পুরান ঢাকায় ব্যবসায়ী হত্যায় জড়িতদের কঠোর শাস্তি দাবি মির্জা ফখরুলের
Published: 12th, July 2025 GMT
রাজধানীর পুরান ঢাকায় প্রকাশ্যে এক ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করা না হলে বিচারহীনতার সংস্কৃতি সমাজকে আরও অন্ধকারে ঠেলে দেবে।
গত বুধবার পুরান ঢাকার স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ (মিটফোর্ড) হাসপাতালের সামনের সড়কে ভাঙারি ব্যবসায়ী লাল চাঁদ ওরফে সোহাগকে (৩৯) এলোপাতাড়ি আঘাত করে ও কুপিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়।
শুক্রবার এক বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘এই পৈশাচিক ঘটনা কেবল একটি জীবনহানিই নয়—এটি রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা, নাগরিক অধিকার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় গভীর হতাশার বহিঃপ্রকাশ। আমাদের সংগঠনের নীতি, আদর্শ ও রাজনীতির সঙ্গে সন্ত্রাস ও বর্বরতার কোনো সম্পর্ক নেই। অপরাধী যেই হোক, তার স্থান কখনোই আইন ও ন্যায়বিচারের ঊর্ধ্বে হতে পারে না।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘জুলাই-আগস্টের গণ–আন্দোলনে পতিত আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকারের পতনের পর উল্লিখিত নির্মম ঘটনাটি দেশের মানুষের বিবেককে গভীরভাবে নাড়া দিয়েছে। প্রকাশ্য দিবালোকে সংঘটিত পৈশাচিক ও ন্যক্কারজনক ঘটনাটির দৃষ্টান্তমূলক বিচার না হলে বিচারহীনতার সংস্কৃতি আমাদের সমাজকে আরও গভীর অন্ধকারে নিমজ্জিত করবে।’
অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘উল্লিখিত ঘটনাটির অবিলম্বে নিরপেক্ষ ও বিশ্বাসযোগ্য তদন্ত নিশ্চিত করুন এবং প্রকৃত অপরাধীদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দৃষ্টান্ত স্থাপন করুন।’
বিবৃতিতে মির্জা ফখরুল নিহত ব্যক্তির রুহের মাগফিরাত কামনা করেন এবং তাঁর পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ভাটারা থানায় বিষপান করে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষিকার মৃত্যু
রাজধানীর ভাটারা থানায় পুলিশ হেফাজতে থাকা অবস্থায় বিষপান করে এক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষিকার মৃত্যু হয়েছে। তাঁর নাম ফিরোজা আশরাফী। তিনি একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক। বৃহস্পতিবার রাতে বিষপানের পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল শুক্রবার রাতে তাঁর মৃত্যু হয়।
এর আগে স্বামীর গোপনাঙ্গ কেটে দেওয়ার অভিযোগে তাঁকে আটক করে পুলিশ। এ ঘটনায় দায়িত্বে অবহেলার কারণে ভাটারা থানার তিন পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করে রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করা হয়েছে। বরখাস্তরা হলেন– এসআই জামাল হোসেন, কনস্টেবল শারমিন ও নাছিমা।
ভাটারা থানার ওসি রাকিবুল হাসান বলেন, ফিরোজা আশরাফী নিজেকে অ্যাজমার রোগী জানিয়ে তাঁর বাসা থেকে ওষুধ আনিয়ে খাওয়ার কথা বলেন। তবে কৌশলে ওষুধের বদলে বিষ আনিয়ে খেয়ে আত্মহত্যা করেন তিনি। এ ঘটনায় তাঁকে সহায়তার দায়ে শোভা ও কণা নামে তৃতীয় লিঙ্গের দু’জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
পুলিশ সূত্র জানায়, ফিরোজা আশরাফী একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাষক এবং তাঁর স্বামী ইসমাইল কামাল রিফাত একই বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক। দু’জনের মধ্যে দাম্পত্য কলহ চলছিল। এ কারণে তারা পল্লবী ও বসুন্ধরায় আলাদা বাসায় থাকতেন। কলহের জেরে বুধবার গভীর রাতে পল্লবীর বাসায় গিয়ে স্বামী ইসমাইলের গোপনাঙ্গ কেটে দেন ফিরোজা। পরে নিজেই অ্যাম্বুলেন্সে করে তাঁকে নিয়ে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করেন।
এ বিষয়ে ইসমাইলের স্বজনরা পুলিশের কাছে অভিযোগ করেন। একই সময় জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে পুলিশের সহায়তা চান ফিরোজা। পরে পল্লবী থানা পুলিশ ফিরোজাকে গ্রেপ্তারের জন্য ভাটারা থানা পুলিশকে অনুরোধ জানায়। এর ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে ফিরোজাকে হেফাজতে নেয় পুলিশ। তবে তিনি ৯৯৯-এ কল করায় তাঁকে নারী ও শিশু ডেস্কে রাখা হয়। সেখানে নিরাপত্তায় দু’জন নারী পুলিশ সদস্যও ছিলেন। থানায় থাকা অবস্থায় ফিরোজা কৌশলে ফোন দিয়ে আইনি সহায়তার জন্য একজনের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। সেই ব্যক্তি তৃতীয় লিঙ্গের শোভাকে ভাটারা থানায় পাঠান। শোভা থানায় গেলে ফিরোজা তাঁর বসুন্ধরার বাসা থেকে অ্যাজমার ওষুধ এনে দিতে বলেন। বৃহস্পতিবার রাত সোয়া ৮টার দিকে শোভা ওষুধ এনে দেন। সেটি খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন ফিরোজা। পরে জানা যায়, বাসা থেকে বিষ এনে খেয়েছেন তিনি।