বাংলাদেশের অন্যতম অনলাইন ট্রাভেল প্ল্যাটফর্ম ‘ফ্লাইট এক্সপার্ট’ এখন থেকে সৌদি আরবের সরকারি পর্যটন সংস্থা বা ‘সৌদি ট্যুরিজম অথরিটি’র গর্বিত অংশীদার। এই গুরুত্বপূর্ণ অংশীদারত্বের মাধ্যমে বাংলাদেশি পর্যটকদের জন্য সৌদি আরব ভ্রমণ হবে আরও সহজ, সাশ্রয়ী ও পরিকল্পিত।

প্রতিবছর বাংলাদেশ থেকে প্রায় ২০ থেকে ২৫ লাখ মানুষ সৌদি আরব ভ্রমণ করেন। তাঁদের মধ্যে অধিকাংশ হজ ও ওমরাহ পালনের জন্য যান। অন্যদের ভ্রমণ হয় বিভিন্ন কাজ, ব্যবসা কিংবা আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে দেখা করার জন্য। এই বিপুলসংখ্যক ভ্রমণকারীর অভিজ্ঞতা আরও উন্নত ও ঝামেলামুক্ত করতেই মূলত ফ্লাইট এক্সপার্ট সরাসরি কাজ করবে সৌদি ট্যুরিজম অথরিটির সঙ্গে।

এই পার্টনারশিপের উদ্দেশ্য একটিই—বাংলাদেশি ভ্রমণকারীদের জন্য সৌদি ভ্রমণের প্রতিটি ধাপ, যেমন ভিসা প্রসেসিং, ফ্লাইট ও হোটেল বুকিং, স্থানীয় বিভিন্ন পরিষেবা ইত্যাদি আরও সহজ, দ্রুত ও সুবিধাজনক করে তোলা। ভ্রমণের সময় যাত্রীরা যেসব সাধারণ সমস্যার সম্মুখীন হন, যেমন তথ্যের ঘাটতি, অতিরিক্ত খরচ, ভাষাগত জটিলতা ইত্যাদি এই পার্টনারশিপের মাধ্যমে সমাধান করা হবে।

আর এখন থেকেই সৌদি আরব যেতে ইচ্ছুক পর্যটকেরা ফ্লাইট এক্সপার্টের ‘এক্সক্লুসিভ অফার’ ও ‘সুপার সেভার ডিলস’–এ ফ্লাইট ও হোটেল বুক করতে পারবেন, যা ভ্রমণকে করে তুলবে আরও সাশ্রয়ী ও ঝামেলামুক্ত।

এই পার্টনারশিপের অংশ হিসেবে ফ্লাইট এক্সপার্ট তাদের ওয়েবসাইটে দ্রুতই চালু করবে ‘সৌদি ট্যুরিজম’ নামের একটি বিশেষ সেকশন। যেখানে থাকবে সৌদি আরবের ধর্মীয় স্থান, সাংস্কৃতিক আয়োজন, কনসার্ট, ফেস্টিভ্যাল, অ্যাডভেঞ্চার ট্যুরসহ নানা অভিজ্ঞতার বিস্তারিত তথ্য ও আগাম বুকিংয়ের সুবিধা।

সৌদি ট্যুরিজম অথরিটি ও ফ্লাইট এক্সপার্ট যৌথভাবে কাজ করছে সৌদি ভ্রমণকে একটি সর্বজনীন অভিজ্ঞতা হিসেবে তুলে ধরতে, যেখানে ধর্ম, সংস্কৃতি বা জাতিগত পরিচয় কোনো বাধা হয়ে দাঁড়াবে না। বর্তমানে সৌদি আরব আতিথেয়তা ও আধুনিকতার মেলবন্ধনে বিশ্বের সব মানুষের জন্য তৈরি করেছে অফুরন্ত অভিজ্ঞতার সম্ভার।

ফ্লাইট এক্সপার্টের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সালমান বিন রশিদ শাহ সাইম বলেন, ‘ফ্লাইট এক্সপার্ট প্রতিষ্ঠার শুরু থেকেই আমাদের লক্ষ্য ছিল বাংলাদেশের পর্যটকদের আন্তর্জাতিক ভ্রমণকে সহজ, নির্ভরযোগ্য ও আনন্দদায়ক করে তোলা। সৌদি ট্যুরিজমের সঙ্গে এই পার্টনারশিপ আমাদের সেই স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দেওয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। আজ সৌদি আরব শুধু একটি ধর্মীয় গন্তব্য নয়; বরং এক সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক অভিজ্ঞতার কেন্দ্রস্থল।’

সালমান বিন রশিদ শাহ সাইম আরও বলেন, ‘এই পার্টনারশিপ এমন একটি সময়ে হয়েছে, যখন সৌদি আরব আরও উন্মুক্ত ও অন্তর্ভুক্তিমূলক হয়ে উঠছে। আমরা গর্বিত এই রূপান্তরের অংশ হতে পেরে এবং আশা করছি, বাংলাদেশের পর্যটকেরাও এই নতুন সৌদি–অভিজ্ঞতা উপভোগ করবেন।’

সৌদি আরবের ঐতিহাসিক নিদর্শন, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, আধুনিক নগরব্যবস্থা থেকে শুরু করে রাজকীয় খাবার—সবকিছুই এখন উপভোগযোগ্য হবে ফ্লাইট এক্সপার্টের বিশেষ গাইডেন্স ও এক্সক্লুসিভ অফারে। পবিত্র মক্কা–মদিনায় ভ্রমণ হোক অথবা হোক আভা, রিয়াদ ও জেদ্দার মতো শহরে অ্যাডভেঞ্চার ট্যুর—ফ্লাইট এক্সপার্ট দিচ্ছে ২৪/৭ কাস্টমার সাপোর্ট এবং নিরবচ্ছিন্ন ভ্রমণসেবা।

ফ্লাইট এক্সপার্টের পক্ষ থেকে জানানো হয়, এই পার্টনারশিপ শুধু একটি ট্রাভেল সার্ভিস নয়; বরং এটি হবে বাংলাদেশি পর্যটকদের সৌদি আরবের সংস্কৃতি, আতিথেয়তা ও সৌন্দর্যের সঙ্গে আরও গভীরভাবে সংযুক্ত হওয়ার একটি অনন্য সুযোগ।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ভ রমণক র জন য ভ রমণ আরব র

এছাড়াও পড়ুন:

এলিজার নতুন দুই বইয়ের মোড়ক উন্মোচন

পর্যটক ও লেখক এলিজা বিনতে এলাহীর দুটি নতুন বইয়ের মোড়ক উন্মোচন হয়েছে। বই দুটি হলো-‌ ‘হাসনাত আবদুল হাই-এর সাথে কিছুক্ষণ’ এবং ‘শামীম আমিনুর রহমান-এর ঐতিহ্যজগৎ’।

গত রবিবার রাজধানীর বেঙ্গল শিল্পালয়ের অডিটরিয়ামে অনুষ্ঠানে সূচনা বক্তব্য রাখেন ও সঞ্চালনা করেন সংগীতশিল্পী ও স্থপতি লুভা নাহিদ চৌধুরী।

আলোচক হিসেবে ছিলেন প্রকৃতিবিদ ও পরিব্রাজক ইনাম আল হক, লেখক ও আলোকচিত্রী জালাল আহমেদ, লেখক ও সংগ্রাহক শামীম আমিনুর রহমান, কবি ও সাংবাদিক সাজ্জাদ শরীফ, কথাশিল্পী মোজাফফর হোসেন, অক্ষরবৃত্ত প্রকাশনের রিয়াজ মোরশেদ সায়েম, আকবর চৌধুরী ও আকাশ ইকবাল।

আরো পড়ুন:

তরুণ লেখকদের নিয়ে চন্দ্রিমায় সাহিত্য আড্ডা

‘পার’ এর সাহিত্য আলোচনা-‘বর্তমান বিশ্ব পরিস্থিতি; শিল্পী, লেখকদের

হাসনাত আবদুল হাই বলেন, “আমি জীবনে অনেক সাক্ষাৎকার দিয়েছি পত্র-পত্রিকা ও ম্যাগাজিনে, কিন্তু এই প্রথম কোনো একক সাক্ষাৎকার বই আকারে প্রকাশিত হলো।”

তিনি প্রকাশককে এ ধরনের সাক্ষাৎকার সিরিজ প্রকাশেরও অনুপ্রেরণা দেন।

ইনাম আল হক স্মরণ করেন বেঙ্গল শিল্পালয়ের নিচতলায় হাসনাত আবদুল হাইকে একাগ্রচিত্তে লিখতে দেখা ও তার সঙ্গে ট্রান্স-সাইবেরিয়ান রেলভ্রমণসহ আরো নানা রোমাঞ্চকর পরিকল্পনার স্মৃতি।

কবি ও সাংবাদিক সাজ্জাদ শরিফ প্রশংসা করেন এলিজার দেশের জেলাগুলোতে হেরিটেজ-ভ্রমণের। হাসনাত আবদুল হাই ও শামীম আমিনুর রহমানের সঙ্গে তার নিজের কাজের অভিজ্ঞতাও তুলে ধরেন তিনি।

জালাল আহমেদ বলেন, “তিনি বরাবরই হাসনাত আবদুল হাইয়ের বইয়ের পাঠক, বিশেষ করে তার ভ্রমণকাহিনির।” বইয়ে উল্লেখ করা কিছু জায়গায় গিয়ে নিজেও আপ্লুত হয়েছেন বলে জানান তিনি।

শামীম আমিনুর রহমান তুলে ধরেন এলিজার গবেষণা, তথ্যচিত্র নির্মাণ ও চিত্রনাট্য লেখার ধরণ। তিনি বলেন, “তার সংগ্রহ ও কাজের পেছনে রয়েছে বহু বছরের পরিশ্রম ও ধৈর্য।”

মোজাফফর হোসেন লেখক ও প্রকাশককে আরো বই বের করার পরামর্শ দেন।

এলিজা বিনতে এলাহী বলেন, “হাসনাত আবদুল হাই স্যারের সাক্ষাৎকারটি প্রথমে নিয়েছিলাম একটি আর্কাইভ তৈরির উদ্দেশ্যে, বিশেষ করে ‘দ্য লিভিং লিজেন্ড অব বাংলা লিটারেচার: হাসনাত আবদুল হাই’ তথ্যচিত্র নির্মাণের প্রস্তুতি হিসেবে। স্যারের ৭৭তম জন্মদিনকে সামনে রেখে কাজটি শুরু করি। তখনও বই করার কথা ভাবিনি। কিন্তু অক্ষরবৃত্ত সেই আর্কাইভকেই বইয়ে রূপ দিয়ে আরো মূল্যবান করে তুলেছে।”

তিনি আরো বলেন, “আমি নিজেই একজন ভ্রমণকারী। হাসনাত আবদুল হাইয়ের ভ্রমণকাহিনির একজন মুগ্ধ পাঠক হিসেবেই এই সাক্ষাৎকার নেওয়ার আগ্রহ জন্মায়। সেই আগ্রহই বই আকারে এলো।”

শামীম আমিনুর রহমান প্রসঙ্গে এলিজা বলেন, “তিনি শুধু ইতিহাস নিয়ে কাজ করেন না, একজন মেধাবী সংগ্রাহকও। ২০২৪ সালে আমি তার সাক্ষাৎকারের উপর ভিত্তি করে ‘দ্য হিস্টোরিক্যাল ওয়ার্ল্ড অব শামীম আমিনুর রহমান’ নামে একটি তথ্যচিত্র নির্মাণ করি। পাঠকদের জন্য সেটিই বই আকারে প্রকাশ পেল।”

অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন দেশের খ্যাতনামা লেখক, সাংবাদিক ও প্রকাশকরা।

ঢাকা/সাইফ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • এলিজার নতুন দুই বইয়ের মোড়ক উন্মোচন