Prothomalo:
2025-05-06@17:43:19 GMT

প্রকৃতির মিষ্টি বার্তা

Published: 6th, May 2025 GMT

বাড়ির আঙিনা, স্কুলের মাঠ কিংবা রাস্তাঘাট—সব জায়গায় কাঁঠালগাছ। এসব গাছে রঙিন কাঁঠালের ছড়াছড়ি। কোনোটির রং হলুদ, কোনোটির বাদামি, আবার কোনো কোনো গাছের কাঁঠালের রং সবুজ।

শিল্পাঞ্চল হিসেবে খ্যাত গাজীপুরের শ্রীপুরের বর্তমান দৃশ্য এটি। যুগ যুগ ধরে এই অঞ্চল কাঁঠালের জন্য দেশজুড়ে বিখ্যাত। গ্রীষ্মের শুরুতেই কাঁঠালের সৌন্দর্যে এই শ্রীপুরের গ্রামীণ চিত্রে এসেছে প্রাণের ছোঁয়া। মৌসুমি এই ফল যেন প্রকৃতির নিজ হাতে সাজানো উপহার। এ যেন গ্রামবাংলার গ্রীষ্মবরণ উৎসব, প্রকৃতির মিষ্টি বার্তা। আর দুই থেকে তিন সপ্তাহের মধ্যেই বাজারগুলো ভরে উঠবে মিষ্টি কাঁঠালে।

শ্রীপুর উপজেলার ব্র্যান্ডিং স্লোগান হলো ‘সবুজে শ্যামলে শ্রীপুর, মিষ্টি কাঁঠালে ভরপুর।’ শ্রীপুর উপজেলা পরিষদের ভেতরে শোভা পাচ্ছে ভাস্কর মিলন রবের তৈরি কাঁঠালের বিশাল ভাস্কর্য। এ ছাড়া ঢাকা বিভাগে কাঁঠালের সবচেয়ে বড় বাজারটিও জমে শ্রীপুরের জৈনাবাজারে। প্রায় তিন মাস ধরে চলে কাঁঠালের বেচাকেনা। শ্রীপুরের বেশির ভাগ কাঁঠাল ছোট অবস্থায় বাগান ধরে পাইকারি বিক্রি হয়ে যায়। নির্দিষ্ট দামে কিনে পরে পাইকারেরা সুবিধামতো সময়ে প্রয়োজন অনুযায়ী কাঁঠাল পেড়ে স্থানীয় বাজারে বিক্রি করেন। তবে এসব কাঁঠালের বেশির ভাগ পাইকারদের হাত হয়ে চলে যায় রাজধানী ঢাকা ও সিলেটে। এসব এলাকায় মূলত খাজা, গালা ও দুরসা জাতের কাঁঠাল উৎপাদিত হয়। 

আর দুই থেকে তিন সপ্তাহের মধ্যেই কাঁঠাল বাজারে উঠতে শুরু করবে। এ বছর কৃষি বিপণন অধিদপ্তর ও হর্টেক্স ফাউন্ডেশনের পাঁচটি দলের মাধ্যমে কাঁঠাল উৎপাদনকারীদের উৎসাহিত করা হয়েছে। সুমাইয়া আক্তার, কৃষি কর্মকর্তা,  শ্রীপুর উপজেলা 

সোমবার শ্রীপুরের মাওনা, তেলিহাটি, টেংরা, গোসিংগা, রাজাবাড়ী, টেপিরবাড়ী, দারগারচালা এলাকা ঘুরে দেখা যায়, প্রায় প্রতিটি গাছে প্রচুর কাঁঠাল ধরেছে। অনেকেই বাড়ির আঙিনায় কাঁঠালের বড়সড় বাগান করেছেন। অনেকের ঘরের আঙিনা বা ঘরের ওপর কাঁঠাল ঝুলছে। কিছু এলাকায় শহুরে পরিবেশে দোকানপাটের আনাচকানাচে ধরে আছে বাহারি কাঁঠাল। অন্যান্য ফসলের মতো এই ফল চাষে অতিরিক্ত যত্নের প্রয়োজন হয় না। তাই কাঁঠাল পাকা শুরু না হলে এ নিয়ে ব্যস্ততাও থাকে না। 

শ্রীপুরের দারগারচালা গ্রামের জাহাঙ্গীর আলম প্রথম আলোকে বলেন, এ বছর তাঁর ৪০টি গাছে প্রচুর কাঁঠাল ধরেছে। আগেই পাইকারের কাছে বিক্রি করেননি। কিছুটা ভালো দাম পাওয়ার আশায় পাকা শুরু হলে বিক্রি করবেন। গত বছর তিনি ৫০ হাজার টাকার কাঁঠাল বিক্রি করেছিলেন। 

রাজাবাড়ী গ্রামের নাজমুল ইসলাম বলেন, তাঁর বাগানে ৯০টির মতো কাঁঠালগাছ আছে। বাগানটি এ বছর তিনি ৭০ হাজার টাকায় বিক্রি করেছেন।

শ্রীপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুমাইয়া আক্তার প্রথম আলোকে বলেন, আর দুই থেকে তিন সপ্তাহের মধ্যেই কাঁঠাল বাজারে উঠতে শুরু করবে। এ বছর কৃষি বিপণন অধিদপ্তর ও হর্টেক্স ফাউন্ডেশনের পাঁচটি দলের মাধ্যমে কাঁঠাল উৎপাদনকারীদের উৎসাহিত করা হয়েছে। তাঁদের কাছে গিয়ে কাঁঠাল উৎপাদনে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। নতুন করে কাঁঠালগাছ রোপণেও উৎসাহিত করা হচ্ছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: শ র প র উপজ ল ঠ ল উৎপ দ এ বছর

এছাড়াও পড়ুন:

রপ্তানি প্রণোদনা কমবে থাকবে বিকল্প সুবিধা

২০২৬ সালের নভেম্বরে স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উত্তরণের পর রপ্তানির বিপরীতে আর নগদ সহায়তা দেওয়ার সুযোগ থাকবে না। তাই আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটেও এ প্রণোদনার হার কিছুটা কমিয়ে আনা হবে। তবে রপ্তানি খাতের প্রতিযোগিতা সক্ষমতা বাড়াতে প্রণোদনার বিকল্প হিসেবে বিদ্যুৎ বিলে রেয়াতি সুবিধা দেওয়াসহ ব্যবসা-বাণিজ্য সহজ করার কিছু উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। 

অর্থ বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, চলতি অর্থবছরের মূল বাজেটে ভর্তুকি ও প্রণোদনা খাতে মোট বরাদ্দ ছিল ১ লাখ ৩ হাজার কোটি টাকা। এটি কমাতে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) চাপ থাকলেও নতুন বাজেটেও প্রায় একই পরিমাণ বরাদ্দ থাকতে পারে। অন্যান্য খাতে বাড়তি ভর্তুকির চাহিদা থাকায় ‘রপ্তানি প্রণোদনা’ খাতে বরাদ্দ কমবে। তা ছাড়া এলডিসি উত্তরণের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় কয়েক বছর থেকেই ক্রমান্বয়ে এ প্রণোদনা কমিয়ে আনা হচ্ছে। চলতি বাজেটে এ খাতে বরাদ্দ রয়েছে ৯ হাজার ২৫ কোটি টাকা। নতুন বাজেটে এ খাতে বরাদ্দ ৮ হাজার কােটি টাকায় নামিয়ে আনা হতে পারে। 

চলতি অর্থবছর প্রথম দিন থেকেই সব ধরনের রপ্তানিতে নগদ সহায়তা কমায় সরকার। এর আগে গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে বিভিন্ন খাতে এ সহায়তা আরেক দফা কমানো হয়েছিল। এলডিসি উত্তরণের পর একসঙ্গে সম্পূর্ণ নগদ সহায়তা প্রত্যাহার করলে রপ্তানি খাত চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে পারে, যে কারণে অল্প অল্প করে কমানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। 
এ অবস্থায় রপ্তানি খাতের প্রতিযোগিতা সক্ষমতা বাড়াতে প্রণোদনার বিকল্প হিসেবে বিদ্যুৎ বিলে রেয়াতি সুবিধা দেওয়াসহ ব্যবসা-বাণিজ্য সহজ করতে ব্যাংকিং খাতসহ বিভিন্ন ধরনের সময়াবদ্ধ কর্মপরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া প্রধান প্রধান রপ্তানি বাজারের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) স্বাক্ষরের উদ্যোগও থাকছে। 
বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম সমকালকে বলেন, রপ্তানি উন্নয়ন তহবিলসহ অন্যান্য সুবিধা বাতিল করা হয়েছে। গত দুই বছরে নগদ প্রণোদনা উদ্বেগজনক হারে কমানো হয়েছে। বর্তমানে পোশাক খাতের জন্য দেড় শতাংশ প্রণোদনা দেওয়া হয়, তবে এ সহায়তা পেতে যে হয়রানি করা হয় তার থেকে না দেওয়াই ভালো। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, তৈরি পোশাকসহ রপ্তানি খাত এলডিসি উত্তরণের জন্য প্রস্তুত নয়।  

তিনি বলেন, এলডিসি থেকে উত্তরণ হলেও ২০২৯ সাল পর্যন্ত নগদ সহায়তা দেওয়ার সুযোগ রয়েছে। এ খাতকে বাঁচাতে ২০২৯ সাল পর্যন্ত ঝামেলামুক্তভাবে আরও বেশি হারে নগদ সহায়তা দিতে হবে। একই সঙ্গে গ্যাস-বিদ্যুৎ সমস্যার সমাধান করতে হবে। ব্যাংকিং খাতের সমস্যা নানাভাবে রপ্তানিকে বাধাগ্রস্ত করছে। এগুলোর সমাধান করতে হবে। তা ছাড়া তথাকথিত শ্রমিক নামধারী কিছু সন্ত্রাসী বিদেশিদের এজেন্ট হয়ে প্রায়ই কারখানা ভাঙচুর করছে। তাদের বিরুদ্ধে সরকারকে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। 
জানা গেছে, বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা (ডব্লিউটিও) থেকে নিট খাদ্য আমদানি দেশের স্বীকৃতি পাওয়ার মাধ্যমে কৃষিপণ্য রপ্তানিতে ভর্তুকি অব্যাহত রাখা এবং সংস্থাটির এগ্রিমেন্ট অন সাবসিডিসি অ্যান্ড কাউন্টারভেলিং মেজার্সের (এসসিএম) আওতায় অকৃষি পণ্য রপ্তানিতেও প্রণোদনা সুবিধা অব্যাহত রাখতে চেষ্টা করেছিল বাংলাদেশ। তবে সদস্য রাষ্ট্রগুলোর অনাগ্রহের কারণে এসব সুবিধা পাওয়ার ক্ষেত্রে তেমন কোনো অগ্রগতি নেই। ডব্লিউটিওর এ চুক্তির আওতায় মাথাপিছু মোট জাতীয় আয় (জিএনআই) এক হাজার ডলারের নিচে হলে এলডিসি উত্তরণের পরও কৃষিজাত নয়, এমন পণ্যেও প্রণোদনা দেওয়ার সুযোগ রয়েছে। কিন্তু মাথাপিছু আয় বেশি হওয়ায় সুবিধাটি নিতে পারেনি বাংলাদেশ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ