সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন স্থানে অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে প্রতিনিয়ত ধর্ষণ, দলবদ্ধ ধর্ষণ, যৌন সহিংসতার ঘটনা সামনে আসছে। এ ধরনের ঘটনা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে। অস্থিতিশীল অবস্থার সবচেয়ে বড় ভুক্তভোগী নারী ও শিশু। সহিংসতার এ চিত্র দেশের অগ্রযাত্রার পথে প্রতিবন্ধকতার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। নারী এবং শিশুর প্রতি সহিংসতার ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়েছেন অধিকারকর্মীরা। সেই সঙ্গে তারা নিরাপত্তার ক্ষেত্রে অতিরিক্ত গুরুত্ব দেওয়ারও দাবি জানান। গ্রন্থনা শাহেরীন আরাফাত
নিরাপত্তাহীনতা বাড়লে অন্য কাজ বিঘ্নিত হবে
খুশী কবির
সমন্বয়ক, নিজেরা করি
নারীর ওপর সহিংসতা আগে থেকেই চলে আসছে– পারিবারিক ক্ষেত্রেও, সমাজের অন্য ক্ষেত্রেও। সম্প্রতি এর মাত্রা বেড়েছে। এতে কিছু প্রশ্ন উঠেছে– বিভিন্ন ক্ষেত্রে সরকারের নিয়ন্ত্রণ বা নিরাপত্তার জন্য যেসব ব্যবস্থা নেওয়া দরকার, তা যথেষ্ট কিনা। একসময় বাসে অনেক ছিনতাই হতো। তখন রাতে প্রতিটি বাসে একজন সশস্ত্র গার্ড দেওয়া হতো। তখন বাসের মালিক বা চালককে শক্তভাবে নির্দেশনা দেওয়া হতো– বাস রাস্তার মাঝে দাঁড়ানো যাবে না, যাত্রী তোলা যাবে না। এর ফলে ছিনতাইয়ের ঘটনা অনেক কমে আসে। এখন এসব নির্দেশনা থাকে কিনা জানি না। এসব বিষয়ে পদক্ষেপ না নিলে বাসে যে ডাকাতি ও যৌন নির্যাতনের ঘটনা সামনে এসেছে, যা আমাদের হতভম্ব করেছে, এমন ঘটনা ঘটতেই থাকবে।
ছাত্রীহলে পুরুষরা ঢুকে ভাঙচুর করার সময় যে ছাত্রীরা জুলাই গণঅভ্যুত্থানে যুক্ত ছিলেন, তারা হামলাকারীদের প্রতিহত করতে চাইলেন; সেই ছাত্রীদেরই কর্তৃপক্ষ বহিষ্কার করল। তাহলে প্রশ্ন উঠবেই– নারীর নিরাপত্তাহীনতা আরও বাড়ছে কিনা। আবার মাইকে নারীর বিরুদ্ধে যখন অবমাননাকর বক্তব্য দেওয়া হচ্ছে, তখনও আমরা দেখছি, তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। তখন প্রশ্ন উঠছে– তাহলে কারা নিয়ন্ত্রণে আছে; আর কে নিয়ন্ত্রণ করছে।
এখন রাষ্ট্রের দায়িত্বে একটি অন্তর্বর্তী সরকার আছে। এই সরকারের কাছ থেকে আমরা আশা করি, নিরপেক্ষভাবে দেশের সব মানুষ; বিশেষ করে নারী ও পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে রক্ষা করার জন্য তারা মূল ভূমিকা পালন করবে, যেন এ ধরনের ঘটনা আর না ঘটে। আমরা দুটি জিনিস চাই– সর্বক্ষেত্রে জীবন ও চলাফেরার নিরাপত্তা এবং দ্রব্যমূল্য যেন সহনীয় পর্যায়ে থাকে। নিরাপত্তাহীনতা যদি বাড়তে থাকে, তাহলে বাকি সব কাজই বিঘ্নিত হবে। তা আমাদের জন্য কোনোভাবেই কাম্য হতে পারে না।
সরকারকে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে
জেড আই খান পান্না
চেয়ারপারসন, আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)
গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ সূত্রে জানা যাচ্ছে, গাজীপুরে দুই নারীকে রাস্তায় ফেলে পেটানো ও চুল কেটে দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনাসহ নারীর প্রতি সংঘটিত সব ধরনের সহিংসতার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। বর্তমান সময়ে নারীর প্রতি সহিংসতা বাড়ছে উদ্বেগজনক হারে। ধর্ষণ, দলবদ্ধ ধর্ষণ, খুন, শারীরিক নির্যাতন ও নিপীড়ন, অপহরণ অনেকটাই প্রকট আকার ধারণ করেছে। প্রতিদিনই কোথাও না কোথাও এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার শিকার হতে দেখা যাচ্ছে। দেশের নারীসমাজ একটি অস্থিতিশীল পরিবেশের মধ্য দিয়ে দিন পার করছে। এর ফল নারীসমাজের ওপর ব্যাপকভাবে বর্তাচ্ছে, এটি কোনোভাবেই কাম্য নয়। নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উত্তরণ ঘটিয়ে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য কার্যকর ভূমিকা নেওয়ার সদিচ্ছার বিষয়টি দৃশ্যমান হতে হবে। নারীর প্রতি সংকটজনক এ পরিস্থিতি সচেতন নাগরিকদের হতাশ ও উদ্বিগ্ন করে তুলছে। পরিস্থিতি উত্তরণে সরকারকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করে নারীর জীবনকে স্থিতিশীল ও নিরাপদ করে গড়ে তোলার জন্য সরকারের পদক্ষেপ যথেষ্ট বলে দৃশ্যমান নয়।
সামাজিক মাধ্যমেও নারীর প্রতি ঘৃণা ও সহিংস আচরণ প্রকট আকারে লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এ ধরনের ঘৃণা ছড়ানো বন্ধে পদক্ষেপ নিতে হবে। কেননা, মাধ্যম যা-ই হোক না কেন, নারীর প্রতি সহিংসতা অব্যাহত থাকতে পারে না। নির্যাতন শুধু সংখ্যাতেই বাড়ছে না, নির্যাতনের ধরনের পরিবর্তনও লক্ষ্য করা যাচ্ছে, যা সমাজে ভীতি ও উৎকণ্ঠা ছড়াচ্ছে।
নারীর প্রতি সহিংসতার বিষয়টি একই সঙ্গে সমাজ ও রাষ্ট্রের দায়বদ্ধতার বিষয়। কাজেই সহিংসতা বন্ধের জন্য যথাযথ দৃশ্যমান পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে আহ্বান জানাচ্ছি। পাশাপাশি সংঘটিত সব ধরনের সহিংসতায় প্রচলিত আইনে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।
যৌন নিপীড়কদের অব্যাহতি বন্ধ করতে হবে
শাহীন আনাম
নির্বাহী পরিচালক
মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন
এত জোরালো নারী আন্দোলন এবং কয়েক দশক ধরে সক্রিয়ভাবে কাজ করার পরেও নারী ও কন্যাশিশুর প্রতি সহিংসতা অব্যাহত থাকা সত্যিই খুব দুর্ভাগ্যজনক।
বৈষম্যের বিরুদ্ধে এত বড় একটি গণ-আন্দোলন হলেও নারী ও কন্যাশিশুর নিরাপত্তা, সম্মান ও নির্বিঘ্নে চলাফেরা সেই আগের মতোই অনিরাপদ ও সহিংসময় থেকে গেছে। মহামারি, রাজনৈতিক অস্থিরতা অথবা জলবায়ু পরিবর্তনের মতো সংকটকালে নারীর নিরাপত্তা আরও বেশি হুমকির মুখে পড়ে যায়।
যৌন সহিংসতা থেকে নারী ও শিশুর নিরাপত্তা নিশ্চিতে এবং জড়িতদের কঠোর শাস্তির দাবিতে ক’দিন ধরে সারাদেশের শিক্ষার্থীরা রাস্তায় নেমে এসেছে। আইনের যথাযথ প্রয়োগ এবং অপরাধীদের শাস্তিসহ তারা ১৩ দফা দাবি পেশ করেছে।
নারী অধিকারকর্মীদের পক্ষ থেকে দাবিগুলোর একটি হলো বিচারব্যবস্থা নারীবান্ধব করা। অর্থাৎ বিচার বিভাগ এমন একটি পরিবেশ তৈরি করবে, যেখানে নারী ও তার পরিবারের সদস্যরা নির্বিঘ্নে বিচার চাইতে পারবে। আমাদের থানাগুলোও নারীবান্ধব নয়। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ভুক্তভোগীরা অসম্মান ও লাঞ্ছনার কারণে ধর্ষণের মামলা করতে পারেন না।
আমাদের প্রচলিত সমাজব্যবস্থায় অপরাধীর বদলে ভুক্তভোগীকে দোষারোপ করা, সামাজিকভাবে হেয় করা এবং সহজেই শাস্তি থেকে রেহাই পাওয়া যৌন সহিংসতা অব্যাহত থাকার মূল কারণ। ধর্ষণ মামলার মাত্র ২ থেকে ৩ শতাংশের ক্ষেত্রে অপরাধীরা শাস্তি পায়। তাই নিপীড়করা ধরেই নেয় যে তারা এ ধরনের অপরাধ করলেও কোনো শাস্তি পেতে হবে না।
তবুও আমরা আমাদের দেশের তরুণদের জন্য আশার আলো দেখি। লাখ লাখ নারী ও কন্যাশিশুর জীবন তছনছ করে দেওয়া এবং একটি কর্মমুখী জীবনযাপন থেকে তাদের বঞ্চিত করা এই সামাজিক ব্যাধি নিরসনের দায়িত্ব তরুণরা নিজেরাই নিয়েছে। এত ত্যাগের বিনিময়ে পাওয়া এবং সমতা ও সামাজিক ন্যায়বিচারের ভিত্তিতে গড়ে তুলতে চাওয়া নতুন বাংলাদেশে নারী ও কন্যাশিশুর প্রতি সহিংসতার জায়গা থাকতে পারে না। দেশকে সঠিক পথ দেখানো এবং সেই পথে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য আমরা আমাদের তরুণদের দিকে তাকিয়ে আছি।
সহিংসতা আমাদের বিচলিত করছে
রেজওয়ানা করিম স্নিগ্ধা
সহযোগী অধ্যাপক, নৃবিজ্ঞান বিভাগ
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
নারীর অ-নিরাপত্তা প্রসঙ্গটি কোনো রেজিম, নির্বাচিত বা অনির্বাচিত সরকারের বিষয় নয়। বরং আধিপত্য, ভয় ও ত্রাসের রাজনীতি কায়েমকরণে নারী বরাবরই একটি গুরুত্বপূর্ণ টার্গেট গ্রুপ। বর্তমানে নারীর প্রতি সহিংসতার যে ঘটনাগুলো তিন-চার মাস ধরে আমাদের বিচলিত করছে, সেটির অন্যতম কারণ হচ্ছে রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাপনা থেকে নারীর প্রতি সহিংসতার বিষয়ে নীরব থাকা এবং যথাযথ আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ না করা। এই মুহূর্তে সবচেয়ে বড় সংকট হলো তথাকথিত পপুলিজমের চর্চায়, সরকার পক্ষ থেকে নারীর প্রতি কট্টরপন্থি রক্ষণশীল পুরুষতান্ত্রিক মতাদর্শ সুচারুরূপে উৎসাহিত করা।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: পদক ষ প ন পর স থ ত সরক র র ব যবস থ এ ধরন র র জন য য ন সহ আম দ র অপর ধ র ঘটন
এছাড়াও পড়ুন:
দহন থেকে জংলি
‘আমি নিয়মিত অনেক চিত্রনাট্য পাচ্ছি। নিয়মিত সেসব সিনেমা করলে প্রচুর টাকা কামাতে পারব। ফিন্যান্সিয়ালি জায়গাটা অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু দর্শক আমাকে যেভাবে দেখতে চাচ্ছেন, তেমন গল্প পাচ্ছি না। দর্শক-প্রত্যাশার চেয়ে ভালো কিছু দিতে চাই। যখন সামগ্রিক চিন্তা করি, তখন ভাবতে হয় আমি কতটা আয় করলাম তার চেয়েও দর্শকের সামনে কীভাবে আসছি, সেটি মুখ্য। এটি একটি প্যাকেজ। মাঝে একটি-দুটি গল্প পছন্দ হয়। সেসব টিমের যে অবস্থা, বাজেট সামগ্রিকভাবে দেখতে গেলে ভালো গল্প তুলে আনা কঠিন হবে। তখন আমি না করে দিই। আমি চাইছি নিজের মতো করে কাজ করতে। জীবনে অনেক সিনেমা করতে হবে, এমন চিন্তা নেই। আমার মতো করে অল্প কিছু কাজ করে যেতে চাই।’ বলছিলেন সিয়াম আহমেদ।
গেল ঈদে মুক্তি পেয়েছে সিয়াম আহমেদ অভিনীত সিনেমা ‘জংলি’। যে সিনেমার সঙ্গে জড়িয়ে আছে নায়কের আবেগ ও পরিশ্রমের দীর্ঘ গল্প। সিনেমাটি করতে একচুলও ছাড় দেননি সিয়াম। ফলাফল হিসেবে পেয়েছেন দর্শকের অবারিত ভালোবাসা। জংলি মুক্তির পর তাই গল্পটি হয়ে উঠেছে সবার। দর্শকরা হলে গিয়ে কেঁদেছেন, গল্পে বুঁদ হয়ে থেকেছেন। করেছেন সিয়াম ও তাঁর টিমের প্রশংসা।
সিয়াম বললেন, ‘এ সিনেমায় আমি দীর্ঘ সময় দিয়েছি। সিনেমার জন্য চুলদাড়ি বড় করেছি। একটি সিনেমার জন্য আমার পাগলামি নিয়ে মা-বাবার মনে হয়তো প্রশ্ন ছিল, ছেলেটি চুল-দাড়ি বড় করে কী করছে? কী করেছি, এটি তো তাদের বোঝানো যায় না। তবে আমার আত্মবিশ্বাস ছিল, সিনেমাটি মুক্তির পরে গল্পটি তাদের টাচ করবে। কারণ, গল্পটিই এমন, এটি প্রথম যদি কাউকে টাচ করে, সেটি সন্তানের মা-বাবাদের। যে কারণে তাদের একসঙ্গে হলে নিয়ে কাছ থেকে অনুভূতি জানার চেষ্টা করেছি। এখন পর্যন্ত মা-বাবার কাছ থেকে সেরা ফিডব্যাক পেয়েছি। বাবা-মেয়ের গল্পটি দেখে তারা ইমোশনাল হয়ে গিয়েছিলেন। শুধু আমার বাবা-মা নন, অন্য মা-বাবাদের কাছেও গল্পটি নিজেদের হয়ে উঠেছে। তারা সিনেমাটি দেখে কেঁদেছেন। হল রিঅ্যাকশনের সেসব ভিডিও সবাই দেখেছেন। সব মিলিয়ে আমরা সফল। আমাদের জংলি সফল।’
মুক্তির পর থেকে ‘জংলি’ সিনেমার এগিয়ে যাওয়ার গ্রাফ দেখলে শুধু দর্শকের ভালোবাসায় সফল নয়, ব্যবসায়িকভাবেও সিনেমাটি যে সফল তার চিত্র বিদ্যমান। মাত্র ৮টি শো দিয়ে শুরু হওয়া সিনেমাটি ঈদের এতদিন পরও মাল্টিপ্লেক্সে ত্রিশটির মতো শো নিয়ে দাপিয়ে চলছে। দেশ ছাড়িয়ে বিদেশের মাটিতেও জংলি হয়ে উঠেছে দর্শকদের সিনেমা।
প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান টাইগার মিডিয়ার কর্ণধার জানিয়েছেন, জংলি প্রায় ছয় কোটির (গ্রস) ক্লাবে প্রবেশ করেছে।
ঈদে মুক্তির পর থেকে ক্রমশ দর্শকপ্রিয় হয়ে ওঠে ‘জংলি’। এমনকি, দেশের সিনেমাপ্রেমীদের মন জয় করে কানাডা, আমেরিকা ও ইউকে’র ৪০টি থিয়েটারে মুক্তি পেয়েছে ‘জংলি’। গত ২৫ এপ্রিল থেকে স্বপ্ন স্কেয়ারক্রো-এর পরিবেশনায়, ঈদের সিনেমাগুলোর মধ্যে দেশের বাইরে সবচেয়ে বেশি থিয়েটারে একযোগে মুক্তি পেয়েছে এ সিনেমাটি। কানাডা ও আমেরিকার বক্স অফিসে প্রথম ৩ দিনের গ্রস ৩৫,০০০ ডলার আয় করে শুভসূচনা করেছে ‘জংলি’।
ঈদে আরও অনেক ছবি মুক্তি পেয়েছে। সেগুলোর মধ্যে জংলি বিশেষ হয়ে উঠেছে কেবল বাবা-মেয়ের গল্পের কারণে। সঙ্গে সিয়ামের নজরকাড়া অভিনয়। নৈঋতার পাখি হয়ে ওঠার দারুণ চেষ্টা। দিমিত্রি থে স্টোনহার্ট নামে এক মনীষী বলেছেন, ‘একজন বাবা বলেন না যে তিনি তোমাকে ভালোবাসেন; বরং তিনি দেখিয়ে দেন যে, তিনি তোমাকে ভালোবাসেন’ জংলি সিনেমায় সিয়াম সেটি বোঝাতে পেরেছেন। ফলে সিনেমাটি হয়ে উঠেছে সবার।
প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদ বলেছেন– ‘পৃথিবীতে আসার সময় প্রতিটি মানুষই একটি করে আলাদিনের প্রদীপ নিয়ে আসে, কিন্তু খুব কম মানুষই সেই প্রদীপ থেকে ঘুমন্ত দৈত্যকে জাগাতে পারে।’
সিয়াম তাঁর জীবনের সেই দৈত্যকে জাগাতে পেরেছেন। পেরেছেন বলেই হয়তো আজ তিনি সাধারণ সিয়াম থেকে নায়ক সিয়াম হয়ে উঠেছেন। সিয়ামের যাত্রাটা শুরু বেশ আগে হলেও পুরোপুরি শুরু হয় ‘দহন’ সিনেমার মাধ্যমে। রায়হান রাফী পরিচালিত এ সিনেমাটির মাধ্যমে সিয়াম নাটক থেকে পুরোপুরি চলচ্চিত্রের মানুষ হয়ে ওঠেন। সে যাত্রা এখনও চলছে। প্রথম সিনেমায় যে সিয়ামকে সবাই দেখেছেন, জংলির সেই সিয়াম যেন আকাশ-পাতাল। তখন সিয়াম ছিলেন তরুণ, এই সিয়াম এখন বাবা। পর্দায় ও বাস্তবে দুই জায়গাতে দারুণ এক বাবা হয়ে উঠেছেন তিনি। নিজের অভিনয় ক্যারিয়ার নিয়ে আগামী পরিকল্পনা কী? প্রশ্ন রাখলে নায়ক বলেন, ‘আমি নিজের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করতে চাই। যারা আমার আগের কাজ দেখেছেন, তারা যেন বলেন, আগের কাজকে ছাড়িয়ে যেতে পেরেছি। আরেকজনকে ছাড়িয়ে যাওয়ার চেয়ে নিজেকে ছাড়িয়ে যাওয়া কঠিন।’