চেক বিতরণ অনুষ্ঠানে পরিবারের নিরাপত্তা চাইলেন জুলাই আন্দোলনে শহীদের ভাই
Published: 4th, May 2025 GMT
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ পরিবারকে মামলা তুলে নেওয়ার হুমকি দেওয়া হচ্ছে। বারবার হুমকি পেয়ে পরিবারটি ঢাকার বাসা ছেড়ে গ্রামের বাড়িতে এসে উঠেছে। আজ রোববার নোয়াখালী জেলা পরিষদের উদ্যোগে শহীদ পরিবারের মধ্যে অনুদানের চেক হস্তান্তর অনুষ্ঠানে এমন অভিযোগ করেন ঢাকার যাত্রাবাড়ীতে গুলিতে নিহত শাহদাত হোসেনের (১৪) বড় ভাই মো.
জেলা পরিষদ আয়োজিত ওই চেক বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক ও জেলা পরিষদের প্রশাসক খন্দকার ইসতিয়াক আহমেদ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হুমায়ুন রশিদ। অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জেলা শাখার আহ্বায়ক মো. আরিফুল ইসলাম। উপস্থিত ছিলেন সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আখিনূর জাহান, বেগমগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আরিফুর রহমান প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে সেনবাগ উপজেলার কেশারপাড় ইউনিয়নের বাসিন্দা ও শহীদ শাহদাত হোসেনের বড় ভাই মো. হানিফ বলেন, ৫ আগস্ট দুপুরের দিকে তাঁর ছোট ভাই যাত্রাবাড়ীর মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারের ওপর গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়েছে। এরপর তাঁরা বিনা ময়নাতদন্তে ভাইয়ের লাশ গ্রামের বাড়িতে এনে দাফন করেন। তাঁর বাবা ফ্লাইওভার এলাকায় ফুটপাতে হালিম বিক্রি করতেন। তাঁরা পরিবার নিয়ে ঢাকায় থাকতেন।
মো. হানিফ উল্লেখ করেন, তাঁর ভাইয়ের হত্যার ঘটনায় তাঁর বাবা বাদী হয়ে আদালতে এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালে পৃথক দুটি মামলা করেন। দুটি মামলায় ৪৭ জনকে আসামি করা হয়। ওই মামলা দায়েরের পর কিছু লোক প্রতিদিন তাঁদের বাসায় গিয়ে নানা রকম কথা বলে ভয় দেখাচ্ছেন। তা ছাড়া দুটি মুঠোফোন থেকে তাঁর বাবাকে ফোন করেও মামলা প্রত্যাহারের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। তাঁরা বিষয়টি যাত্রাবাড়ী থানার ওসি এবং তদন্তকারী কর্মকর্তাকে জানিয়েছেন।
হানিফ অভিযোগ করেন, মামলা প্রত্যাহারের অব্যাহত হুমকির পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৮ এপ্রিল পুরো পরিবার ঢাকা থেকে গ্রামের বাড়িতে চলে আসে। আসামিদের হুমকির কারণে তাঁরা এখন নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে রয়েছেন। তাই এ বিষয়ে জেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন মো. হানিফ।
শহীদ পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তাহীনতার কথা জানার পর জেলা প্রশাসক খন্দকার ইসতিয়াক আহমেদ তাঁর বক্তব্যে বলেন, শহীদ পরিবারকে সরকারের নির্দেশনা অনুসারে সব ধরনের সহায়তা করা হচ্ছে এবং সেটি অব্যাহত রয়েছে। পাশাপাশি শহীদ পরিবারের সদ্যদের নিরাপত্তা প্রদানে জেলা প্রশাসনের পক্ষ সচেষ্ট আছেন। শহীদ পরিবারের কেউ যদি কারও কাছ থেকে কোনো ধরনের হুমকি পান সেটি যেন তাৎক্ষণিকভাবে প্রশাসনকে অবহিত করা হয়।
অনুষ্ঠানে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে নিহত নোয়াখালীর বাসিন্দা ১০টি পরিবারকে দুই লাখ টাকা করে অনুদান প্রদান করা হয়। এ ছাড়া নিহত বাকি পরিবারগুলোকেও পর্যায়ক্রমে অনুদান প্রদান করা হবে বলে জানানো হয়।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
খুলনায় চরমপন্থি নেতা নাসিমকে ছিনিয়ে নিলেন সহযোগীরা
খুলনায় গ্রেপ্তার করতে গেলে পুলিশের কাছ থেকে চরমপন্থি নেতা নাসিমকে ছিনিয়ে নিয়েছেন তার সহযোগীরা।
বুধবার (১৮ জুন) সন্ধ্যা ৬টার দিকের ঘটনা এটি।
দিঘলিয়া উপজেলার ফরমাইশখানা ঘোলারঘাটের হারুন মোল্লার ফার্ণিচারের দোকানে নাসিমকে গ্রেপ্তার করতে গেলে তার সহযোগীদের সঙ্গে পুলিশের ধ্বস্তাধ্বস্তি হয়। এতে পুলিশের তিন সদস্য আহত হন।
আরো পড়ুন:
মানিকগঞ্জে পুকুরে ডুবে কলেজছাত্রের মৃত্যু
ক্ষেতে গরু যাওয়ায় মাকে মারধর, ছেলেকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ
নাসিম পালিয়ে গেলেও পুলিশের সঙ্গে ধাক্কাধাক্কিতে অংশ নেওয়া তার দুই সহযোগীকে আটক করেছে পুলিশ।
রাতে ঘটনার বিষয়ে তথ্য দেন দিঘলিয়া থানার ওসি এইচ এম শাহীন।
প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ জানায়, বুধবার সন্ধ্যার দিকে দিঘলিয়া থানার একটি টিম ওসি তদন্ত ও সেকেন্ড অফিসার এসআই তারেকের নেতৃত্বে পূর্ব বাংলা কমিউনিস্ট পাটির নেতা এবং একাধিক হত্যা মামলার আাসামি নাসিমকে গ্রেপ্তারের জন্য উপজেলার ফরমাইশখানা ঘোলারঘাট এলাকায় অভিযানে যায়।
দিঘলিয়া থানা পুলিশ ও যৌথ বাহিনী গোটা এলাকায় অভিযানে নামে। তবে নাসিমকে ধরতে পারেনি। যদিও রেজাউল ও আল মামুন নামে নাসিমের দুই সহযোগীকে আটক করেছে পুলিশ।
ওসি শাহীন বলেন, উপজেলা ফরমাইশখানা গ্রামে পূর্ব বাংলা কমিউনিস্ট পার্টির নেতা নাসিমকে গ্রেপ্তার করতে গেলে তার বাহিনী পুলিশের ওপর চড়াও হয়ে নাসিমকে ছিনিয়ে নিয়ে যায়। নাসিমের সহযোগীদের সঙ্গে ধস্তাধস্তিতে তিন পুলিশ সদস্য আহত হন।
সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে; একই সঙ্গে অভিযানও অব্যাহত রয়েছে বলে জানান ওসি।
ঢাকা/নুরুজ্জামান/রাসেল