ফেনীতে দুই কিশোরের কবুতর ও মুরগি চুরির অপরাধে গ্রাম্য সালিসে জনসমক্ষে দুজনের মাকে নাকে খত দিতে বাধ্য করার ঘটনায় হওয়া মামলার প্রধান আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তিনি ফেনী সদর উপজেলার পাঁচগাছিয়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন বিএনপির সদ্য বহিষ্কৃত সভাপতি দেলোয়ার হোসেন। গতকাল বুধবার মধ্যরাতে ফেনী সদর উপজেলার পশ্চিম বিজয় সিংহ এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।

এর আগে বুধবার বিকেলে ইউনিয়ন বিএনপির বহিষ্কৃত সভাপতি দেলোয়ার হোসেনকে প্রধান আসামি ও ইউনিয়ন জামায়াতে ইসলামীর সাবেক সেক্রেটারি মাঈন উদ্দিন ওরফে জসিমকে (৪৮) আসামি করে সালিশি বৈঠকে উপস্থিত ১৩ জনের নাম উল্লেখসহ ২৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন নির্যাতিত নারী।

গ্রেপ্তার দেলোয়ার হোসেন (৫০) ফেনী সদর উপজেলার পশ্চিম বিজয় সিংহ গ্রামের চেয়ারম্যান বাড়ির মফিজুর রহমানের ছেলে। মামলার অন্য আসামিরা হলেন জাহাঙ্গীর আলম (৪২), মো.

রিসাল (২৫), মাঈন উদ্দিন (৪২), গিয়াস উদ্দিন (৪০), মাঈন উদ্দিন সোহাগ (৩৮), মো. আজাদ (৪১), অনিক (৩৫), শামছুর রহমান (৪২), ইব্রাহিম খলিল (৬২), নেজাম (৩৪), মো. সোহেল (৩২) প্রমুখ।

মামলার এজাহার সূত্রে জানান যায়, প্রধান আসামি ও ২ নম্বর আসামির নেতৃত্বে উপস্থিত লোকবলের সামনে একতরফা মিথ্যা সালিস করে সন্তানের চুরির অপরাধে বাদীকে নাকে খত দিতে বলা হয়। নাকে খত দিতে অস্বীকৃতি জানালে জবরদস্তি ও শ্লীলতাহানি করে তাঁকে নাকে খত দিতে বাধ্য করেন দেলোয়ার হোসেন।

২ মে রাতে পাঁচগাছিয়া ইউনিয়নে দুই কিশোরের নামে মুরগি ও কবুতর চুরির অভিযোগ এনে তাদের ময়েদের নাকে খত দিতে বাধ্য করা হয়। এর দুই দিন পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ঘটনার ভিডিও ছড়িয়ে পড়লে দেশজুড়ে সমালোচনা শুরু হয়। ঘটনার পর ৫ মে দল থেকে পাঁচগাছিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি দেলোয়ার হোসেনকে বহিষ্কার করে জেলা বিএনপি। জেলা বিএনপির সদস্যসচিব আলাল উদ্দিন স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এমন তথ্য নিশ্চিত করা হয়। এর আগে ৪ মে ফেনী সদর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ফজলুর রহমান ও সদস্যসচিব আমান উদ্দিন কায়সার স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিএনপির সব পর্যায় থেকে দেলোয়ার হোসেনের পদ স্থগিত করার কথা জানানো হয়।

ফেনী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সামসুজ্জামান জানান, আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে মামলার প্রধান আসামি দেলোয়ার হোসেনকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। ফেনী সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত থেকে বিষয়টি তদন্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

আদালত সূত্রে জানা যায়, ফেনী সদর উপজেলার পাঁচগাছিয়া ইউনিয়নে ছেলেদের অপরাধে সালিস ডেকে মায়েদের নাকে খত দিতে বাধ্য করায় মানবাধিকার লঙ্ঘনের মতো ঘটনা ঘটেছে। গতকাল বুধবার দুপুরে ফেনীর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট অপরাজিতা দাশের আদালত স্বপ্রণোদিত হয়ে ঘটনাটি তদন্ত করে আগামী ৩০ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য ফেনীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মোহাম্মদ সাইদুর রহমানকে নির্দেশ দেন। বৈঠকে উপস্থিত সাক্ষীদের ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬১ ধারায় জবানবন্দি ধারণ, ভাইরাল হওয়া সংবাদ ও ভিডিও চিত্রের সত্যতা যাচাই করে প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করার নির্দেশ দেওয়া হয়।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: সদর উপজ ল র প ব ধ য কর র রহম ন ব এনপ র খত দ ত

এছাড়াও পড়ুন:

লিভারপুলকে ৩–০ গোলে হারিয়ে গার্দিওলার ১০০০তম ম্যাচ উদ্‌যাপন

কোচ হিসেবে ১ হাজারতম ম্যাচ! পেপ গার্দিওলার জন্য বড় উপলক্ষই ছিল ম্যানচেস্টার সিটি-লিভারপুল ম্যাচটি। ইতিহাদে লিভারপুলকে ৩-০ গোলে হারিয়ে গার্দিওলার মাইলফলক ম্যাচটিকে স্মরণীয় করে রাখল ম্যানচেস্টার সিটি। আর্লিং হলান্ড, নিকো গঞ্জালেজ ও জেরেমি ডকু গোল তিনটি এনে দিয়েছেন দলকে।

প্রথমার্ধে আর্লিং হলান্ড পেনাল্টি মিস না করলে ব্যবধানটা বড় হতে পারত আরও। লিভারপুলও অবশ্য বলতে পারে তাদের একটি গোল বাতিল না হলে ম্যাচের গতিপ্রকৃতিও হয়তো পাল্টে যেত। ৩৮ মিনিটে দারুণ এক হেডে লিভারপুলকে সমতায় ফিরিয়েছিলেন ভার্জিন ফন ডাইক। সিটি গোলরক্ষক জিয়ানলুইজি দোন্নারুম্মার সামনে থাকা লিভারপুল খেলোয়াড় অ্যান্ডি রবার্টসন অফসাইড পজিশনে থাকায় বাতিল করা হয় সেই গোল। রবার্টসন দোন্নারুম্মার পথ আটকে রেখেছিলেন কি না তা নিয়ে অবশ্য বিতর্ক আছে।

তবে ওই গোল বাতিলের আগে-পরে সিটির প্রাধান্যই ছিল ম্যাচে।

বিস্তারিত আসছে...

সম্পর্কিত নিবন্ধ