হাজারো সাইট ও লিঙ্কে ক্লিক করার অভ্যাস থেকে বিরত থাকার চর্চা জরুরি। স্মার্টফোন মানেই লাখো অ্যাপের সমাহার। যেখানে প্রয়োজনীয়-অপ্রয়োজনীয় অ্যাপে সয়লাব হয়ে থাকে স্টোর। প্রতিদিন লিঙ্কের ফাঁদে লুকিয়ে থাকা ক্ষতিকর ভাইরাস ছড়ায়। নিজের অজান্তেই সব নিরাপত্তা ভেদ করে অনায়াসে ঢুকে পড়ে ক্ষতিকর সব সফটওয়্যার। সমস্যা থেকে প্রকৃত অর্থে মুক্তি পেতে বিশেষ পরামর্শ দিয়েছে ন্যাশনাল সিকিউরিটি এজেন্সি।
সাইবার বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সপ্তাহে অন্তত কিছুদিন ফোন রিস্টার্টের অভ্যাস করা শ্রেয়। ফলে নিজের অজান্তে যে ভাইরাস স্মার্টফোনে লুকিয়ে আছে বা ম্যালিসিয়াস সফটওয়্যার চলছে, তা বন্ধ হয়ে যাবে। হ্যাকিং বা ফিশিংয়ের হাত থেকে নিজের স্মার্টফোনকে সুরক্ষা দিতে পারবেন সহজে। যদিও শুধু রিস্টার্ট করলেই কাজ শেষ নয়, মেনে চলতে হবে আরও কিছু সুনির্দিষ্ট কৌশল।
সিকিউরিটি এজেন্সির পরামর্শ, হ্যাকিং থেকে সুরক্ষার সবচেয়ে সহজ ও কার্যকর কৌশলই হচ্ছে প্রতিদিন নিজের ব্যবহৃত ফোনটি সুযোগ বুঝে কিছুটা সময় বন্ধ রাখা। ফলে সম্ভাব্য হ্যাকিং বাধাগ্রস্ত হবে। আবার ফোনে যদি কোনো লুকানো ভাইরাস সচল থাকে, তার অ্যাকসেস নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়বে। ফলে ফোনের ওপর থেকে সাইবার চক্র আপাতত নিয়ন্ত্রণ হারাবে। সাইবার বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সপ্তাহে অন্তত কয়েকবার ফোন বন্ধ
রাখলে অনাকাঙ্ক্ষিত বহু সমস্যা থেকে তাৎক্ষণিক রেহাই পাওয়া সম্ভব।
হ্যাকিং কাজে সফল হতে সাইবার চক্র বহুমাত্রিক কৌশলে ফাঁদ পেতে রাখে।
এখন ক্লিক ছাড়াই (জিরো ক্লিক) ম্যালিসিয়াস সফটওয়্যার ইনস্টল হয়ে পড়ে। আদতে ক্লিক ছাড়াই ভাইরাস ইনস্টল হয়ে যায়। ভাইরাসটি ফোনে একবার প্রবেশ করলে ক্ষতি প্রায় নিশ্চিত।
নিজের ফোনে থাকা নিরাপত্তা সিস্টেমকে পাশ কাটিয়ে ওয়াইফাই নেটওয়ার্ক বা মোবাইল নেটওয়ার্ক পুরোপুরি অচল করে দেয়।
অন্যদিকে, অ্যাপে জমে থাকা মেসেজের ছবি
ও ভিডিও ফাইলে অতি গোপনে নজরদারি
শুরু করে ম্যালিসিয়াস অ্যাপ। এ থেকে পরিত্রাণ পেতে সপ্তাহে একবার ফোন রিস্টার্ট করার পরামর্শ দিয়েছে নিরাপত্তা সংস্থা। রিস্টার্ট করলে স্মার্টফোনে জমে থাকা ক্ষতিকর ভাইরাস নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ে। বিশেষ সুফল হচ্ছে, স্মার্টফোনে থাকা নিরাপত্তা সিস্টেম হ্যাকাররা কোনোভাবেই বাইপাস করার সুযোগ পাবে না। অন্যদিকে, অপারেটিং সিস্টেম সর্বশেষ সংস্করণ নিয়মিত আপডেট রাখার তাগিদ
দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
এআই টুল ব্যবহার করে বিভিন্ন সফটওয়্যারের নিরাপত্তা ত্রুটি শনাক্ত করল গুগল
নিজেদের তৈরি ‘বিগ স্লিপ’ এআই (কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা) টুল ব্যবহার করে প্রথমবারের মতো বিভিন্ন ওপেন সোর্স সফটওয়্যারে থাকা ২০টি নিরাপত্তা ত্রুটি সফলভাবে শনাক্ত করেছে গুগল। প্রতিষ্ঠানটির নিরাপত্তাবিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট হিদার অ্যাডকিনস জানিয়েছেন, গুগলের তৈরি বিগ স্লিপ এআই টুলটি মূলত লার্জ ল্যাঙ্গুয়েজ মডেল (এলএলএম)–নির্ভর একটি স্বয়ংক্রিয় ত্রুটি শনাক্তকারী ব্যবস্থা। প্রথম দফায় টুলটির মাধ্যমে বিভিন্ন ওপেন সোর্স সফটওয়্যারে থাকা ত্রুটির খোঁজ পাওয়া গেছে। তবে এখনো ত্রুটিগুলোর সমাধান না হওয়ায় বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করা হয়নি।
গুগলের তথ্যমতে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে সফটওয়্যারে বাস্তব ত্রুটি শনাক্ত হওয়ার বিষয়টি প্রযুক্তির অগ্রগতিতে একটি উল্লেখযোগ্য মাইলফলক। এ বিষয়ে গুগলের মুখপাত্র কিম্বারলি সামরা এক বিবৃতিতে জানান, প্রতিটি ত্রুটি মানুষের সহায়তা ছাড়াই এআই টুল নিজেই শনাক্ত করেছে। তবে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার আগে গুগলের এক নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ ত্রুটিগুলো যাচাই করে দেখেছেন, যাতে প্রতিবেদনটি যথার্থ হয়। গুগলের প্রকৌশল বিভাগের ভাইস প্রেসিডেন্ট রয়্যাল হ্যানসেন এক্সে লিখেছেন, ‘এআই প্রযুক্তির মাধ্যমে স্বয়ংক্রিয়ভাবে নিরাপত্তা ত্রুটি শনাক্ত করার এই চেষ্টা এক নতুন যুগের সূচনা করেছে।’
গুগলের তৈরি বিগ স্লিপ ছাড়া আরও বেশ কয়েকটি এআই টুল স্বয়ংক্রিয়ভাবে সফটওয়্যারের ত্রুটি শনাক্ত করতে পারে, যার মধ্যে রানসিবিল ও এক্সবা অন্যতম। তবে এসব টুল এখনো পুরোপুরি স্বয়ংক্রিয় হয়ে ওঠেনি। এমনকি গুগলের বিগ স্লিপেও নিরাপত্তা ত্রুটি শনাক্তের পর তা যাচাইয়ের জন্য একজন বিশেষজ্ঞের সহায়তা নিতে হয়।
এআই টুল ব্যবহার করে বিভিন্ন সফটওয়্যারের নিরাপত্তা ত্রুটি শনাক্তে বেশ কিছু সীমাবদ্ধতাও রয়েছে। ওপেন সোর্স সফটওয়্যারের সঙ্গে যুক্ত একাধিক ডেভেলপার অভিযোগ করেছেন, অনেক সময় এআই টুলগুলো থেকে যেসব ত্রুটির কথা বলা হয়, সেগুলোর সব কটি সত্য নয়। এ বিষয়ে ডেভেলপার ভ্লাদ আয়োনেস্কু বলেন, ‘এটাই এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। অনেক রিপোর্ট প্রথম দেখায় খুব গুরুত্বপূর্ণ মনে হয়, কিন্তু বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, সেগুলোর পেছনে আসলে কোনো বাস্তব ত্রুটি নেই।’
সূত্র: টেক ক্রাঞ্চ