গ্রেপ্তার করবে পুলিশ, পরে আদালত যেখানে বলবেন আসামি সেখানে থাকবেন: তাজুল
Published: 13th, October 2025 GMT
কোন জায়গাকে কারাগার ঘোষণা করা হচ্ছে, সেটা তাঁদের বিবেচ্য বিষয় নয় বলে উল্লেখ করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। একই সঙ্গে তিনি বলেছেন, আসামিকে গ্রেপ্তার করার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আদালতে আনতে হবে। তারপর আদালত যেখানে আসামিকে রাখতে বলবেন, আসামি সেখানে থাকবেন।
আজ সোমবার বিকেলে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে এক ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তাজুল ইসলাম এ কথা বলেন। ঢাকা সেনানিবাসের একটি ভবনকে সাময়িকভাবে কারাগার ঘোষণা করে গতকাল রোববার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। চিফ প্রসিকিউটরের কাছে এ বিষয়ে জানতে চেয়েছিলেন সাংবাদিকেরা।
এ সময় চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম বলেন, ‘আমি এখন পর্যন্ত জানি না যে আদৌ কোনো সাবজেল ঘোষণা হয়েছে কি না। কোনো ডকুমেন্ট আমার হাতে নেই, যেহেতু আপনারা বলছেন। যদি সরকার কোনো নির্দিষ্ট জায়গাকে সাবজেল ডিক্লেয়ার (উপকারাগার ঘোষণা) করে, সরকারের সেই ক্ষমতা আছে। কোন জায়গাটাকে তারা জেল ঘোষণা করবেন, প্রিজন অথরিটির আওতায় নিয়ে আসবেন, সেটা সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আওতাভুক্ত। সুতরাং এটা আমাদের কোনো কনসার্ন হওয়ার কোনো বিষয় নয়।’
সরাসরি কাউকে জেলে নেওয়ার বিধান নেই উল্লেখ করে তাজুল ইসলাম বলেন, ‘আইন হচ্ছে আসামিকে গ্রেপ্তার করে আদালতে আনতে হবে। আদালতে আনার পর আদালত যদি ফারদার অর্ডার (পরবর্তী আদেশ) দিয়ে বলেন—কারাগারে পাঠান, তখন কারাগার বলতে সেটা কেন্দ্রীয় কারাগারও হতে পারে, সেটা জাতীয় সংসদ ভবনের মধ্যেও হতে পারে, এমপি হোস্টেল হতে পারে বা অন্য কোনো জায়গাকেও যদি সরকার কারাগার ঘোষণা করেন, সে জায়গায় পাঠানো যেতে পারে। কিন্তু সেটা জেল বা কারাগার হিসেবে গণ্য হবে।’
সুতরাং কোন জায়গাকে কারাগার ঘোষণা করা হচ্ছে, তা ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশনের (রাষ্ট্রপক্ষ) বা তদন্ত সংস্থার বিবেচ্য বিষয় নয় বলে উল্লেখ করেন চিফ প্রসিকিউটর। তিনি বলেন, ‘আমাদের বিবেচ্য বিষয় হচ্ছে, আইন অনুযায়ী কাজটা করতে হবে। আসামিকে গ্রেপ্তার যদি করা হয়, করা মাত্রই উইদিন টোয়েন্টি ফোর আওয়ার্স (২৪ ঘণ্টার মধ্যে) তাঁকে আদালতে আনতে হবে। এটা হচ্ছে মোদ্দাকথা। সেটা সংবিধানে যেমন আছে, আইসিটির আইনে আছে, সিআরপিসিতে (ফৌজদারি কার্যবিধি) আছে।’
‘সেনাবাহিনীর গ্রেপ্তারের ক্ষমতা নেই’
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মানেই পুলিশ উল্লেখ করে ব্রিফিংয়ে তাজুল ইসলাম বলেন, আর্মির (সেনাবাহিনী) হাতে গ্রেপ্তারের ক্ষমতা নেই।
বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে গুম-নির্যাতনের মানবতাবিরোধী অপরাধের দুটি মামলা এবং জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় রাজধানীর রামপুরা ও বনশ্রী এলাকায় সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের একটি মামলায় ২৫ জন সাবেক ও বর্তমান সেনা কর্মকর্তাকে আসামি করা হয়েছে। এর মধ্যে ১৫ জনকে সেনা হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।
ওই সেনা কর্মকর্তাদের গ্রেপ্তার প্রসঙ্গে চিফ প্রসিকিউটর বলেন, এই আদেশ (গ্রেপ্তারি পরোয়ানা) পালনের ব্যাপারে সেনাবাহিনীর বিভিন্ন পর্যায়ের অফিসকে অবহিত করা হয়েছে। তারা কিন্তু গ্রেপ্তার করবে না। তারা অবহিত থাকার অর্থ হচ্ছে যখন পুলিশ এই গ্রেপ্তারি পরোয়ানা তামিল করতে যাবে, তারা অবহিত থাকলে এই পরোয়ানা তামিল করতে তাদের সাহায্য করবে। সুতরাং অ্যারেস্টিংয়ের পাওয়ার (গ্রেপ্তারের ক্ষমতা) কিন্তু আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর, অন্য কারও নয়।
তাহলে হেফাজতে থাকার ব্যাখ্যা কী, এ প্রশ্নের জবাবে তাজুল ইসলাম বলেন, যখনই গ্রেপ্তার দেখানো হবে, গ্রেপ্তার করা হবে, তখন থেকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অবশ্যই তাঁকে আদালতে আনতে হবে।
আরও পড়ুনঢাকা সেনানিবাসের একটি ভবনকে সাময়িকভাবে কারাগার ঘোষণা ৩ ঘণ্টা আগে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: গ র প ত র কর আস ম ক ক ষমত অপর ধ সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
লালনের আখড়ায় মাদক সেবন বন্ধের দাবিতে মানববন্ধন
কুষ্টিয়ায় বাউল ফকির লালন শাহের আখড়া বাড়িতে মাদক সেবন ও ক্রয়-বিক্রয় বন্ধের দাবিতে মানববন্ধন হয়েছে।
সোমবার (১৩ অক্টোবর) বাদ আছর বাংলাদেশ খেলাফত যুব মজলিস কুষ্টিয়া জেলা শাখার আয়োজনে কুষ্টিয়া পাবলিক লাইব্রেরির সামনে মানববন্ধন করা হয়। এতে জেলার বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতাকর্মীসহ সর্বস্তরের মানুষ অংশ নেয়।
আরো পড়ুন:
ক্লাস থেকে ডেকে নিয়ে শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন করানোর অভিযোগ
জাবিতে মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত সেনা সদস্যদের বিচার দাবি
বক্তারা বলেন, ‘‘মাদক সমাজ ধ্বংসের নীরব ঘাতক। এটি পরিবারে অশান্তি আনে, তরুণ প্রজন্মের স্বপ্নভঙ্গ করে। অপরাধ, ধর্ষণ, হত্যা ও আত্মহত্যার মূল কারণ হয়ে দাঁড়ায়। মাদক মানুষকে আল্লাহর সন্তুষ্টি থেকে দূরে সরিয়ে নরকের পথে ঠেলে দেয়। বিগত কয়েক বছর ধরে লালন আখড়ায় মেলার সময় প্রশাসনের উপস্থিতিতে প্রকাশ্যে মাদক সেবনের মহোৎসব চলে আসছে। এতে যুবসমাজ বিপথগামী হচ্ছে এবং চুরি, ছিনতাই, ডাকাতি এমনকি খুনের মতো অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে।’’
বক্তারা আরো বলেন, ‘‘আগামী ১৭, ১৮ ও ১৯ অক্টোবর লালন তিরোধান দিবস উপলক্ষে অনুষ্ঠানের সময় যদি লালন আখড়ায় প্রকাশ্যে মাদক সেবন হয়, তবে আমরা নীরব থাকব না। তখন কুষ্টিয়ার সর্বস্তরের জনগণ মাদকের বিরুদ্ধে রাস্তায় নামবে।’’
মানববন্ধনে বাংলাদেশ খেলাফত যুব মজলিস কুষ্টিয়া জেলা শাখার সভাপতি মাওলানা শারাফাত হুসাইনের সভাপতিত্ব বক্তব্য রাখেন আল-খিদমাহ অর্গানাইজেশন কুষ্টিয়ার সভাপতি হৃদয় হাসান, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ কুষ্টিয়া জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক ফরিদ উদ্দিন আবরার, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস কুষ্টিয়া জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মাওলানা আরিফুজ্জামান এবং জেলা সভাপতি আবদুল লতিফ খান প্রমুখ।
ঢাকা/কাঞ্চন/বকুল