শেখ হাসিনা-পুতুলসহ ১৮ জনের বিরুদ্ধে প্রতিবেদন দাখিল ১৮ মে
Published: 4th, May 2025 GMT
রাজধানীর পূর্বাচলে দশ কাঠার প্লট জালিয়াতির ঘটনায় দুদকের দায়ের করা মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলসহ ১৮ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তার সংক্রান্ত তামিল প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আগামী ১৮ মে দিন ধার্য করেছেন আদালত।
আজ রোববার ঢাকা মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো. জাকির হোসেন গালিবের আদালতে আসামিদের গ্রেপ্তার সংক্রান্ত তামিল প্রতিবেদন দাখিলের জন্য দিন ধার্য ছিল। এদিন পুলিশ তামিল প্রতিবেদন দাখিল না করায় বিচারক নতুন দিন ধার্য করেন।
এর আগে ১০ এপ্রিল ঢাকা মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো.
শেখ হাসিনা-পুতুল ছাড়াও গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হওয়া অপর ১৬ আসামি হলেন- জাতীয় গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম সরকার, সিনিয়র সহকারী সচিব পুরবী গোলদার, অতিরিক্ত সচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিন, সচিব মো. শহীদ উল্লা খন্দকার, রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যানের পিএ মো. আনিছুর রহমান মিঞা, রাজউকের সাবেক সদস্য মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, কবির আল আসাদ, তন্ময় দাস, মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন, মেজর (ইঞ্জি.) সামসুদ্দীন আহমদ চৌধুরী (অব.), মো. নুরুল ইসলাম, পরিচালক শেখ শাহিনুল ইসলাম, উপপরিচালক মো. হাফিজুর রহমান ও হাবিবুর রহমান, তদন্ত প্রাপ্তে আসামি সাবেক ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রীর একান্ত সচিব-১ মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন ও সাবেক গৃহায়ণ ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ।
রাজধানীর পূর্বাচলে দশ কাঠার প্লট জালিয়াতির ঘটনায় চলতি বছরের ১২ জানুয়ারি দুদকের সহকারী পরিচালক আফনান জান্নাত কেয়া বাদী হয়ে শেখ হাসিনা-পুতুলসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। মামলাটি তদন্ত শেষে গত ১০ মার্চ তদন্ত প্রাপ্তে আরও দুই আসামিসহ শেখ হাসিনা-পুতুলসহ ১৮ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা দুদকের সহকারী পরিচালক আফনান জান্নাত কেয়া। চার্জশিটে সাক্ষী করা হয়েছে ১৬ জনকে।
মামলার এজাহারে বলা হয়, ধানমন্ডি আবাসিক এলাকায় নিজের ও পরিবারের অন্য সদস্যদের মালিকানায় ঢাকা শহরে রাজউকের এখতিয়ারাধীন এলাকায় বাড়ি বা ফ্ল্যাট বা আবাসন সুবিধা থাকার পরও সেটি গোপন করে পূর্বাচল নতুন শহর আবাসন প্রকল্পে প্লট বরাদ্দ সংক্রান্ত আইন, বিধি ও নীতিমালা ও আইনানুগ পদ্ধতি লঙ্ঘন করে মা শেখ হাসিনার ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন সায়মা ওয়াজেদ পুতুল। সরকারের সর্বোচ্চ পদাধিকারী ও পাবলিক সার্ভেন্ট হিসেবে বহাল থাকা অবস্থায় তার ওপর অর্পিত ক্ষমতার অপব্যবহার করে অপরাধজনক বিশ্বাসভঙ্গ করে প্রকল্পের বরাদ্দ বিষয়ক দায়িত্বপ্রাপ্ত গণকর্মচারীদের প্রভাবিত করেছেন। ক্ষমতার অপব্যবহার করে আইনমতে বরাদ্দ পাওয়ার যোগ্য না হওয়া সত্ত্বেও পরস্পর যোগসাজশে নিজেরা লাভবান হয়ে ও অন্যকে লাভবান করার উদ্দেশ্যে পূর্বাচল আবাসন প্রকল্পের ২৭নং সেক্টরের ২০৩নং রাস্তার ১৭ নম্বর প্লট সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের নামে বরাদ্দ দেওয়া হয়। সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের প্লটের বাস্তব দখলসহ রেজিস্ট্রি মূলে প্লট গ্রহণ করা হয়। প্রতারণামূলক অবৈধ পারিতোষিক দেওয়া ও নেওয়া এবং অপরাধজনক বিশ্বাস ভঙ্গ ও বেআইনি অনুগ্রহ প্রদর্শনের মাধ্যমে আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে দণ্ডবিধি ও দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনে দণ্ডযোগ্য অপরাধ করেছেন।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: কর ছ ন বর দ দ ক ষমত তদন ত
এছাড়াও পড়ুন:
চবিতে বৈধভাবে বরাদ্দ পেয়েও আসন স্থগিত, হলগেটে শিক্ষার্থীদের অবস্থান
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) শহীদ মো. ফরহাদ হোসেন হলে বৈধভাবে আসন বরাদ্দ দিয়ে পরে স্থগিত করায় কাঁথা-বালিশ নিয়ে হলগেটে অবস্থান করছেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা।
রবিবার (৪ মে) সন্ধ্যা ৬টা থেকে হলটির প্রধান গেটের সামনে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন তারা। হলে না উঠানো পর্যন্ত তাদের এ কর্মসূচি চলবে বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।
জানা গেছে, দীর্ঘদিন পর ফরহাদ হোসেন হলে আবাসন বরাদ্দের আবেদন নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এর ভিত্তিতে আইসিটি সেল কর্তৃক বরাদ্দপ্রাপ্তদের ফলাফল দেওয়া হয়। হলে সিট সংখ্যা ৭০০। এর মধ্যে ৫৩০ জন শিক্ষার্থীর সিট নিশ্চিত করা হয়েছে। ইতোমধ্যে তাদের অধিকাংশ হলটিতে উঠেছেন। মৌখিক পরীক্ষায় বাকি ১৭০ জন শিক্ষার্থীর সিট স্থগিত রাখা হয়েছে।
আরো পড়ুন:
‘সংবিধান ও গণতন্ত্রের ভারসাম্য রক্ষা করা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের প্রধান চ্যালেঞ্জ’
সৈকতে প্লাস্টিক বর্জ্য পরিষ্কার করল চবি বিএনসিসি
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা বলছেন, বর্ষ নিয়ে প্রশাসন যে সমস্যার কথা জানিয়ে আমাদের সিট স্থগিত রেখেছে, আসলে এতে আমাদের কোনো ভুল ছিল না। আবেদন ফরম অনুযায়ী আমাদের সবকিছু শতভাগ সঠিক। পরে প্রশাসন থেকে এ বিষয়ে যৌক্তিক সমাধানের কথা জানালেও এখন পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্ত জানানো হয়নি। এতে আবাসন নিয়ে চরম বিপাকে পড়ছেন বলে জানান ভুক্তভোগীরা।
কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া ইংরেজি বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মো. শরিফুল ইসলাম বলেন, “প্রশাসন কর্তৃক সরবরাহ করা ফর্ম অনুযায়ী যথাযথ নিয়মে আবেদন করে মেধার ভিত্তিতে শহীদ মো. ফরহাদ হোসেন হলে সিট বরাদ্দ পেয়েছি আমরা। এরপর সাক্ষাৎকারে হঠাৎ বর্ষ সংক্রান্ত সমস্যার কথা উল্লেখ করে আমাদের সিট স্থগিত করে দেয়।”
তিনি বলেন, “সমস্যার সমাধানের জন্য প্রাধ্যক্ষ থেকে আইসিটি সেল হয়ে প্রক্টর অফিস, উপ-উপাচার্য অফিসে গত ১৩ এপ্রিল থেকে এখন পর্যন্ত চরকির মতো ঘুরানো হচ্ছে আমাদের। প্রশাসন থেকে সমাধানের আশ্বাস দিলেও তার কোনো অগ্রগতি নেই। গত ২৬ এপ্রিল থেকে হলে উঠার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হওয়ায় সবাই মেস বা বাসা ছেড়ে দিয়েছি। এখন যাযাবরের মতো এখানে সেখানে থাকতে হচ্ছে আমাদের।”
তিনি আরো বলেন, “প্রশাসন সমাধানের কথা বললেই আগামী ১৪ মে অনুষ্ঠিতব্য সমাবর্তনের পরে দেখবে বলে দায়মুক্ত হচ্ছে। তাদের ভুলের কারণে সৃষ্ট সমস্যার কারণে দিনের পর দিন হয়রানি করছে আমাদের। হল উদ্বোধন হয়েছে, একইসঙ্গে আসন বরাদ্দ পাওয়া একাংশ হলে থাকতে। এদিকে আমাদের বরাদ্দ পাওয়া সিটগুলো ফাঁকা পড়ে আছে। অথচ আমাদের থাকার জায়গা নেই।”
“নিরুপায় হয়ে আজ শহীদ মো. ফরহাদ হোসেন হলে আমরা অবস্থান কর্মসূচি পালন করছি। আমরা আবাসন সংকটে লেখাপড়ারও পরিবেশ পাচ্ছি না, মাথা গোজারও ঠাঁই পাচ্ছি না। অথচ প্রশাসনের আন্তরিকতার ঘাটতির কারণে সমস্যার সমাধান দিনের পর দিন বিলম্বিত হচ্ছে। এই হয়রানির শেষ কোথায়?,” যুক্ত করেন শরিফুল ইসলাম।
২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের আরবি সাহিত্য বিভাগের শিক্ষার্থী নোমান ইবনে মুসলিম উদ্দিন বলেন, “প্রশাসনের ব্যর্থতার জন্য শিক্ষার্থীদের এই ভোগান্তি। এর শেষ কোথায়? শহীদ ফরহাদ হোসেন হলের আসন পেয়েও আমাদের সিট স্থগিত করা করায় নিরুপায় হয়ে আজ আমরা অবস্থান কর্মসূচি করছি।”
এদিকে, ঘটনাস্থলে এসে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়িয়েছে চবি শাখা ছাত্রদল।
শাখা ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন বলেন, “তারা আবেদন ফরম অনুযায়ী বৈধভাবেই সিট বরাদ্দ পেয়েছে। এখন আবাসনের অভাবে তারা ভোগান্তিতে আছেন। দ্রুত তাদের হলে উঠানো হোক। আমরা তাদের পাশে আছি।”
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় আসন বরাদ্দ কমিটির আহ্বায়ক ও উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দিন বলেন, “তারা আবেদনে একটি ভুল করেছে। সমাবর্তনের পর তাদের হলে উঠাব বলেছি এবং সমাবর্তনের আগে সমস্যাটি আমরা সমাধান করব। এখন তারা অবস্থান কর্মসূচি করলে কিছু বলার নেই।”
ঢাকা/মিজান/মেহেদী