যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্ক আরোপের পর প্রথম দুই মাস বলতে গেলে আমরা একপ্রকার নষ্টই করেছি। এই সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলাপ–আলোচনার ফলাফল কী, আমরা অংশীজনেরা কেউ তা জানতে পারিনি। এরপর যুক্তরাষ্ট্র চুক্তির একটা খসড়া কাঠামো (অ্যাগ্রিমেন্ট ফ্রেমওয়ার্ক) বানাল, যেখানে শূন্য শুল্ক থেকে শুরু করে শ্রম আইন—সবই রয়েছে।

গত এপ্রিলে শুল্কারোপের ঘোষণার পর থেকে আমরা শুনে আসছি যে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা মোটামুটি আমাদের ব্যবসা–বাণিজ্যের স্বার্থের অনুকূলেই হচ্ছে। কিছু বিষয়ে আপত্তির কথাও শুনেছিলাম। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ৩৫ শতাংশ পাল্টা শুল্ক আরোপ করা হলো। আমরা মনে করি, এটা সরকারের বড় ধরনের ব্যর্থতা। যাঁরা দর–কষাকষির সঙ্গে যুক্ত, তাঁদের তো বাণিজ্যকাঠামো ও ইতিহাস সম্পর্কে ভালো জানা থাকতে হবে। সেটি আমরা দেখিনি।

যাহোক, আমরা শিল্প খাত থেকে বারবার বলে আসছি যে যুক্তরাষ্ট্র আমাদের প্রধান রপ্তানি গন্তব্য। ফলে তারা যেসব শর্ত দেয়, সেগুলো আমরা মেনে নিয়ে কেন সামনে এগোচ্ছি না? যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের ক্ষেত্রে তাদের শর্ত মানতে আমাদের অসুবিধা কোথায়?

ভিয়েতনাম ইতিমধ্যে দর–কষাকষি করে পাল্টা শুল্ক ২০ শতাংশে নামিয়ে এনেছে। ভারত ও পাকিস্তানের নতুন শুল্ক এখনো ঘোষণা হয়নি। কিন্তু তারা যদি ১০ শতাংশের কাছাকাছি শুল্ক নামিয়ে আনতে পারে, তখন আমরা কীভাবে ব্যবসা ধরে রাখব জানি না। কোনো প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে পারব না আমরা।

এদিকে বাংলাদেশের ওপর নির্ভরশীলতা কমাতে চায় ইউরোপের কোম্পানিগুলো। ফলে আমাদের তৈরি পোশাক রপ্তানির মূল প্রবৃদ্ধিটা আসছে যুক্তরাষ্ট্র থেকে। এ অবস্থায় ৩৫ শতাংশ শুল্ক বহাল থাকলে আমাদের ব্যবসা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। আমার মনে হয়, শুল্ক আলোচনায় সুবিধা করতে না পেরে আমরা বড় সুযোগ হারাচ্ছি। বিপরীতভাবে দেখলে, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে অনুকূল শুল্ককাঠামোতে যেতে পারলে রপ্তানির পাশাপাশি দেশে বিনিয়োগও বাড়ত। আমরা যদি পাল্টা শুল্ক ১০ শতাংশে নামিয়ে আনতে পারি, তবে দেখবেন হুড়মুড় করে চীন থেকে লোকজন (ব্যবসা) এখানে চলে আসবে। আর যদি শুল্ক কমাতে না পারি, তবে একই সঙ্গে আমরা রপ্তানি, বিদেশি বিনিয়োগ—সবকিছুতেই ঝুঁকিতে পড়ব।

সার্বিক বিবেচনায় বলব, আমাদের চোখ বুজে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সমঝোতায় যাওয়া উচিত হবে। ট্রাম্পের আরও তিন বছর মেয়াদ আছে। ফলে এটাকে (বাণিজ্য সমঝোতা) ইতিবাচক হিসেবে নেওয়া উচিত।

শরীফ জহীর, ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি), অনন্ত গ্রুপ

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আম দ র ব যবস

এছাড়াও পড়ুন:

ফরিদা পারভীনের চিকিৎসায় মেডিকেল বোর্ড, আশাবাদী চিকিৎসরা

লালনসংগীতের কিংবদন্তি শিল্পী ফরিদা পারভীন কয়েক দিন ধরে ইউনিভার্সেল মেডিকেল কালেজ ও হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন। তার উন্নত চিকিৎসার জন্য বুধবার মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছে। রাত সাড়ে ১০টা থেকে পৌনে ১২ টা পর্যন্ত ইউনিভার্সেল হাসপাতালে বোর্ডের সভা অনুষ্ঠিত হয়।

ফরিদা পারভীনের ছেলে ইমাম জাফর নোমানী সমকালকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

বোর্ডের সভায় বাংলাদেশ মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়, ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন, জাতীয় কিডনি রোগ ও ইউরোলজি ইনস্টিটিউট, ইউনিভার্সাল মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের শীর্ষস্থানীয় চিকিৎসকরা উপস্থিত ছিলেন।

বোর্ড সভা শেষে চিকিৎসরা বলেন, ‘ফরিদা পারভীনের বিষয়ে আমরা আশাবাদী। শিল্পীর শারীরিক অবস্থা ক্রমেই উন্নতির দিকে। তবে তার শরীরে কিছু ইনফেকশন আছে, আমরা তা দূর করার চেষ্টা করছি। তিনি শিগগিরই সুস্থ হয়ে উঠবেন।’

 

সম্পর্কিত নিবন্ধ