পর্যটক ও লেখক এলিজা বিনতে এলাহীর দুটি নতুন বইয়ের মোড়ক উন্মোচন হয়েছে। বই দুটি হলো- ‘হাসনাত আবদুল হাই-এর সাথে কিছুক্ষণ’ এবং ‘শামীম আমিনুর রহমান-এর ঐতিহ্যজগৎ’।
গত রবিবার রাজধানীর বেঙ্গল শিল্পালয়ের অডিটরিয়ামে অনুষ্ঠানে সূচনা বক্তব্য রাখেন ও সঞ্চালনা করেন সংগীতশিল্পী ও স্থপতি লুভা নাহিদ চৌধুরী।
আলোচক হিসেবে ছিলেন প্রকৃতিবিদ ও পরিব্রাজক ইনাম আল হক, লেখক ও আলোকচিত্রী জালাল আহমেদ, লেখক ও সংগ্রাহক শামীম আমিনুর রহমান, কবি ও সাংবাদিক সাজ্জাদ শরীফ, কথাশিল্পী মোজাফফর হোসেন, অক্ষরবৃত্ত প্রকাশনের রিয়াজ মোরশেদ সায়েম, আকবর চৌধুরী ও আকাশ ইকবাল।
আরো পড়ুন:
তরুণ লেখকদের নিয়ে চন্দ্রিমায় সাহিত্য আড্ডা
‘পার’ এর সাহিত্য আলোচনা-‘বর্তমান বিশ্ব পরিস্থিতি; শিল্পী, লেখকদের
হাসনাত আবদুল হাই বলেন, “আমি জীবনে অনেক সাক্ষাৎকার দিয়েছি পত্র-পত্রিকা ও ম্যাগাজিনে, কিন্তু এই প্রথম কোনো একক সাক্ষাৎকার বই আকারে প্রকাশিত হলো।”
তিনি প্রকাশককে এ ধরনের সাক্ষাৎকার সিরিজ প্রকাশেরও অনুপ্রেরণা দেন।
ইনাম আল হক স্মরণ করেন বেঙ্গল শিল্পালয়ের নিচতলায় হাসনাত আবদুল হাইকে একাগ্রচিত্তে লিখতে দেখা ও তার সঙ্গে ট্রান্স-সাইবেরিয়ান রেলভ্রমণসহ আরো নানা রোমাঞ্চকর পরিকল্পনার স্মৃতি।
কবি ও সাংবাদিক সাজ্জাদ শরিফ প্রশংসা করেন এলিজার দেশের জেলাগুলোতে হেরিটেজ-ভ্রমণের। হাসনাত আবদুল হাই ও শামীম আমিনুর রহমানের সঙ্গে তার নিজের কাজের অভিজ্ঞতাও তুলে ধরেন তিনি।
জালাল আহমেদ বলেন, “তিনি বরাবরই হাসনাত আবদুল হাইয়ের বইয়ের পাঠক, বিশেষ করে তার ভ্রমণকাহিনির।” বইয়ে উল্লেখ করা কিছু জায়গায় গিয়ে নিজেও আপ্লুত হয়েছেন বলে জানান তিনি।
শামীম আমিনুর রহমান তুলে ধরেন এলিজার গবেষণা, তথ্যচিত্র নির্মাণ ও চিত্রনাট্য লেখার ধরণ। তিনি বলেন, “তার সংগ্রহ ও কাজের পেছনে রয়েছে বহু বছরের পরিশ্রম ও ধৈর্য।”
মোজাফফর হোসেন লেখক ও প্রকাশককে আরো বই বের করার পরামর্শ দেন।
এলিজা বিনতে এলাহী বলেন, “হাসনাত আবদুল হাই স্যারের সাক্ষাৎকারটি প্রথমে নিয়েছিলাম একটি আর্কাইভ তৈরির উদ্দেশ্যে, বিশেষ করে ‘দ্য লিভিং লিজেন্ড অব বাংলা লিটারেচার: হাসনাত আবদুল হাই’ তথ্যচিত্র নির্মাণের প্রস্তুতি হিসেবে। স্যারের ৭৭তম জন্মদিনকে সামনে রেখে কাজটি শুরু করি। তখনও বই করার কথা ভাবিনি। কিন্তু অক্ষরবৃত্ত সেই আর্কাইভকেই বইয়ে রূপ দিয়ে আরো মূল্যবান করে তুলেছে।”
তিনি আরো বলেন, “আমি নিজেই একজন ভ্রমণকারী। হাসনাত আবদুল হাইয়ের ভ্রমণকাহিনির একজন মুগ্ধ পাঠক হিসেবেই এই সাক্ষাৎকার নেওয়ার আগ্রহ জন্মায়। সেই আগ্রহই বই আকারে এলো।”
শামীম আমিনুর রহমান প্রসঙ্গে এলিজা বলেন, “তিনি শুধু ইতিহাস নিয়ে কাজ করেন না, একজন মেধাবী সংগ্রাহকও। ২০২৪ সালে আমি তার সাক্ষাৎকারের উপর ভিত্তি করে ‘দ্য হিস্টোরিক্যাল ওয়ার্ল্ড অব শামীম আমিনুর রহমান’ নামে একটি তথ্যচিত্র নির্মাণ করি। পাঠকদের জন্য সেটিই বই আকারে প্রকাশ পেল।”
অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন দেশের খ্যাতনামা লেখক, সাংবাদিক ও প্রকাশকরা।
ঢাকা/সাইফ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর বই শ ম ম আম ন র রহম ন প রক শ
এছাড়াও পড়ুন:
তানজানিয়ার বিতর্কিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ফের বিজয়ী সামিয়া
পূর্ব আফ্রিকার দেশ তানজানিয়ার বিতর্কিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ৯৮ শতাংশ ভোট পেয়ে পুনরায় নির্বাচিত হয়েছেন প্রেসিডেন্ট সামিয়া সুলুহু হাসান। শনিবার (১ নভেম্বর) নির্বাচন কমিশন ঘোষিত চূড়ান্ত ফলে দেখা যায়, বুধবারের নির্বাচনে তিনি ৯৭ দশমিক ৬৬ শতাংশ ভোট পেয়েছেন। খবর বিবিসির।
আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা নির্বাচনে স্বচ্ছতার অভাব এবং ব্যাপক অস্থিরতার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। নির্বাচন ঘিরে দেশটিতে গত কয়েক দিনে সহিংসতায় কয়েক শ’ মানুষ নিহত ও বহু আহত হয়েছে। দেশজুড়ে ইন্টারনেট বন্ধ থাকার কারণে নিহতের সঠিক সংখ্যা যাচাই কঠিন হয়ে পড়েছে।
সরকার সহিংসতার মাত্রা কমিয়ে দেখানোর চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। অস্থিরতা দমনে দেশজুড়ে কারফিউও বাড়ানো হয়েছে।
ক্ষমতাসীন চামা চা মাপিন্দুজি (সিসিএম) দলের প্রেসিডেন্ট সামিয়া সুলুহু হাসানের প্রশাসনের বিরুদ্ধে ভোটের আগে ভিন্নমত পোষণকারী ও বিরোধীদের ওপর কঠোর দমনপীড়ন চালানোর অভিযোগ রয়েছে। প্রধান দুই বিরোধী দলকেই নির্বাচনে অংশ নিতে দেয়া হয়নি।
ফলে নির্বাচনের পরই বৃহত্তম নগরী দার-এস-সালাম ও অন্যান্য শহরে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। শুক্রবারও বিক্ষোভ অব্যাহত ছিল। অস্থিরতা বন্ধ করার জন্য সেনাপ্রধানের সতর্কবার্তা সত্ত্বেও বিক্ষোভকারীরা সামিয়ার পোস্টার ছিঁড়ে ফেলে এবং অসংখ্য গাড়ি, পেট্রোল স্টেশন এবং থানায় আগুন দেয়।
বিক্ষোভের নেতৃত্ব দিচ্ছেন বেশিরভাগ তরুণ বিক্ষোভকারীরা, যারা নির্বাচনকে অন্যায্য বলে সমালোচনা করেছেন। তাদের অভিযোগ, সরকার প্রধান বিরোধী নেতাদের দমন করে গণতন্ত্রকে ক্ষুণ্ন করছে। প্রধান দুই বিরোধী নেতার মধ্যে একজন কারাগারে রয়েছেন এবং অন্যজনকে নির্বাচন থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে।
বিরোধী চাদেমা দলের একজন মুখপাত্র শুক্রবার বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানান, নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে প্রায় ৭০০ মানুষ নিহত হয়েছেন। অন্যদিকে তানজানিয়ার একটি কূটনৈতিক সূত্র বিবিসিকে জানিয়েছে, কমপক্ষে ৫০০ জন মারা যাওয়ার বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ রয়েছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদ কম্বো থাবিত এই সহিংসতাকে ‘এখানে-সেখানে কয়েকটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, “পরিস্থিতি মোকাবেলায় নিরাপত্তা বাহিনী খুব দ্রুত ও দৃঢ়তার সাথে কাজ করেছে।”
প্রধান দুই বিরোধী দলীয় নেতার মধ্যে চাদেমা দলের টুন্ডু লিসুকে নির্বাচনের আগে রাষ্ট্রদোহের অভিযোগ আটক করা হয়, যদিও তিনি অভিযোগ অস্বীকার করেছেন এবং এসিটি-ওয়াজালেনডো দলের নেতা লুহাগা এমপিনাকে আইনি কৌশল খাটিয়ে নির্বাচনে অংশ নিতে দেওয়া হয়নি।
১৬টি প্রান্তিক দল, যাদের কারোরই ঐতিহাসিকভাবে উল্লেখযোগ্য জনসমর্থন ছিল না, তাদের নির্বাচনে অংশগ্রহণের অনুমতি দেওয়া হয়েছিল।
সামিয়ার ক্ষমতাসীন দল সিসিএম, দেশটির রাজনীতিতে আধিপত্য বিস্তার করেছে। স্বাধীনতার পর থেকে কখনও কোনো নির্বাচনে সিসিএম হারেনি।
নির্বাচনের আগে, মানবাধিকার সংস্থাগুলো বিরোধী ব্যক্তিত্বদের জোরপূর্বক গুম, নির্যাতন ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড নিয়ে সরকারের নিন্দা জানিয়েছিল।
প্রেসিডেন্ট জন মাগুফুলির মৃত্যুর পর ২০২১ সালে তানজানিয়ার প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট হিসেবে সামিয়া ক্ষমতায় আসেন।
ঢাকা/ফিরোজ