অনিয়ম-বাণিজ্যের অভিযোগ পরীক্ষা বাতিলের দাবি
Published: 6th, May 2025 GMT
কারারক্ষী নিয়োগের স্বাস্থ্য পরীক্ষায় অনিয়ম, বিশৃঙ্খলা ও বাণিজ্যের অভিযোগ তুলে এ পরীক্ষা বাতিলের দাবি জানিয়ে ঝালকাঠিতে বিক্ষোভ করেছেন চাকরিপ্রত্যাশীরা। তারা মঙ্গলবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব বরাবর এ বিষয়ে অভিযোগও করেছেন।
বরিশাল বিভাগের ছয় জেলায় কারারক্ষী পদে স্বাস্থ্য পরীক্ষার স্থান হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে ঝালকাঠি জেলা কারাগার প্রাঙ্গণ। কিন্তু পরীক্ষায় অনিয়মের বিষয়টি টের পেয়ে ঝালকাঠি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে এসে গতকাল দুপুরে পরীক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করেন।
অনিয়মের অভিযোগের বিষয়ে ঝালকাঠি জেল সুপার বলছেন, এ পরীক্ষার সঙ্গে তাদের সংশ্লিষ্টতা নেই। ঝালকাঠি জেলাকে ভেনু হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে মাত্র।
পরীক্ষা নিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব পদের দু’জন, পিএসসি, কারা অধিদপ্তর, একজন জেল সুপার পদমর্যাদার কর্মকর্তাসহ মোট ১৫/২০ জনের একটি প্রতিনিধি দল ছিল। এক দিনের জন্য এ সিলেকশন পরীক্ষায় যারা নির্বাচিত হবেন, তাদেরই লিখিত পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার কথা।
পরীক্ষার্থীদের অভিযোগ, বিভাগের ছয় জেলা বরিশাল, পিরোজপুর, ভোলা, বরগুনা, পটুয়াখালী ও ঝালকাঠি থেকে কারারক্ষী পদে মোট ৬০ জনকে নিয়োগ দেওয়ার কথা রয়েছে। ছয় জেলার প্রায় ২ হাজার প্রার্থী পরীক্ষায় অংশ নিতে ঝালকাঠিতে আসেন। সকাল ১০টা থেকে তারা জেলা কারাগারের প্রধান ফটকের বাইরে লাইনে দাঁড়ান। কিন্তু ফটক থেকে অনেককে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। তাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করা হয়। এমনকি তাদের শিক্ষা সনদ ছিঁড়ে ফেলা ও শারীরিকভাবে নির্যাতনের ঘটনাও ঘটেছে। ঢাকা থেকে আগত প্রতিনিধি দলের নিরাপত্তায় নিয়োজিত কারারক্ষীরা প্রধান ফটকের সামনে এসব অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটান।
খবর শুনে সাংবাদিকরা তথ্য সংগ্রহ করতে গেলে তাদেরও বাধা দেওয়া হয়। কথা বা দেখা করতে দেওয়া হয়নি দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের সঙ্গে। ফলে জানা যায়নি এ পরীক্ষায় মোট আবেদনকারীর সংখ্যা কত। কতজন চূড়ান্তভাবে মনোনীত হয়ে লিখিত পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবেন।
যমুনা টেলিভিশনের জেলা প্রতিনিধি মুক্তিযোদ্ধা দুলাল সাহা বলেন, তিনি ভেতরে যেতে চাইলে তাঁকে বাধা দেন জেইলর পদমর্যাদার মো.
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবের কাছে নিয়োগ পরীক্ষা বাতিলের জন্য পাঠানো লিখিত অভিযোগে সই করেছেন পটুয়াখালীর পরীক্ষার্থী মাহফুজুর রহমান, ভোলার মো. শাওন, বরগুনার মো. ফাহিম, পিরোজপুরের আবরি কাজী, বরিশালের মো. ছাব্বির ও ঝালকাঠির মো. রাহাত।
পটুয়াখালীর পরীক্ষার্থী মাহফুজুর রহমান অভিযোগ করেন, ১০ জন করে ৬ জেলার ৬০ জন প্রার্থীর কাছ থেকে মোটা অঙ্কের বাণিজ্য হয়েছে। যারা ফিট, তাদের আনফিট দেখিয়ে বাদ দেওয়া হয়েছে। বরগুনার মো. ফাহিমের অভিযোগ, শারীরিক উচ্চতায় উত্তীর্ণ হলেও অনেককে নেওয়া হয়নি। অথচ যারা আনফিট তাদের বাছাই করা হয়েছে। অনেকের শিক্ষা সনদ ছুড়ে ফেলা হয়েছে।
পিরোজপুরের প্রার্থী আবির কাজি বলেন, ভেতরে এমন অনিয়ম দেখে প্রতিবাদ করলে তাদের বের করে দেওয়া হয়। পরিস্থিতি বুঝতে পেরে বাইরে অপেক্ষমাণ অনেকে আর পরীক্ষা দিতে যাননি। ভোলার পরীক্ষার্থী শাওন বলেন, তাদের অনেকেই ছিলেন পুলিশ, সেনাবাহিনী ও নৌবাহিনীতে স্বাস্থ্য পরীক্ষায় ফিট; কিন্তু তাদেরই আনফিট দেখানো হয়।
এ বিষয়ে ঝালকাঠি জেলা কারাগারের জেল সুপার মো. আব্দুল্লাহ ইবনে তোফাজ্জেল হোসেন খান বলেন, এ পরীক্ষার সঙ্গে তাদের সংশ্লিষ্টতা নেই। ঝালকাঠি জেলাকে ভেনু হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে মাত্র। ঢাকা থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে কর্মকর্তারা এসে পরীক্ষা নিয়েছেন। এর বেশি তিনি কিছু জানেন না। তিনি বাসায় ছিলেন।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: পর ক ষ র স দ ধ ন ত পর ক ষ র থ পর ক ষ য় এ পর ক ষ র পর ক ষ ঝ লক ঠ
এছাড়াও পড়ুন:
ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনের আয়োজনে জাতীয় আয়ুর্বেদ দিবস উদ্যাপন
ঢাকায় দশম জাতীয় আয়ুর্বেদ দিবস-২০২৫ উদ্যাপন করেছে ভারতীয় হাইকমিশন। ‘মানুষের জন্য আয়ুর্বেদ, গ্রহের জন্য আয়ুর্বেদ’ প্রতিপাদ্য নিয়ে মঙ্গলবার ইন্দিরা গান্ধী সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে (আইজিসিসি) দিবসটি উদ্যাপিত হয়।
অনুষ্ঠানে চিকিৎসা বিশেষজ্ঞ, যোগব্যায়াম অনুশীলনকারী এবং বাংলাদেশি ইয়ুথ ডেলিগেশনের সদস্যসহ বিশিষ্টজনেরা অংশ নেন।
স্বাগত বক্তব্যে আইজিসিসির পরিচালক অ্যান ম্যারি জর্জ ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে ইতিহাস, ভাষা ও সংস্কৃতির গভীর বন্ধনের কথা স্মরণ করেন। তিনি বলেন, ভূ-জলবায়ুগত সাদৃশ্যের কারণে দুই দেশে একই ধরনের ঔষধি গাছ পাওয়া যায়। গবেষণা ও উদ্ভাবনের জন্য এটি একটি বড় সুযোগ। তিনি আরও বলেন, আয়ুর্বেদ, ইউনানি, যোগব্যায়াম ও হোমিওপ্যাথি বাংলাদেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার অবিচ্ছেদ্য অংশ। অনেক বাংলাদেশি শিক্ষার্থী আয়ুর্বেদ নিয়ে উচ্চশিক্ষার জন্য ভারত যান, যা দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে শক্তিশালী করছে।
সরকারি ইউনানি ও আয়ুর্বেদিক মেডিকেল কলেজের সহকারী অধ্যক্ষ ডা. সারিক হাসান খান তাঁর বক্তব্যে প্রতিরোধমূলক স্বাস্থ্যসেবায় আয়ুর্বেদ ও ইউনানি চিকিৎসার গুরুত্ব তুলে ধরেন।
অনুষ্ঠানে ‘জার্নি অব আয়ুর্বেদ’ শিরোনামে একটি স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হয়। এ ছাড়া ছিল যোগব্যায়াম প্রশিক্ষক শাহানাজ পারভীন শিখার নেতৃত্বে যোগব্যায়াম প্রদর্শনী ও ইয়োগা ব্লিসের প্রতিষ্ঠাতা ফারহানা সুলতানা করিমের পরিচালনায় একটি ইন্টারেক্টিভ যোগ সেশন। সরকারি ইউনানি ও আয়ুর্বেদিক মেডিকেল কলেজের সহকারী অধ্যক্ষ ডা. সারিক হাসান খান প্রতিরোধমূলক স্বাস্থ্যসেবায় আয়ুর্বেদের গুরুত্ব তুলে ধরেন।
এই আয়োজনটি ‘সুস্থ ভারত যোজনা’ কর্মসূচির অন্তর্ভুক্ত। এটি ‘ওয়ান হেলথ’ ধারণার মাধ্যমে মানুষ, প্রাণী ও পরিবেশের সমন্বিত স্বাস্থ্যের ওপর গুরুত্বারোপ করে। দুই দেশের মধ্যে বন্ধুত্ব ও সহযোগিতার বন্ধন আরও দৃঢ় করতেই এই উদ্যাপনের আয়োজন করা হয়েছে বলে অনুষ্ঠানে জানানো হয়।