হতে চেয়েছিলেন স্থপতি, হয়ে গেলেন ডিজাইনার
Published: 3rd, May 2025 GMT
বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে ফলাফলের অপেক্ষায় ছিলেন তাসমিত আফিয়াত। একদিন তাঁকে স্টাইল গুরু নামে এনটিভির একটা রিয়েলিটি শোর বাছাইপর্বে নিয়ে গেলেন মা। লাইনে দাঁড়িয়ে নিজের চেয়ে বয়সে বড়, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ফ্যাশন ডিজাইনিংয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের দেখে ঘাবড়ে গেলেন তাসমিত। বাড়ি ফিরে যাওয়ার জন্য মাকে জোরাজুরি করতে লাগলেন। মা বললেন, ‘হেরে গেলে আমি তোমাকে নিয়ে যাব। তবে তোমাকে প্রতিযোগিতা ফেস করে যেতে হবে।’ ২০১১ সালের সেই দিন তাসমিতের মা যদি তাঁকে নিয়ে বাড়ি ফিরে যেতেন, এই লেখার সূত্রপাত তাহলে হয়তো হতো না!
বিচারকেরা তাসমিতকে প্রশ্ন করেছিলেন, ‘হোয়াট ইজ ফ্যাশন?’ উত্তরে তাসমিত তেমন কিছু না ভেবেই বলেছিলেন, ‘ফ্যাশন ইজ হোয়াট ইউ সি ইন মি।’ বিচারকেরা যেন এই উত্তরেরই অপেক্ষায় ছিলেন। তাঁরা দাঁড়িয়ে গেলেন, হাততালি দিলেন। এই প্রতিযোগিতায় মাত্র ২ ঘণ্টার ভেতর বিভিন্ন কনসেপ্টে পোশাকের ডিজাইন করে, বানিয়ে তা মডেলকে পরিয়ে র্যাম্পে উপস্থাপন করতে হয়েছিল। পরপর বেশ কয়েক দিন প্রতিযোগীদের ভেতর সেরা হয়েছিলেন সবার ছোট তাসমিত।
এক যুগ ধরে ফ্যাশন ডিজাইনার হিসেবে কাজ করছেন তাসমিত.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ড জ ইন
এছাড়াও পড়ুন:
জোট বেঁধে ভাঙা হলো দুটি বাঁধ
আটক, জেল, ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়াসহ অনেক নাটকীয়তার পর বকশীগঞ্জের দশানী নদীতে পাশাপাশি অবৈধ দুটি বাঁধ অপসারণ করা হয়েছে। গত শুক্রবার রাতে আইড়মারী নতুনপাড়া ও বকশীগঞ্জের সীমানাঘেঁষা দেওয়ানগঞ্জের বাহাদুরাবাদ ইউনিয়নের খাপড়াপাড়া এলাকার বাঁধ দুটি ভেঙে ফেলেন এলাকাবাসী। এতে অন্তত ২০ গ্রামের কৃষকের মধ্যে স্বস্তি ফিরেছে।
জানা গেছে, মাস খানেক আগে বাহাদুরাবাদ ও মেরুরচর ইউনিয়নের সীমানায় খাপড়াপাড়া এলাকায় দশানী নদীর শাখাতে একটি বাঁধ নির্মাণ করেন স্থানীয়রা। তাদের দাবি, নদী ভাঙন রোধে একাধিকবার আবেদন করা হলেও কোনো কাজ হয়নি। তাই তারা নিজেরাই বাঁধ নির্মাণ করেছেন।
খাপড়াপাড়া গ্রামে বাঁধ নির্মাণের পর আধা কিলোমিটার দূরে সাধুরপাড়া ইউনিয়নের চরআইড়মারী নতুন পাড়ায় আরেকটি বাঁধ নির্মাণ করা হয়। পাশাপাশি দুটি বাঁধের কারণে পানি প্রবাহে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয় নদীতে। প্রশাসনের বাধার মুখেই বাঁধ দুটি নির্মাণ করা হয়। বাঁধের পক্ষে-বিপক্ষে অবস্থান নেন কয়েক গ্রামের মানুষ। পক্ষে-বিপক্ষে পাল্টাপাল্টি মানববন্ধনও করেন তারা। প্রশাসনের পক্ষ থেকে একাধিকবার ঘটনাস্থলে গিয়ে বাঁধ অপসারণের বিষয়ে বলা হলেও কোনো সুরাহা হয়নি। অপরিকল্পিত বাঁধ নির্মাণের ফলে কয়েকদিন আগে অন্তত ১৫টি গ্রামে ধানসহ নানা ফসল পানিতে তলিয়ে যায়। বিস্তীর্ণ নিম্নাঞ্চলে দেখা দেয় কৃত্রিম বন্যা। এ নিয়ে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়।
এ ঘটনায় দেওয়ানগঞ্জ ও বকশীগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন যৌথ বৈঠক করে। গত বৃহস্পতিবার বকশীগঞ্জ উপজেলা সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত বৈঠকে বাঁধ দুটি ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্ত হয়। সে অনুযায়ী ওইদিন বিকেলে পুলিশ নিয়ে চরআইড়মারী এলাকায় বাঁধ ভাঙতে যান বকশীগঞ্জ ইউএনও মাসুদ রানা। এ সময় মাইকে ঘোষণা দিয়ে বাঁধ ভাঙতে বাধা দেন এলাকাবাসী। অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে বাঁধ অপসারণে বাধা দেন তারা। এ সময় দুই গ্রামবাসীর মধ্যে চলে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশের সঙ্গে যোগ দেন সেনাবাহিনীর সদস্যরা। এ সময় সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অপরাধে আইড়মারী গ্রামের রহমত আলী (৪০) ও ইউসুফ আলী (৩২) নামে দু’জনকে আটক করে ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। তবে বাধার মুখে বাঁধ অপসারণ না করেই ফিরে যান ইউএনও। বাঁধ পাহারা দিতে লাঠিসোটা নিয়ে অবস্থান নেন কয়েকশ মানুষ। এ অবস্থার মধ্যেই গত শুক্রবার সন্ধ্যায় কয়েক গ্রামের মানুষ জোট বেঁধে গিয়ে বাঁধ দুটি অপসারণ করেন।
বকশীগঞ্জের ইউএনও মাসুদ রানা বলেন, প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদের সাফ জানিয়ে দেওয়া হয় জনস্বার্থে বাঁধ অপসারণ করা হবে। এতে নমনীয় হন তারা। পরে এলাকাবাসী বাঁধ দুটি অপসারণ করেন।