রূপগঞ্জে বেপরোয়া রুবেল, রাসেল, শ্রাবণ বাহিনী, অপহৃত চালক উদ্ধার
Published: 27th, March 2025 GMT
রূপগঞ্জে ফিরোজ মিয়া নামে এক মৎস্য খামারির পিকআপসহ মাছ লুট ও চালককে অপহরণ করে মুক্তিপণ দাবি করেছে সন্ত্রাসী রুবেল, রাসেল, শ্রাবণ নাঈম ও আল-আমীনসহ তার সহযোগীরা।
বুধবার সকালে তারাব পৌরসভার হাটিপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পরে দুপুরে ভুক্তভোগী ফিরোজ মিয়া বাদী হয়ে রূপগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ দিলে পুলিশ পিকআপসহ চালককে উদ্ধার করে।
স্থানীয়রা জানান, সন্ত্রাসী রুবেল এলাকায় কুত্তা রুবেল হিসেবে পরিচিত। সে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের মূল হোতা ছিলো। সে বিশাল বাহিনী গড়ে তুলে এলাকায় মাদক ব্যবসা, জুয়ার আসর পরিচালনাসহ বীর দর্পে কায়েম করে ত্রাসের রাজত্ব।
তার বাহিনীর অন্যতম সদস্য হচ্ছে রাসেল, শ্রাবণ নাঈম ও আল-আমীন। এরা প্রত্যেকেই একাধিকবার র্যাব ও পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছে। এ বাহিনীর অধিকাংশেরই বিরুদ্ধে হত্যা, অস্ত্র, মাদকসহ ছিনতাই, মারামারি, লুটসহ বিভিন্ন আইনে একাধিক মামলা রয়েছে।
ভুক্তভোগী ফিরোজ মিয়া লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করেন, তারাব পৌরসভার হাটিপাড়া এলাকায় বাড়ির আশপাশের লোকজনের কাছ থেকে পুকুর লিজ নিয়ে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ চাষ করিয়া ব্যবসা করে আসছেন। বুধবার ভোরে আড়ৎদার মনির হোসেনের কাছে বিভিন্ন প্রজাতির ২ লাখ টাকা মূল্যের ১ টন মাছ বিক্রি করেন।
মনির হোসেন একটি পিকআপ ভর্তি করে মাছ নিয়ে যাত্রাবাড়ীর উদ্দেশে রওনার সময় তারাব দক্ষিণ পাড়া এলাকার রুবেল, রাসেল, শ্রাবণ নাঈম, আল-আমীনসহ আরও ৪/৫ জন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে পিকআপটির গতিরোধ করে।
এ সময় তারা মনিরের মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে ২ লক্ষ টাকা দিতে বলেন। টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে সন্ত্রাসীরা ফিরোজকে এলোপাতাড়িভাবে পিটিয়ে গুরুতর জখম করেন। একপর্যায়ে সন্ত্রাসী ফিরোজের কাছ থেকে ২ লাখ টাকা ছিনিয়ে নিয়ে মাছভর্তি পিকআপসহ পিকআপ ড্রাইভার রাসেলকে অপহরণ করে নিয়ে যায়।
পিকআপ ও চালক রাসেলকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য ৫০ হাজার টাকা টাকা মুক্তিপণ দাবি করছে সন্ত্রাসীরা।
এ ব্যাপারে রূপগঞ্জ থানার ওসি লিয়াকত আলী বলেন, এ ঘটনায় লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। পিকআপসহ চালককে উদ্ধার করা হয়েছে। এদের বিরুদ্ধে পুলিশী অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
.উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: র পগঞ জ ন র য়ণগঞ জ অপহরণ র পগঞ জ এল ক য়
এছাড়াও পড়ুন:
চবির অপহৃত ৫ শিক্ষার্থীর মুক্তি দাবি ছাত্রদল ও মৈত্রীর
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) পাঁচ শিক্ষার্থী অপহরণের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে দ্রুত মুক্তির দাবি জানিয়েছে শাখা ছাত্রদল ও বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রী।
শুক্রবার ও শনিবার গণমাধ্যমে পাঠানো পৃথক বিবৃতিতে অপহৃতদের মুক্তির দাবি জানায় সংগঠন দুটি।
শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) শাখা ছাত্রদলের সভাপতি আলাউদ্দিন মহসিন ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল নোমান স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে বলা হয়, সশস্ত্র সন্ত্রাসী সংগঠন ইউপিডিএফ কর্তৃক চবির পাঁচ শিক্ষার্থী অপহরণের ঘটনা আমাদের গভীরভাবে মর্মাহত ও উদ্বিগ্ন করেছে। ছাত্র জীবনের স্বাভাবিক অবকাশ ও উৎসব শেষে নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফেরার পথে তাদের এভাবে অপহরণ নিঃসন্দেহে একটি ন্যাক্কারজনক ও অমানবিক ঘটনা। এটি শুধু পাহাড়ে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিয়ে নয়, সাধারণ মানুষের জীবনযাপন নিয়েও বড় প্রশ্ন তৈরি করছে।
বিবৃতিতে আরো বলা হয়েছে, শাখা ছাত্রদল এই সন্ত্রাসী ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানাচ্ছে। আমরা অবিলম্বে অপহৃত পাঁচ শিক্ষার্থীর সুস্থ ও নিরাপদ মুক্তির দাবি করছে। একইসঙ্গে আমরা জোর দাবি জানাচ্ছি, পাহাড়ে সক্রিয় সব সশস্ত্র সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বন্ধে রাষ্ট্রীয়ভাবে কার্যকর ও কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হোক।
চবি শাখা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল নোমান রাইজিংবিডি ডটকমকে বলেন, “অপহরণকৃত শিক্ষার্থীদের দ্রুত মুক্তি কামনা করছি। পাশাপাশি পাহাড়ে সকল সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বন্ধের জোর দাবি জানাচ্ছি।”
শনিবার (১৯ এপ্রিল) শাখা বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর সদস্য সাইদ্যুজামান রেদুয়ান স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “ঘটনার তিনদিন পেরিয়ে গেলেও অপহৃতদের এখনো উদ্ধার করতে না পারা সারাদেশের জন্য উদ্বেগজনক ও শঙ্কার বিষয়। চবির এ পাঁচজন শিক্ষার্থী ‘জেএসএস পিসিপি’র সদস্য হওয়ার কারণে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার বশবর্তী হয়ে ‘ইউপিডিএফ’ তাদের অপহরণ করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এই ইস্যুতে ইউপিডিএফ এর কাছ থেকে আমরা স্পষ্ট বার্তার আহ্বান জানাই। অবিলম্বে অপহৃতদের অক্ষত মুক্তি ও রাষ্ট্রের কাছে অপহরণকারীদের শাস্তির দাবি জানায় শাখা বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রী।
বিবৃতিতে আরো বলা হয়েছে, পাহাড়ে সুদীর্ঘ সময়ের নিপীড়নের ইতিহাস পাহাড়ের সাধারণ মানুষের জীবন ও সেখানকার রাজনৈতিক বাস্তবতাকে রীতিমতো শূলবিদ্ধ করে রাখা হয়েছে। সুদীর্ঘকাল ধরে পাহাড়ে বিভাজনের রাজনীতির মাধ্যমে মেধাবী ও সাংগঠনিক মননকে হত্যা এবং দমনপীড়নের ইন্ধন জুগিয়ে যাচ্ছে রাষ্ট্র ও তার সেনাবাহিনী। চবির পাঁচজন শিক্ষার্থীর অপহরণকেও রাষ্ট্রের ‘ডিভাইড অ্যান্ড রুলস’ রাজনীতির পরম্পরাই মনে করে বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রী।
এর আগে, রাঙামাটির বাঘাইছড়িতে বিজু উৎসব উদযাপন শেষে ক্যাম্পাসে ফেরার পথে বুধবার (১৬ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৬টার দিকে খাগড়াছড়ি সদরের গিরিফুল এলাকা থেকে চবির পাঁচ শিক্ষার্থীকে অপহরণ করা হয়। একইসঙ্গে তাদের বহনকারী গাড়ির চালককেও অপহরণ করা হয়। অপহরণকারীরা পার্বত্য চট্টগ্রামের আঞ্চলিক সশস্ত্র সন্ত্রাসী সংগঠন ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফন্টের (ইউপিডিএফ-প্রসীত গ্রুপ) নেতাকর্মী বলে জানা গেছে।
অপহৃত শিক্ষার্থীরা হলেন- চারুকলা বিভাগের মৈত্রীময় চাকমা, একই বিভাগের অলড্রিন ত্রিপুরা, নাট্যকলা বিভাগের দিব্যি চাকমা, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের রিশন চাকমা, প্রাণীবিদ্যা বিভাগের লংঙি ম্রো। তারা সবাই বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের প্রথমবর্ষের শিক্ষার্থী।
ঢাকা/মিজান/মেহেদী