ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ঘোষণা দিয়েছেন, তার সরকার গাজা উপত্যকার পুরো নিয়ন্ত্রণ নিতে চায় এবং এর জন্য একটি পাঁচ দফা পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে চলমান যুদ্ধের পর এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের ঘোষণা নতুন করে উত্তেজনার সৃষ্টি করেছে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে।

নেতানিয়াহু বুধবার (৭ আগস্ট) রাতে এক টেলিভিশন ভাষণে বলেন, "গাজা যেন আর কখনও আমাদের নাগরিকদের জন্য হুমকি না হয়, তা নিশ্চিত করতেই আমাদের এ পরিকল্পনা। আমরা চূড়ান্ত বিজয়ের পথে এগিয়ে যাচ্ছি।”

নেতানিয়াহুর পাঁচ দফা পরিকল্পনার মধ্যে রয়েছে-

আরো পড়ুন:

ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে ‘ফিলিস্তিনের পেলে’ নিহত

গাজা পুরোপুরি দখল করা হবে কি না, সিদ্ধান্ত ইসরায়েলের: ট্রাম্প

গাজার সামরিক ক্ষমতা সম্পূর্ণ ধ্বংস
হামাস ও অন্যান্য প্রতিরোধ গোষ্ঠীর অস্ত্রাগার, টানেল নেটওয়ার্ক ও রকেট উৎক্ষেপণ ব্যবস্থাপনা ধ্বংস করে দেওয়া হবে।

গাজা সীমান্তে স্থায়ী নিরাপত্তা করিডোর
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী গাজার আশপাশে দীর্ঘমেয়াদি সামরিক উপস্থিতি নিশ্চিত করবে, যাতে সীমান্ত অতিক্রম করে কোনো হামলা না হয়।

নতুন প্রশাসনিক কাঠামো গঠন
গাজায় হামাসের পরিবর্তে ইসরায়েলের সমর্থিত প্রশাসনিক গোষ্ঠী প্রতিষ্ঠা করা হবে, যারা ‘শান্তিপূর্ণ শাসন’ নিশ্চিত করবে।

আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি ও সহায়তা চাওয়া
এই পরিকল্পনায় আন্তর্জাতিক মহলের সমর্থন আদায়ে কূটনৈতিক তৎপরতা বাড়ানো হবে, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও আরব মিত্রদের সঙ্গে।

ফিলিস্তিনি নাগরিকদের জন্য মানবিক সহায়তা
গাজার সাধারণ জনগণের ‘মানবিক দুর্দশা লাঘবে’ খাদ্য, ওষুধ ও পুনর্বাসনের উদ্যোগ নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে।

নেতানিয়াহুর ঘোষণায় উদ্বেগ
নেতানিয়াহুর এ পরিকল্পনার কঠোর সমালোচনা করেছে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ। তারা একে সরাসরি দখলদারিত্ব ও আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন হিসেবে আখ্যায়িত করেছে। ফাতাহ্‌ মুখপাত্র নাবিল আবু রুদাইনা বলেন, “এটি নতুন এক ধরনের দখলদারিত্ব, যা শুধু সংঘাত আরও বাড়াবে।”

জাতিসংঘ ও ইউরোপীয় ইউনিয়নও নেতানিয়াহুর ঘোষণায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। মানবাধিকার সংস্থাগুলো গাজায় বেসামরিক হতাহতের সংখ্যা বাড়ার আশঙ্কা করছে।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ইসরায়েলের এই কৌশল মূলত আঞ্চলিক নিরাপত্তার অজুহাতে পুরো গাজার নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার এক প্রচ্ছন্ন চেষ্টা। তবে এই পরিকল্পনার বাস্তবায়ন সহজ হবে না, কারণ এতে বহু আন্তর্জাতিক বাধা, স্থানীয় প্রতিরোধ এবং মানবিক সংকট সৃষ্টি হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে।

ঢাকা/রাসেল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইসর য় ল ইসর য় ল

এছাড়াও পড়ুন:

বিএনপির মনোনয়ন না পেয়ে রিটা রহমান বললেন, ‘চাঁদাবাজের পক্ষে কীভাবে কাজ করব’

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রংপুর-৩ (সদর-মহানগর) আসনে বিএনপির মনোনয়ন না পেয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন রিটা রহমান। তিনি বিএনপির প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য মশিউর রহমান যাদু মিয়ার মেয়ে। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ও ২০১৯ সালে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের মৃত্যুর পর উপনির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন তিনি।

রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে গত সোমবার বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে ২৩৭টি আসনে দলীয় প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এতে রংপুর–৩ আসনে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সামসুজ্জামান সামুর নাম ঘোষণা করা হয়। ওই আসনে দলীয় মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন মহানগর বিএনপির সদস্য রিটা রহমান। এ নিয়ে আজ বুধবার বেলা সাড়ে তিনটার দিকে নগরের রাধাবল্লভে নিজ বাড়িতে সংবাদ সম্মেলন করেন তিনি।

রিটা রহমানের অভিযোগ, তাঁর চেয়ে যোগ্য কাউকে মনোনয়ন দিলে তিনি মেনে নিতেন। কিন্তু শহরের মানুষ যাঁকে ‘চাঁদাবাজ’ হিসেবে চেনেন, তাঁকে মনোনয়ন দেওয়ায় তিনি মেনে নিতে পারছেন না। তবে সংবাদ সম্মেলনে তিনি মনোনয়ন পাওয়া নেতার নাম উল্লেখ করেননি।

সংবাদ সম্মেলনে রিটা রহমান বলেন, ‘আমি যদি দেখি কোনো চাঁদাবাজ, যাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে এবং যাঁকে শহরের লোকেরা চাঁদাবাজ, দখলদার ও জমির দখলদার কী সব বলে। আমার কাছে বহুত ডকুমেন্টস আছে। এ রকম কাউকে যদি মনোনয়ন দেওয়া হয়, তাহলে আমি তাঁর পক্ষে কীভাবে কাজ করব?’ তিনি বলেন, ‘আমি হতভম্ব হয়েছি। আমার চেয়ে শিক্ষিত ও যোগ্য প্রার্থী দিলে আমার কোনো আপত্তি ছিল না। কিন্তু এমন একজন দলের প্রার্থী হলেন, যিনি নির্বাচনে একবার অংশগ্রহণ করেছেন নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলায়; কিন্তু জামানত ছিল না।’

বিএনপি প্রতিষ্ঠায় বাবার অবদানের কথা উল্লেখ করে রিটা রহমান বলেন, তাঁর বাবা মশিউর রহমান যাদু মিয়া বিএনপির সহপ্রতিষ্ঠাতা ছিলেন। বিএনপির একজন প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে তাঁর বাবার যে অবদান রয়েছে, এ ক্ষেত্রে তাঁর চেয়ে যোগ্য কাউকে মনোনয়ন না দিলে এটা অন্যায় হবে। রংপুর-৩ আসনে মনোনয়নের ক্ষেত্রে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করার অনুরোধ করেন তিনি।

এর আগে দুপুরে রিটা রহমানকে মনোনয়ন দেওয়ার দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেন তাঁর অনুসারী নেতা–কর্মীরা। নগরের টাউন হল চত্বর থেকে মিছিলটি শুরু হয়ে পুলিশ লাইনস, সুরভী উদ্যান মোড় প্রদক্ষিণ শেষে টাউন হল চত্বরে এসে শেষ হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বিএনপির মনোনয়ন না পেয়ে রিটা রহমান বললেন, ‘চাঁদাবাজের পক্ষে কীভাবে কাজ করব’