ভারতের রাজধানী দিল্লি থেকে ৪৭ বাংলাদেশি আটক করেছে। শনিবার ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এএনআই এ তথ্য জানিয়েছে।
যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণাঞ্চলীয় রেঞ্জ) সঞ্জয় কুমার জৈন জানিয়েছেন, এই অভিযানটি অবৈধ অভিবাসীদের, বিশেষ করে বাংলাদেশ থেকে আসা অভিবাসীদের লক্ষ্য করে একটি বিশেষ অভিযানের অংশ ছিল।
জৈন বলেন, “দিল্লি পুলিশ অবৈধ অভিবাসীদের, বিশেষ করে বাংলাদেশ থেকে আসা অভিবাসীদের বিরুদ্ধে একটি বিশেষ অভিযান পরিচালনা করছে। এই অভিযানের সময়, দক্ষিণাঞ্চলীয় রেঞ্জ, বিশেষ করে দক্ষিণ জেলা, উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বাংলাদেশি অবৈধ অভিবাসীকে গ্রেপ্তার করেছে। দলটি প্রায় ৪৭ জন অবৈধ বাংলাদেশি অভিবাসীকে সনাক্ত করে এবং তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করে প্রশংসনীয় কাজ করেছে। পুরো নেটওয়ার্কটি ভেঙে ফেলার জন্য একটি বিস্তারিত তদন্ত করা হয়েছে।”
এএনআই জানিয়েছে, অবৈধ অভিবাসীদের নেটওয়ার্ক পরিচালনা মূল অভিযুক্তের নাম চাঁদ মিয়া বাংলাদেশের নাগরিক। সে এজেন্টদের নিয়ে অত্যাধুনিক নেটওয়ার্ক পরিচালনা করতো যারা অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রম করে ভারতের বিভিন্ন শহরে বসতি স্থাপনে সহায়তা করতো।
সঞ্জয় কুমার জৈন বলেন, “এই পাচারকারী নেটওয়ার্কের মূল হোতা হিসেবে চিহ্নিত হয়েছেন বাংলাদেশের বাসিন্দা চাঁদ মিয়া। স্থানীয় এজেন্টদের সাথে জড়িত একটি সুসংগঠিত নেটওয়ার্কের মাধ্যমে তিনি বাংলাদেশ থেকে ভারতে লোক আনতেন। এই ব্যক্তিদের জন্য জাল পরিচয়পত্র তৈরি করা হয়েছিল এবং তাদের বিভিন্ন ধরণের কর্মসংস্থানে নিয়োগ করা হয়েছিল। চাঁদ মিয়া মূলত তৈমুর নগরে থাকতেন, কিন্তু পরে দক্ষিণের একটি রাজ্যে চলে যান, যেখানে তিনি তার অভিবাসী পাচার কার্যক্রম সম্প্রসারণ করেন।”
ঢাকা/শাহেদ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
হাসপাতালে নেই এন্টিভেনম, ২ সপ্তাহে সাপের কামড়ে মৃত ৫
ঠাকুরগাঁওয়ে সাপের কামড়ে গত দুই সপ্তাহে পাঁচ জনের মৃত্যু হয়েছে। জেলার হাসপাতালগুলোতে এন্টিভেনম না থাকায় সময়মতো চিকিৎসা না পেয়ে প্রাণ হারাচ্ছেন রোগীরা।
সর্বশেষ শুক্রবার (৮ আগস্ট) রাতে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার সীমান্ত এলাকার বড়পলাশবাড়ী ইউনিয়নের কদমতলা গ্রামের স্কুলছাত্র সাকিবুল ইসলাম (পঞ্চম শ্রেণি) বিষধর সাপের কামড়ে মারা যায়।
জানা যায়, সাপে কামড়ানোর পর তাকে প্রথমে বালিয়াডাঙ্গী, পরে হরিপুর, এরপর ঠাকুরগাঁও জেনারেল হাসপাতাল এবং সবশেষে দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। এসব হাসপাতালের কোথাও এন্টিভেনম মজুত ছিল না। পরে দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে মৃত্যু হয় সাকিবুলের।
সাকিবুলের বাবা ইসরাইল উদ্দীন বলেন, “চারটা হাসপাতালে নিয়েও ভ্যাকসিন পাইনি। কোলের উপরেই ছেলেকে হারালাম। আর যেন কোনো বাবার বুক খালি না হয়, সরকার দ্রুত ব্যবস্থা নিক।”
অন্যদিকে, সাকিবুলের মতো পীরগঞ্জের স্কুলছাত্র তারেক, রাণীশংকৈলের কলেজছাত্র মোকসেদ আলী এবং হরিপুরের গৃহবধূ সম্পা রানীসহ গত দুই সপ্তাহে জেলায় সাপের কামড়ে মারা গেছে অন্তত পাঁচ জন।
সম্পা রানীর স্বামী জিতেন বলেন, “হাসপাতালে ভ্যাকসিন না পেয়ে শেষ পর্যন্ত ওঝার কাছে যেতে হয়েছে। তবুও স্ত্রীকে বাঁচাতে পারিনি। দেড় বছরের সন্তান নিয়ে অসহায় হয়ে পড়েছি।”
স্থানীয় পল্লী চিকিৎসক আজমুল হক বলেন, “বর্ষার সময়ে সাপের কামড়ের ঘটনা বেশি হয়। প্রতি বছর জেলা ও উপজেলা হাসপাতালগুলোতে ভ্যাকসিন পাঠানো হয় বর্ষা শেষের দিকে। অথচ আগে থেকেই মজুত রাখা উচিত।”
ঠাকুরগাঁও সিভিল সার্জন ডা. মো. আনিছুর রহমান বলেন, “চাহিদা পাঠানোর পরও কেন্দ্রীয় ঔষধাগার থেকে এন্টিভেনম পাওয়া যায়নি। সেখানেও সংকট রয়েছে। চেষ্টা করছি দ্রুত আনার।”
সাপের কামড়ে মৃত্যুর এই ধারাবাহিক ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে গ্রামাঞ্চলে। চিকিৎসক ও সচেতন মহল বলছে, বর্ষার শুরুতেই প্রতিটি উপজেলা ও জেলা হাসপাতালে পর্যাপ্ত এন্টিভেনম সরবরাহ করতে হবে।
ঢাকা/হিমেল/এস