গাড়ি বিক্রয়কেন্দ্রে অব্যাহত চাঁদা দাবি ও হামলার ঘটনার প্রতিবাদে রাজধানীর সব গাড়ির দোকান অর্ধদিবস বন্ধ রেখে মানববন্ধন করেছেন গাড়ি ব্যবসায়ীরা। চাঁদাবাজির হুমকি বন্ধ এবং জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার করা না হলে আগামী মাস থেকে গাড়ি ছাড় করা, নিবন্ধন করা ও সরকারকে রাজস্ব দেওয়া হবে না বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন গাড়ি ব্যবসায়ীরা।

মানববন্ধন শেষে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে ব্যবসা বন্ধ করার এমন হুঁশিয়ারি দেন বাংলাদেশ রিকন্ডিশন্ড ভেহিকেলস ইমপোর্টার্স অ্যান্ড ডিলারস অ্যাসোসিয়েশনের (বারভিডা) সভাপতি আবদুল হক। সংবাদ সম্মেলনে বারভিডা সদস্য ও গাড়ি ব্যবসায়ীরা অংশগ্রহণ করেন।

আজ রোববার রাজধানীর বারিধারা এলাকায় সকাল ১০টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত দোকান বন্ধ রেখে এই মানববন্ধন করেন গাড়ি ব্যবসায়ীরা।

সাংবাদিকদের আবদুল হক বলেন, গত আগস্ট মাস থেকে বিভিন্ন গাড়ি ব্যবসায়ীর কাছে চাঁদা দাবি করা হচ্ছে। ভুয়া নম্বর থেকে হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজে একে ৪৭ রাইফেলের ছবি পাঠিয়ে চাঁদা দাবি করা হয়। এ ছাড়া এখন পর্যন্ত ১২টি বিক্রয়কেন্দ্রে ককটেল নিক্ষেপ করা হয়েছে। এভাবে আতঙ্ক সৃষ্টি করে ফোন করে বলা হচ্ছে, চাঁদা না দিলে ব্যবসা করা যাবে না।

এ বিষয়ে ইতিমধ্যে জিডি করা হয়েছে, কিন্তু এখনো কেউ গ্রেপ্তার হয়নি। এ পরিস্থিতিতে ব্যবসায়ীরা ভয় পাচ্ছেন বলে জানান আবদুল হক। সে জন্য এভাবে রাস্তায় নেমে আসা। যদি এই মাসের মধ্যে এসব বন্ধ না হয়, সন্ত্রাসীরা গ্রেপ্তার না হয়, তাহলে আগামী মাস থেকে গাড়ি ছাড়, নিবন্ধন ও রাজস্ব দেওয়া বন্ধ করে দেওয়া হবে।

সারা দেশের ব্যবসায়ীরা চাঁদাবাজির বিপক্ষে এবং সরকারের সঙ্গে আছেন—এ বার্তা দিতে তাঁরা রাস্তায় নেমেছেন বলেও জানান এই ব্যবসায়ী নেতা।

ব্যবসায়ীরা জানান, বারিধারা ও প্রগতি সরণি এলাকায় ধারাবাহিকভাবে গত কয়েক মাসে বিসমিল্লাহ কার সেন্টার, টার্বো অটো, বেগ অটো, কার সিলেকশন, হ্যালো কার, জুম অটো, বিশ্বাস ইমপোর্টসহ মোট ১২টি বিক্রয়কেন্দ্রের সামনে ককটেল বিস্ফোরণ করা হয়েছে।

ককটেল বিস্ফোরণের পর বিদেশি নম্বরের হোয়াটসঅ্যাপ থেকে মেসেজ দিয়ে টাকা দাবি করা হয়। আশপাশের বিক্রয়কেন্দ্রে ফোন দিয়ে বলা হয়, এরপর তাদের বিক্রয়কেন্দ্রের সামনে ককটেল বিস্ফোরণ করা হবে। এমন আতঙ্কজনক পরিস্থিতির অবসান চাইছেন গাড়ি ব্যবসায়ীরা।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব ক রয়ক ন দ র ব যবস য ককট ল

এছাড়াও পড়ুন:

জাবিতে তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন ও পানির ন্যায্য হিস্যার দাবি

দেশের অন্যতম প্রধান তিস্তা নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা ও তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবিতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) মানববন্ধন করা হয়েছে।

শনিবার (১৮ অক্টোবর) বিকাল ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে এই মানবন্ধন করেন শিক্ষার্থীরা।

আরো পড়ুন:

ঢাকা-গোপালগঞ্জ রুটে ট্রেন চলাচলের দাবিতে মানববন্ধন

পাঁচ দাবিতে জেলায় জেলায় জামায়াতের মানববন্ধন

মানববন্ধনে আ ফ ম কামাল উদ্দিন হলের সহ-সভাপতি (ভিপি) জিএমএম রায়হান কবীরের সঞ্চালনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উত্তরবঙ্গের ৮ জেলার শিক্ষার্থীরা বক্তব্য রাখেন।

এ সময় উপস্থিত বক্তারা উত্তরবঙ্গের কৃষি ও প্রকৃতি সংরক্ষণ এবং কোটি মানুষের জীবিকার উন্নয়নের লক্ষ্যে চীনের সহায়তায় আগামী নভেম্বরের মধ্যে তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন শুরুর তাগিদ দেন এবং ভারতের কাছ থেকে তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যার দাবি জানান।

জাকসুর যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) ফেরদৌস আল হাসান বলেন, “তিস্তা শুধু উত্তরবঙ্গের বিষয় নয়, এটি দেশের জাতীয় অর্থনীতির প্রাণ। ভারত বর্ষায় কোনো সতর্কতা ছাড়াই পানি ছেড়ে লাখ লাখ ঘর-বাড়ি ডুবিয়ে দেয়, লাখ লাখ হেক্টর জমির ফসল নষ্ট করে দেয়। আবার শুষ্ক মৌসুমে পানি বন্ধ করে সেচ ব্যবস্থা অকার্যকর করে ফেলে‌, ফলে কোনো ফসল আবাদ হয় না।”

তিনি বলেন, “বিগত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকার অবৈধভাবে টিকে থাকতে তিস্তার ন্যায্য হিস্সা ও তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করেনি। আমরা অন্তর্বর্তী সরকারকে নভেম্বরের মধ্যে চীনা অর্থায়নে এটি বাস্তবায়নের জোর দাবি জানাই।”

জাকসুর সহ-সভাপতি (ভিপি) আব্দুর রশিদ জিতু বলেন, “তিস্তা ভারত-বাংলাদেশের অভিন্ন নদী হওয়া সত্ত্বেও এটি পশ্চিমবঙ্গের জন্য আশীর্বাদ এবং বাংলাদেশের জন্য অভিশাপ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বর্ষায় আমাদের ডুবিয়ে মারে, শুষ্ক মৌসুমে পানি বন্ধ করে ফসল চাষাবাদে মারাত্মক বিঘ্ন ঘটায়। গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সরকারের কাছে আমরা আশা করেছিলাম, তারা তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করবেন। কিন্তু এই সরকার কোনো কার্যকর উদ্যোগ নেয়নি। সরকারকে জোরালোভাবে বলতে চাই, ভারতীয় যেকোনো চাপকে উপেক্ষা করে তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করুন; আমরা দেশবাসী আপনাদের সঙ্গে থাকব।”

জাবি উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. সোহেল আহমেদ বলেন, “স্বাধীনতার পর থেকেই আমাদের মিত্র রাষ্ট্র (ভারত) মৈত্রীর পরিচয় দেননি। মহান মুক্তিযুদ্ধের ৯ নম্বর সেক্টর কমান্ডার মেজর জলিলকে গুম করার মাধ্যমে ভারতের লক্ষ্য উদ্দেশ্য বুঝা গেছে। আমাদের মেরুদণ্ড সোজা করে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে হবে। তিস্তায় ভারতের বাঁধের কারণে উত্তরবঙ্গের আট জেলা সরাসরি আক্রান্ত। প্রতিবেশী মৈত্রী দেশ হিসেবে তিস্তার ন্যায্য হিস্যা দিতে হবে।”

নভেম্বরের মধ্যে চীনা সহায়তায় তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের কাজ শুরু করতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অন্তর্বর্তী সরকারকে আহ্বান জানান তিনি।

মানববন্ধনে আরো বক্তব্য রাখেন জীববিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক মোহাম্মদ মাফরুহী সাত্তার, জাবি শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক জমির উদ্দিন মোহাম্মদ বাবর, জাবি শাখা ছাত্রশিবিরের সদস্য শফিউজ্জামান শাহীন, ও বাগছাসের যুগ্ম-আহ্বায়ক জিয়াউদ্দিন আয়ান প্রমুখ।

ঢাকা/আহসান/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জাবিতে তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন ও পানির ন্যায্য হিস্যার দাবি
  • ঢাকা-গোপালগঞ্জ রুটে ট্রেন চলাচলের দাবিতে মানববন্ধন
  • ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় দোকান উচ্ছেদ অভিযান বন্ধে ওষুধ ব্যবসায়ীদের মানববন্ধন
  • নেত্রকোনায় প্রধান শিক্ষককে হত্যার ঘটনায় করা মামলায় স্ত্রী কারাগারে
  • নোবিপ্রবি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ছাত্রীদের নিয়ে কটূক্তি করার অভিযোগ, শাস্তি দাবি