‘তুই বিয়া কয়ডা করসস?’ ‘চাইরডা।’ ‘আমি কয় নম্বর?’ ‘৬ নম্বর।’ মুক্তির আগেই ট্রেলারের এই সংলাপে মাত হয়ে ছিল নেট–দুনিয়া। মোশাররফ করিমের সংলাপ আর একে একে পর্দায় আসা ৮ বউয়ের ছবি বলে দিচ্ছিল, এক দারুণ কমেডি সিরিজ দেখতে চলেছেন দর্শক। শেষ পর্যন্ত কেমন হলো অমিতাভ রেজা চৌধুরীর ‘বোহেমিয়ান ঘোড়া’?

একনজরে
ওয়েব সিরিজ
: ‘বোহেমিয়ান ঘোড়া’
ধরন: কমেডি ড্রামা
স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্ম: হইচই
পরিচালক: অমিতাভ রেজা চৌধুরী
চিত্রনাট্য ও সংলাপ: অমিতাভ রেজা চৌধুরী, মো.

আলম ভুঁইয়া ও বিধান চন্দ্র দাস
অভিনয়: মোশাররফ করিম, তানজিকা আমিন, রুনা খান, সাদিয়া আয়মান, মৌসুমী হামিদ, রোবেনা রেজা জুঁই, ফারহানা হামিদ, সারাহ জাবিন অদিতি, আসমা উল হুসনা বৃষ্টি, রাকিব ইভন
পর্ব সংখ্যা: ৭
রানটাইম: ২৪-২৬ মিনিট

সুন্দরীকে (সাদিয়া আয়মান) নিয়ে পালাচ্ছিল ট্রাকড্রাইভার আব্বাস (মোশাররফ করিম)। তার পেছনে ধেয়ে আসতে থাকে ৯ নম্বর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হোসেন (সুমন পাটোয়ারী)। সে নিজের পরিচয় দেয় ‘সুন্দরী তার সুগার ড্যাডি’ বলে। পাশ থেকে বন্দুক হাতে থাকা সাগরেদ ঠিক করে দেয় তার কথা। বলে, ‘সুন্দরী আপনের সুগার ড্যাডি না, আপনে সুন্দরীর সুগার ড্যাডি।’ শুরুর এমন মজার দৃশ্যকল্প নিয়ে এগিয়ে যায় ‘বোহেমিয়ান ঘোড়া’।

বুদ্ধি করে ঠিকই সুন্দরীকে নিয়ে পালাতে পারে আব্বাস। তবে সুন্দরীকে সে বিয়ে করতে চায় না। কারণ, ৮ সংখ্যাটি তার জন্য অশুভ। তার একটাই কথা, ‘আট মানে নট।’ সিরিজটির ট্যাগ লাইনও এটা। কিন্তু চাপে পড়ে সুন্দরীকে বিয়ে করতে বাধ্য হয় সে। আর তার পর থেকেই ঘটতে থাকে একের পর এক অঘটন। আট বউকে কি আব্বাস বুঝ দিতে পারে? নাকি নিজেই নিজের ফাঁদে আটকা পড়ে?

আরও পড়ুনশাকিবের ‘তাণ্ডব’-এ কী আছে, কী নেই১১ জুন ২০২৫

হইচইয়ে এর আগে ‘ঢাকা মেট্রো’ ও ‘বোধ’ নামে দুটি সিরিজ বানিয়েছিলেন অমিতাভ। ঢাকা মেট্রোর মতো ‘বোহেমিয়ান ঘোড়া’ও রোড সিরিজ। তবে মেজাজে পুরোপুরি আলাদা। বিয়ের রূপকে আসলে সমাজের একটা গল্প বলতে চেয়েছেন অমিতাভ রেজা। যেখানে নারীদের সংগ্রাম, তাঁদের যাপন ফুটে উঠেছে। সিরিজটিতে মোটাদাগে নারীর জীবনের গল্পই দেখানো হয়েছে। অসহায়ত্ব যেমন এসেছে, তেমনি এসেছে নূরজাহানের (তানজিকা আমিন) মতো স্বনির্ভর নারীর সাহস আর আত্মবিশ্বাসের গল্পও।

‘বোহেমিয়ান ঘোড়া’র পোস্টার। হইচই

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: স ন দর ক ম শ ররফ

এছাড়াও পড়ুন:

কালীগঞ্জে ভুয়া ফেসবুকে আইডি খুলে অপপ্রচার ও প্রতারণা করছে অজ্ঞাত চক্র

গাজীপুরের কালীগঞ্জে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ফেক (ভুয়া) আইডি খুলে সম্মানি ব্যক্তি ও পেশাজীবীদের ঘায়েল করতে চালানো হচ্ছে ভয়াবহ অপপ্রচার। প্রতারণা, ব্ল্যাকমেইলিং এবং সামাজিকভাবে হেয় করাসহ নানা সাইবার অপরাধের শিকার হচ্ছেন সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে শিক্ষক, ব্যবসায়ী, রাজনীতিবিদ ও গণমাধ্যমকর্মীরা।

ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে বারবার অভিযোগ জানালেও আইটি শাখার ‘দুর্বলতা’র অজুহাতে কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। 

অপরদিকে, পুলিশ জানিয়েছে, ভুয়া ফেসবুক আইডি নজরদারিতে থাকলেও অধিকাংশ ক্ষেত্রে কোনো লিখিত অভিযোগ না থাকায় আইনি পদক্ষেপ নেওয়া যাচ্ছে না।

আরো পড়ুন:

তদবিরের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছি, ষড়যন্ত্রকারীরা পেছনে লেগেছে: তথ্য উপদেষ্টা

গোপালগঞ্জে সামরিক অভিযানের ভিডিওটি ভুয়া: বাংলা ফ্যাক্ট

পুলিশ ও একাধিক ভুক্তভোগী জানিয়েছেন, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর স্থানীয় একটি অজ্ঞাত চক্র ফেসবুককে অপতৎপরতার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে। রাজনৈতিক বিরোধিতা ও ব্যক্তিগত বিরোধের জের ধরে সামাজিকভাবে সম্মান ক্ষুণ্ন করাই তাদের উদ্দেশ্য। বিশেষ করে, যারা বিভিন্ন সময়ে আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে মত প্রকাশ করেছেন কিংবা অন্য দলের রাজনীতিতে যুক্ত ছিলেন, তারা এ চক্রের প্রথম টার্গেট। ব্যবসায়ী, শিক্ষক, সাংবাদিক ও রাজনীতিকদের ছবি, নাম ও তথ্য ব্যবহার করে চালানো হচ্ছে মানহানিকর প্রচারণা।

২০২২ সালের সর্বশেষ জনশুমারি অনুযায়ী, কালীগঞ্জ উপজেলায় জনসংখ্যা ৩ লাখ ১০ হাজার ৯৪৩ জন। এর মধ্যে অর্ধেকের বেশি মানুষ মোবাইল ফোন ব্যবহার করেন। তাদের অনেকের হাতে আছে স্মার্টফোন। তরুণদের মধ্যে কেউ কেউ মজা কিংবা পরিচয় গোপন রাখতে ভুয়া আইডি খুললেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এসব আইডি ব্যবহার হচ্ছে অপরাধমূলক উদ্দেশ্যে। 

এসব ভুয়া ফেসবুক আইডির মূল উদ্দেশ্যই প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করা। আকর্ষণীয় নারী বা পুরুষের ছবি ব্যবহার করে তৈরি করা হয় ভুয়া প্রোফাইল। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ছবিগুলো গুগল ইমেজ থেকে নেওয়া, খুঁজলেই পাওয়া যায় একাধিকবার ব্যবহারের প্রমাণ। 

স্থানীয় এক সাংবাদিক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন, “একটি সংঘবদ্ধ চক্র নিয়মিত ভুয়া ফেসবুক আইডি ব্যবহার করে সমাজে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। অনেক সম্মানি মানুষ তাদের টার্গেটে পরিণত হচ্ছেন। আমরা চাই, বিটিআরসি ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এ বিষয়ে কঠোর পদক্ষেপ নিক।” 

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার নিয়ে অপরাধ বিশেষজ্ঞরাও সতর্ক করছেন। তাদের মতে, ফেসবুক বন্ধুত্বের মাধ্যম হলেও কিছু ব্যক্তি একে ব্যবহার করছেন প্রতারণা ও মানহানির মাধ্যম হিসেবে। ভুয়া আইডি তৈরি এবং তা দিয়ে ক্ষতিকর পোস্ট, মন্তব্য বা ভিডিও শেয়ার করাও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের আওতায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

সচেতন নাগরিকরা বলছেন, ফেক আইডি আজ শুধুই বিরক্তির নয়, এটি পরিণত হয়েছে ভয়ঙ্কর সামাজিক ফাঁদে। দ্রুত এসব আইডি শনাক্ত করে ব্যবহারকারীদের আইনের আওতায় না আনলে সামাজিক অস্থিরতা ও মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা আরো বাড়বে।

কালীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আলাউদ্দিন বলেছেন, “সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভুয়া আইডি ব্যবহার করে অপপ্রচার চালানো ও হয়রানিমূলক কর্মকাণ্ডের বিষয়ে আমরা অবগত আছি। কেউ যদি থানায় লিখিতভাবে অভিযোগ করেন, তাহলে সঙ্গে সঙ্গে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা গ্রহণ করা হবে এবং পুলিশ সদর দপ্তরের আইসিটি শাখার সহায়তায় প্রয়োজনীয় প্রযুক্তিগত ব্যবস্থা গ্রহণ করব। ইতোমধ্যে কয়েকটি সন্দেহভাজন ফেক আইডিকে নজরদারির আওতায় আনা হয়েছে। তবে, অধিকাংশ ভুক্তভোগী থানায় এসে অভিযোগ দিচ্ছেন না। এ ধরনের অপরাধ রোধে সামাজিক সচেতনতার পাশাপাশি সকলকে পুলিশের সঙ্গে সহযোগিতা করার আহ্বান জানাচ্ছি।”

কালীগঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আসাদুজ্জামান বলেছেন, “আইসিটি বিভাগ এ বিষয়ে তৎপর আছে। ইতোমধ্যে কিছু ভুয়া আইডি শনাক্ত করার কাজ শুরু হয়েছে। তবে, এখন পর্যন্ত থানায় কেউ লিখিত অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে সেগুলো যাচাই করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

ঢাকা/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ