রাজশাহীতে ‘মরণ রাস্তার মোড়’–এ গোলচত্বর নির্মাণের দাবিতে মানববন্ধন
Published: 6th, May 2025 GMT
রাজশাহী নগরের দুর্ঘটনাপ্রবণ বারো রাস্তার মোড়ে গোলচত্বর নির্মাণসহ পাঁচ দফা দাবিতে মানববন্ধন হয়েছে। আজ মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে নগরের সাহেববাজার জিরো পয়েন্টে এই কর্মসূচি পালন করে বরেন্দ্র ইয়ুথ ফোরাম ও সবুজ সংহতি।
মানববন্ধন শেষে বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক ও সিটি করপোরেশনের প্রশাসকের কাছে একটি স্মারকলিপি দেওয়া হয়।
রাজশাহীর ছোট বনগ্রাম এলাকার বারো রাস্তার মোড়ে চারটি প্রধান সড়ক মিলিত হয়েছে। এলাকাবাসীর ভাষায়, এটি এখন ‘মরণ রাস্তার মোড়’। প্রতি মাসে এখানে গড়ে ১০ থেকে ১৫টি দুর্ঘটনা ঘটে। গত ১৪ জানুয়ারি এই মোড়ে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক পুরনজিত মহলদার নিহত হন। সর্বশেষ গত শুক্রবার একটি বাস একটি মোটরসাইকেলকে হিঁচড়ে নিয়ে যায়। এর প্রতিবাদে স্থানীয় লোকজন সড়কে আগুন জ্বেলে বিক্ষোভ করেন।
আজ মানববন্ধনে বক্তব্য দেন রাজশাহী সবুজ সংহতির সদস্যসচিব নাজমুল হোসেন, বরেন্দ্র ইয়ুথ ফোরামের সভাপতি শাইখ তাসনীম জামাল, বীর মুক্তিযোদ্ধা ওয়ালিউর রহমান, জাতীয় আদিবাসী পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক সুভাষ চন্দ্র হেমব্রমসহ অনেকে।
বক্তারা বলেন, বিমান চত্বর থেকে বিহাস পর্যন্ত চার লেনবিশিষ্ট সড়কের গুরুত্বপূর্ণ এই মোড়ে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার অভাবে প্রতিনিয়ত প্রাণহানি ঘটছে। তাঁরা দ্রুত গোলচত্বর ও স্পিডব্রেকার নির্মাণ এবং সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপনসহ ট্রাফিক ব্যবস্থার উন্নয়নের দাবি জানান।
বক্তাদের দাবির মধ্যে রয়েছে বারো রাস্তার মোড়ে দ্রুত গোলচত্বর নির্মাণ, সার্বক্ষণিক ট্রাফিক পুলিশ মোতায়েন ও ডিজিটাল সিগন্যাল চালু, সড়কে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন, বেপরোয়া চালকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা ও জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম গ্রহণ।
এদিকে স্মারকলিপি পেয়ে বিভাগীয় কমিশনার ও সিটি করপোরেশনের প্রশাসক খোন্দকার আজিম আহমেদ এনডিসি বারো রাস্তার মোড়ে গোলচত্বর নির্মাণের আশ্বাস দেন।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
পিঠা ব্যবসায়ী শাকিলার অনৈতিক কর্মকাণ্ডে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী, মানববন্
রূপগঞ্জ উপজেলার পূর্বাচল উপশহরের ১২ নম্বর সেক্টর এলাকায় পিঠা ব্যবসায়ী শাকিলা ও তার স্বজনদের বিরুদ্ধে চরম অভিযোগ তুলে মানববন্ধন করেছেন এলাকাবাসী ও আশপাশের ব্যবসায়ীরা।
বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) সকালে এলাকাবাসী ও ভুক্তভোগীরা একত্র হয়ে এই মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন।
মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারীরা অভিযোগ করেন, শাকিলা দীর্ঘদিন ধরে পিঠা বিক্রির আড়ালে নানা অনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছেন। তার বিরুদ্ধে খাবারের দাম বেশি রাখা, ক্রেতাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার, প্রতিবাদ করলে গালিগালাজ ও শারীরিক নির্যাতনের মতো গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। এছাড়া, পিঠার দোকান ঘিরে মাদকসেবীদের আড্ডা, রাতে অসামাজিক কার্যকলাপ এবং প্রতিনিয়ত ঝগড়া-বিবাদের ঘটনায় এলাকার পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন এলাকাবাসী।
মানববন্ধনে অংশ নেওয়া একাধিক ব্যক্তি অভিযোগ করে বলেন, গত সোমবার রাতে মদ্যপ অবস্থায় শাকিলার স্বজন দিপু, রাসেল, শাকিলসহ আরও কয়েকজন মিলে ‘নিপা পিঠাঘর’ নামে একটি নারীর দোকানে পিঠা খেতে গেলে পিঠা দিতে বিলম্ব হওয়ায় তারা দোকানে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর শুরু করে। প্রতিবাদ করলে দোকানদার নারীকে বেধড়ক মারধর করে, এমনকি তার শরীরের কাপড়ও টেনে ছিঁড়ে ফেলে। তার চিৎকারে খালা ছুটে এলে তাকেও আঘাত করা হয়। অভিযোগ রয়েছে, ঘটনাস্থলে থাকা পূর্বাচল পুলিশ ক্যাম্পের পরিদর্শক জাহাঙ্গীর আলমের কাছ থেকে পিস্তল ছিনিয়ে নিয়ে ওই নারীকে আঘাত করা হয়, ফলে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন।
পরবর্তীতে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে এসে দুইজন হামলাকারীকে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দিলেও কিছুক্ষণ পরই পুলিশ তাদের ছেড়ে দেয় বলে অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী নারী থানায় অভিযোগ জানাতে গেলে পুলিশ সহযোগিতা করেনি, বরং অভিযুক্তদের পক্ষ নিয়ে সাফাই গেয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। শেষমেশ বুধবার নারায়ণগঞ্জ আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন ভুক্তভোগী।
এ বিষয়ে পূর্বাচল পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, “ঘটনার খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে যাই এবং অভিযুক্তদের আটক করে ক্যাম্পে নিয়ে আসি। পরে স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদের অনুরোধে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়। পুলিশের পিস্তল ছিনিয়ে নিয়ে হামলা করার অভিযোগ সত্য নয়, তবে অভিযুক্তরা মদ্যপ অবস্থায় ছিলেন।”
নারায়ণগঞ্জ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মেহেদী ইসলাম বলেন, “ভুক্তভোগীর পক্ষ থেকে অভিযোগ গ্রহণ করা হয়েছে। বিষয়টি তদন্তাধীন। পুলিশি দায়িত্বে অবহেলা বা পিস্তল ছিনতাইয়ের মতো কোনো ঘটনা ঘটেছে কি না, তা তদন্ত করে দেখা হবে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এলাকাবাসীর দাবি, পিঠা ব্যবসার আড়ালে চলা এসব অপকর্ম বন্ধে প্রশাসনের কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ জরুরি। একই সঙ্গে শাকিলা ও তার স্বজনদের বিরুদ্ধে সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জোর দাবি জানিয়েছেন তারা।