দৈনিক ভিত্তিতে শ্রমিক নিয়োগের নীতিমালা বাতিলের দাবি
Published: 7th, May 2025 GMT
দৈনিক ভিত্তিতে সাময়িক শ্রমিক নিয়োজিতকরণ নীতিমালা-২০২৫ বাতিলের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ দৈনিক মজুরিভিত্তিক কর্মচারী কল্যাণ পরিষদ।
বুধবার (৭ মে) সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের আব্দুস সালাম হলে সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটি সরকারি দপ্তর, অধিদপ্তর ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে দৈনিক মজুরি ভিত্তিতে কর্মরতদের বয়সসীমা শিথিল করে নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানে চাকরি স্থায়ী করার দাবি জানায়।
সংবাদ সম্মেলনে দৈনিক মজুরিভিত্তিক কর্মচারী কল্যাণ পরিষদের নেতারা বলেন, দেশে করোনাকালে দৈনিক ভিত্তিতে নিয়োজিত স্বাস্থ্যকর্মীরা রোগীদের সেবা দিয়েছেন। লকডাউন চলাকালীন জীবন বাজি রেখে বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাসসহ সরবরাহসহ বিভিন্ন হাসপাতাল ও সরকারি প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম সচল রাখার লক্ষ্যে আমরা দৈনিক ভিত্তিতে নিয়োজিত কর্মচারীরা দায়িত্ব পালন করেছি। অথচ, করোনা-পরবর্তী সময়ে সরকারি প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে প্রণোদনা দেওয়া হলেও আমাদেরকে তা থেকেও বঞ্চিত করা হয়েছিল।
তারা আরো বলেন, বিগত সরকারের আমলে দীর্ঘ ১৫ বছর আমরা দৈনিক ভিত্তিতে নিয়োজিত কর্মচারীরা বিভিন্নভাবে লাঞ্ছনা, বঞ্চনা ও নিপীড়ন, বৈষম্যের শিকার হয়েছিলাম। ৫ আগস্টের পর ড.
বাংলাদেশ দৈনিক মজুরিভিত্তিক কর্মচারী কল্যাণ পরিষদের দাবিগুলো হলো:
১. দৈনিক ভিত্তিতে সাময়িক শ্রমিক নিয়োজিতকরণ নীতিমালা-২০২৫ বাতিল করে সরকারি দপ্তর, অধিদপ্তর, পরিদপ্তর ও স্বায়িতশাসিত প্রতিষ্ঠানে দৈনিক মজুরি ভিত্তিতে কর্মরতদের বয়স শিথিল করে স্ব স্ব প্রতিষ্ঠানে স্থায়ীকরণ/আত্তীয়করণ।
২.আউটসোর্সিং নীতিমালা ২০২৫ ও ঠিকাদার প্রথা বাতিল।
৩. মাসিক বেতন প্রদান ও দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির সঙ্গে সঙ্গতি রেখে ন্যূনতম মাসিক মজুরি ৩০ হাজার নির্ধারণ এবং বাৎসরিক ৫ শতাংশ হারে বেতন বৃদ্ধি।
৪. উৎসব ভাতা, বৈশাখী ভাতা, অধিকাল ভাতা, চিকিৎসা ভাতা ও ঝুঁকি ভাতা প্রদান।
৫. মাতৃত্বকালীন ছুটি ও বাৎসরিক ২০ দিন নৈমিত্তিক ছুটি প্রদান।
৬. চাকরিচ্যুতদের চাকরি পুনর্বহাল ও বকেয়া বেতন প্রদান।
ঢাকা/রায়হান/রফিক
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
রাবির কলা অনুষদভুক্ত বিভাগগুলোর শিক্ষক নিয়োগ স্থগিত
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) কলা অনুষদভুক্ত ১২টি বিভাগের শিক্ষক নিয়োগ স্থগিত করা হয়েছে। শিক্ষক নিয়োগসংক্রান্ত ২০২৫ সালের নতুন নীতিমালা এবং একটি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির শর্ত চ্যালেঞ্জ করে দায়ের করা রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি শেষে এ স্থগিতাদেশ জারি করেছেন হাইকোর্ট।
গত ২ জুন বিচারপতি ফাতেমা নাজিব এবং বিচারপতি সিকদার মাহমুদুর রাজির সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রিটের শুনানি শেষে এ রুল জারি করেন।
মো. বুলবুল রহমান নাম উর্দু বিভাগের ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষের এক শিক্ষার্থী হাইকোর্টে রিট পিটিশন (নং ৮৮৩৭/২০২৫) দায়ের করেন। তিনি রাবি শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক।
আরো পড়ুন:
সড়ক অবরোধ করে বিএম কলেজ শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
দ্রুত চাকসু নির্বাচনের দাবিতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
রিট পিটিশনে তিনি উল্লেখ করেন, এ বছরের ১৫ এপ্রিলে প্রকাশিত ‘রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগ, পদোন্নয়ন ও পদায়ন নীতিমালা, ২০২৫’ এবং এর ভিত্তিতে ৩০ এপ্রিলে প্রকাশিত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি নং ০১/২০২৫-এর শর্ত নং-১ তাকে আবেদন করতে বাধা দিচ্ছে, যা বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) ২০২১ সালে প্রকাশিত ন্যূনতম যোগ্যতার গাইডলাইন লঙ্ঘন করছে।
আদালত জানতে চেয়েছেন, কেনো এই নিয়োগ নীতিমালা এবং নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির ‘শর্ত নং ১’ বেআইনি, খারাপ উদ্দেশ্যপূর্ণ ও বাতিলযোগ্য ঘোষণা করা হবে না। একইসঙ্গে হাইকোর্ট নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির শর্ত নং ১-এর কার্যকারিতা স্থগিত করেছেন এবং আবেদনকারীকে উর্দু বিভাগের প্রভাষক পদের জন্য আবেদন করতে অনুমতি দিয়েছেন।
এই রিটটি করা হয়েছে সংবিধানের ১০২ অনুচ্ছেদের অধীনে, যা রাষ্ট্র বা কোনো সরকারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে বেআইনি সিদ্ধান্ত বা কার্যকলাপ প্রতিরোধে হাইকোর্টকে নির্দেশ দেওয়ার ক্ষমতা দেয়।
আবেদনের পক্ষে আদালতে ছিলেন অ্যাডভোকেট মো. জিয়াউর রশিদ টিপু এবং রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আকতার হোসেন মো. আবদুল ওহাব ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেলগণ।
রুলে বলা হয়েছে, প্রতিপক্ষদের (বিশ্ববিদ্যালয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও ইউজিসি) আগামী তিন সপ্তাহের মধ্যে কারণ দর্শাতে হবে। পরে পূর্ণাঙ্গ শুনানি শেষে রুল গ্রাহ্য বা বাতিল করা হবে।
এ বিষয়ে রিট পিটিশনকারী মো. বুলবুল রহমান বলেন, “২০২৫ সালের পিএসসির বিজ্ঞপ্তিতে সব অনুষদে স্নাতক-স্নাতকোত্তরে ন্যূনতম সিজিপিএ ৩.৫০ নির্ধারণ করা হয়েছিল। কিন্তু অন্য অনুষদের তুলনায় আমাদের কলা অনুষদের সিজিপিএ তুলনামূলক একটু কম হয়। আমি মনে করি, এখানে আমাদের মানবাধিকার লঙ্ঘন হচ্ছে। এজন্যই আমি রিট করেছিলাম। মহামান্য আদালত আমাদের পক্ষে রায় দিয়েছেন। যতদিন পর্যন্ত মামলা চলবে, ততদিন শিক্ষক নিয়োগের কার্যক্রম স্থগিত থাকবে।”
উর্দু বিভাগের সভাপতি মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক হওয়ার জন্য অ্যাকাডেমিক রেজাল্ট ভালো হওয়া প্রয়োজনীয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে উর্দু বিভাগে মোট ৫৭ জন আবেদন করেছেন। যার মধ্যে শর্ত পূরণ করেছেন মোট ৪৭ জন।”
তিনি বলেন, “আবেদনকারীদের প্রত্যেকেরই স্নাতক ও স্নাতকোত্তরের ফলাফল খুবই ভালো এবং অনেকেরই দুটো মিলিয়ে সিজিপিএ ৪.০০ এর মধ্যে ৪.০০ আছে। কিন্তু এই বিজ্ঞপ্তির বিরুদ্ধে আদালতে যে অভিযোগ করেছে তার অ্যাকাডেমিক রেজাল্ট সিজি ৩.৩৫, যা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হওয়ার জন্য গ্রহণযোগ্য নয়।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের লিগ্যাল সেলের প্রশাসক অধ্যাপক আব্দুর রহিম বলেন, “আমরা জেনেছি যিনি হাইকোর্টে রিট করেছেন, তার অনার্সের সিজিপিএ ৩.৩৬ এবং মাস্টার্সে সিজিপিএ ৩.৫০ এর উপরে আছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের নীতিমালা অনুযায়ী স্নাতক-স্নাতকোত্তর পরীক্ষায় সিজিপিএ ৩.৫০ উপরে থাকতে হবে। এ ক্ষেত্রে তিনি ইউজিসি নীতিমালা অনুযায়ী ৩.২৫ উপরে থাকার বিষয়টি নিয়ে এসেছেন।”
তিনি আরো বলেন, “বাংলাদেশের স্বায়ত্তশাসিত চারটি বিশ্ববিদ্যালয় ১৯৭৩ সালের অ্যাক্ট অনুযায়ী পরিচালিত হয়। তারা নিজের পরিচালিত নিয়মনীতি অনুযায়ী চলবে। শিক্ষা, গবেষণা এক্সিলেন্সি বাড়ানোর জন্য বিশ্ববিদ্যালয় যে নীতিমালা নেবে, সেটাই চূড়ান্ত। ইউজিসির যে কোনো নীতিমালা মানা স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য বাধ্যবাধকতা নেই।”
রাবির মোট বিভাগ রয়েছে ৫৯টি। এর মধ্যে কলা অনুষদে বিভাগ আছে ১২টি। কলা অনুষদভুক্ত বিভাগগুলো হলো- বাংলা, ইংরেজি, দর্শন, ইতিহাস, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি, আরবি, ইসলামিক স্টাডিজ, নাট্যকলা, সংগীত, ফারসি ভাষা ও সাহিত্য, সংস্কৃত ও উর্দু।
ঢাকা/ফাহিম/মেহেদী