রাঙামাটিতে খিয়াং নারীকে ধর্ষণ ও হত্যার প্রতিবাদে মানববন্ধন
Published: 6th, May 2025 GMT
বান্দরবানের থানচি উপজেলায় খিয়াং সম্প্রদায়ের নারীকে ধর্ষণের পর হত্যার অভিযোগ এনে এর প্রতিবাদে রাঙামাটিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার (৬ মে) বিকেলে বিক্ষুব্ধ ছাত্র সমাজের ব্যানারে জেলা শিল্পকলা একামেডির সামনে মানববন্ধন করা হয়।
এ সময় বক্তব্য রাখেন শিক্ষার্থী উজাই মারমা, সুজন চাকমা। এতে সংহতি প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ রাঙামাটি জেলা শাখার সভাপতি সুমন চাকমা, মানবাধিকার কমিশনের সাবেক সদস্য বাঞ্চিতা চাকমা প্রমুখ।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, ‘‘খিয়াং নারীকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়। এক মাস আগে কাউখালিতে এক মারমা তরুণীকে ধর্ষণ করা হয়েছে। দেশে ধর্ষণের ঘটনা বেড়েই চলেছে। নারীরা কোথাও নিরাপদ নয়। বারবার পাহাড়ে নারীরা ধর্ষণের শিকার হলেও প্রশাসন ধর্ষকদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে পারে না।’’
আরো পড়ুন:
রাজশাহীতে বারো রাস্তার মোড়ে গোলচত্বর করার দাবিতে মানববন্ধন
শাপলা চত্বরে গণহত্যার বিচার দাবিতে শিবিরের মানববন্ধন
পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ রাঙামাটি জেলা শাখার সভাপতি সুমন চাকমা বলেন, ‘‘১৮ মাসের একটি বাচ্চা রেখে খিয়াং নারী জুম চাষ করতে গিয়ে ধর্ষণের শিকার হয়। পরে মাথা থেঁতলে দেয়া হয়েছে। কিন্তু বান্দরবান পুলিশ নাকি কোনো ধর্ষণের আলামত পায়নি। এভাবে প্রশাসনের সহযোগিতায় ধর্ষণকারীরা আইনের ফাঁক দিয়ে বের হয়ে যায়।’’
মানবাধিকার কমিশনের সাবেক সদস্য বাঞ্ছিতা চাকমা বলেন, ‘‘আমরা যখন আন্দোলন করি, তখন প্রশাসন একটু নড়েচড়ে বসে। পরে আইনের ফাঁকফোকড় দিয়ে অপরাধীরা বের হয়ে যায়। সরকার যদি এই বিষয়ে কঠোর ব্যবস্থা না নেয়, তাহলে এসব ঘটনা কখনো বন্ধ করা যাবে না। তাই সরকারকে এই বিষয়ে আরো কঠোর হতে অনুরোধ জানাচ্ছি।’’
মানববন্ধন থেকে বক্তারা এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত অপরাধীদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জোর দাবি জানান।
থানচির তিন্দু ইউনিয়নের মংখ্যং পাড়া এলাকার বাসিন্দা সন খিয়াং এর স্ত্রী চিংমা খিয়াং (২৯) সোমবার (৫ মে) সকালে জুম চাষের জন্য পার্শ্ববর্তী পাহাড়ে যায়। দুপুর পেরিয়ে যাওয়ার পরও বাড়িতে না ফেরায় পাড়াবাসীরা তাকে পাহাড়ে খুঁজতে বের হয়। বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজির এক পর্যায়ে জঙ্গলের ভিতরে পাহাড়ি ঝিরির পাশে চিংমা খিয়াং লাশ দেখতে পায়। স্বজনরা বিষয়টি পুলিশকে জানালে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে সন্ধ্যায় লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বান্দরবান সদর হাসপাতালে মর্গে পাঠায়। এ ঘটনায় নিহতের স্বামী সন খিয়াং বাদী হয়ে মঙ্গলবার (৬ মে) থানচি থানায় মামলা দায়ের করেছেন।
ঢাকা/শংকর/বকুল
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
টাঙ্গুয়ার হাওরে হাউজবোটের সংখ্যা নিয়ন্ত্রণের দাবি
টাঙ্গুয়ার হাওরকে বিপর্যয়ের হাত থেকে বাঁচাতে হাউজবোটের সংখ্যা নিয়ন্ত্রণ ও কর্তৃপক্ষের আরোপিত শর্ত মেনে পরিচালনা করাসহ ৬ দফা দাবি জানিয়েছেন হাওর অঞ্চলবাসীরা।
আজ বুধবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আয়োজিত এক মানববন্ধনে এসব দাবি জানানো হয়।
হাওর অঞ্চলবাসীর অন্যান্য দাবিগুলো হলো- ব্যবহৃত পলিথিন, প্লাস্টিক, বোতল প্রভৃতি পর্যটন ব্যবসায়ীদের উদ্যোগে সংগ্রহ করে সরকার নির্ধারিত স্থানে ফেলতে হবে বা রিসাইকেল করতে হবে; অনতিবিলম্বে সরকারি উদ্যোগে টাঙ্গুয়ার হাওরে সুনির্দিষ্ট দায়দায়িত্বসহ পরিবেশবান্ধব ব্যবস্থাপনা নীতিমালা প্রকাশ ও প্রচার করতে হবে; জেলা প্রশাসকের সহায়তায় পর্যটন ব্যবসায়ীদের উদ্যোগে মনুষ্যবর্জ্য ব্যবস্থাপনা করতে হবে; মানুষের চলাচল, অবস্থান, শব্দ, আলো প্রভৃতি যাতে পাখি, মাছ ও অন্যান্য জলজপ্রাণীর ক্ষতি না করে সেরূপ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। অর্থাৎ সর্বক্ষেত্রে পরিবেশ দূষিত না করার নীতি অবলম্বন করতে হবে এবং জেলা প্রশাসন কর্তৃক নিয়মিত মনিটরিং করতে হবে।
হাওর অঞ্চলবাসীর প্রধান সমন্বয়ক ড. হালিম দাদ খান বলেন, সুনামগঞ্জের টাঙ্গুয়ার হাওর বিশেষ বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন এলাকা, অন্যতম রামসার সাইট। সেখানে অবাধে পাখি উড়ে বেড়ায়, মাছেরা সাঁতার কাটে নির্বিঘ্নে। বর্তমানে অপরিকল্পিত, অনিয়ন্ত্রিত ও অব্যবস্থিত পর্যটন ব্যবসার ফলে এই চিত্র উধাও হতে চলেছে। এই হাওরে প্রায় ২০০ হাউজবোটে হাজার হাজার পর্যটক সময়ে-অসময়ে যত্রতত্র ঘুরে বেড়াচ্ছে, রাত্রিযাপন করছে। তাদের সঙ্গে করে নিয়ে আসা পলিথিন, প্লাস্টিক, বোতল ও মনুষ্যবর্জ্য পানিতে পড়ে ও মাটিতে আটকে গিয়ে স্বচ্ছ পানিকে দূষিত করছে। মাছ মরে পানিতে ভেসে উঠছে। কৃষি কাজেরও অসুবিধা হচ্ছে। উচ্চ শব্দের গান-বাজনা, উদ্দাম নৃত্য, রাতের উজ্জ্বল আলোর কারণে বিরূপ প্রভাব পড়ছে।
তিনি আরও বলেন, ২০১৮ সালের পাখিশুমার অনুযায়ী টাঙ্গুয়ার হাওরে জলচর পাখির সংখ্যা ছিল ৬০ হাজার। বর্তমানে তা কমতে কমতে এসে দাঁড়িয়েছে ২৩ হাজারে। মাছের পরিমাণও ক্রমে হ্রাস পাচ্ছে। এ অবস্থা মেনে নেওয়া যায় না।
মানববন্ধনে হাওর অঞ্চলের অন্যান্য বাসিন্দারা উপস্থিত ছিলেন।