এইচএসসি পরীক্ষা: ফিন্যান্স, ব্যাংকিং ও বিমা প্রথম ও দ্বিতীয় পত্রে ভালো করতে চাও?
Published: 6th, August 2025 GMT
প্রিয়, ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের পরীক্ষার্থী, এ বছর সংক্ষিপ্ত সিলেবাসের আলোকে পরীক্ষা দেবে, তাই ফিন্যান্স, ব্যাংকিং ও বিমা প্রথম ও দ্বিতীয় পত্রে যথার্থ প্রস্তুতি নিয়েছ। মনে আত্মবিশ্বাস রাখো, পরীক্ষা ভালো হবে।
সৃজনশীল অংশ
১১টি প্রশ্ন থাকবে। যেকোনো ৭টি প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে। ফিন্যান্স, ব্যাংকিং ও বিমা বিষয়ের সৃজনশীল প্রশ্নে ১টি উদ্দীপক (ঘটনা) ও ৪টি প্রশ্ন দেওয়া থাকবে। ৪টি প্রশ্নই উদ্দীপকনির্ভর হয় না। প্রথম ২টি পাঠ্যসূচিনির্ভর ও পরের ২টি উদ্দীপকনির্ভর হয়। সৃজনশীল পদ্ধতির মাধ্যমে শিক্ষার্থীকে চিন্তন দক্ষতার বিভিন্ন স্তরের (জ্ঞান, অনুধাবন, প্রয়োগ ও উচ্চতর দক্ষতা) প্রশ্নের মাধ্যমে মূল্যায়নের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এইচএসসি পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে চারটি স্তরে সৃজনশীল প্রশ্ন অন্তর্ভুক্ত থাকবে। প্রতিটি প্রশ্নে ক, খ, গ ও ঘ—চারটি অংশ থাকবে। প্রশ্নের ক অংশ সহজ, খ অংশ মধ্যম এবং গ ও ঘ অংশ কঠিন মানের হবে। প্রশ্নের উত্তর করার সময়, ধাপ ও চিন্তার ব্যাপকতার ওপর ভিত্তি করে নম্বর বিভাজন করতে হবে।
সৃজনশীল প্রশ্নের কাঠামো বুঝে নাও
তোমার উত্তর যেন হয় স্পষ্ট, ধারাবাহিক, বাস্তব উদাহরণসমৃদ্ধ। চিত্র, ফর্মুলা ও হিসাবকে ভয় নয়, সহজ মনে করো। অর্থের সময় মূল্য, মূলধন বাজেট ও বিনিয়োগ সিদ্ধান্ত, ঝুঁকি ও মুনাফার হার এসব অঙ্ক বা চার্টে নম্বর তুলতে সুবিধা। প্রতিটি হিসাবের ধাপ পরিষ্কার করে লেখো। ভুল হিসাবের চেয়ে না লেখাই ভালো। মুখস্থ নয়, বুঝে লিখো—এ বিষয়ে মুখস্থ উত্তর দিলে পরীক্ষক ধরতে পারেন। তার চেয়ে যদি তুমি বুঝে নিজের ভাষায় লেখো, তাহলে উত্তর হবে প্রাসঙ্গিক। প্রতিটি অংশ নিজস্বতা মানে বহন করবে। ঘ অংশে সবচেয়ে বেশি নম্বর, তাই বিশ্লেষণ করো যুক্তিসহ।
ফিন্যান্স, ব্যাংকিং ও বিমা প্রথম পত্রের পুনর্বিন্যস্ত সিলেবাসের আলোকে এ বছর ১, ৩, ৬, ৮ ও ৯, অর্থাৎ পাঁচটি অধ্যায়ের ওপর প্রশ্ন করা হবে। শুধু পার্থক্য হলো, এ বছর তোমরা অধ্যায় বাছাই করে তোমাদের ইচ্ছেমতো ১১টি প্রশ্ন থেকে যেকোনো ৭টি প্রশ্নের উত্তর দিতে পারবে। তোমরা ফিন্যান্স, ব্যাংকিং ও বিমা প্রথম পত্রে পরীক্ষা প্রস্তুতির জন্য প্রথমেই সংক্ষিপ্ত ৫টি অধ্যায় থেকে নিজে কিছু অধ্যায় নির্দিষ্ট করে নেবে। তোমরা নির্ধারিত অধ্যায়গুলো বারবার পড়বে।
তোমরা প্রথম পত্রে সংক্ষিপ্ত ৫টি অধ্যায় থেকে তৃতীয় ও নবম অধ্যায়সহ যেকোনো দুই–তিনটি অধ্যায় ভালোভাবে রিভিশন দিলেই ভালো ফল করার একটি সুযোগ নিতে পার। তালিকাটি দেখে পরীক্ষার্থীরা নিজেরাই ধারণা করতে পারবে এইচএসসি পরীক্ষা ২০২৫-এর সৃজনশীল প্রশ্নের জন্য কোন অধ্যায় বেশি গুরুত্বপূর্ণ। তোমরা ফিন্যান্স, ব্যাংকিং ও বিমা দ্বিতীয় পত্রে ৭টি অধ্যায় থেকে ব্যাংকিংয়ের জন্য ১, ২, ৬, ৯ অধ্যায় বেশি গুরুত্বপূর্ণ। বিমার জন্য অধ্যায় ১০ ও ১১ অধ্যায় বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
আরও পড়ুনহার্ভার্ডসহ ১০ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত সালমানের, বাবা–মা’র তিন সূত্রেই বাজিমাত৫ ঘণ্টা আগেসৃজনশীল প্রশ্নের ধরন পুরোপুরি আয়ত্ত করো
প্রতিটি প্রশ্নে ক, খ, গ ও ঘ—চারটি অংশ থাকবে। প্রশ্নের ক অংশ সহজ, যা ১ নম্বর বরাদ্দ এই অংশের জন্য যথার্থ উত্তর করবে। খুব বেশি লেখার প্রয়োজন নেই। প্রশ্নের খ অংশ মধ্যম, যা ২নম্বর বরাদ্দ। এই অংশের প্রশ্নে যা চাওয়া হবে, তোমরা সমাধানে প্রয়োজনীয় সবকিছুই উল্লেখ করবে। প্রশ্নের গ অংশ কঠিন মানের হবে, যা ৩ নম্বর বরাদ্দ, প্রশ্নের ঘ অংশও প্রশ্নের কঠিন মানের হবে, যা ৪ নম্বর বরাদ্দ, এই অংশে তোমরা উত্তর করার সময় নিজেদের চিন্তার প্রতিফলন ঘটাবে। তোমরা মনে রাখবে ফিন্যান্স, ব্যাংকিং ও বিমা প্রথম পত্র ও দ্বিতীয় পত্রে যতটুকু ভুল করবে ততটুকু নম্বর কাটা যাবে। ৪ নম্বরের মধ্যে ৪ নম্বরই কাটা যায় না। প্রশ্নের উত্তর করার সময়, ধাপ ও চিন্তার ব্যাপকতার ওপর ভিত্তি করে নম্বর বিভাজন করতে হবে। সৃজনশীল প্রশ্নে ৪টি অংশ থাকে: ক (জ্ঞান), খ (অনুধাবন), গ (প্রয়োগ), ঘ (উচ্চতর দক্ষতা)। ঘ অংশে থাকে সবচেয়ে বেশি নম্বর, তাই যুক্তিসহ বিশ্লেষণ কর। উত্তর গুছিয়ে, অনুচ্ছেদ আকারে নয় পয়েন্ট আকারে লিখলে নম্বর বেশি মেলে। কোনো প্রশ্নের যতটুকু অংশের শুদ্ধভাবে সমাধান করতে পারবে, ততটুকু অংশের জন্য নম্বর পাবে। তোমরা কতটুকু ভুল করলে, কত নম্বর কাটা যাবে, তার চিন্তা করবে না। একটু ভুল করলেই সম্পূর্ণ উত্তরটা কাটার দরকার নেই। তাই কোনো সৃজনশীল প্রশ্নের ক, খ, গ কিংবা ঘ এর কিছু অংশের সঠিক সমাধান করতে না পারলে বিচলিত হবে না।
কীভাবে লিখলে ভালো করবে
শুধু পড়লে হবে না, কীভাবে লিখলে পরীক্ষকের মন জয় করা যায়, সেটিই হলো ‘টেকনিক’। বুঝে লেখা + সঠিক গঠন + সময় বাঁচানো = সর্বোচ্চ নম্বর। প্রতিটি প্রশ্নে ক, খ, গ ও ঘ—চারটি অংশে উত্তর করার সময় পয়েন্ট আকারে সাজিয়ে লিখলে নম্বর বেশি মেলে । হিসাব ও চিত্রে নম্বর তুলতে চাইলে শুদ্ধ ফর্মুলা, ধাপে ধাপে উপস্থাপন, যেসব প্রশ্নে হিসাব বা চার্ট থাকে (বাজেট, ব্যাংক হিসাব, বিনিয়োগ সিদ্ধান্ত, মূলধন নির্ধারণ ইত্যাদি), সেখানে ধাপে ধাপে হিসাব দেখালে পুরো নম্বর পাওয়া যায়। ভুল হলেও পুরো প্রসেস ঠিক থাকলে আংশিক নম্বর মেলে। সংজ্ঞা ও পার্থক্য লিখলে অবশ্যই টেবিল ফরম্যাট ব্যবহার করো, উদাহরণ: বিমা ও পুনর্বিমার পার্থক্য/ বাণিজ্যিক ব্যাংক ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ভূমিকা। কলাম আকারে পার্থক্য লিখলে স্পষ্টতা বাড়ে ও নম্বর বাড়ে। তোমরা প্রথমে প্রতিটি প্রশ্ন ভালোভাবে পড়বে ও প্রশ্নগুলো বুঝবে। অতঃপর যে প্রশ্নগুলো সমাধান ভালোভাবে করতে পারবে, সেগুলোর সমাধান করবে। প্রথমেই মাথায় রাখতে হবে, প্রশ্নে কী চাওয়া হয়েছে? প্রশ্নগুলো ঠিক ঠিক বোঝার ওপর নির্ভুল সমাধান প্রদান নির্ভর করে। মানবণ্টনের ওপর খেয়াল রেখে প্রতিটি প্রশ্ন মনোযোগ দিয়ে পড়ে সমাধান নির্দিষ্ট করতে হবে। কোনো প্রশ্নের উত্তর করার সময় মাথা ঠান্ডা রেখে যথাসম্ভব দ্রুত উত্তর লিখতে হবে, যেন নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে প্রশ্নের উত্তর করা যায়।
আরও পড়ুনঅস্ট্রেলিয়া আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের দিল সুখবর, অগ্রাধিকারে দক্ষিণ–পূর্ব এশিয়া৩ ঘণ্টা আগেপ্রতিটি উত্তর শুরুতে ছোট ভূমিকা বা সংজ্ঞা লিখে শুরু করো, প্রশ্ন যত বড়ই হোক না কেন, এক বা দুই লাইনের ভূমিকা দিলে উত্তর আরও প্রাসঙ্গিক ও গোছালো হয়। পয়েন্ট আকারে সাজানো লেখা পরীক্ষকের দৃষ্টি ধরে রাখা যায়।
অধ্যায়ভিত্তিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় মুখস্থ নয়, বুঝে আয়ত্ত করো, যেমন অর্থব্যবস্থার উপাদান, ব্যাংকিং কার্যক্রম ও চেক ব্যবস্থাপনা, বিমা ও পুনর্বিমার পার্থক্য, বাজেট প্রণয়নের প্রক্রিয়া। এ বিষয়গুলো বোঝা গেলে সহজে লেখায় প্রকাশ করা যায়। লেখায় উদাহরণ ও বাস্তব প্রয়োগ সংযুক্ত করো। লেখার গুণগত মান = নম্বর বৃদ্ধি, বানান ভুল, লাইন গোঁজাগুজি, অস্পষ্ট হস্তাক্ষর হলে নম্বর কাটা পড়ে। তাই সুন্দর হাতের লেখা, পরিষ্কার লাইনিং ও মার্জিত ভাষা ব্যবহার করো।
পরীক্ষার আগে করণীয়
পুনর্বিন্যস্ত সিলেবাসের আলোকে তোমরা নির্ধারিত অধ্যায়গুলোর গাণিতিক কিংবা প্রায়োগিক সমস্যা ভালোভাবে অনুশীলন করবে। বিভিন্ন ধরনের প্রশ্ন ও উত্তর দেখে অনুশীলন করবে। বিভিন্ন টেস্ট পেপার ও প্রশ্ন ব্যাংক থেকে প্রশ্ন সমাধান করবে। অঙ্ক করার সময় ক্যালকুলেটর ব্যবহারের অভ্যাস করবে। প্রতিটি অধ্যায়ের অনুশীলন শেষ হলে রিভিশন দেবে, নিজের তৈরি নোট বারবার পড়ে নেবে, পরীক্ষার এক দিন আগে সময় ধরে মডেল টেস্টের চর্চা করবে, সময় ব্যবস্থাপনার অভ্যাস গড়ে তুলবে। যে অধ্যায় বা প্রশ্ন বুঝতে সমস্যা হয়, সেখানে গাইড বইয়ের ওপর নির্ভর না করে শিক্ষক বা সহপাঠীর সহযোগিতা নেবে। প্রয়োজনে ছোট ছোট গ্রুপে আলোচনা করে শেখার চেষ্টা করবে। যেসব অধ্যায় বেশি ভুল হয় বা কম বুঝেছ, সেগুলোর জন্য অতিরিক্ত সময় দেবে। বোর্ড পরীক্ষার প্রশ্নপত্র বিশ্লেষণ করে প্রশ্নের ধরন ও নম্বর বণ্টন বুঝে নেবে। বিগত সালের বোর্ড পরীক্ষার প্রশ্নপত্রগুলো সমাধান করো, এতে করে পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের ধরন ও প্রশ্নের মান সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যাবে।
আরও পড়ুনপ্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষা ২০২৫: প্রশ্নপত্রের কাঠামো ও নম্বর বিভাজন প্রকাশ০৪ আগস্ট ২০২৫সময় ব্যবস্থাপনা
পরীক্ষার হলে প্রতিটি প্রশ্নের জন্য কত সময় বরাদ্দ করবে, তা আগে থেকেই ঠিক করে রাখো। সময়মতো সব কটি প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করো। অতিরিক্ত সময় নষ্ট না করে, যেসব প্রশ্ন সহজে পারবে, সেগুলোর উত্তর আগে দেবে। অপ্রয়োজনীয় উত্তর লেখা বা বেশি সময় ব্যয় করবে না। গাণিতিক কিংবা প্রায়োগিক সমস্যার সমাধানে প্রতিটি ছকে পেনসিলের ব্যবহার করবে, অবশ্যই পরিচ্ছন্ন ও গাণিতিক সমাধানে নিখুঁত ক্যালকুলেশন করবে। মনে রাখবে, প্রতিটি এক নম্বরের জন্য তোমরা দুই মিনিট সময় পাবে, নম্বর ও সময় উভয়ের প্রতি খেয়াল রেখে তোমাকে উত্তর করতে হবে। যে সৃজনশীল প্রশ্ন তুমি পারবে না, সেখানে কোনোভাবেই সময় নষ্ট করা যাবে না। একটি প্রশ্নের সব অংশের উত্তরই ধারাবাহিকভাবে করবে। পরীক্ষার হলে কোনো প্রশ্ন কঠিন মনে হলে ঘাবড়ে না গিয়ে শান্তভাবে চিন্তা করে উত্তর করার চেষ্টা করবে।
বহুনির্বাচনী অংশ
পাঠ্যসূচির নির্ধারিত অধ্যায়ের সঙ্গে মিল রেখে বহুনির্বাচনী প্রশ্নগুলো বারবার পড়তে হবে। বহুনির্বাচনী এই অংশের মধ্যম বলে কিছু নেই। প্রতিটি বহু নির্বাচনী প্রশ্নের সঠিকতার কাছাকাছি গেলে হবে না, তোমাদের কে সঠিক উত্তর করতে হবে। ৩০টি প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে ৩০ মিনিটে। প্রতিটি প্রশ্নের মান ১। বহুনির্বাচনী প্রশ্নপত্রে জ্ঞান ও অনুধাবন স্তরের ৬০% এবং প্রয়োগ ও উচ্চতর দক্ষতা স্তরের ৪০% প্রশ্ন অন্তর্ভুক্ত হবে। বহুনির্বাচনী প্রশ্নের জন্য সংক্ষিপ্ত সিলেবাসের সব অধ্যায় ভালোভাবে পড়তে হবে। এ ক্ষেত্রে কোনো অধ্যায় বাদ না দেওয়াই শ্রেয়। বহুনির্বাচনীর অপশনগুলো সাধারণত এমনভাবে থাকে, যা দেখে তোমাদের মনে হতে পারে ২/৩টিই সঠিক উত্তর। বহুনির্বাচনী প্রশ্নের উত্তর করার সময় হিসাব করেও কম সময়ে উত্তর করা যায়। তোমরা এ বছর ৩০টি বহুনির্বাচনী প্রশ্নের উত্তর করবে। তাই জানা-অজানা নির্ধারিত সব প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করতে হবে। কোনো বহুনির্বাচনী প্রশ্নের উত্তর করতে না পারলে সেটা নিয়ে সময় নষ্ট না করে পরবর্তী প্রশ্নের উত্তর করার চেষ্টা করবে। শেষে সময় পেলে ফেলে আসা প্রশ্নগুলোর উত্তর করার চেষ্টা করবে। বহুনির্বাচনী অংশে ভালো করার জন্য যেকোনো ভালো মানের বইয়ের অধ্যায়ভিত্তিক আলোচনা পড়ে অনুশীলনীর বহুনির্বাচনী অংশ এবং বিগত বছরের বোর্ডের বহুনির্বাচনী প্রশ্ন ভালোভাবে অনুশীলন করতে হবে।
*লেখক: মোহাম্মদ জয়নাল আবেদীন, সহকারী অধ্যাপক, সিদ্ধেশ্বরী কলেজ, ঢাকা
আরও পড়ুনএইচএসসি পরীক্ষায় সমাজকর্ম প্রথম ও দ্বিতীয় পত্রে বেশি নম্বর পেতে হলে১ ঘণ্টা আগে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব যবস থ প রথম প ব যবহ র এই অ শ র জন য ন র ভর এ বছর সময় ব ন করত ন করব সময় ন আরও প র ওপর
এছাড়াও পড়ুন:
আশুলিয়া উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সেই ১৮৭ শিক্ষার্থীর তিনটি বিষয়ে পরীক্ষা নিতে নির্দেশ
সাভারের আশুলিয়া উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সেই ১৮৭ শিক্ষার্থী সমাজকর্ম, পরিসংখ্যান ও ভূগোল—এই তিন বিষয়ে পরীক্ষায় বসতে পারবেন। তাঁদের ক্ষেত্রে ইতিমধ্যে হয়ে যাওয়া ভূগোল ও পরিসংখ্যান পরীক্ষা আবারও নিতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে ৭ ও ১০ আগস্ট অনুষ্ঠিতব্য সমাজকর্ম বিষয়ে ১৮৭ শিক্ষার্থীকে পরীক্ষায় বসার অনুমতি দিতেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি ফাহমিদা কাদের ও বিচারপতি সৈয়দ জাহেদ মনসুরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ রোববার রুলসহ এ আদেশ দেন। ২০২৫ সালের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা গত ২৬ জুন শুরু হয়।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির ১৮৭ এইচএসসি পরীক্ষার্থীর সমাজকর্ম, পরিসংখ্যান ও ভূগোল পরীক্ষার আয়োজনে নিষ্ক্রিয়তা চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. বাকির হোসেন মৃধা গত সপ্তাহে রিটটি করেন। আদালতে রিটের পক্ষে তিনি নিজেই শুনানি করেন। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মুহাম্মদ শফিকুর রহমান ও তানিম খান এবং সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল ইকরামুল কবির।
আদেশের পর আইনজীবী মো. বাকির হোসেন মৃধা প্রথম আলোকে বলেন, আশুলিয়া উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ১৮৭ শিক্ষার্থী কলেজটির ভুলের কারণে সমাজকর্ম, পরিসংখ্যান ও ভূগোল পরীক্ষা দিতে পারছিলেন না। কলেজটির এই বিষয়গুলোর অনুমতি ছিল না। যে কারণে নিজে আবেদনকারী হয়ে জনস্বার্থে রিটটি করেন। এই ১৮৭ জন শিক্ষার্থীর ওই তিন বিষয়ের পরীক্ষা নিতে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডকে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। এখন ১৮৭ শিক্ষার্থী পরীক্ষাগুলো দিতে পারবেন।
সাভারের আশুলিয়া উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়টি ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে। গত ১৪ জুলাই এক বিজ্ঞপ্তিতে ঢাকা শিক্ষা বোর্ড জানায়, আশুলিয়া উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের উচ্চমাধ্যমিক পাঠ্যক্রমে ঐচ্ছিক বিষয় হিসেবে সমাজকর্ম, পরিসংখ্যান ও ভূগোল বিষয়ে পাঠদানের কোনো অনুমোদন না থাকায় পরও কলেজ কর্তৃপক্ষ ১৮৬ জন শিক্ষার্থীর রেজিস্ট্রেশন এবং ২০২৫ সালের এইচএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণ করেছে কলেজের অনুমোদনপ্রাপ্ত ভিন্ন তিনটি বিষয়ে। কলেজ কর্তৃপক্ষ পরীক্ষা শুরুর অনেক আগেই পরীক্ষার্থীদের প্রবেশপত্র পেয়েছে এবং তাতে সমাজকর্ম, পরিসংখ্যান ও ভূগোল বিষয়ে পরীক্ষাদানের সুযোগ না থাকা সত্ত্বেও বোর্ডের সঙ্গে তারা কোনো ধরনের যোগাযোগ করেনি।
আদেশের বিষয়ে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মুহাম্মদ শফিকুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘১৮৭ শিক্ষার্থীর ক্ষেত্রে ইতিমধ্যে হয়ে যাওয়া ভূগোল ও পরিসংখ্যান পরীক্ষা নিতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে ৭ ও ১০ আগস্ট অনুষ্ঠিতব্য সমাজকর্ম বিষয়ে ১৮৭ শিক্ষার্থীকে পরীক্ষায় বসতে অনুমতি দিতেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নির্দেশনা বাস্তবায়ন বিষয়ে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডকে আদালতে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।’
ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের গত ১৪ জুলাইয়ের বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, আবশ্যিক পাঁচটি পত্রের পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর ৯ জুলাই ২০২৫ তারিখে কলেজ কর্তৃপক্ষ (আশুলিয়া উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়) বোর্ডের সঙ্গে যোগাযোগ করে ১৮৬ জন পরীক্ষার্থীর রেজিস্ট্রেশন কার্ড ও প্রবেশপত্র পরিবর্তন করে দেওয়ার জন্য মৌখিকভাবে অনুরোধ করে। ইতিমধ্যে পূর্বনির্ধারিতসংখ্যক প্রশ্নপত্র সব কেন্দ্র সংশ্লিষ্ট নিরাপত্তা হেফাজতে পাঠিয়ে দেওয়ায় বোর্ডের পক্ষে কিছু করার ছিল না। আশুলিয়া উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয় ছাড়াও ঢাকা বোর্ডের আওতাধীন আরও ৬টি কলেজে একই ধরনের ঘটনা ঘটেছে। তবে তাঁদের সংখ্যা মাত্র ২২। অন্যদিকে আশুলিয়া উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ১৮৬ জন। উদ্ভূত পরিস্থিতির জন্য কলেজ কর্তৃপক্ষ শতভাগ দায়ী।