে না হয়, তাহলে সেখানে সংখ্যাগুরু দলেরই একচ্ছত্র আধিপত্য থাকবে। আবার একদিকে তারা স্থানীয় সরকার সংস্থাকে বিরাজনীতিকরণ করতে চাইছে, অন্যদিকে তাদের দিয়ে দেশের সর্বোচ্চ রাজনৈতিক পদে নির্বাচনের কথা বলছে—এটা স্ববিরোধী।
প্রধানমন্ত্রীর দুই মেয়াদ নিয়ে আপত্তি তুলেছে বিএনপি। এটা যদি ভূতাপেক্ষ না হয়, তাদের এই আপত্তির পক্ষে যুক্তি আছে বলে মনে করি না। একজন দুই মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর ক্ষমতা ধরে না রেখে সব দলেরই উচিত নতুন নেতৃত্ব তৈরিতে মনোযোগ দেওয়া। সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী পদে বিকল্প নেতৃত্ব তৈরি করা উচিত ক্ষমতাপ্রত্যাশী সব দলেরই। নেতৃত্ব চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত নয়।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকে যেসব বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে বা হবে, সেসব ভিত্তি ধরেই এগোতে হবে। এখানে রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্য বা সমঝোতা খুব জরুরি।
অনেক বিষয়ে দ্বিমত থাকলেও তারা আগের অনড় অবস্থান থেকে সরে এসেছে। এটা অবশ্যই ইতিবাচক। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি আলী রীয়াজের সঙ্গে আমরা আশাবাদী হতে চাই যে সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে যে জটিলতা তৈরি হয়েছে, তা অবিলম্বে কেটে যাবে এবং জুলাইয়ের মধ্যেই জুলাই সনদ পাওয়া যাবে।
এদিকে লন্ডন বৈঠকের পর নির্বাচন কমিশনও নড়েচড়ে বসেছে। বৃহস্পতিবারের বৈঠকে তারা রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীদের জন্য আচরণবিধি সংশোধন করে খসড়া অনুমোদন করেছে। এতে নির্বাচনী প্রচারে প্রার্থীদের পোস্টার বাদ দেওয়া হলেও বিলবোর্ড, ব্যানার, ফেস্টুন লাগানোর সিদ্ধান্ত নিয়ে নতুন সমস্যা তৈরি করল কি না, সেটাও দেখার বিষয়। দলীয় অঙ্গীকারনামা, এক প্ল্যাটফর্মে সব প্রার্থীর ইশতেহার ঘোষণার বিষয়টিও সমর্থনযোগ্য। নির্বাচনী প্রচারসভাও সব প্রার্থী মিলে একসঙ্গে করতে পারেন। এতে প্রার্থীদের খরচ ও পারস্পরিক কাদা–ছোড়াছুড়ি কিছুটা হলেও কমবে।
সংসদ নির্বাচনের আগে সীমানা নির্ধারণের বাধ্যবাধকতা থাকায় ৩০০ আসনের সীমানার খসড়া প্রকাশ করেছে ইসি। এ খসড়া প্রস্তাবের ওপর দাবি-আপত্তি শুনানি শেষে চূড়ান্ত সীমানার গেজেট প্রকাশ করা হয়। এখন পর্যন্ত সংসদের ৭৫টি আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণের জন্য ৬০৭টি আবেদন পেয়েছে ইসি।
এ টি এম শামসুল হুদা কমিশন একটি ভালো নির্বাচন করে সর্বমহলে প্রশংসিত হয়েছিল। কিন্তু তারা কিছু মন্দ নজিরও তৈরি করেছে। গ্রামাঞ্চলের আসন কমিয়ে শহরের আসন বাড়িয়ে দেওয়া হয় ২০০৮ সালের নির্বাচনে। কার পরামর্শে তারা এটি করেছিল, জানা নেই। এর ফলে অবহেলিত গ্রামাঞ্চল আরও অবহেলিত থেকে গেছে এবং শহুরে নাগরিকদের সুবিধা বাড়ানো হয়েছে। রাষ্ট্রটি এখনো সংখ্যালঘু শহুরে নাগরিকদের থেকে গেল। গণমানুষের রাষ্ট্র হলো না।
আশা করি, বর্তমান নির্বাচন কমিশন আসন ভাগাভাগির ক্ষেত্রে গ্রামাঞ্চলকে গুরুত্ব দেবে। গ্রামাঞ্চল থেকে যেসব আসন কর্তন করা হয়েছিল, সেগুলো ফিরিয়ে দেবে। বৈষম্যবিরোধী সফল আন্দোলনের পর যে নির্বাচন কমিশন এসেছে, তাদের কাছে এটুকু চাওয়া নিশ্চয়ই অযৌক্তিক হবে না।
● সোহরাব হাসান প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক ও কবি
[email protected]
* মতামত লেখকের নিজস্ব
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: প রস ত ব হয় ছ ল প রক শ ত হয় ছ দ ব মত ক ষমত ব এনপ সরক র আপত ত আসন র দলগ ল
এছাড়াও পড়ুন:
সরকারের সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেওয়ার মানসিকতা রাজনৈতিক দলগুলোর ঐক্যে ফাটল ধরিয়েছে
জুলাই সনদ স্বাক্ষরের মধ্য দিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ভিন্নমত থাকা সত্ত্বেও মোটাদাগে যে ঐক্য সৃষ্টি হয়েছিল, সরকারের ভুল পদক্ষেপ এবং নিজেদের সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেওয়ার মানসিকতা সেই ঐক্যে ফাটল ধরিয়েছে বলে দাবি করেছে গণতন্ত্র মঞ্চ। তারা বলছে, এর মধ্য দিয়ে চব্বিশের অভ্যুত্থান-পরবর্তী বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক রূপান্তর ও সংস্কারপ্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে বাংলাদেশ রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে গণতন্ত্র মঞ্চের এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলা হয়। সংবাদ সম্মেলনে গণতন্ত্র মঞ্চের সমন্বয়ক বাংলাদেশ রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সভাপতি হাসনাত কাইয়ূম, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি তানিয়া রব, নাগরিক ঐক্যের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল্লাহ কায়সার, ভাসানী জনশক্তি পার্টির মহাসচিব আবু ইউসূফ সেলিমসহ গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা বলেন, জুলাই সনদ এবং সনদের আইনি ভিত্তি হিসেবে গণভোটকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট রাজনৈতিক অচলাবস্থার জন্য অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন এবং অন্তর্বর্তী সরকারের দায় রয়েছে। এ অচলাবস্থার মধ্যে ঐকমত্য সৃষ্টির দায়িত্ব রাজনৈতিক দলগুলোর ওপর চাপিয়ে দিয়ে সরকার দায়মুক্তির চেষ্টা করছে।
সরকারকেই অচলাবস্থা নিরসনের দায়িত্ব নিতে হবে উল্লেখ করে সংবাদ সম্মেলনে গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা বলেন, গণভোটের তারিখ নির্ধারণের দায়িত্ব সরকারের। অথচ তারা পরস্পরবিরোধী অবস্থানে থাকা রাজনৈতিক দলগুলোর হাতে এই দায়িত্ব ছেড়ে দিয়ে সৃষ্ট সংকটকে আরও ঘনীভূত করেছে। এই পরিস্থিতিতে সরকারকেই মুখ্য ভূমিকা পালন করতে হবে। একই সঙ্গে নিজেদের সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেওয়ার মানসিকতা থেকে সরে এসে দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে সৃষ্ট অচলাবস্থা নিরসন করে সরকারকে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের নিয়মতান্ত্রিক পন্থা অনুসরণ করতে হবে।
যথাসময়ে নির্বাচন না হলে নিরাপত্তা-সংকটের মুখে পড়বে উল্লেখ করে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, নির্বাচন যাতে কোনোভাবে বাধাগ্রস্ত না হয়, সেই ব্যাপারে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকতে হবে। অন্তর্বর্তী সরকারকে মনে রাখতে হবে ঘোষিত সময়ে নির্বাচন আয়োজনের মাধ্যমে জনগণের প্রতিনিধিত্বশীল সরকারের হাতে দায়িত্ব হস্তান্তর করা না গেলে দেশ ভয়াবহ নিরাপত্তাঝুঁকিতে পড়বে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, জুলাই সনদ প্রণয়নের ক্ষেত্রে ‘নোট অব ডিসেন্ট’গুলোকে যেভাবে লিপিবদ্ধ করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছিল, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কোনো ধরনের আলোচনা ছাড়াই ঐকমত্য কমিশন সেই অবস্থান থেকে সরে এসেছে।
বক্তারা বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর স্বাক্ষরিত সনদ এবং জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশের খসড়ার মধ্যে নীতিগত পার্থক্য রয়েছে। এ বিষয়গুলো উদ্ভূত পরিস্থিতিকে জটিল করে তুলেছে। যদিও ঐকমত্য কমিশন এবং সরকারের পক্ষ থেকে ইতিপূর্বে আশ্বস্ত করা হয়েছিল, যে তারা কোনো বিষয় চাপিয়ে দেবে না। অথচ জুলাই সনদ স্বাক্ষর-পরবর্তী সময়ে তারা সেই অবস্থান থেকে সরে এসেছে। এটা একদিকে যেমন প্রতারণার শামিল, অন্যদিকে সরকারের স্বৈরাচারী মানসিকতার প্রকাশ।