চট্টগ্রামে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ফারুকের বিরুদ্ধে কোটি টাকার দুর্নীতির মামলা
Published: 7th, August 2025 GMT
চট্টগ্রামের কর্ণফুলী উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফারুক চৌধুরীর বিরুদ্ধে পাঁচ কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগে মামলা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) চট্টগ্রামের উপসহকারী পরিচালক নিজাম উদ্দিন বাদী হয়ে নিজ কার্যালয়ে এ মামলা করেন।
দুদক চট্টগ্রামের উপসহকারী পরিচালক নিজাম উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, ফারুক চৌধুরীর বিরুদ্ধে ৫ কোটি ১৮ লাখ ৪০ হাজার টাকার অবৈধ সম্পদের তথ্য পেয়েছে দুদক। এই টাকার বিপরীতে তাঁর কোনো দায়দেনা কিংবা ঋণ পাওয়া যায়নি। অনুসন্ধানে দুদক ফারুকের অবৈধ সম্পদের তথ্য পাওয়ায় তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করেছে। তদন্তে তাঁর আরও অবৈধ সম্পদ আছে কি না, তা বেরিয়ে আসবে।
দুদক সূত্র জানায়, ২০১৩ সালে দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদকের পদ পান ফারুক। ২০১৪ সালের ১২ অক্টোবর কর্ণফুলী উপজেলা আওয়ামী লীগের যে অ্যাডহক কমিটি গঠন করা হয়েছিল, সেটি ভেঙে ২০১৮ সালের ২৩ অক্টোবর ফারুক চৌধুরীকে সভাপতি করে ৭১ সদস্যের কমিটি ঘোষণা করে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ। এরপর তাঁকে কর্ণফুলী উপজেলা কমিউনিটি পুলিশের সভাপতি করা হয়। ২০১৭ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর নৌকা প্রতীকে নবসৃষ্ট কর্ণফুলী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বনে যান তিনি। এরপর দ্বিতীয় দফায় ২০২২ সালের ২ নভেম্বর আবার উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। ফারুক সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত ছিলেন।
৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকে আত্মগোপনে রয়েছেন ফারুক। দুদকের মামলার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার কাছে এত টাকার কোনো সম্পদ নেই। বিষয়টি আমি আইনগতভাবে মোকাবিলা করব।’
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
নাসা গ্রুপের নজরুলকে যাত্রাবাড়ী থানার হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আদেশ
জুলাই গণ-অভুত্থানে রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে আবু বকর রিফাত হত্যার ঘটনায় করা মামলায় নাসা গ্রুপের কর্ণধার নজরুল ইসলাম মজুমদারকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুবুর রহমান আজ বুধবার শুনানি নিয়ে এই আদেশ দেন।
আসামিপক্ষের আইনজীবী মোরশেদ হোসেন বলেন, যাত্রাবাড়ী থানার মামলাটিতে নজরুলকে গ্রেপ্তার দেখাতে গত ২৬ অক্টোবর আবেদন করা হয়। যাত্রাবাড়ী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) জুয়েল রানা আবেদনটি করেন। নজরুলের উপস্থিতিতে শুনানির জন্য আজকের দিন ধার্য করেছিলেন আদালত। শুনানির জন্য আজ নজরুলকে আদালতে হাজির করা হয়। শুনানি নিয়ে তাঁকে গ্রেপ্তার দেখানোর আদেশ দেন আদালত।
দেখা যায়, নজরুলকে আজ সকাল ১০টার দিকে গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগারে থেকে ঢাকার সিএমএম আদালতের হাজতখানায় এনে রাখা হয়। পরে তাঁকে বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট ও হেলমেট পরানো হয়। দুই হাত সামনে নিয়ে পরানো হয় হাতকড়া। এরপর তাঁকে আদালতের কক্ষে নেওয়া হয়। কাঠগড়ায় তোলার সময় তাঁর মাথা থেকে হেলমেট ও শরীর থেকে জ্যাকেট খোলা হয়। কাঠগড়ার মাঝামাঝি অংশে দাঁড়িয়ে তিনি তাঁর কোমরে বাঁ হাত দেন।
তখন নজরুলের আইনজীবী জানতে চান, তাঁর টুল লাগবে কি না। তিনি সম্মতি দিলে তাঁর আইনজীবী পুলিশের কাছে টুল চান।
দায়িত্বরত পুলিশ সদস্য বলেন, আদালতের কাছে চাইতে হবে। কিছুক্ষণ পর এজলাসে আসেন বিচারক। আসামিপক্ষের আইনজীবী টুল চেয়ে বিচারকের কাছে আবেদন জানান। বিচারক শুনানি শুরু করেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন তুলে ধরেন।
শুনানিতে আসামিপক্ষের আইনজীবীরা বলেন, নজরুলকে গ্রেপ্তার দেখানোর কোনো যৌক্তিকতা নেই। এই ঘটনার সঙ্গে তাঁর সংশ্লিষ্টতা নেই। তাঁর সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে কোনো তথ্যপ্রমাণ জমা দিতে পারেননি তদন্ত কর্মকর্তা। তাঁকে গ্রেপ্তার দেখানো হলে তিনি ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হবেন।
শুনানি নিয়ে নজরুলকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন বিচারক। এ সময় নজরুলকে বিষণ্ন দেখা যায়। পরে তাঁকে আবার বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট ও হেলমেট পরিয়ে সিঁড়ি দিয়ে হাঁটিয়ে আদালতের হাজতখানায় নেওয়া হয়।
মামলার কাগজপত্রের তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের ৫ আগস্ট জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে অংশ নেন আবু বকর রিফাত। সেদিন দুপুরের দিকে তিনি গুলিবিদ্ধ হন। হাসপাতালে নেওয়া হলে তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। এই ঘটনায় চলতি বছরের ২৮ জানুয়ারি যাত্রাবাড়ী থানায় হত্যা মামলা হয়। মামলাটি করেন নিহত ব্যক্তির বাবা আওলাদ হোসেন।
গত বছরের ২ অক্টোবর নজরুলকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর বিভিন্ন মামলায় তাঁর রিমান্ড হয়েছে। তিনি কাশিমপুর কারাগারে আছেন।