কেউ মা হয়েছেন, কেউ হতে পারছেন না, কেউ হয়তো এক বা একাধিক সন্তানকে লালন–পালন করতে হিমশিম খাচ্ছেন। সমাজ সমস্বরে বলে ওঠে, এমনটা তো একটু হবেই।

একজন মা নিজের শরীর দিয়ে সভ্যতার জন্য কত বড় একটি কাজ নিরলস করে যাচ্ছেন। একটি নারীর শরীরে যখন মাতৃত্বের প্রস্তুতি শুরু হয়, নিয়মিত নানা যন্ত্রণায় তার সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে হয় তাঁকে।

মা হওয়ার আগেই তিনি আবিষ্কার করেন, তাঁর শরীর, মন, মনোযোগ ও  ইচ্ছার সব গতিপ্রকৃতি সারা জীবনের জন্য বদলে যাচ্ছে। একসময় হয়ও তা–ই। একজন মানবশিশু দুনিয়ায় এসে পড়ে, যার সব কাজের জন্য সে মায়ের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ে। শারীরিক নানা পরিবর্তন তো ঘটেই, মনের দিক থেকেও এক অভূতপূর্ব নতুন ঘটনার সম্মুখীন হন এই মা।

এমনকি সন্তান জন্ম দিতে গিয়ে কোনও মা যদি মারা যান, তাঁর এই মৃত্যু শহীদের মৃত্যু হিসেবে গণ্য হবে।সুনানে আবু দাউদ: ৩,১১৩আরও পড়ুনমাতৃত্বের কষ্ট সহ্য করা ইবাদত২২ জুন ২০২৫

এই পুরো বাস্তবতাকে আল্লাহ ও তাঁর রাসুল (সা.

) দেখেছেন পরম শ্রদ্ধা ও মমতায়। মায়েদের মন বুঝতেন বলে মাতৃত্বকে মর্যাদা দিয়েছেন নানাভাবে।

আল্লাহ বলেছেন, ‘আর আমি মানুষকে তার মাতা–পিতার প্রতি সদয় ব্যবহারের নির্দেশ দিয়েছি। তার মা তাকে অতি কষ্টে গর্ভে ধারণ করেছে এবং অতি কষ্টে তাকে প্রসব করেছে। তার গর্ভধারণ ও দুধপান ছাড়ানোর সময় লাগে ৩০ মাস। অবশেষে যখন সে তার শক্তির পূর্ণতায় পৌঁছে এবং ৪০ বছরে উপনীত হয়, তখন সে বলে, “হে আমার রব, আমাকে সামর্থ্য দাও, তুমি আমার ওপর ও আমার মাতা-পিতার ওপর যে নিয়ামত দান করেছ, তোমার সে নিয়ামতের যেন আমি শোকর আদায় করতে পারি এবং আমি যেন সৎকর্ম করতে পারি, যা তুমি পছন্দ কর। আর আমার জন্য তুমি আমার বংশধরদের মধ্যে সংশোধন করে দাও। নিশ্চয় আমি তোমার কাছে তওবা করলাম এবং নিশ্চয় আমি মুসলিমদের অন্তর্ভুক্ত।”’ (সুরা আহকাফ, আয়াত: ১৫)

আল্লাহ আরও বলেছেন, ‘আর আমি মানুষকে তার মাতা–পিতার ব্যাপারে (সদাচরণের) নির্দেশ দিয়েছি। তার মা কষ্টের পর কষ্ট ভোগ করে তাকে গর্ভে ধারণ করে। আর তার দুধ ছাড়ানো হয় দুই বছরে; সুতরাং আমার ও তোমার মাতা–পিতার শুকরিয়া আদায় কর। প্রত্যাবর্তন তো আমার কাছেই।’ (সুরা লুকমান, আয়াত: ১৪)

‘আপনার রব এই মর্মে নির্দেশ দিচ্ছেন যে তিনি ছাড়া আর কারও ইবাদত করবেন না এবং মা–বাবার সঙ্গে সদাচরণ করবেন। যদি আপনার কাছে তাঁদের কেউ বৃদ্ধাবস্থায় উপনীত হন, তাহলে তাঁদের ‘উফ’ বলবেন না এবং তাঁদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করবেন না এবং তাঁদের উত্তম কথা বলুন। আর তাঁদের জন্য রহমতের ডানা প্রসারিত করে দিন আর বলুন, হে আমার প্রভু, আপনি তাঁদের প্রতি তেমনি রহম করুন, যেমন তাঁরা আমাকে শিশুকালে লালন–পালন করেছেন।’ (সুরা বনি ইসরাঈল, আয়াত: ২৩–২৪)

আরও পড়ুনমাতৃস্বাস্থ্য পরিচর্যা ও নিরাপদ মাতৃত্ব২৮ মে ২০১৫মা হওয়ার আগেই তিনি আবিষ্কার করেন, তাঁর শরীর, মন, মনোযোগ ও  ইচ্ছার সব গতিপ্রকৃতি সারা জীবনের জন্য বদলে যাচ্ছে। একসময় হয়ও তা–ই। একজন মানবশিশু দুনিয়ায় এসে পড়ে।

মায়ের কষ্টটুকুকে কী মমতায় স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। সন্তানের কাছে মায়ের পাওনাকেও একইভাবে মর্যাদা দেওয়া হয়েছে এভাবে যে আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, এক ব্যক্তি রাসুলুল্লাহ (সা.)–কে জিজ্ঞাসা করলেন, হে আল্লাহর রাসুল, আমার সর্বোত্তম সাহচর্যের বেশি অধিকারী কে? তিনি বলেন, তোমার মা। লোকটি বললেন, এরপর কে? তিনি বললেন, তোমার মা। লোকটি বললেন, এরপর কে? তিনি বললেন, তোমার মা। লোকটি বললেন, এরপর কে? তিনি বললেন, তোমার বাবা। (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৫,৯৭১)

এমনকি সন্তান জন্ম দিতে গিয়ে কোনও মা যদি মারা যান, তাঁর এই মৃত্যু শহীদের মৃত্যু হিসেবে গণ্য হবে। (সুনানে আবু দাউদ: ৩,১১৩)

আল্লাহর রাসুল একজন সাহাবিকে জিহাদ থেকেও অব্যাহতি দিয়েছিলেন এ জন্য যে, তাঁর অবর্তমানে তাঁর মাকে দেখাশোনা করার আর কেউ ছিল না।

পঞ্চদশ শতাব্দীর সে অন্ধকার সময়ে যখন সমাজ নারীর ওপর এমনই বিরূপ ছিল যে তার কোনো সামাজিক, আর্থিক ও পারিবারিক অধিকার ছিল না। মর্যাদায় একজন নারী কেবল একটি পণ্য সমতুল্য ছিল। সেই সময়ে দাঁড়িয়ে আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের দেওয়া এ স্বীকৃতিগুলোকে দেখলে মুগ্ধ হয়ে যেতে হয়। এ ছাড়া আর কীভাবে একজন মায়ের অবস্থানটিকে সম্মানিত করা যেত!

লেখক: শিক্ষক, গবেষক ও প্রকৌশলী

mardia91@gmail. com

আরও পড়ুনবিয়ের আগে মেয়েকে মা১৭ এপ্রিল ২০২৫

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: একজন ম আল ল হ র জন য র ওপর বলল ন

এছাড়াও পড়ুন:

শরীরে অক্সিজেন বাড়াবে এই রেসিপি

আয়রনসমৃদ্ধ কচুশাক ইলিশ, চিংড়ি কিংবা শুঁটকি মাছের সঙ্গে রান্না করলে মুখরোচক এক পদে পরিণত হয়। খাবার হিসেবে বেশ সুস্বাদু। কচুশাকের পুষ্টিগুণ অনেক বেশি। এই শাকের প্রধান উপাদান আয়রন। যা রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা ঠিক রেখে শরীরে অক্সিজেন সরবরাহ বজায় রাখে। এই বর্ষায় সুস্থ থাকার জন্য খেতে পারেন কচুশাক। আরা কচুশাককে মুখোরোচক করে তুলতে চিংড়ি দিয়ে তৈরি করে নিতে পারেন এই পদ।

উপকরণ
কচুপাতা ও ডগা কেটে সিদ্ধ করা: ২ কাপ

চিংড়ি: আধা কাপ

আরো পড়ুন:

চার ধাপে বানান আম-নারকেলের  পুডিং

দুই ধাপে বানান কাঁঠালের কেক

পেঁয়াজ-কুচি: ৩টি

কাঁচামরিচ: ৫,৬টি

নারিকেল-বাটা: দেড় টেবিল-চামচ

সরিষা-বাটা: ১ চা-চামচ

আদা-বাটা: ১ চা-চামচ

রসুন-বাটা: দেড় চা-চামচ

জিরা-গুঁড়া: আধা চা-চামচ

হলুদ-গুঁড়া: আধা চা-চামচ

প্রথম ধাপ: শুরুতে প্যানে তেল গরম করে পেঁয়াজ হালকা ভেজে নিন। এরপর এতে আদা, রসুন, জিরা, হলুদ ও লবণ দিয়ে কষিয়ে চিংড়ি মাছ দিয়ে দিন। কিছু সময় কষিয়ে তাতে কচু-শাক দিয়ে নেড়ে এক কাপ পানি দিতে হবে।

দ্বিতীয় ধাপ: ‍চুলার আঁচ কমিয়ে রান্না করুন। এরপর নারিকেল-বাটা ও কাঁচা-মরিচ দিয়ে দিন।  নামানোর আগে সরিষা-বাটা দিয়ে পাঁচ মিনিটের মতো রাখুন। এই সময় মাঝে মাঝে নেড়ে দিন।

উল্লেখ্য, লেবুর রস দিতে পারেন, এতে স্বাদ  ও ঘ্রাণ বাড়বে। ভাজা ভাজা হলে নামিয়ে নিন।

ঢাকা/লিপি

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • খাদ্যে বিষক্রিয়ায় ৬ কেজি ওজন কমেছে এমবাপ্পের
  • শরীরে অক্সিজেন বাড়াবে এই রেসিপি
  • সহায়তার টাকা না পেয়ে জুলাই ফাউন্ডেশনের অফিসে ভাঙচুর আহতদের
  • হতাশায় দেশ ছাড়া অভিনেত্রী পিয়া বিপাশা বিয়ে করেছেন মার্কিন যুবককে
  • হতাশায় দেশ ছাড়া সেই পিয়া বিপাশা বিয়ে করেছেন মার্কিন যুবককে
  • হতাশায় দেশ ছাড়া সেই পিয়া বিপাশা বিয়ে করলেন মার্কিন যুবককে
  • বাঁশির সঙ্গে কেটে গেল গণেশের জীবনের ৬০ বছর
  • কৃতজ্ঞতাভরা হৃদয়ে দিলীপ কুমারের চিঠি এখনো পড়েন স্ত্রী সায়রা
  • কৃতজ্ঞতাভরা হৃদয়ে দিলীপ কুমারের চিঠিগুলো এখনো পড়েন স্ত্রী সায়রা