পিএসসি সংস্কার ও নিয়োগ পরীক্ষায় স্বচ্ছতা নিশ্চিতের দাবি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের
Published: 8th, May 2025 GMT
পিএসসি সংস্কারসহ সব নিয়োগ পরীক্ষায় শতভাগ স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরের দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষাশহীদ রফিক ভবনের নিচে সংবাদ সম্মেলনের করেন শিক্ষার্থীরা। সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থীরা নিয়োগ প্রক্রিয়ায় বিদ্যমান অনিয়ম, দুর্নীতি ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে ১০ দফা দাবি উত্থাপন করেন।
শিক্ষার্থীরা বলেন, দাবিগুলোর বাস্তবায়ন হলে নিয়োগব্যবস্থায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত হবে এবং মেধাভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠায় সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।
শিক্ষার্থীদের ১০ দফা দাবিগুলো হলো—
১.
২. সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ ওঠার পর প্রমাণ সাপেক্ষে সংশ্লিষ্ট পরীক্ষা বাতিল করতে হবে।
৩. সুপারিশ বাণিজ্য রোধে মৌখিক পরীক্ষায় নম্বরের পরিমাণ কমাতে হবে।
৪. প্রশ্নফাঁস চক্র, প্রক্সি পার্টি ও ডিভাইস ব্যবহারকারীদের দীর্ঘমেয়াদি দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
৫. প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ২০ শতাংশ অগ্রাধিকারভিত্তিক বিজ্ঞান কোটা বাতিল করতে হবে।
৬. স্বায়ত্তশাসিত, আধা স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে আবেদন ফি সহনীয় পর্যায়ে আনতে হবে।
৭. যেকোনো নিয়োগ পরীক্ষার চূড়ান্ত ফলাফলের সঙ্গে মূল মেধা তালিকার এক-তৃতীয়াংশ পরিমাণ প্রার্থীকে ওয়েটিং লিস্টে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে এবং এক বছরের মধ্যে পদ শূন্য হলে প্যানেলভিত্তিক নিয়োগ দিতে হবে।
৮. বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন, কন্ট্রোলার জেনারেল অব ডিফেন্স ফিন্যান্স, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স, খাদ্য অধিদপ্তর, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্ট, বাংলাদেশ রেলওয়ে ও প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের বিগত বছরের নিয়োগগুলোতে উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত দাবি করা হয়।
৯. বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন নিয়োগে পুলিশ ভেরিফিকেশন কমিটির হাতে নিয়োগ ফাইল হস্তান্তরের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করতে হবে এবং
১০. শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় ৩০ শতাংশ নারী কোটা বাতিল করতে হবে।
এই আন্দোলনের মুখপাত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী সাজ্জাদ হুসাইন বলেন, ‘পিএসসি সংস্কার ও নিয়োগ পরীক্ষার স্বচ্ছতা আনয়ন জুলাইয়ের অঙ্গীকার। জুলাই–পরবর্তী বাংলাদেশে আমরা আমাদের শতভাগ মেধার বহিঃপ্রকাশ করতে চাই। তারুণ্যের মেধাভিত্তিক বাংলাদেশ গড়তে হলে সংস্কারের বিকল্প নেই।’
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ন য় গ পর ক ষ পর ক ষ য়
এছাড়াও পড়ুন:
শেখ হাসিনাকে কোনো অবস্থাতেই ফেরত পাঠাবে না ভারত: রাজনৈতিক বিশ্লেষ
২০২৪ সালের জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় ক্ষমতাচ্যুত পলাতক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণা করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। মামলার অপর আসামি সাবেক পুলিশ প্রধান চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে দেওয়া হয়েছে পাঁচ বছরের সাজা।
গণ-অভ্যুত্থানের মুখে ২০২৪ সালের আগস্টে ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা এবং এরপর থেকে তিনি ভারত সরকারের আশ্রয়েই রয়েছেন। ঢাকার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ শেখ হাসিনার অনুপস্থিতি তার বিচার পরিচালনা করে। আজ সোমবার রায় ঘোষণার সময় আসামিদের মধ্যে কেবল সাবেক পুলিশ প্রধান আবদুল্লাহ আল-মামুন আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায় নিয়ে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরাকে প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন ভারতের জিন্দাল গ্লোবাল বিশ্ববিদ্যালয়ের দক্ষিণ এশিয়ান স্টাডিজের বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক শ্রীরাধা দত্ত। তিনি বলেন, “হাসিনার বিরুদ্ধে বাংলাদেশের আদালতের এই রায় প্রত্যাশিত ছিল, কিন্তু সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠাবে না ভারত।”
আলজাজিরাকে দেওয়া মন্তব্যে দত্ত আরো বলেন, “কোনো অবস্থাতেই ভারত তাকে প্রত্যর্পণ করবে না। গত দেড় বছরে আমরা দেখেছি যে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে সম্পর্ক সবচেয়ে ভালো অবস্থায় নেই এবং অনেক সময়ই ভঙ্গুর হয়ে পড়েছে।”
দত্ত বলেন, “হাসিনার মৃত্যুদণ্ড প্রত্যাশিত ছিল।”
তিনি বলেন, “সবাই বাংলাদেশের পরিস্থিতি দেখেছেন। সবাই আশা করেছিলেন যে হাসিনার বিচার হবে। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার পর্যবেক্ষকরা একমত যে, বাংলাদেশে ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রম দেশের আইনি ব্যবস্থা অনুসরণ করেছে।”
দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক এই রাজনৈতিক বিশ্লেষকের মতে, “নিরস্ত্র শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে সংঘটিত অপরাধ সম্পর্কে কারো সন্দেহ নেই। স্পষ্ট প্রমাণ রয়েছে যে, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী সরাসরি গুলি করার নির্দেশ দিয়েছিলেন।”
দত্তের ভাষ্যমতে, “আওয়ামী লীগ এখন একটি পাল্টা ব্যাখ্যা তৈরির তৈরি করার চেষ্টা করবে। কিন্তু বাংলাদেশিরা মূলত বিশ্বাস করেন যে- হাসিনা মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছেন।”
ঢাকা/ফিরোজ