বাড়ির আঙিনা, স্কুলের মাঠ কিংবা রাস্তাঘাট—সব জায়গায় কাঁঠালগাছ। এসব গাছে রঙিন কাঁঠালের ছড়াছড়ি। কোনোটির রং হলুদ, কোনোটির বাদামি, আবার কোনো কোনো গাছের কাঁঠালের রং সবুজ।
শিল্পাঞ্চল হিসেবে খ্যাত গাজীপুরের শ্রীপুরের বর্তমান দৃশ্য এটি। যুগ যুগ ধরে এই অঞ্চল কাঁঠালের জন্য দেশজুড়ে বিখ্যাত। গ্রীষ্মের শুরুতেই কাঁঠালের সৌন্দর্যে এই শ্রীপুরের গ্রামীণ চিত্রে এসেছে প্রাণের ছোঁয়া। মৌসুমি এই ফল যেন প্রকৃতির নিজ হাতে সাজানো উপহার। এ যেন গ্রামবাংলার গ্রীষ্মবরণ উৎসব, প্রকৃতির মিষ্টি বার্তা। আর দুই থেকে তিন সপ্তাহের মধ্যেই বাজারগুলো ভরে উঠবে মিষ্টি কাঁঠালে।
শ্রীপুর উপজেলার ব্র্যান্ডিং স্লোগান হলো ‘সবুজে শ্যামলে শ্রীপুর, মিষ্টি কাঁঠালে ভরপুর।’ শ্রীপুর উপজেলা পরিষদের ভেতরে শোভা পাচ্ছে ভাস্কর মিলন রবের তৈরি কাঁঠালের বিশাল ভাস্কর্য। এ ছাড়া ঢাকা বিভাগে কাঁঠালের সবচেয়ে বড় বাজারটিও জমে শ্রীপুরের জৈনাবাজারে। প্রায় তিন মাস ধরে চলে কাঁঠালের বেচাকেনা। শ্রীপুরের বেশির ভাগ কাঁঠাল ছোট অবস্থায় বাগান ধরে পাইকারি বিক্রি হয়ে যায়। নির্দিষ্ট দামে কিনে পরে পাইকারেরা সুবিধামতো সময়ে প্রয়োজন অনুযায়ী কাঁঠাল পেড়ে স্থানীয় বাজারে বিক্রি করেন। তবে এসব কাঁঠালের বেশির ভাগ পাইকারদের হাত হয়ে চলে যায় রাজধানী ঢাকা ও সিলেটে। এসব এলাকায় মূলত খাজা, গালা ও দুরসা জাতের কাঁঠাল উৎপাদিত হয়।
আর দুই থেকে তিন সপ্তাহের মধ্যেই কাঁঠাল বাজারে উঠতে শুরু করবে। এ বছর কৃষি বিপণন অধিদপ্তর ও হর্টেক্স ফাউন্ডেশনের পাঁচটি দলের মাধ্যমে কাঁঠাল উৎপাদনকারীদের উৎসাহিত করা হয়েছে। সুমাইয়া আক্তার, কৃষি কর্মকর্তা, শ্রীপুর উপজেলাসোমবার শ্রীপুরের মাওনা, তেলিহাটি, টেংরা, গোসিংগা, রাজাবাড়ী, টেপিরবাড়ী, দারগারচালা এলাকা ঘুরে দেখা যায়, প্রায় প্রতিটি গাছে প্রচুর কাঁঠাল ধরেছে। অনেকেই বাড়ির আঙিনায় কাঁঠালের বড়সড় বাগান করেছেন। অনেকের ঘরের আঙিনা বা ঘরের ওপর কাঁঠাল ঝুলছে। কিছু এলাকায় শহুরে পরিবেশে দোকানপাটের আনাচকানাচে ধরে আছে বাহারি কাঁঠাল। অন্যান্য ফসলের মতো এই ফল চাষে অতিরিক্ত যত্নের প্রয়োজন হয় না। তাই কাঁঠাল পাকা শুরু না হলে এ নিয়ে ব্যস্ততাও থাকে না।
শ্রীপুরের দারগারচালা গ্রামের জাহাঙ্গীর আলম প্রথম আলোকে বলেন, এ বছর তাঁর ৪০টি গাছে প্রচুর কাঁঠাল ধরেছে। আগেই পাইকারের কাছে বিক্রি করেননি। কিছুটা ভালো দাম পাওয়ার আশায় পাকা শুরু হলে বিক্রি করবেন। গত বছর তিনি ৫০ হাজার টাকার কাঁঠাল বিক্রি করেছিলেন।
রাজাবাড়ী গ্রামের নাজমুল ইসলাম বলেন, তাঁর বাগানে ৯০টির মতো কাঁঠালগাছ আছে। বাগানটি এ বছর তিনি ৭০ হাজার টাকায় বিক্রি করেছেন।
শ্রীপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুমাইয়া আক্তার প্রথম আলোকে বলেন, আর দুই থেকে তিন সপ্তাহের মধ্যেই কাঁঠাল বাজারে উঠতে শুরু করবে। এ বছর কৃষি বিপণন অধিদপ্তর ও হর্টেক্স ফাউন্ডেশনের পাঁচটি দলের মাধ্যমে কাঁঠাল উৎপাদনকারীদের উৎসাহিত করা হয়েছে। তাঁদের কাছে গিয়ে কাঁঠাল উৎপাদনে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। নতুন করে কাঁঠালগাছ রোপণেও উৎসাহিত করা হচ্ছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: শ র প র উপজ ল ঠ ল উৎপ দ এ বছর
এছাড়াও পড়ুন:
পিকনিকের নৌকা থেকে পড়ে যুবক নিখোঁজ
টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে পিকনিকের নৌকা থেকে পড়ে সুজন মিয়া (২২) নামে এক যুবক নিখোঁজ হয়েছেন। শুক্রবার রাতে উপজেলার গোড়াই এলাকার মইশালপাড়া বিলে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
সুজন মিয়া গোড়াই মইশালপাড়া এলাকার মৃত হেলাল বয়াতির ছেলে।
জানা গেছে, শুক্রবার সকালে গোড়াই মইশাল পাড়া থেকে একদল যুবক ইঞ্জিনচালিত নৌকাযোগে বাসাইলের বাসুলিয়া ঘুরতে যান। বাসুলিয়া থেকে রাত আটটার দিকে গোড়াই ফিরেন তারা। গোড়াই মইশালপাড়া বিলে পৌঁছালে নৌকা থেকে সুজন পড়ে যান এবং নিখোঁজ হন। খবর পেয়ে মির্জাপুর ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরিদল ঘটনাস্থলে গিয়ে উদ্ধার অভিযান শুরু করে। শুক্রবার রাত ও শনিবার সকালে খুঁজে না পেয়ে ডুবুরিদল চলে যান।
মির্জাপুর ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের স্টেশন অফিসার বেলায়োত হোসেন বলেন, শুক্রবার রাত ও শনিবার সকালে অনেক খোঁজাখুঁজির পরও সুজনকে পাওয়া যায়নি।
এর আগে গত ১৪ জুন শনিবার সকালে উপজেলার হাঁটুভাঙা ব্রিজের পশ্চিম পাশে পিকনিকের নৌকা থেকে নদীতে পড়ে নাজিম সিকদার নামে এক স্কুলছাত্র নিখোঁজ হয়। ২৪ ঘণ্টা পর নদীতে তার লাশ ভেসে উঠে।