একসময় ইলিশ ছিল মধ্যবিত্ত বাঙালির রসনাবিলাসের অন্যতম অনুষঙ্গ। ইলিশের মৌসুমে প্রতিদিন না হোক, মাঝে মাঝে পাতে থাকত এ মাছ। প্রতিবেশীর ঘর থেকেও ভেসে আসত ইলিশের ঘ্রাণ। অথচ, সেই মাছ এখন মধ্যবিত্ত মানুষদের সাধ্যের বাইরে। নিম্নবিত্তরা তো ইলিশ খাওয়ার কথা কল্পনাও করতে পারেন না। জাতীয় মাছ ইলিশ এখন শোভা পায় উচ্চবিত্তদের খাবার মেন্যুতে। এই মাছ এখন বিলাসপণ্য।

শুক্রবার (৪ জুলাই) রাজধানীর রায়েরবাগ ও যাত্রাবাড়ীতে এক কেজি ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৩০০ থেকে ২ হাজার ৫০০ টাকায়। এই দাম একজন শ্রমিকের তিন দিনের মজুরির চেয়েও বেশি।

চাঁদপুর, বরিশাল কিংবা পাথরঘাটার আড়তেও মাঝারি আকারের ইলিশের দাম কেজিতে ১ হাজর ৭০০ টাকা থেকে ২ হাজার টাকা। অথচ, বাজারে ইলিশের সরবরাহ ভালো। 

আরো পড়ুন:

‘অস্বাভাবিক কোনো কারণে যেন ইলিশের দাম না বাড়ে’

আমাদের একার নয়, প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়েরও দায়িত্ব আছে: মৎস্য উপদেষ্টা

নজরদারিতে ঘাটতি, সিন্ডিকেটের জাল
বাংলাদেশে ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে ইলিশ আহরণ হয়েছে ৫ লাখ ২৯ হাজার টন, যা আগের বছরের তুলনায় প্রায় ৪২ হাজার টন কম। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এর জন্য দায়ী মা ইলিশ ও জাটকা সংরক্ষণে দুর্বল অভিযান, নিষিদ্ধ মৌসুমে মাছ ধরা এবং প্রশাসনিক ব্যর্থতা।

জাতীয় মৎস্যজীবী সমিতির মহাসচিব মো.

ইকবাল হোসেন বলেছেন, ২০২৪ সালের আগস্টে রাজনৈতিক অস্থিরতার সময় নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হয়নি। পরে প্রশাসনিক তদারকিও ছিল ঢিলেঢালা।

মৎস্য অধিদপ্তরের ইলিশ শাখার সহকারী পরিচালক এম ফারুক ময়েদুজ্জামান বলেছেন, “আমাদের জনবল ও প্রযুক্তির ঘাটতির কারণে ২৪ ঘণ্টা নজরদারি করা সম্ভব হয় না। এ সুযোগেই অসাধু জেলে ও ব্যবসায়ীরা নিষিদ্ধ সময়েও ইলিশ ধরছে।”

সাগর খোলা, তবু বাজারে আগুন
গত ১১ জুন মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা উঠে গেলেও বাজারে তার কোনো ইতিবাচক প্রভাব নেই। বরং, দাম আরো বেড়েছে। চাঁদপুর, ভোলা, বরগুনার আড়তে এক কেজি ইলিশের দাম উঠেছে আড়াই থেকে ৩ হাজার টাকা পর্যন্ত।

চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোহসিন উদ্দিন জানিয়েছেন, ইলিশ নিলামের নামে কারসাজি চলছে। গোপন সিন্ডিকেট বাজারে দামের ওপর প্রভাব ফেলছে।

তবে, চাঁদপুর মৎস্য বণিক সমিতির নেতা শবে বরাত বলেছেন, আগে যেমন মাছ পাওয়া যেত, এখন তা আর হয় না। জাল, জাহাজ ও জ্বালানির খরচ বেড়েছে। দাম বাড়তেই পারে।

১০ বছরে ৩২৪ শতাংশ মূল্যবৃদ্ধি
বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের সাবেক মহাপরিচালক ড. মো. আনিছুর রহমান জানিয়েছেন, ২০১৫ সালে এক কেজি ইলিশের দাম ছিল ৫৯০ টাকা। ২০২৩ সালে তা দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৩০০ টাকায়। ২০২৫ সালে এসে তা আড়াই হাজার টাকায় পৌঁছেছে। মাত্র এক দশকে ইলিশ মাছের দাম বেড়েছে ৩২৪ শতাংশ।

তিনি প্রশ্ন তোলেন, ইলিশ তো চাষ করা হয় না, সাগর থেকে ধরা হয়, তাহলে এই বিশাল মূল্যবৃদ্ধি কেন? পাঙ্গাস বা রুইয়ের দাম তো বাড়েনি।

রাষ্ট্রীয় উদ্যোগ কাগজে-কলমে
ইলিশের বাজারে লাগাম টানতে সরকার এখনো কোনো সমন্বিত বা দৃশ্যমান পদক্ষেপ নেয়নি। চাঁদপুর জেলা প্রশাসন কিছু উদ্যোগ নিলেও তা কার্যকর হয়নি। ইলিশের মূল্য নির্ধারণ, আড়ত সংস্কার কিংবা প্রযুক্তিনির্ভর নজরদারি—সবই এখনো খবরে সীমাবদ্ধ।

মৎস্য উপদেষ্টার আহ্বান: বাস্তবভিত্তিক সমাধান দরকার
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, ইলিশসহ অন্যান্য মাছের দাম ঘোষণার মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়, বরং মূল্যবৃদ্ধির প্রকৃত কারণ চিহ্নিত করে হস্তক্ষেপ করতে হবে।

তিনি জানান, অবৈধ জাল ও জেলেদের বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান চলছে। তবে, নদীর নাব্য সংকট ইলিশের চলাচলে বিঘ্ন ঘটাচ্ছে। তা গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করা প্রয়োজন।

গবেষণা, প্রযুক্তি আর প্রশাসনিক সদিচ্ছার অভাব
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এখনই কার্যকর ব্যবস্থা না নিলে ইলিশ শুধু ছবিতে থাকবে, পাতে নয়। 

বিশেষজ্ঞদের সুপারিশ
স্যাটেলাইট, ড্রোন ও ডিজিটাল নজরদারির মাধ্যমে মাছ ধরার মৌসুমে কঠোর নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে। নিলাম প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা আনতে হবে। সিন্ডিকেট ভাঙতে লাইসেন্স ব্যবস্থার সংস্কার করতে হবে। নদী ও সাগরে ইলিশের চলাচল ট্র্যাক করে বাস্তবভিত্তিক পরিকল্পনা করতে হবে।

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেছেন, ইলিশ শুধু মাছ নয়, এটি বাঙালির সাংস্কৃতিক পরিচয়ের অংশ। এই স্বাদ যদি নাগালের বাইরে চলে যায়, তবে তা আমাদের ঐতিহ্যকেই আঘাত করবে।

তিনি জানান, আজ যাত্রাবাড়ীতে ছোট ইলিশ (৩০০ থেকে ৫০০ গ্রাম) ১ হাজার থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। মাঝারি ইলিশ (৬০০ থেকে ৮০০ গ্রাম) ১ হাজার ৮০০ থেকে ২ হাজার টাকা এবং বড় ইলিশ (১ কেজি) ২ হাজার ৩০০ থেকে ২ হাজার ৫০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

যাত্রাবাড়ী বাজারে এক কেজির একটি ইলিশ দেখে দীর্ঘশ্বাস ফেলেন সিরাজ রহমান। পাশে তার সন্তান। সিরাজ রহমান বলেন, এই ইলিশের দাম তো আমাদের জীবনের বাস্তবতার সঙ্গে মেলে না। কিনে খাওয়া যাচ্ছে না। আবার না কিনলে সন্তানের মন ভাঙবে।

তিনি বলেন, ইলিশ শুধু খাদ্য নয়, এই মাছ বাঙালির আত্মপরিচয়ের প্রতীক। সেই রূপালি ইলিশের স্বাদ যদি শুধুই স্মৃতি হয়ে ওঠে, তাহলে হারাবে আমাদের সংস্কৃতির এক উজ্জ্বল অনুষঙ্গ। নজরদারি জোরদার করে সিন্ডিকেট ভাঙতে হবে। রাষ্ট্রীয় হস্তক্ষেপের মাধ্যমে এই ঐতিহ্যকে মানুষের নাগালে ফিরিয়ে আনার এখনই সময়।

ঢাকা/রফিক

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উপদ ষ ট নজরদ র এক ক জ আম দ র বল ছ ন মৎস য ব যবস রহম ন

এছাড়াও পড়ুন:

রাষ্ট্র্রীয় সংস্থাগুলোকে ব্যাপক ছাড়ের পাশাপাশি নজরদারির সুযোগ রয়েছে: টেক গ্লোবাল ইনস্টিটিউট

‘ব্যক্তিগত উপাত্ত সুরক্ষা অধ্যাদেশ, ২০২৫’ ও ‘জাতীয় উপাত্ত ব্যবস্থাপনা অধ্যাদেশ, ২০২৫’-এর খসড়া অনুমোদনের ক্ষেত্রে সরকার তড়িঘড়ি করেছে। ফলে এগুলোতে কাঠামোগত দুর্বলতা এবং প্রক্রিয়াগত ফাঁক রয়ে গেছে; যা তাদের কার্যকারিতা কমিয়ে দিতে পারে বা অপব্যবহারের সুযোগ তৈরি করতে পারে। অধ্যাদেশ দুটির খসড়ায় রাষ্ট্রীয় সংস্থাগুলোকে ব্যাপক ছাড় দেওয়া হয়েছে, পাশাপাশি নজরদারির সুযোগও রাখা হয়েছে।

আজ সোমবার নীতিবিষয়ক গবেষণাপ্রতিষ্ঠান টেক গ্লোবাল ইনস্টিটিউট এক বিবৃতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে এ কথাগুলো বলে।

বিবৃতিতে টেক গ্লোবাল ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক সাবহানাজ রশিদ বলেন, খসড়াগুলো এমন সময়ে অনুমোদিত হয়েছে, যখন নাগরিক সমাজ, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও বিশেষজ্ঞরা আরও বিস্তৃত ও স্বচ্ছ পরামর্শ প্রক্রিয়ার আহ্বান করেছিল। সরকারের এখন উচিত খসড়া দুটির অনুমোদনের প্রক্রিয়া স্থগিত রাখা এবং সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে আলোচনা করে প্রমাণভিত্তিক পর্যালোচনার মধ্য দিয়ে এগিয়ে নেওয়া।

যেসব উদ্বেগ তুলে ধরেছে টেক গ্লোবাল ইনস্টিটিউট

খসড়া ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষা অধ্যাদেশ, ২০২৫ কোনো বিশেষ শর্ত ছাড়াই দেশে ও বিদেশে অবস্থানরত সব বাংলাদেশি এবং বাংলাদেশে কাজ করা বিদেশি ডেটা পরিচালকদের জন্য প্রযোজ্য। এটি আইনি অস্পষ্টতা সৃষ্টি করতে পারে, আন্তর্জাতিকভাবে নানা বিষয়ে অসংগতির ঝুঁকি বাড়াতে পারে এবং বাংলাদেশের ডিজিটাল অর্থনীতিতে বৈশ্বিক অংশগ্রহণকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে।

আইনগুলো রাষ্ট্রীয় কর্তৃপক্ষকে জাতীয় নিরাপত্তা, জনশৃঙ্খলা বা জনস্বার্থের মতো অস্পষ্ট কারণ দেখিয়ে (নিয়মের ক্ষেত্রে) ছাড় দেয়। এতে আইন প্রয়োগকারী ও গোয়েন্দা সংস্থা সীমিত তদারকিতে ব্যক্তিগত তথ্য প্রক্রিয়াজাত করতে পারে, যা নাগরিকের গোপনীয়তা দুর্বল করে। টেক গ্লোবাল ইনস্টিটিউটের আগের গবেষণায় দেখা গেছে, এমন ধারা আইন প্রয়োগকারী, নিয়ন্ত্রক ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলোকে প্রস্তাবিত কাঠামোর বাইরে নজরদারি চালিয়ে যাওয়ার সুযোগ করে দেয়।

সরকার জাতীয় নিরাপত্তা, সার্বভৌমত্ব বা ব্যক্তিগত অধিকার ও সুনামের সুরক্ষার মতো বিস্তৃত ও অস্পষ্ট কারণ দেখিয়ে কোনো সুস্পষ্ট সংজ্ঞা, সুরক্ষা ব্যবস্থা বা যৌক্তিকতা ছাড়াই ব্যক্তিগত তথ্য নির্ধারণ ও নিয়ন্ত্রণের ব্যাপক ক্ষমতা ধরে রেখেছে। পাশাপাশি তথ্যের স্থানীয় সংরক্ষণ বা দেশান্তরিত তথ্য আদান-প্রদানে শর্ত আরোপের ক্ষমতাও বজায় রয়েছে, যা রাষ্ট্রীয় অপব্যবহার, আন্তর্জাতিক তথ্যপ্রবাহে বাধা এবং ব্যবসায়ের জন্য অতিরিক্ত চাপ তৈরি করতে পারে। এ ছাড়াও এই খসড়া অনুযায়ী যেকোনো তথ্যকে যেকোনো সময় ‘সংবেদনশীল’ ঘোষণা করা যেতে পারে, যা নাগরিকদের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও তথ্যপ্রাপ্তির অধিকারকে সীমিত করতে পারে।

প্রস্তাবিত শাস্তি—সাত বছরের কারাদণ্ড এবং ২০ লাখ টাকা জরিমানা অতিরিক্ত এবং দেশে ও আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের সঙ্গে অসংগত। সেই তুলনায় ভারত বা শ্রীলঙ্কায় ফৌজদারি শাস্তির পরিবর্তে প্রশাসনিক জরিমানা প্রাধান্য পায়। অতিরিক্ত শাস্তি উদ্ভাবনী চিন্তাভাবনাকে বাধা দিতে পারে।

অপরাধে জড়িত না থাকার প্রমাণ দিতে না পারলে খসড়ায় কোম্পানির কর্মকর্তাদের ব্যক্তিগত দায় আরোপের বিধান রয়েছে। করপোরেট অপরাধে ব্যক্তিগত দায় যুক্ত করলে প্রতিষ্ঠানগুলো নিজেদের সামষ্টিক দায় এড়িয়ে শুধু ব্যক্তির ওপর দোষ চাপানোর সুযোগ পেতে পারে।

আরও পড়ুনগোপনীয়তার আশ্রয় ও তড়িঘড়ি করে ব‍্যক্তিগত উপাত্ত সুরক্ষা অধ্যাদেশ অনুমোদন১১ অক্টোবর ২০২৫

আইনগুলো রাষ্ট্রীয় সংস্থাকে ‘জনস্বার্থ’ বা ‘সার্বভৌমত্বের’ মতো বিষয়ে অস্পষ্ট নিয়ম, আদেশ বা নির্দেশ জারি করার ক্ষমতা দেয়। স্পষ্ট সীমা বা পর্যবেক্ষণ না থাকায় অপব্যবহারের ঝুঁকি রয়েছে।

যদিও ব্যক্তি তথ্য লঙ্ঘনের জন্য ক্ষতিপূরণ চাইতে পারে, খসড়াগুলো এ বিষয়ে স্পষ্ট নির্দেশিকা দেয় না। ফলে ক্ষতিপূরণ মামলা অনুযায়ী ভিন্ন হতে পারে এবং অপ্রত্যাশিত ফলাফল তৈরি হতে পারে।

অপরাধে জড়িত না থাকার প্রমাণ দিতে ব্যর্থ হলে খসড়ায় কোম্পানির কর্মকর্তাদের ব্যক্তিগত দায় আরোপের বিধান রাখা হয়েছে। করপোরেট অপরাধে ব্যক্তিগত দায় যুক্ত করলে প্রতিষ্ঠানগুলো নিজেদের সামষ্টিক দায় এড়িয়ে শুধু ব্যক্তির ওপর দোষ চাপানোর সুযোগ পেতে পারে।

খসড়া আইনে রাষ্ট্রীয় সংস্থাকে ‘জনস্বার্থ’ বা ‘সার্বভৌমত্বের’ মতো বিষয়ে অস্পষ্ট নিয়ম, আদেশ বা নির্দেশ জারি করার ক্ষমতা দেয়। স্পষ্ট সীমা বা পর্যবেক্ষণ না থাকায় অপব্যবহারের ঝুঁকি রয়েছে। যদিও ব্যক্তি তথ্য লঙ্ঘনের জন্য ক্ষতিপূরণ চাইতে পারে, খসড়াগুলো এই বিষয়ে স্পষ্ট নির্দেশিকা দেয় না। ফলে মামলা অনুযায়ী ক্ষতিপূরণ ভিন্ন হতে পারে এবং অপ্রত্যাশিত ফলাফল তৈরি হতে পারে।

খসড়া আইনগুলোতে একটি উচ্চাভিলাষী নিয়ন্ত্রণ কাঠামোর পরিকল্পনা থাকলেও, তা বাস্তবায়নের মতো প্রাতিষ্ঠানিক ও প্রযুক্তিগত সক্ষমতা বর্তমানে বাংলাদেশের নেই। প্রস্তাবিত ন্যাশনাল ডেটা গভর্ন্যান্স অ্যান্ড ইন্টার–অপারেবিলিটি অথরিটি নীতিনির্ধারণ, বাস্তবায়ন ও প্রযুক্তিগত কাজ—সবকিছুই একসঙ্গে দেখবে, কিন্তু এসবের মধ্যে সমন্বয় ও দায়িত্ব বণ্টনের স্পষ্ট নির্দেশনা নেই। শিশু ও প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের সুরক্ষায় প্রস্তাবিত ধারা প্রশংসনীয় হলেও, কার্যকর বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামো এখনো অনুপস্থিত।

তথ্য পরিচালনায় যুক্ত সংস্থায় নিয়োগ প্রায় সম্পূর্ণভাবে সরকারের নিয়ন্ত্রণে। নাগরিক সমাজের অংশগ্রহণ বা স্বচ্ছতা সীমিত। এটি আইনটির স্বাধীনতা ও বৈধতা কমিয়ে দেয়, যা মূলত পুরোনো শাসনব্যবস্থা বা পরিচালনার ধরনকেই অনুসরণ করছে, যেখানে কাজের প্রক্রিয়া ছিল অস্বচ্ছ একই সঙ্গে পর্যাপ্ত জবাবদিহি বা তদারকি ছিল না। ফলে নতুন প্রতিষ্ঠানগুলোরও স্বাধীনতা ও বিশ্বাসযোগ্যতায় ঘাটতি তৈরির আশঙ্কা রয়ে যায়।

আরও পড়ুনব্যক্তিগত উপাত্ত সুরক্ষা অধ্যাদেশ: কর্তৃপক্ষের অবাধ ক্ষমতায় অপব্যবহারের ঝুঁকি১২ অক্টোবর ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • অপব্যবহারের ঝুঁকি নিয়ে উদ্বেগ থেকেই গেল
  • আড়ি পেতে ও ড্রোনের মাধ্যমে নজরদারি হতো
  • রাষ্ট্র্রীয় সংস্থাগুলোকে ব্যাপক ছাড়ের পাশাপাশি নজরদারির সুযোগ রয়েছে: টেক গ্লোবাল ইনস্টিটিউট