এক সপ্তাহের মধ্যেই দেশের তেলের বাজারে অস্থিরতা কেটে যাবে: বাণিজ্য উপদেষ্টা
Published: 10th, February 2025 GMT
এক সপ্তাহের মধ্যেই দেশের তেলের বাজারের অস্থিরতা কেটে যাবে বলে মন্তব্য করেছেন বাণিজ্য, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। তিনি জানান, সিন্ডিকেট সরকারের চেয়ে বড় নয়, সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সরকার কাজ করছে।
আজ সোমবার দুপুরে খুলনায় বেসরকারি খাতে ইজারা দেওয়া দৌলতপুর জুট মিল পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন উপদেষ্টা।
শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, ‘চট্টগ্রাম বন্দর থেকে শুরু করে নারায়ণগঞ্জ, খাতুনগঞ্জ সব বাজারব্যবস্থায় মজুত এবং সরবরাহ পরিস্থিতি আমরা পুরোপুরি বিশ্লেষণ করছি এবং যে ব্যবস্থাগুলো নিচ্ছি, তাতে আমরা আশা করি ভোজ্যতেলের বাজারে এই মুহূর্তে যে কিছুটা অস্থিরতা, তা সপ্তাহখানেকের মধ্যে ঠিক হয়ে যাবে।’
সরকারের মালিকানাধীন যেসব পাটকল ও টেক্সটাইল মিল আছে, সেগুলো ধীরের ধীরে ব্যক্তি খাতে ছেড়ে দেওয়ার জন্য সরকার আগ্রহী জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, ‘সফল উদ্যোক্তা ও বিনিয়োগের মাধ্যমে এটি সম্ভব হবে। আমরা আশা করি এতে দেশে আবারও কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে এবং বাড়বে।’
পাটকল এবং বিজেএমসি নিয়ে সরকারের দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার বিষয়ে জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, এটি ব্যক্তিমালিকানায় ছেড়ে দিতে হবে। সরকারি ব্যবস্থাপনায় এটা দীর্ঘ মেয়াদে ফলপ্রসূ হয়নি। পুঞ্জীভূত বহু হাজার কোটি টাকার যে লোকসান, তা সরকারি ব্যবস্থাপনায় সম্ভব নয়। এখানে যেমন দেখছি, জুট ও জুতা একসঙ্গে মিলিয়ে তাঁরা একটি ব্যবসায়িক পরিকল্পনার কাজ করছে। এ ধরনের উদ্ভাবনী কর্মকাণ্ড সরকারি খাতে সম্ভব নয়। এর পরিপ্রেক্ষিতেই এটি ব্যক্তি খাতে পরিচালনা করতে হবে।
অন্য এক প্রশ্নের জবাবে শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, ‘বাংলাদেশে যে পরিমাণ পাট উৎপন্ন হয় এবং দেশে যে পরিমাণ জুট মিল আছে, এর জন্য যে পরিমাণ পাটের দরকার, সব জুট মিল যদি হান্ড্রেড পারসেন্ট ক্যাপাসিটিতে চলে, তাহলে বাংলাদেশে জুটের ফলন তিন গুণ বাড়াতে হবে। এ মুহূর্তে বাংলাদেশে প্রায় ১২ লাখ টন পাট উৎপাদিত হয়, সব মিলিয়ে যদি পূর্ণোদ্যমে চলে, তাহলে প্রায় ৪০ লাখ টন পাট লাগবে। সারা দুনিয়াতে পাট উৎপাদন হয় ২৫ লাখ টন। শুধু পাট দিয়ে এই শিল্পগুলো চালানো বাস্তব নয়। এ জন্য উদ্ভাবনী উদ্যোগ দরকার। আগে ইজারার যে শর্ত ছিল, সেখানে শুধু জুটনির্ভর প্রতিষ্ঠানের শর্ত ছিল। আমরা শর্তগুলো আবার নতুন করে রিলাক্স করছি, এর ফলে বিনিয়োগে আগ্রহ দেখা যাচ্ছে।’
উপদেষ্টার এ পরিদর্শনের সময় খুলনার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম ও দৌলতপুর জুট মিলের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: উপদ ষ ট ব যবস থ সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
ঢাকায় অটোমোবাইল ও কৃষি যন্ত্রপাতির প্রদর্শনী শুরু হচ্ছে শনিবার
ঢাকায় দুই দিনব্যাপী অটোমোবাইল ও কৃষি যন্ত্রপাতির প্রদর্শনী শুরু হচ্ছে আগামী শনিবার। এতে অটোমোবাইল, কৃষি যন্ত্রপাতিসহ হালকা প্রকৌশল খাতের ২৬টি স্টল থাকবে। পাশাপাশি শিল্পের সহায়ক প্রতিষ্ঠানের স্টল থাকবে আরও ১২টি। প্রদর্শনীর উদ্বোধন করবেন শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান।
বাংলাদেশ অটোমোবাইলস অ্যাসেম্বলার্স অ্যান্ড ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন ও অ্যাগ্রিকালচার মেশিনারি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের সহযোগিতায় এই প্রদর্শনীর আয়োজন করছে বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজ (বিসিআই)। ঢাকার তেজগাঁও শিল্প এলাকায় এডিসন প্রাইম ভবনের ছাদে এই প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হবে। এই ভবনেই বিসিআইয়ের কার্যালয় অবস্থিত।
আজ বৃহস্পতিবার বিসিআই কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে দুই দিনব্যাপী এই প্রদর্শনী নিয়ে বিস্তারিত জানান চেম্বারটির সভাপতি আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী। আরও উপস্থিত ছিলেন অ্যাগ্রিকালচার মেশিনারি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের সভাপতি আলিমুল আহসান চৌধুরী, বিসিআইয়ের পরিচালক মো. শাহেদ আলম, এস এম শাহ আলম, জিয়া হায়দার প্রমুখ।
বিসিআইয়ের সভাপতি বলেন, হালকা প্রকৌশল খাতে বাংলাদেশে বর্তমানে ছোটবড় প্রায় ৫০ হাজার প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এই খাতে কাজ করেন ১০ লাখ মানুষ। হালকা প্রকৌশল খাতে স্থানীয় বাজার ১২ বিলিয়ন ডলারের হলেও দেশীয় উৎপাদকেরা অর্ধেক পূরণ করতে পারছেন। তা ছাড়া হালকা প্রকৌশল খাতের বৈশ্বিক বাজারের আকার প্রায় ৮ ট্রিলিয়ন ডলার। তিনি আরও বলেন, তৈরি পোশাক খাত আর বেশি মূল্য সংযোজন করতে পারবে না। ফলে আমাদের অর্থনীতিকে টেকসই করতে হলে আমাদের অন্য খাতে যেতে হবে। সে ক্ষেত্রে হালকা প্রকৌশল খাত পারে বড় সম্ভাবনার।
অ্যাগ্রিকালচার মেশিনারি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের সভাপতি আলিমুল আহসান চৌধুরী বলেন, প্রতিবছর কৃষিজমি কমছে। কৃষকের বয়স বাড়ছে, তার কারণ তরুণেরা খুব কম কৃষিকাজে আসছেন। বিশ্বের অনেক দেশেই মোট জনগোষ্ঠীর ১০ শতাংশের কম কৃষিকাজে নিয়োজিত। ১০ শতাংশ মানুষ বাকি ৯০ শতাংশের জন্য খাদ্য জোগান দিচ্ছে। সে কারণে যন্ত্রের ব্যবহার বাড়ছে। বাংলাদেশেও কৃষিকাজে যন্ত্রের ব্যবহার বাড়ছে। তবে বড় অংশই আমদানি করতে হচ্ছে।
আলিমুল আহসান চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশে ১২০০ থেকে ১৫০০ কোটি টাকার কৃষি যন্ত্রপাতির বাজার আছে। তার মধ্যে দেশীয় কোম্পানিগুলো সরবরাহ করছে মাত্র ৪০০ থেকে ৪৫০ কোটি টাকার যন্ত্রাংশ। নীতিসহায়তা পেলে দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর সক্ষমতা বাড়বে বলে মন্তব্য করেন তিনি।