নামের ভারেই কি নুয়ে পড়ছে বাংলাদেশের পেস আক্রমণ
Published: 11th, July 2025 GMT
মোস্তাফিজুর রহমান: আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এসেই চমক দেখান জাদুকরী কাটার দিয়ে। এখন তো আইপিএলেও বড় তারকা বাংলাদেশের বাঁহাতি এই পেসার।
তাসকিন আহমেদ: ৯ বছরের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে ম্যাচ জেতানো পারফরম্যান্স অনেক। অভিজ্ঞতার সঙ্গে সঙ্গে বল হাতেও নিজেকে নির্ভরযোগ্য করে তুলেছেন।
নাহিদ রানা: বল হাতে ঘণ্টায় ১৪৯ কিলোমিটার পর্যন্ত গতি তুলেছেন। ১৪৫-১৪৬ কিলোমিটার গতি তো নিয়মিতই তোলেন। বাংলাদেশ দলে এমন গতিময় বোলার বিশ্ব ক্রিকেটের জন্যই একটা চমক।
এই তিনজনের বাইরেও বাংলাদেশের পেস–ভান্ডার এখন বেশ সমৃদ্ধ। একটা সিরিজে তিন সংস্করণে ভিন্ন পেসারদের খেলিয়েও দেখা যায় কয়েকজন পেসার সুযোগ পাননি, যাঁরা চাইলে খেলতে পারতেন কোনো না কোনো সংস্করণে। কিন্তু একটু গভীরে গেলে দেখবেন, বাংলাদেশের পেস বোলিং আক্রমণ নামে যতটা ভারী, সবার পারফরম্যান্স নামের সঙ্গে সুবিচার করে ততটা নয়।
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে এবার টেস্ট ও ওয়ানডে সিরিজ মিলিয়ে বাংলাদেশের পেসারদের মোট উইকেট ১৭টি। এর মধ্যে তাসকিন আর তানজিমেরই ৬টি করে ১২টি। অন্যদিকে টেস্ট, ওয়ানডেতে ৮টি করে উইকেট নিয়ে শ্রীলঙ্কার পেসার আসিতা ফার্নান্ডো একাই নিয়েছেন ১৬টি উইকেট। পুরো সিরিজে আসিতার মতো ধারাবাহিক বাংলাদেশের কোনো পেসারই হতে পারেননি। একটু ব্যতিক্রম বলতে হবে শুধু তানজিমকে।
অবশ্য তানজিম ছাড়া বাকি পেসারদের ম্যাচ খেলানোতেই ধারাবাহিকতা রাখা যাচ্ছে না। কাউকে একের বেশি দুই সংস্করণে খেলাতে গেলেই নানা সমীকরণ মেলাতে হয়। ‘ওয়ার্কলোড ম্যানেজমেন্ট’ কথাটা এমনভাবে জেঁকে বসেছে যে দল নির্বাচনী সভায় পেস বোলারদের হিসাব মেলাতে রীতিমতো হিমশিম খেতে হয় নির্বাচক কমিটিকে। একাদশের বোলিং কম্বিনেশন ঠিক করতে গিয়ে একই সমস্যায় পড়তে হচ্ছে টিম ম্যানেজমেন্টকেও।
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে ফেরানো হয়েছিল ইবাদত হোসেনকে।.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
কয়েকবার শর্ত বদল, তবুও টিভি স্বত্ব বিক্রি করতে পারছে না বিসিবি
মাঠের ক্রিকেটে পারফরম্যান্সে ধারাবাহিকতা নেই। নেই স্থিতিশীল পরিস্থিতিও। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে দেশের ক্রিকেটে হ-য-ব-র-ল অবস্থা। ক্রিকেট প্রশাসনে যে অস্থিরতা, তা কাটাতে পারেনি মাঠের পারফরম্যান্সও। তাতে সবকিছুই যেন ওলটপালট। তাই তো ক্রিকেটের সবচেয়ে বেশি আয়ের যে উৎস, সেখানেও যা-তা অবস্থা। শুধু দেশের ক্রিকেট নয়, বিশ্বজুড়েই ক্রিকেটে সবচেয়ে বেশি আয় হয় টিভি স্বত্ব থেকে। সম্প্রচার স্বত্ব বিক্রি করে ক্রিকেট বোর্ডগুলো বিপুল পরিমাণ অর্থ আয় করে থাকে। অস্থিরতার কারণে বাংলাদেশ ক্রিকেট থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে প্রতিষ্ঠানগুলো। ক্রিকেট আগ্রহে ভাটার কারণে সম্প্রচার স্বত্ব বিক্রিই করতে পারছে না বিসিবি। একাধিকবার শর্ত বদল, সময়সীমা বৃদ্ধি, দাম কমানো এবং সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর শর্ত দিয়েও কোনো সাড়া পাচ্ছে না বিসিবি। তা রীতিমতো ভাবাচ্ছে দেশের ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে।
বাংলাদেশ ঘরের মাঠে সবশেষ খেলেছে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। দুই টেস্টের জন্য টিভি স্বত্ব বিক্রি করতে না পারায় বিসিবি বাধ্য হয়ে রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিভিশন চ্যানেল বিটিভিতে খেলা দেখায়। যেখান থেকে কোনো লাভই করতে পারেনি। উল্টো প্রোডাকশন খরচ বহন করতে হয়েছে। সামনে পাকিস্তানের বিপক্ষে তিনটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ। জানা গেছে, এই সিরিজের টিভি স্বত্বও এখন পর্যন্ত বিসিবি বিক্রি করতে পারেনি। ৪ কোটি টাকায় টিভি স্বত্ব বিক্রি করতে চেয়েছে বিসিবি। তাতেও আগ্রহ দেখায়নি কেউ।
শুধু তা-ই নয়, ২০২৫–২৭ হোম সিরিজের স্যাটেলাইট, ডিজিটাল এবং ডিটিএইচ সম্প্রচার স্বত্ব বিক্রির জন্য দরপত্র আহ্বান করলেও তাতে কোনো দেশীয় প্রতিষ্ঠান সাড়া দেয়নি। গত ১২ জুন ইংরেজি ও বাংলা জাতীয় দৈনিকে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে বিসিবি জানায়, ১২ জুলাই ২০২৫ থেকে ১৫ জুন ২০২৭ পর্যন্ত সময়সীমার মধ্যে এসব স্বত্ব বিক্রয়ের জন্য আগ্রহীদের দরপত্র দিতে হবে। দরপত্র জমা দেওয়ার শেষ সময় ছিল ৮ জুলাই। কিন্তু বিসিবি যেসব শর্ত দিয়েছিল, তা মেনে কেউই দরপত্র জমা দেয়নি।
আরো পড়ুন:
সাইফউদ্দিন-নাঈম শেখকে নিয়ে টি-টোয়েন্টি দল ঘোষণা
দশ বছরে ওয়ানডেতে সবচেয়ে বাজে অবস্থা বাংলাদেশের
বিসিবি যে শর্ত দিয়েছিল, তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল ১০ লাখ মার্কিন ডলারের সিকিউরিটি ডিপোজিট। এই অর্থ ব্যাংক ড্রাফট, পে-অর্ডার, অপরিবর্তনীয় ব্যাংক গ্যারান্টি বা ট্রান্সফারের মাধ্যমে পরিশোধ করতে হতো। কিন্তু বর্তমান বাজার পরিস্থিতিতে বিশাল এই অঙ্ক জমা দিতে রাজি নয় কোনো প্রতিষ্ঠানই। কোনো সাড়া না পেয়ে বিসিবি গত ২৭ জুন ও ৪ জুলাই দরপত্রে সংশোধনী আনে এবং শুধুমাত্র পাকিস্তান সিরিজের জন্যও আলাদা দরপ্রস্তাব আহ্বান করেছে। তাতেও কোনো প্রতিষ্ঠান সাড়া দেয়নি। বিষয়গুলো নিয়ে বিসিবির একাধিক পরিচালক ও প্রধান নির্বাহীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে, তারা কেউ কথা বলতে রাজি নন। বিশেষ করে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ বাজেভাবে হারের পর আড়ালে চলে গেছেন তারা।
টিভি স্বত্ব বিক্রি করতে না পারলেও স্পন্সরশিপ স্বত্ব এই সিরিজের বিক্রি করতে পেরেছে বিসিবি। পাকিস্তান–বাংলাদেশ সিরিজের স্পন্সর হয়েছে কেএফসি।
ঢাকা/ইয়াসিন/আমিনুল