লাভেলো আইসক্রিমের বিরুদ্ধে তদন্তের সময় বাড়ল
Published: 22nd, June 2025 GMT
পুঁজিবাজারে খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতে তালিকাভুক্ত কোম্পানি তৌফিকা ফুডস অ্যান্ড লাভেলো আইসক্রিম পিএলসির শেয়ার অধিগ্রহণ, সীমান্ত ব্যাংকের সঙ্গে ঋণ চুক্তির বিপরীতে রক্ষিত জামানত এবং অন্যান্য প্রাসঙ্গিক বিষয় তদন্ত করে খতিয়ে দেখছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
তবে কোম্পানিটির যেসব বিষয় নিয়ে তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করছে, তা সম্পন্ন করতে গঠিত কমিটি আরো সময় চেয়েছে। কমিটির আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে কোম্পানিটির তদন্ত কার্যক্রম সম্পন্ন করার জন্য আরো ৪৫ কার্যদিবস সময় বাড়িয়েছে বিএসইসি।
সম্প্রতি তৌফিকা ফুডস অ্যান্ড লাভেলো আইসক্রিম পিএলসির শেয়ার অধিগ্রহণ, সীমান্ত ব্যাংকের সঙ্গে ঋণ চুক্তির বিপরীতে রক্ষিত জামানত এবং অন্যান্য প্রাসঙ্গিক বিষয় তদন্তের সময় বাড়ানোর আদেশ জারি করা হয়েছে বলে বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে।
তদন্তের সময় বাড়ানোর বিষয়টি তৌফিকা ফুডস অ্যান্ড লাভেলো আইসক্রিম পিএলসির ব্যবস্থাপনা পরিচালককে অবহিত করা হয়েছে। একই সঙ্গে বিষয়টি বিএসইসির তদন্ত কর্মকর্তাদের অবহিত করা হয়েছে।
গঠিত তদন্ত কমিটির সদস্যরা হলেন- বিএসইসির অতিরিক্ত পরিচালক মোহাম্মদ আল মাসুম মৃধা, সহকারী পরিচালক শরিফুল ইসলাম ও নাভিদ হাসান খান।
বিএসইসির তদন্তের সময় বাড়ানোর আদেশ
বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন চলতি বছরের গত ১৩ এপ্রিল তদন্ত আদেশ জারি করে, যা তৌফিকা ফুডস অ্যান্ড লাভেলো আইসক্রিম পিএলসির তদন্তের বিষয়গুলোর সঙ্গে সম্পর্কিত। কমিশন তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য আরও ৪৫ কার্যদিবসের সময় বৃদ্ধি করেছে। উপরে উল্লিখিত আদেশের অন্যান্য শর্তাবলী অপরিবর্তিত থাকবে।
বিএসইসির পূর্বের তদন্তের আদেশ
বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন মনে করে পুঁজিবাজার এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের বৃহত্তর স্বার্থে তৌফিকা ফুডস অ্যান্ড লাভেলো আইসক্রিম পিএলসির শেয়ার অধিগ্রহণ, সীমান্ত ব্যাংকের সঙ্গে ঋণ চুক্তির বিপরীতে রক্ষিত জামানত এবং এ সংক্রান্ত অন্যান্য প্রাসঙ্গিক বিষয়গুলো তদন্ত পরিচালনা করে দেখা প্রয়োজন।
তাই, সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অধ্যাদেশ, ১৯৬৯ (১৯৬৯ সালের অধ্যাদেশ নং XVII) এর সেকশন ২১ এর প্রদত্ত ক্ষমতাবলে কমিশন আলোচ্য বিষয়ে তদন্ত করার নির্দেশ দিয়েছে। উক্ত তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করার জন্য বিএসইসির ৩ জন কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তদন্ত কর্মকর্তারা এই আদেশ জারির তারিখ থেকে ৬০ দিনের মধ্যে তদন্ত সম্পন্ন এবং কমিশনে একটি প্রতিবেদন দাখিল করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
যেসব বিষয় খতিয়ে দেখবে তদন্ত কমিটি
পুঁজিবাজার ও সাধারণ বিনিয়োগকারীদের বৃহত্তর স্বার্থে বেশি কিছু শর্ত বা বিষয় খতিয়ে দেখার জন্য গঠিত তদন্ত কমিটিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বিএসইসির নির্দেশনায় বলা হয়েছে, তৌফিকা ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড কীভাবে তৌফিকা ফুডস অ্যান্ড লাভেলো আইসক্রিমের অতিরিক্ত ১ কোটি ১৫ লাখ সাধারণ শেয়ার অধিগ্রহণ করেছে এবং এক্ষেত্রে শেয়ার বিক্রির প্রস্তাব কীভাবে করা হয়েছিল সেসব বিষয় খতিয়ে দেখবে তদন্ত কমিটি।
এদিকে, তৌফিকা ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেডের অতিরিক্ত শেয়ার অধিগ্রহণের বিষয়ে ইন্টারন্যাশনাল অ্যাকাউন্টিং স্ট্যান্ডার্ড (আইএএস) ২৪ এর আইন অনুসারে কোম্পানির সেই সময়ের আর্থিক প্রতিবেদনে নিজেদের মধ্যে লেনদেনের কোনো তথ্য যথাযথভাবে প্রকাশ করেছে কি না তাও খতিয়ে দেখা হবে।
এছাড়া চলতি বছরের ৩ ফেব্রুয়ারি সীমান্ত ব্যাংকের পাঠানো চিঠি অনুযায়ী, সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অধ্যাদেশ, ১৯৬৯ এর ধারা ২০ এর অধীনে তৌফিকা ফুডস অ্যান্ড লাভেলো আইসক্রিম এবং সংশ্লিষ্ট স্টক ব্রোকারেজ হাউস লাভেলো আইসক্রিমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো.
সর্বশেষ আর্থিক অবস্থা
সর্বশেষ ২০২৪ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত সমাপ্ত অর্থ বছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে শেয়ারহোল্ডারদের জন্য তৌফিকা ফুডস অ্যান্ড লাভেলো আইসক্রিম পিএলসির পরিচালনা পর্ষদ শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ২০ শতাংশ লভ্যাংশ দিয়েছে। এর মধ্যে, ১০ শতাংশ নগদ ও ১০ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ।
এদিকে, সমাপ্ত হিসাববছরে কোম্পানির শেয়ার প্রতি মুনাফা (ইপিএস) হয়েছে ১.৪৩ টাকা। আগের হিসাববছরের একই সময়ে কোম্পানিটি শেয়ারপ্রতি মুনাফা ছিল ১.২৪ টাকা। ২০২৪ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত হিসাববছরে কোম্পানির শেয়ার প্রতি নিট সম্পদ মূল্য দাঁড়িয়েছে ১৩.৩৭ টাকা।
শেয়ার ধারণ পরিস্থিতি
তৌফিকা ফুডস অ্যান্ড লাভেলো আইসক্রিম পিএলসি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয় ২০২১ সালে। ‘এ’ ক্যাটাগরির কোম্পানিটির মোট পরিশোধিত মূলধন ৯৩ কোটি ৫০ লাখ টাকা। সে হিসেবে কোম্পানিটির মোট শেয়ার সংখ্যা ৯ কোটি ৩৫ লাখ।
চলতি বছরের ৩১ মে পর্যন্ত কোম্পানিটির উদ্যোক্তাদের হাতে ৩৮.৬৬ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের হাতে ২২.৮২ শতাংশ এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে ৩৮.৫২ শতাংশ শেয়ার রয়েছে।
ঢাকা/এনটি/টিপু
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আইসক র ম প এলস র তদন ত র সময় ব ড় চ ক ত র ব পর ত তদন ত কর ব এসইস র তদন ত ক র তদন ত র জন য জ ম নত বছর র
এছাড়াও পড়ুন:
আইএফআইসি ব্যাংকের সাবেক এমডিকে ৫ কোটি টাকা জরিমানা
বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে প্রতারণা এবং সিকিউরিটিজ আইন-বিধি লঙ্ঘনের দায়ে আইএফআইসি ব্যাংক পিলসির সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) শাহ আলম সারওয়ারকে পাঁচ কোটি টাকা জরিমানা করেছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড একচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) বিএসইসির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের সভাপতিত্বে ৯৮০তম কমিশন সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বিএসইসির পরিচালক ও মুখপাত্র মো. আবুল কালাম সাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
আরো পড়ুন:
পুঁজিবাজারে সূচকের পতন, কমেছে লেনদেন
‘সমন্বিত রোডম্যাপে ব্যাংক খাত পুনরুদ্ধারের টেকসই পথ পুঁজিবাজার’
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘আইএফআইসি গ্যারান্টেড শ্রীপুর টাউনশিপ গ্রিন জিরো কুপন বন্ড’ শীর্ষক ১৫০০ কোটি অভিহিত মূল্যের এবং এক হাজার কোটি টাকা ইস্যু মূল্যের বন্ডের জামিনদার হিসেবে আইএফআইসি ব্যাংক এবং অ্যাডভাইজার ও অ্যারেঞ্জার হিসেবে আইএফআইসি ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড দায়িত্ব পালন করেছে। আইএফআইসি ব্যাংক উক্ত বন্ডটি ইস্যু করেনি। মূলত শ্রীপুর টাউনশিপ লিমিটেড উক্ত বন্ডের মাধ্যমে টাকা উত্তোলন করেছে। কিন্তু বিভিন্ন বিজ্ঞাপনে বন্ডের নাম হিসেবে আইএফআইসি আমার বন্ড নামটি ব্যবহার করা হয়েছে, যা বিনিয়োগকারীদের ধারনা দেয় যে, এ বন্ডটি আইএফআইসি পিএলসি ইস্যু করেছে। কিন্তু আইএফআইসি ছিল বন্ডটির জামিনদার। এভাবে বিনিয়োগকারীদের প্রতারিত করে বিনিয়োগে আকৃষ্ট করা হয়েছে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরো উল্লেখ করা হয়, উল্লেখ কমিশনের ৯৬৫তম কমিশন সভায় উক্ত বন্ডের অনিয়মের সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছিল। পরবর্তীতে ৯৮০তম সভায় আইএফআইসি ব্যাংক পিলসির সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) শাহ আলম সারওয়ারকে ৫ কোটি টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
ঢাকা/এনটি/এসবি