ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের (ডব্লিউইএফ) বার্ষিক সম্মেলনে যোগ দিতে সুইজারল্যান্ড যাচ্ছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। আজ সোমবার রাত ১টায় তিনি ঢাকা ছাড়বেন। চার দিনের সফর শেষে ২৫ জানুয়ারি তিনি দেশে ফিরবেন। এ সময় চারটি দেশের রাষ্ট্রপ্রধান ছাড়াও সাইডলাইনে আরও গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সঙ্গে তাঁর বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। 

গতকাল রোববার সন্ধ্যায় রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান প্রধান উপদেষ্টার উপপ্রেস সচিব আজাদ মজুমদার। 

তিনি জানান, সুইজারল্যান্ডর দাভোসে ২০-২৪ জানুয়ারি ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের বার্ষিক সম্মেলন হবে। এতে জার্মানি, ইংল্যান্ড, বেলজিয়াম ও থাইল্যান্ডের রাষ্ট্রপ্রধানের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। এবার বাংলাদেশ বিষয়ে একটি ডায়ালগ অনুষ্ঠিত হবে। এ দেশগুলোকে বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানানো হবে। 

আজাদ মজুমদার বলেন, প্রধান উপদেষ্টার সফরসঙ্গীর তালিকা ছোট হবে। তাঁর নিরাপত্তার জন্য যাদের দরকার, তারাই মূলত যাবেন। এর বাইরে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী তাঁর সঙ্গে যোগ দেবেন। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি দল যাবে নিজেদের খরচে। 

বাসস জানায়, গুম-সংক্রান্ত তদন্ত কমিশনের সদস্যরা গতকাল রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক করেছেন। তারা কয়েকটি গুমের ঘটনার নৃশংস বর্ণনা দেন। এমনকি ছয় বছরের শিশুও গুমের শিকার হয়েছে বলে কমিশনের তদন্তে উঠে এসেছে। প্রধান উপদেষ্টাকে গুমের ঘটনায় তদন্তের অগ্রগতি সম্পর্কে জানিয়ে আয়নাঘর নামে পরিচিত ‘জয়েন্ট ইন্টারোগেশন সেল’ পরিদর্শনের অনুরোধ জানান কমিশনের সদস্যরা। 

কমিশনের আহ্বানে সাড়া দিয়ে ড.

মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, আপনাদের তদন্তে যে ঘটনাগুলো উঠে এসেছে, তা গা শিউরে ওঠার মতো। আমি শিগগির আয়নাঘর পরিদর্শনে যাব। 

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ার হাইকমিশনারের বিদায়ী সাক্ষাৎ 

বাংলাদেশে নিযুক্ত অস্ট্রেলিয়ার ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার নার্ডিয়া সিম্পসন গতকাল ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বিদায়ী সাক্ষাৎ করেছেন। এ সময় রাষ্ট্রদূত সিম্পসন গত জুলাই ও আগস্ট মাসের অবিস্মরণীয় ঘটনার স্মৃতিচারণ করেন এবং দুই দেশের পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন। অধ্যাপক ইউনূস রাষ্ট্রদূতকে চলতি বছরের আগস্টে জুলাই বিপ্লবের প্রথম বার্ষিকীর অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার আমন্ত্রণ জানান। 

আর্জেন্টিনার সঙ্গে আবেগপূর্ণ সম্পর্ককে বাণিজ্য সহযোগিতায় রূপান্তরের আহ্বান
ফুটবল ঘিরে বাংলাদেশ ও আর্জেন্টিনার মধ্যে যে আবেগপূর্ণ সম্পর্ক, তা বাণিজ্য ও দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা সম্প্রসারণে কাজে লাগাতে আর্জেন্টিনার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা। গতকাল বাংলাদেশে নিযুক্ত আর্জেন্টিনার রাষ্ট্রদূত মার্সেলো সেসা রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি এ আহ্বান জানান। 

রাষ্ট্রদূত সেসা প্রধান উপদেষ্টাকে জানান, আর্জেন্টিনা ও বাংলাদেশের মধ্যে এখনও সহযোগিতার অনেক ক্ষেত্র অনাবিষ্কৃত রয়েছে, যা উভয় দেশের জন্য বিপুল সম্ভাবনায়। 

সাক্ষাৎকালে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের এসডিজিবিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ উপস্থিত ছিলেন। 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আর জ ন ট ন র তদন ত ইউন স গতক ল

এছাড়াও পড়ুন:

সংবিধান ও আইন অনুযায়ী সনদ বাস্তবায়নে অঙ্গীকারাবদ্ধ বিএন‌পি 

জুলাই জাতীয় সনদের যে সব বিষয় ঐকমত্য হয়েছে, তার আইনানুগ বাস্তবায়নে এবং যথাসময়ে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানে আন্তরিক ও কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি আহ্বান জা‌নি‌য়ে‌ছে বাংলা‌দেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএন‌পি।

দল‌টির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সভাপতিত্বে ভার্চুয়া‌লি অংশ নেওয়া বিএন‌পির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সভায় এ আহ্বান জানা‌নো হ‌য়ে‌ছে। 

আরো পড়ুন:

ঐকমত্য কমিশন কী হলো না হলো কিছু আসে যায় না: আমীর খসরু

উপদেষ্টারা পক্ষপাতদুষ্ট হয়ে কাজ করছেন: ফখরুল

বৃহস্প‌তিবার (৬ নভেম্বর) রা‌তে বিএনপির মহাস‌চিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর স্বাক্ষ‌রিত সংবাদ বিজ্ঞ‌প্তি‌তে এ তথ্য জানা‌নো হ‌য়ে‌ছে। 

সভায় আলোচনাক্রমে নিম্ন লিখিত প্রস্তাব গৃহিত হয়-
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনে দীর্ঘ ও বিস্তারিত আলোচনা শেষে কতিপয় বিষয়ে নোট অব ডিসেন্টসহ যে সকল বিষয়ে জাতীয় ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এবং গত ১৭ অক্টোবর জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় ঐতিহাসিক আনুষ্ঠানিকতার মাধ্যমে স্বাক্ষরিত হয়েছে, আমরা তার অংশীদার হিসাবে সনদে বর্ণিত সকল বিষয়কে ধারণ করি এবং দেশের সংবিধান ও প্রচলিত আইন অনুযায়ী তা বাস্তবায়নে অঙ্গীকারাবদ্ধ।

সর্বসম্মতভাবে গৃহিত জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নে নতুন প্রশ্ন কিংবা সংকট সৃষ্টির সকল অপপ্রয়াসের বিরুদ্ধে গণতন্ত্রকামী জনগণের শক্তিকে ধারণ করে বিএনপি গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠায় দীর্ঘ ১৬ বছরের অবিরাম লড়াই ও ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে শহীদ ও আহতদের সীমাহীন ত্যাগের প্রতি শ্রদ্ধা জানাবে। 

বিএনপি দৃঢ়ভাবে মনে করে যে, দীর্ঘ আলোচনায় উপনীত ঐকমত্যকে বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট সকল রাজনৈতিক দল ঐক্যবদ্ধ থাকবে এবং কোনো মতেই নিত্য নতুন প্রশ্ন উত্থাপন কিংবা সংকট সৃষ্ট করে গণতন্ত্র পুণঃপ্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আয়োজিতব্য নির্বচন অনুষ্ঠানে বাধা সৃষ্টি করবে না।

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ